আসাদ আলী (মুক্তিযোদ্ধা)

আসাদ আলী
মৃত্যু১৯৮৯
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক
পুরস্কারবীর প্রতীক
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন আসাদ আলী (দ্ব্যর্থতা নিরসন)

আসাদ আলী (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৮৯) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। []

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আসাদ আলীর জন্ম গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোষেরচর গ্রামে। তার বাবার নাম কালু মোল্লা। তার স্ত্রীর নাম হাসিনা বেগম। তাদের চার মেয়ে, তিন ছেলে।

কর্মজীবন

আসাদ আলী ইপিআরে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালে যশোর সেক্টরের ৪ নম্বর উইংয়ের অধীনে যাদবপুরে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ২৭ মার্চ যাদবপুর ক্যাম্পে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন সাদেক খান এসে তাদের অস্ত্র জমা দিতে বলে। তখন তারা বিদ্রোহ করে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। সেদিন ক্যাপ্টেন সাদেক ও তার দলবল তাদের হাতে মারা পড়ে। এরপর বিভিন্ন স্থানে তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। প্রতিরোধযুদ্ধে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। []

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তিবাহিনীর ছোট একটি দল যশোরের চৌগাছার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হিজলীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি টহল দলকে অ্যামবুশ করে। আক্রমণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের এই দলে ছিলেন আসাদ আলী। তারা বেশিরভাগ ইপিআর সদস্য, মুক্তিবাহিনীর ৮ নম্বর সেক্টরের বয়রা সাব-সেক্টরের অধীন মুক্তিযোদ্ধা। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন অলীককুমার গুপ্ত। সেখানে আছে সীমান্ত চৌকি (বিওপি)। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হিজলীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিয়মিত আনাগোনা ছিল। সেদিন আসাদ আলীসহ মুক্তিযোদ্ধারা সকালে সীমান্ত অতিক্রম করে সেখানে গোপনে অবস্থান নেন। সকাল আনুমানিক নয়টার দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর টহল দল অ্যামবুশস্থলে হাজির হলে আসাদ আলীসহ মুক্তিযোদ্ধা সবার অস্ত্র গর্জে ওঠে। তীব্র গোলাগুলির মুখে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওই টহল দলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেনারা বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে। আক্রান্ত পাকিস্তানি সেনাদের জন্য পাশের ঘাঁটি থেকে দ্রুত সাহায্য চলে আসে। এরপর পাকিস্তানি সেনারাই মুক্তিযোদ্ধাদের ঘেরাও করে পাল্টা আক্রমণ চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষুদ্র দলটি বেশ ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। এ সময় আসাদ আলী অত্যন্ত ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। চরম বিপদেও তিনি ভেঙে পড়েননি। আসাদ আলী তখন সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করেন। এর মধ্যে মুক্তিবাহিনীর বয়রা সাব-সেক্টরে পৌঁছে যায় তাদের সংকটের খবর। সেখান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন দল এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর আর্টিলারি সাপোর্টও তারা পান। তখন পাকিস্তানি সেনারা পুনরায় চাপের মধ্যে পড়ে। দিশেহারা পাকিস্তানি সেনারা এরপর সহযোদ্ধাদের মৃতদেহ ও নিজেদের অনেক অস্ত্রশস্ত্র ফেলে কোনো রকমে পালিয়ে যায়। সেদিন যুদ্ধে আসাদ আলীদের দলের একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও কয়েকজন আহত হন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছয়-সাতজন নিহত ও অনেক আহত হয়। []

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ২৭-০৭-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৯৫। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ১৫৮। আইএসবিএন 9789849025375 

বহি:সংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!