শহীদ উল্লাহ

শহীদ উল্লাহ
মৃত্যু২০০২
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

শহীদ উল্লাহ (জন্ম: অজানা, মৃত্যু: ২০০২) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [][]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

শহীদ উল্লাহ জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল জলিল এবং মায়ের নাম আমেনা বেগম। তার স্ত্রীর নাম শায়েস্তা বেগম। তাদের দুই মেয়ে, এক ছেলে।

কর্মজীবন

শহীদ উল্লাহ চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ১৯৭১ সালে এ রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল জয়দেবপুরে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেওয়ার পর প্রথমে ৩ নম্বর সেক্টরে, পরে ‘এস’ ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের থেকে ৩ ডিসেম্বর তীব্র শীত, অন্ধকার ও কুয়াশার বাধা উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে যেতে থাকলেন সামনে। তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত। একটি দলে আছেন শহীদ উল্লাহ। রাত আনুমানিক ১১টা। তারা সমবেত হলেন সিঙ্গারবিলের অদূরে। একটু পর নির্ধারিত সময়েই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানে শুরু হলো গোলাবর্ষণ। এই গোলা আসছে তাদের পেছন থেকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ ব্যাটারি সীমান্ত থেকে দূরপাল্লার কামানের গোলাবর্ষণ করছে। এর প্রচণ্ডতা ও তীব্রতা এমন যে, মুক্তিযোদ্ধাদের পায়ের নিচের মাটি কেঁপে উঠছে। বিকট শব্দে কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার উপক্রম। গোলাবর্ষণের সহায়তায় শহীদ উল্লাহ এবং তার সহযোদ্ধারা আবার এগিয়ে যেতে থাকলেন। তাদের লক্ষ্য সিঙ্গারবিল রেলস্টেশন দখল করা। একটু পর তারা পৌঁছে গেলেন লক্ষ্যস্থলের আনুমানিক ৪০০ গজ দূরে। তখন পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে সীমান্ত এলাকা থেকে গোলাবর্ষণ বন্ধ হয়ে গেল। এদিকে ব্যাপক গোলাবর্ষণে পাকিস্তানি সেনারা ভীতসন্ত্রস্ত। তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান প্রায় তছনছ। এই সুযোগে মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়লেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর। নিমেষে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে শুরু হয়ে গেল মেশিনগান, এলএমজি আর রাইফেলের অবিরাম গোলাগুলি। কুয়াশা আর শীতের মধ্যে যুদ্ধ করা বেশ কষ্ট। সব উপেক্ষা করে শহীদ উল্লাহ ও তার সহযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকলেন। তাদের সাহসিকতায় হতোদ্যম পাকিস্তানি সেনারা ভোররাতে পালিয়ে গেল। মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে এল সিঙ্গারবিল। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে যেতে থাকলেন আজমপুর রেলস্টেশন অভিমুখে। তুমুল যুদ্ধের পর বিকেলের মধ্যে আজমপুর রেলস্টেশনও তারা দখল করে ফেললেন। সেখানে থাকা পাকিস্তানি সেনারাও বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মুখে তখন পালিয়ে গেল। মধ্যরাতে পরিশ্রান্ত মুক্তিযোদ্ধারা কেউ ঘুমিয়ে, কেউ জেগে। এমন সময় হঠাৎ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পাল্টা আক্রমণ। পুনঃসংগঠিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণ বেশ জোরালো। মুক্তিযোদ্ধারা বিক্রমের সঙ্গে যুদ্ধ করেও ব্যর্থ হলেন। আজমপুর রেলস্টেশন তাদের হাতছাড়া হয়ে গেল। মুক্তিযোদ্ধারা এতে মনোবল হারালেন না। পরদিন পুনঃসংগঠিত হয়ে আক্রমণ চালালেন সেখানে। তুমুল যুদ্ধের পর আবার দখল করলেন আজমপুর রেলস্টেশন। পাকিস্তানি সেনারা একেবারে পালিয়ে গেল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে।

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ১৪-০৬-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449 

পাদটীকা

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!