মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম

মো. ওয়ালিউল ইসলাম
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

মো. ওয়ালিউল ইসলাম (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। []

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

মো. ওয়ালিউল ইসলামের জন্ম বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর আলেকান্দা সড়কের বটতলায়। তার বাবার নাম মো. ওয়াজেদ আলী এবং মায়ের নাম সৈয়দা আশরাফুননেসা নিরু। তার স্ত্রীর নাম হোসনে আরা বেগম। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে।

কর্মজীবন

মো. ওয়ালিউল ইসলাম ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম ইন্টারমিডিয়েট কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে মা-বাবার অমতে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন ওই কলেজে। তখন ছাত্ররাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মো. ওয়ালিউল ইসলাম ২৬ মার্চ থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। কয়েকজন সহপাঠীকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে তারা অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দেন। তিনি বেশ কয়েকটি প্রতিরোধযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এর মধ্যে কালুরঘাট, মহালছড়ির যুদ্ধ অন্যতম। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে মো. ওয়ালিউল ইসলাম ভারতে যান। ত্রিপুরায় হরিণা ক্যাম্পে অবস্থানকালে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় প্রথম বাংলাদেশ ওয়ারকোর্সে। জলপাইগুড়ির মূর্তি ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে অক্টোবরের প্রথমার্ধ থেকে যুদ্ধ করেন জেড ফোর্সের অধীনে। তাকে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ এবং মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, ছোটলেখাসহ আরও কয়েকটি স্থানে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর ছিলো মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের দুটি দল ভারত থেকে এসে সমবেত হলো কৈলাসটিলায়। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দলের নেতৃত্বে মো. ওয়ালিউল ইসলাম। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে শমশেরনগরে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের ওপর আক্রমণ চালাবে। মো. ওয়ালিউল ইসলামের দল এবং অপর দলের ওপর দায়িত্ব, ভানুগাছে একদল পাকিস্তানি সেনা আছে, তারা যাতে পাল্টা আক্রমণ না করতে পারে, সেটাকে গার্ড করতে হবে। পরবর্তীতে ১ ডিসেম্বর মো. ওয়ালিউল ইসলাম সহযোদ্ধাদের নিয়ে প্রতিরক্ষা অবস্থান নিলেন ভানুগাছে। তাদের জানানো হয়েছে, সেখানে আছে এক প্লাটুন পাকিস্তানি সেনা। কিন্তু প্রতিরক্ষা অবস্থান নেওয়ার পর তারা বুঝতে পারলেন, পাকিস্তানি সেনা সেখানে অনেক এবং তারা ১২০ মিমি মর্টারে সজ্জিত। বেশ শক্ত পাকিস্তানিদের অবস্থান। মো. ওয়ালিউল ইসলাম এতে বিচলিত হলেন না। সহযোদ্ধাদের মনে সাহস জোগালেন। পরদিন সহযোদ্ধাদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন পাকিস্তানি সেনাদের ওপর। মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকলেন।পাকিস্তানি সেনাদের পাল্টা আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হলো। এতে তারা দমে গেলেন না। মো. ওয়ালিউল ইসলামের নেতৃত্বে তারা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে পরদিন সকালে মুক্ত করলেন ভানুগাছ। ভানুগাছ যুদ্ধে মো. ওয়ালিউল ইসলাম যথেষ্ট রণকৌশল ও সাহস প্রদর্শন করেন। মূলত তার প্রচেষ্টাতেই মুক্ত হয় ভানুগাছ। মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে পাকিস্তানি সেনাদের ফেলে যাওয়া অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও রসদ। []

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০২-০৬-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ২৮১। আইএসবিএন 9789849025375 

পাদটীকা

বহি:সংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!