প্রথম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে তাইজুল ইসলাম ৮-উইকেট লাভ করেন।
৩-টেস্টের সিরিজে বাংলাদেশ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
সিরিজের শুরুতেই বাংলাদেশ দলকে সুসংগঠিত মনে করা হয়। ফাস্ট বোলার শাহাদাত হোসেন খেলার পঞ্চম বলেই ভুসি সিবান্দাকে আউট করেন। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা মিড-অফে জুবায়েরের হাতে ধরা পড়েন। ৩১ রানে ২ উইকেটের পতনের পর ব্রেন্ডন টেলর আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করেন। বিসিবি কর্তৃক আড়াই মাস নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হবার পর মাঠে ফিরে আসা সাকিবের বলে ব্যাট-প্যাডের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আবেদন জানালেও তা প্রত্যাখ্যাত হয়। অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সিকান্দার রাজাও সাকিবের বলে রান ওঠাতে থাকেন। কিন্তু ফাইন লেগে ক্যাচ দেন। মিরপুরের পিচের সুবিধা নিয়ে তিনি ছয় উইকেট পান। এনিয়ে তিনি দ্বাদশবারের মত ৫ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব লাভ করেন। তার ক্রীড়ানৈপুণ্যে জিম্বাবুয়ে দল প্রথম দিন শেষ হবার পূর্বেই স্বল্প রানে গুটিয়ে যায়।[১০] বাংলাদেশের ৭৪তম টেস্ট ক্রিকেটার ও প্রথম বিশেষজ্ঞ লেগস্পিনার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে আবির্ভূত জুবায়ের লাঞ্চের পরের ওভারে মিড-অফে টেলরকে আউট করলে তৃতীয় উইকেটে সংগৃহীত ৫২ রানের জুটি ভেঙ্গে যায় ও জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮৩/৩।[১১] মাত্র দু’টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণকারী জুবায়ের অফ স্ট্যাম্প বরাবর নিখুঁত বোলিং করতে থাকেন ও গুগলি সহযোগে মিশ্র লেগব্রেক বেশ দৃষ্টিনন্দন ছিল। সিকান্দার রাজা লাঞ্চের পর তার দ্বিতীয় টেস্ট অর্ধ-শতক সংগ্রহ করেন সাকিবের বলে চার মেরে। লিখন ডাকনামে পরিচিত জুবায়েরের লেগব্রেক বোলিংয়ে রাজা আউট হন।[১১] সাকিবের বলে সিলি পয়েন্টে মমিনুল হকের হাতে ধরা পড়েন এলটন চিগুম্বুরা। জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪২/৫। মার্চ, ২০১৩ সালের পর শীতকালীন চুক্তিতে প্রথম আন্তর্জাতিক খেলায় খেলতে নামা ক্রেইগ আরভিন রেজিস চাকাভা’র সাথে ৫০ রানে জুটি গড়েন। কিন্তু উভয়েই দ্রুত আউট হন। দ্বিতীয় সেশনে তাইজুল বোলিং করেননি। চা-বিরতির পর আরভিনকে ব্যাট-প্যাডে কট করেন। সাকিব চাকাভাকে স্লিপ কট দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান। প্যানিয়াঙ্গাকে স্কয়ার লেগে আউট করে সাকিব জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ও অস্ট্রেলিয়া ছাড়া সকল টেস্টখেলুড়ে দলের বিপক্ষে পাঁচ-উইকেটসহ দ্বাদশবারের মতো পাঁচ-উইকেট পান।[১১] প্রথম ইনিংসে অগ্রসর হবার জন্য মাঠে নামেন তামিম ইকবাল। নিয়মভঙ্গের কারণে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃতাদেশ থেকে ফিরে আসা তিনাশে প্যানিয়াঙ্গারা’র বলে আউট হন তামিম। শামসুর রহমান ও মমিনুল হক দ্বিতীয় উইকেটে অক্ষত অবস্থায় দিন শেষ করেন।
দ্বিতীয় দিনে মমিনুল হক ৫৩ রানে রান-আউটের শিকার হন। মাহমুদুল্লাহও ৬৩ রান করে এলবিডব্লিউ হন। মুশফিকুর রহিম একপ্রান্ত আগলে রেখে ৬৪ রান করে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন।[১২] এনিয়ে মমিনুল পাঁচটি অর্ধ-শতকের তিনটিতেই রান আউট হন। মাহমুদুল্লাহ ক্রিজের বাইরে এসে ছক্কা হাঁকান। পরবর্তীতেও তা করতে এসে ধরা পড়েন। মুশফিকুর সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হবার পর জিম্বাবুয়ে দল বাকীদেরকে আউট করতে সময় নেয়নি। গত তের বছরে মাত্র ১৩ সেঞ্চুরি হয়; এর বিপরীতে ৪৩টি অর্ধ-শতক করে বাংলাদেশ দল।[১২] দুইমাস পূর্বে তিনাশে প্যানিয়াঙ্গারা মিচেল জনসনের সাথে এক ভিডিও শেয়ার করার দায়ে অভিযুক্ত হন যা দলীয় কোচ স্টিফেন ম্যাঙ্গোঙ্গো’র ভাষায় বাচ্চাসূলভ আচরণ। এরফলে দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করায় জরিমানা ধার্য্য করা হয় ও সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হয় প্যানিয়াঙ্গাকে। খেলায় প্যানিয়াঙ্গা তার প্রথম পাঁচ-উইকেট লাভ করেন।[১৩]
দ্বিতীয় নতুন বল মাঠে নিয়ে আসার পূর্বে বাংলাদেশের চার উইকেট হাতে ছিল। মুশফিকুরকে প্যানিয়াঙ্গা আউট করলে বাংলাদেশ দল মাত্র ১৪ রানে এগিয়ে ছিল।[১৩] বাংলাদেশ দল ২১৩/৬ থেকে ২৫৪ রানে অল-আউট হয়ে যায়। মাহমুদুল্লাহ অফ স্পিনার সিকান্দার রাজার বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন। ২৭ বলের ব্যবধানে লাঞ্চের সময়কালে মমিনুল ও সাকিব রান আউট হন। মাহমুদুল্লাহর সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে সাকিবের পতন হয়। তাফাদজা কামুঙ্গোজি’র বলে ধারাবাহিকভাবে চার মেরে অর্ধ-শতক করেন মাহমুদুল্লাহ। জিম্বাবুয়ের সেরা দুই ফাস্ট বোলার চাতারা ও প্যানিয়াঙ্গারা। পূর্বদিনের ১ উইকেটে ২৭ রানে সাথে মাত্র দুই রান যোগ করে শামসুর রহমান প্যানিয়াঙ্গার বলে মিড-অফে ধরা পড়েন।[১৪]
তৃতীয় দিনে মাত্র ১০১ রানে এগিয়ে থেকে জিম্বাবুয়ে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে। জিম্বাবুয়ে প্রথম তিন উইকেট পায় কোন রান না দিয়েই। সাকিব ও মাহমুদুল্লাহর ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় জন নিয়াম্বু দলকে পরাজয়ের দিকে ঠেলে দেন। তারপরও বাংলাদেশের ক্রিকেটার অদম্য মানসিকতায় অবশেষে ৩ উইকেটের জয় পায়। প্রথম ইনিংসে মাত্র একজন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান অর্ধ-শতক করেন। তিনাশে প্যানিয়াঙ্গার পাঁচ-উইকেট লাভ স্বাগতিক দলকে মাত্র ১৪ রানে এগিয়ে রাখে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের প্রচেষ্টা বেশ ব্যর্থ হয়। সকালেই তাদের সাত উইকেটের পতন ঘটে ও মাত্র ৩৫.৫ ওভারে ১১৪ হয়। বাংলাদেশের স্পিনাররা প্রথম ইনিংসে নয় উইকেট নেন।[১৫]
বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৩৯ রানে ৮ উইকেট নিয়ে তাইজুল সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ও দলকে ৩ উইকেটের বিজয়ী সহায়তা করেন। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচেরপুরস্কার পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটংয়ে নেমে দলের বিপর্যয় রোধে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন তাইজুল। নয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে চার মেরে দলে জয় নিশ্চিত করেন। এ জয়ের ফলে ক্রিকেটের সকল স্তরে ধারাবাহিকভাবে ১২ খেলায় পরাজয়ের রেকর্ড গড়া থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ দল। ২০১৪ সালে পূর্ণাঙ্গ দলের বিপক্ষে একমাত্র জয় হয়ে আছে। কেবলমাত্র টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে নেপাল ও আফগানিস্তানের বিপক্ষেই জয় পায় বাংলাদেশ দল। লক্ষ্যে পৌঁছতে তামিম, মমিনুল ও শামসুর তিনাশে প্যানিয়াঙ্গার শিকার হন। ক্রিজে নতুন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিবকে জন নিয়াম্বু ৮ বলের ব্যবধানে আউট করেন। সেকেন্ড স্লিপে নিয়াম্বু সাকিবকে ধরলে ৪৬/৪ হয়। চিগুম্বুরার ধীরগতির বলে উইকেট-কিপাররেজিস চাকাভা ধরেন। শুভগত হোম বিদায় নিলে দলের জয় তখনও ৩৯ রান থেকে দূরে। মূশফিক ৬৩ বল খেলে অপরাজিত থাকেন। এদিন ১৭ উইকেটের পতন ঘটে। টেলর ৬০ বলে অপরাজিত ৪৫ রান করলেও বাকীরা আসা-যাওয়ার দলে ছিলেন।[১৬]
চার বছরের মধ্যে তামিম তার বহুল প্রত্যাশিত শতক লাভ করেন। দ্বিতীয় দিনে জিম্বাবুয়ের সেরা সময় ছিল লাঞ্চের পর ১০ ওভার বোলিং করে মাত্র ছয় রান দিয়ে এক উইকেট পাওয়া। সাকিব ২০১১ সালের পর সেঞ্চুরি করেন। এরপর তিনি ম্যালকম ওয়ালারের প্রথম উইকেট শিকার হন। তাইজুল শাহাদাতের সাথে ৮ম উইকেটে ৪৩ রানের জুটি গড়েন। সকালে সঠিক সময় ড্রাইভ করতে ব্যর্থ হওয়ায় লাঞ্চের মাত্র ২.৩ ওভার পূর্বে ১৩২ রানে জুটি ভেঙ্গে চলে যান তামিম।[২০] ৩৩২ বলের সাহায্যে সেঞ্চুরিকারী তামিম পঞ্চম মন্থরতম ইনিংসের বিপরীতে তিনি বাংলাদেশের দ্রুততম শতকের অধিকারী।[২১] ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ সম্মাননা লাভ করেন। ৪৩৩ রান সংগ্রহ করতে বাংলাদেশ দল ব্যয় করে ১৫৮.৫ ওভার যা দ্বিতীয় দীর্ঘতম ইনিংস।
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা’র ১৩ বছর পূর্বে টেস্ট অভিষেক ঘটে। কিন্তু জিম্বাবুয়ে দলকে দীর্ঘ ছয়-বছর স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিল টেস্ট ক্রিকেট থেকে। মধ্যম সারির ব্যাটসম্যানদেরকে আউট করতে সক্ষম হয় মধ্যাহ্ন বিরতীর পর। কিন্তু মাসাকাদজা দলের ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী ভূমিকা নেন। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই মাসাকাদজাকে আউট করার সুযোগ পেলেও তা নষ্ট করে ও বাংলাদেশ দল তার চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি দেখে। তিনি অপরাজিত ১৫৪ করেন যা তার নিজস্ব সেরা সংগ্রহ। জিম্বাবুয়ের বাইরে তিনি তার প্রথম সেঞ্চুরি করেন।[২২] রেজিস চাকাভাও অর্ধ-শতক হাঁকিয়ে জিম্বাবুয়েকে স্বপ্ন দেখাতে থাকেন। ৬ষ্ঠ উইকেটে এ জুটি মূল্যবান ১৮৯ রান সংগ্রহ করে। ব্রেন্ডন টেলর ও এল্টন চিগুম্বুরা লেগসাইডে সাকিবের বলে কট-আউট হন। অস্বস্তিতে থাকা ক্রেইগ আরভিনকে অতিরিক্ত বাউন্সের মাধ্যমে ফেরত পাঠান। জিম্বাবুয়ের প্রথম-পছন্দের উইকেট-রক্ষক রিচমন্ড মুতুম্বামি অসুস্থ থাকায় চাকাভাকে দলে নেয়া হয়। তিনি এর যথার্থতা বুঝাতে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান। অভিষিক্ত ব্রায়ান চারি মিড-অফে আউট হন।[২৩]
প্রথম-ইনিংসে দলকে এগিয়ে যেতে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা-চাকাভা জুটি মাঠে নামলে সাকিবের নিচু বলে মাসাকাদজার মিডল স্ট্যাম্পে আঘাত হানে। পূর্বদিনের রানের সাথে মাসাকাদজা মাত্র চার রান যোগ করতে সক্ষম হন। সাকিব ওয়ালারকে ফেরত পাঠান। বৃহস্পতিবার প্রথম ঘণ্টাতেই ত্রয়োদশবারের মতো পাঁচ উইকেট তুলে নেন সাকিব। তা স্বত্ত্বেও রেজিস চাকাভা তার অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। তামিম ইকবাল দৃঢ়তার সাথে খেলা শুরু করেন। কিন্তু চার বাউন্ডারি মেরেই তিনাশি প্যানিয়াঙ্গারা’র বলে কট এন্ড বোল্ড হন। মমিনুল-শামসুর জুটি চা বিরতী পর্যন্ত দলকে ১৪৪ রানের ব্যবধানে এগিয়ে রাখেন। মমিনুল তার ৭ম অর্ধ-শতক করেন ৮৮ বলে। ম্যালকম ওয়ালারের ব্যাট-প্যাডের ক্যাচে তার পতন ঘটে। মাত্র ২১ ইনিংসে মমিনুল হক ১০০০ টেস্ট রান করেন। সুনীল গাভাস্কার ও ব্রায়ান লারা’র পাশে নিজের নাম লেখান।[২১] শামসুরকে আউট করা ওয়ালার ধারাবাহিকভাবে শাকিব ও মুশফিককে আউট করেন। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ শুভাগত হোমের সহায়তায় সিরিজের ৩য় অর্ধ-শতক করেন ১০৪ বলে। দিনশেষে এ জুটি ৫৬ রান করে। রুবেল হোসেন সকালে টেন্ডাই চাতারা ও নাতসাই মুশাঙউইকে একই ওভারে আউট করেন। চাকাভার ৮৫ রানের সময় জিম্বাবুয়ে তাদের নবম উইকেট হারায়। দলীয় ১৩৪ ওভারে চাকাভা তার সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। নয় বছর পূর্বে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের কোন উইকেট-রক্ষক সেঞ্চুরি করেছিলেন। প্রথম ইনিংসে রেজিস চাকাভা ১০১ রান করেন। তাতেন্ডা তাইবু ও অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের পর তৃতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে তিনি এ কৃতিত্বের অধিকারী হন।[২১] প্যানিয়াঙ্গারা তাকে ঠিক দশ ওভার সঙ্গ দেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হবার সময় জিম্বাবুয়ে ৬৫ রানে পিছিয়ে পড়ে। চাকাভা’র সাথে শেষ উইকেট জুটি ঘণ্টাখানেক টিকে থাকে।[২৪]
অল-রাউন্ডার সাকিব টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ইয়ান বোথাম ও ইমরান খানের পর সেঞ্চুরিসহ খেলায় ১০ উইকেট লাভ করেন। ৩১ বছর পূর্বে সর্বশেষ এ কীর্তি গড়েছিলেন পাকিস্তানের ইমরান খান ভারতের বিপক্ষে ১৯৮৩ সালে। প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রান ও ৫/৮০ পান। পরবর্তীতে ৫/৪৪ পান দ্বিতীয় ইনিংসে। তার এ কৃতিত্বে জিম্বাবুয়ে ১৬২ রানে পরাজিত হয় ও ২-০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে পড়ে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।[২৫]
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এ টেস্টের উভয় ইনিংসে অর্ধ-শতক করেন। জুলাই, ২০০৯ সালের পর তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সিরিজ জয় করে। নাতসাই মুশাঙউইকে আউট করে সাকিব তার দশম উইকেট পূর্ণ করেন। অন্য দুই স্পিনারের মধ্যে তাইজুল তিন উইকেট পান। ১৯-বছর বয়সী জুবায়ের হোসেন রেজিস চাকাভাকে আউট করার মাধ্যমে ইনিংসের সবচেয়ে বড় ৭০-রানের জুটি ভেঙ্গে দেন। পূর্বদিনের ২৬৬ রানে এগিয়ে থেকে চূড়ান্ত দিনে আরও ১৯.৫ ওভারে ৪৭ রান সংগ্রহ করে। শুভাগত হোম তার প্রথম টেস্ট অর্ধ-শতক করেন।[২৬] তার এ অর্জনের পরপরই অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ইনিংসের ডিক্লেয়ার করেন। মুশাঙউই মিড-অনে মাহমুদুল্লাহকে ক্যাচ দেন। পূর্বদিনের রানের সাথে তিনি ২৯ বলে আরও ৮-রান যোগ করে ৭১ রানে আউট হন। মাসাকাদজা একহাতে শাহাদাতের ক্যাচ নিয়ে মুশাঙউইকে তার চতুর্থ শিকারে সহায়তা করেন। এ জয়ের ফলে বাংলাদেশ আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের তলানী থেকে এক ধাঁপ উপরে উঠে ও জিম্বাবুয়েকে তলানীতে ঠেলে দেয়।[২৬]
চৌদ্দবারের মতো পাঁচ উইকেট প্রাপ্তির মাধ্যমে সাকিব সাকলাইন মুশতাক ও মাইকেল হোল্ডিংয়ের অর্জনকে পিছনে রেখে দেন। বামহাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়রের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক টেস্টে দুইবার পাঁচ উইকেট প্রাপ্তির পর সাকিবও এতে যুক্ত হন। সাকিবের সেঞ্চুরি ও দশ উইকেট প্রাপ্তির পূর্বে ১৯৮৩ সালে ফয়সালাবাদে ভারতের বিপক্ষে ইমরান সর্বশেষ এ কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। একমাত্র অন্য খেলোয়াড় ইয়ান বোথাম এ তালিকায় রয়েছেন। তন্মধ্যে সাকিব প্রথম স্পিনার। ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে ওয়াসিম আকরাম তিন টেস্টের সিরিজে সেঞ্চুরিসহ তিনবার পাঁচ উইকেট পান। তারপরই সাকিবের এ অর্জন। ধারাবাহিকভাবে পাঁচ উইকেট লাভের দিক দিয়ে সাকিবের অবস্থান পঞ্চম। তার সম্মুখে রয়েছেন সিডনি বার্নস, ক্ল্যারি গ্রিমেট, মুত্তিয়া মুরালিধরন, রিচার্ড হ্যাডলি। তবে হার্বার্ট সাটক্লিফ করেছেন মাত্র ১২ ইনিংসে। এ নিয়ে দুইবার ২-টেস্টে জয়ী হয় বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের শিকারে পরিণত হয়। সর্বমোট ছয়বার টেস্ট জয়ের চারটিই এসেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।[২১]
বাংলাদেশ টসে জয়ী হয়ে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ দলের ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়।
প্রথম দিনেই তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস জুটি নিজেদের গড়া ১৮৫ রানের পূর্বতন রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন করে রেকর্ড গড়েন। এ দু’জন বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই সেশন নিরবিচ্ছিন্নভাবে ছিলেন। উদ্বোধনী জুটিতে তারা ৬৩.৫ ওভার খেলে ২২৪-রান করেন। এল্টন চিগুম্বুরা, তিনাশি প্যানিয়াঙ্গারা, শিঙ্গিরাই মাসাকাদজা এবং নাতশাই মুশাঙউইকে নিয়ে জিম্বাবুয়ের বোলিং আক্রমণ পরিচালিত হয়। লেগস্পিনার মুশাঙউই দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় কয়েকবার সুযোগ সৃষ্টি করলেও ব্রায়ান চারি তা নষ্ট করে দেন। ষোড়শ ওভারে ইমরুলের প্যাডে বল লাগলেও জিম্বাবুয়ে দল হক-আই প্রযুক্তির সুযোগ নেয়নি। গত ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবারের মতো টেস্টে বাংলাদেশের ৫০ রানের জুটি হয়। এরপর জুন, ২০১০ সালের পর প্রথম শতরানের জুটি গড়ে। পরবর্তীতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ে তামিম-ইমরুল। এছাড়াও, তারা দলের চতুর্থ দুই শতাধিক জুটি গড়াসহ উদ্বোধনী জুটিতে নতুন রেকর্ড গড়েন।[২৭] ২০০৮-২০১১ সালে এ দু’জন দলের উদ্বোধনে নেমে ২০১০ সালে লর্ডসেইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৫ রান করেছিলেন। ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সালে চট্টগ্রামেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরিকারী ইমরুল ৩নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ও তার প্রথম সেঞ্চুরি করেন। খেলায় উভয়েই সেঞ্চুরি করেন। চা-বিরতির ৩ ওভার পর তামিম মিড-অন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা’র শিকার হন। সিকান্দার রাজা’র বলে তামিম ১০৯ রান করে কট দেন। তার এ সেঞ্চুরি ছিল ষষ্ঠবারের মতো। এরফলে তিনি বাংলাদেশের সর্বাধিক সেঞ্চুরিকারী মোহাম্মদ আশরাফুলের ৬-সেঞ্চুরির সমকক্ষ হন।[২৮] ২০১০ সালে লর্ডস ও ম্যানচেস্টারে ধারাবাহিকভাবে দুই সেঞ্চুরির পর চার বছর বিরতি দিয়ে এ সিরিজেও ধারাবাহিকভাবে দুইটি সেঞ্চুরি করেন খুলনা ও চট্টগ্রামে। অন্যদিকে ইমরুলের ১৩০ রান তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। ১২ চার ও দুই ছক্কার সাহায্যে তার এ ইনিংসটি ২৫৭ বলের ছিল। তামিমের বিদায়ের পর ইমরুল দ্বিতীয় উইকেটে মমিনুলের সাথে ৪৮ করেন। এরপর গালিতে অতিরিক্ত খেলোয়াড় ভুসি সিবান্দা’র হাতে ধরা পড়েন মাসাকাদজা’র বলে। দিনশেষে বাংলাদেশ দল ২ উইকেটে ৩০৩ রান করে খেলায় একচ্ছত্র প্রভাববিস্তার করে। মমিনুল হক ৪৬* ও মাহমুদুল্লাহ ৫* রানে অপরাজিত ছিলেন।
সাকিব তার সপ্তদশ টেস্ট অর্ধ-শতক করেন ১১০ বল খেলে। তার এ ইনিংসে সাতটি বাউন্ডারি ছিল। কিন্তু ক্রেইগ আরভিনের চমৎকার ক্যাচে তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরত আসতে হয়। পূর্বদিনের ৩০৩/২ নিয়ে খেলতে নেমে বাংলাদেশ দল শুরুতেই তিনাশি প্যানিয়াঙ্গারা’র শিকারে পরিণত হয় মমিনুল হকের উইকেটের পতনের মাধ্যমে। চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে মমিনুল ১১০ বলে তিনটি চারের সহায়তায় ৪৮ রান করেন। মধ্যাহ্ন বিরতির পরক্ষণেই সাকিব তার অর্ধ-শতক সম্পন্ন করেন। রাজা তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৩৬ ওভারে ৩ উইকেটে ১২৩ রান দিয়ে।[২৯] প্যানিয়াঙ্গারা, শিঙ্গিরাই মাসাকাদজা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা - প্রত্যেকেই দু’টি করে উইকেট নিলেও ৪৭ ওভার বোলিং করে নাতসাই মুশাঙউই কোন উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখাননি। রুবেলের অপরাজিত ৪৫* রান তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান। ৪৪ বলে মিড-উইকেটে চার ছক্কা ও দুই চারে তার অপূর্ব ক্রীড়াশৈলীতে বাংলাদেশ দল ৫০০ রানের কোটা অতিক্রমে সক্ষম হয়। দশম উইকেটে জুবায়ের হোসেনকে নিয়ে ৫১ রানের জুটিটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নতুন রেকর্ডের সৃষ্টি করে। শেষদিকে রুবেল হোসেনের একক নৈপুণ্যে বাংলাদেশ দল পাঁচশত রানের কোটা অতিক্রম করে ও এ মাঠে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে। তিনি চার ছক্কার সাহায্যে অপরাজিত ৪৫ রান সংগ্রহ করেন। এ মাঠের উইকেটে বাংলাদেশ দল সর্বাপেক্ষা ব্যাটিং উপযোগী পরিবেশ পায়। শেষ দুই টেস্টে বাংলাদেশ দল বড় ধরনের স্কোর করে ড্র করে। ফেব্রুয়ারিতে এ মাঠেই কুমার সাঙ্গাকারা ৩১৯ ও ১০৫ রান করেছিলেন।[৩০]
বাংলাদেশ দল ৫০৩ রানে অল-আউট হলে জিম্বাবুয়ে দলও এর প্রত্যুত্তর দিতে শুরু করেছে। তারা ১ উইকেটে ১১৩ রান তোলে মূলত সিকান্দার রাজা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা’র অপরাজিত অর্ধ-শতকের সুবাদে। রাজা তার অপরাজিত ৫৪ রান তোলেন ৬৫ বলে, ৯ বাউন্ডারির সাহায্যে। এটি তার তৃতীয় টেস্ট অর্ধ-শতক। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের তিন উইকেট লাভ করেন। মাসাকাদজাও তার ষষ্ঠ টেস্ট অর্ধ-শতক করেন ৭১ বলের সহায়তায়। সাতটি চার ও সাকিব আল হাসানের বলে বিশাল ছক্কা হাঁকান মাসাকাদজা। জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুতে দ্বিতীয় ওভারেই রুবেল একমাত্র উইকেটটি তুলে নেন। ব্রায়ান চারিকে আউট করতে তৃতীয় আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা’র হস্তক্ষেপের প্রয়োজন পড়ে। দ্বিতীয় দিনশেষে জিম্বাবুয়ে ৩৯০ রানে পিছিয়ে রয়েছে।[৩০]
তৃতীয় দিনে জুবায়েরের পাঁচ উইকেট প্রাপ্তি বাংলাদেশ দলকে বেশ শক্ত অবস্থানে নিয়ে যায়। জিম্বাবুয়ে দল ৩৭৪ রানে গুটিয়ে যায়। ৩য় দিনশেষে বাংলাদেশ ১৫২ রানে এগিয়ে। জুবায়েরের অসাধারণ কৃতিত্বে স্বাগতিক দল ১২৯ রানের ব্যবধানে এগিয়ে থাকে। পরবর্তীতে আরও আধা-ঘণ্টায় দলের ব্যবধান ১৫২ রান হয়। জুবায়ের ২০ ওভার বোলিং করে ৯৬ রানে ৫ উইকেট পান। ব্রেন্ডন টেলর, সিকান্দার রাজা, ক্রেগ আরভিন, এল্টন চিগুম্বুরা ও নাতসাই মুশাঙউই তার শিকারে পরিণত হন। তন্মধ্যে এল্টন চিগুম্বুরা ছিলেন জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শীর্ষ রানসংগ্রাহক। তৃতীয় দিনে ২য় উইকেটে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সিকান্দার রাজা চমৎকার সূচনা করেন। তারা পূর্বদিনের সাথে আরও ১০৪ রান করে জুটিকে ১৬০ রানে নিয়ে যান। এরফলে ৯ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে পাকিস্তানের বিপক্ষে এডিআর ক্যাম্পবেল-এমএইচ ডেকারের পূর্বেকার ১৩৫ রানের রেকর্ড ভেঙ্গে যায়।[৩১] রেজিস চাকাভা-এল্টন চিগুম্বুরা’র অর্ধ-শতক জিম্বাবুয়েকে ফলো-অন থেকে বাঁচায়। চিগুম্বুরা ছক্কা মেরে দলীয় সংগ্রহকে ৩০৭-এ নিয়ে যান। এরপরই এ জুটি ভেঙ্গে যায়। সিকান্দার রাজা ১১১ বলে ১০ বাউন্ডারি সহযোগে ৮২ ও মাসাকাদজা ১৫১ বলে ৮১ করেন নয় বাউন্ডারি ও এক ছক্কার সহায়তায়। স্লিপে মাহমুদুল্লাহ রাজাকে কট-আউট ও শফিউল ইসলামের এলবিডব্লিউ’র শিকার হন মাসাকাদজা। মিড-অফে ২০-গজ দৌঁড়ে তাইজুল ইসলামের কট-আউটে পরিণত হন টেলর। ফুল-টস বলে আরভিন বোল্ড হন। চিগুম্বুরা-চাকাভা ৬ষ্ঠ উইকেটে ১১৩ রান করলে সফরকারী দল এগিয়ে যেতে থাকে। চাকাভা ১৩৬ বলে ৬৫ রান করেন ৭ চারের সাহায্যে ও শফিউলের বলে লেগ-বিফোরে আউট হন। উভয় ব্যাটসম্যানই বেশ কয়েকবার আউট হওয়া থেকে রক্ষা পান। সাকিব আল হাসানের আবেদনের প্রিক্ষিতে রিচমন্ড মুতুম্বামি ২০ রানে এলবিডব্লিউ হন। জুবায়ের কর্তৃক চিগুম্বুরা’র আউটের পূর্বে তাইজুল মাসাকাদজাকে বিদায় করেন। চিগুম্বুরা ১৩০ বলে ৮৮ করে স্লিপে কট দেন। তার ইনিংসে ছয় বাউন্ডারি ও দুই ছক্কা ছিল। মুশাঙউই কভারে মাহমুদুল্লাহ’র হাতে ধরা পড়েন।[৩১]
চতুর্থ দিন মমিনুলসেঞ্চুরি করে দলকে ৪৪৯ রানে এগিয়ে দন। দিন শেষে ১ উইকেটে ৭১ করেছে জিম্বাবুয়ে দল। সিকান্দার রাজা ৪৩ ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। চূড়ান্ত দিনে বাংলাদেশ দলকে পরাজিত করার জন্য তাদের প্রয়োজন আরও ৩৭৮ রান। অন্যদিকে, বাংলাদেশ দলের প্রয়োজন মাত্র ৯ উইকেট। পূর্বদিনের বিনা উইকেটে ২৩ রান নিয়ে খেলতে নেমে মমিনুল হকের অপরাজিত ১৩১* ও তামিমের ৬৫ রানের কল্যাণে বাংলাদেশ ৩১৯/৫ করে ইনিংস ডিক্লেয়ার দেয়। মমিনুল বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে ১০০০ টেস্ট রান করেন। এ নিয়ে তিনি তার ১২ টেস্টের ১১ ইনিংসেই পঞ্চাশ বা তদূর্ধ্ব রান সংগ্রহ করেছেন। মমিনুলের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি বাংলাদেশ দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যায়।[৩২] অন্যদিকে রুবেল হোসেনব্রায়ান চারিকে জিম্বাবুয়ের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আউট করে তাকে জোড়া শূন্যে পরিণত করেন।[৩২] বাংলাদেশ দল তাদের ইনিংস ডিক্লেয়ার করার পূর্বে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ দ্রুতগতিতে রান ওঠান। অন্যদিকে সাকিব তিন-টেস্টের সিরিজে ২৫০ রানের কোটা অতিক্রমসহ ১৮ উইকেট পান। বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো উভয় ইনিংসে তিন-শতাধিক রানসহ সর্বমোট ৮২২ রান করে যা তাদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এছাড়াও কোন একটি সিরিজে ১,৮৫৮ রান করে প্রথমবারের মতো।[৩২] মুশফিকুর ৩০ বলে চার বাউন্ডারি ও দুই ছক্কা সহযোগে ৪৬ রান করেন। তার আউটের পর শুভগত হোম ১.২ ওভার খেলেন ও ৩ রানে অপরাজিত থাকেন। মমিনুল ১৩ বাউন্ডারিতে ১৮৯ বলে ১৩১ রান করা অবস্থায় ইনিংস ঘোষণা করেন। এ সময় মমিনুল হক অপরাজিত ছিলেন। ব্যক্তিগত ৮৯ রানে তার বিপক্ষে এলবিডব্লিউ’র আবেদন আসে যা মাঠে দায়িত্বরত আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। এরফলে তিনি এভারটন উইকস, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ম্যাথু হেইডেন, জ্যাক ক্যালিস, সাইমন ক্যাটিচ ও কুমার সাঙ্গাকারা’র দলে প্রবেশ করেন যারা ধারাবাহিকভাবে নয় টেস্টে পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করেছেন। এছাড়াও এভারটন উইকস, সুনীল গাভাস্কার ও মার্ক টেলরের পর চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার প্রথম ১২ টেস্টে পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করতে পেরেছেন। স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯৪ গড়রানের পর মমিনুল হক দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ৬৩.০৫ রানগড়ে যারা কমপক্ষে ২০ ইনিংস খেলেছেন।[৩২] দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সাথে মূল্যবান ৮৮ রান করেন। নাতসাই মুশাঙউই’র বলে তামিম ৬৫ রানে আউট হন। ৫৮ ওভার বল করে লেগস্পিনার মুশাঙউই তার প্রথম টেস্ট উইকেট লাভে সক্ষম হন।[৩২] মাহমুদুল্লাহ ২৮ বলে ৩০ রান করেন ৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কার সহায়তায়। মমিনুলের সাথে ১০.৩ ওভারে ৬৫ রান করেন।
১০ মাস যাবৎ পরাজয়ের ধাক্কার পরে অবশেষে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। চূড়ান্ত ও পঞ্চম দিনে খেলার ৮৫তম ওভারে শফিউল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ’র শিকার হন নাতসাই মুশাঙউই। এতেই জিম্বাবুয়ে দলের চূড়ান্ত উইকেটের পতন হয়। ক্রেগ আরভিন, রিচমন্ড মুতুম্বামি ও তিনাশি প্যানিয়াঙ্গারাও একই পথে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান। অন্যদিকে রেজিস চাকাভা একপ্রান্ত ধরে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ১৮১ বলে ৮৯ রান করেন তিনি সাত চার ও এক ছক্কার সাহায্যে।[৩৩] তবে বেশ কয়েকবার এলবিডব্লিউ’র আবেদন, দুইবার সিদ্ধান্তের জন্য তৃতীয় আম্পায়ার ও ২১ রানে মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে রক্ষা পান তিনি। শফিউল, রুবেল হোসেন, জুবায়ের হোসেন ও শুভগত হোম প্রত্যেকই দু’টি করে উইকেট পান। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সিকান্দার রাজা পূর্বদিনের ৬৭ রানের জুটির সাথে আরও রান সংগ্রহে অগ্রসর হন। চতুর্থ ওভারে রাজা খেলায় তার দ্বিতীয় অর্ধ-শতক করেন ও সর্বমোচ চারটি অর্ধ-শতক করেন। পরের ওভারেই তাইজুল ইসলামের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। এনিয়ে সিরিজে মোট নয়বার বাংলাদেশের আবেদন বাতিল হয়। মাসাকাদজা সকালে মাত্র ১২ রান যোগ করে আউট হন। তিনি শুভগত হোমের বলে মুশফিকুরের বলে ধরা পড়েন। ৯৩ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতনের মাধ্যমে শুভগত তার দ্বিতীয় উইকেট পান। তাইজুলের ফুল টস বলে রাজা ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন। ৬৫ রানে গড়া এ ইনিংসটি ৭৫ বলে নয়টি চার ও দুই ছক্কার ছিল। জুবায়েরের বলে লুজ ড্রাইভে ব্রেন্ডন টেলর উইকেট বিলিয়ে দেন। এনিয়ে তিনবার তার শিকারে পরিণত হন টেলর। লাঞ্চের সাত মিনিট পূর্বে জুবায়েরের বলে স্লিপে দাঁড়ানো ইমরুল কায়েস এল্টন চিগুম্বুরাকে আউট করে দ্বিতীয় উইকেট পান। সবকিছুই পরিকল্পনামাফিক অগ্রসর হয় বাংলাদেশ দল। এনিয়ে তিন টেস্টের প্রত্যেকটিতেই বাংলাদেশ দল ২০ উইকেট পায়।[৩৩]
চার সেঞ্চুরির তিনটিই দ্বিতীয় ইনিংসে করেন মমিনুল হক।[৩৪] ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয়ের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দল ৩-০ ব্যবধানে বাংলাওয়াশ করে জিম্বাবুয়েকে।[৩৪] তিন বা এরচেয়ে কম টেস্টে দুইজন খেলোয়াড় কমপক্ষে ২৫০ রান ও ১৫ বা তদূর্ধ্ব রান করেছেন। সাকিব করেছেন ২৫১ ও ১৮ উইকেট নিয়ে ২০০৮-০৯ মৌসুমে মিচেল জনসনের দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৫৫ রান ও ১৬ উইকেটের সমকক্ষ হন।[৩৪] একটি সিরিজে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানগণ তিনশতাধিক রান করতে পেরেছেন। মমিনুল ও তামিম এ সিরিজে করার পূর্বে গত বছর মমিনুল দুই টেস্টের সিরিজে ৩৭৬ রান করেছিলেন। ২০০৩ সালে ৩৭৯ রান করেন হাবিবুল বাশার।[৩৪] পাকিস্তানের বিপক্ষে তার অর্জনটি সবচেয়ে বৃহৎ। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা সিরিজে ৩৫৬ রান করেন। ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের ৪২২ রানের পর তার এ সংগ্রহ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এছাড়াও, তিনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান হিসেবে ৩ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে মারে গুডউইনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। এ তালিকায় ৩৮ রান বেশি নিয়ে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছেন অ্যালিস্টেয়ার ক্যাম্পবেল।[৩৪]
Title bestowed on a chessplayer by an official body, esp. chessmaster Chess master redirects here. For the Ubisoft application, see Chessmaster. For the Chinese novel by Ah Cheng, see The Chess Master. Grandmaster Garry Kasparov (2007) A chess title is a title regulated by a chess governing body and bestowed upon players based on their performance and rank. Such titles are usually granted for life. The international chess governing body FIDE grants several titles, the most prestigious of whic...
Ola Håkansson Ola Håkansson en 2015Información personalNacimiento 24 de marzo de 1945 (78 años)Estocolmo (Suecia) Nacionalidad SuecaInformación profesionalOcupación Cantante, letrista, compositor, productor discográfico, actor y guionista Seudónimo Björn Hakanson Género Pop Instrumento Voz Distinciones Melodifestivalen Hall of Fame (2021) [editar datos en Wikidata] Ola Håkansson, también conocido por sus seudónimos Björn Håkansson y Oson (Estocolmo, 24 de marzo d...
Головне управління розвідки Міністерства оборони України Емблема ГУР МО[1] Країна: УкраїнаДата заснування: 7 вересня 1992 рокуЮрисдикція: Міністерство оборони УкраїниШтаб-квартира: Вулиця Електриків, Київ, Рибальський острів, УкраїнаПопередняслужба: Головне управл
In diesem Artikel oder Abschnitt fehlen noch folgende wichtige Informationen: Familie, Ausbildung, Leben Hilf der Wikipedia, indem du sie recherchierst und einfügst. Wright im August 2008 Brad Wright (* 2. Mai 1961 in Toronto) ist ein kanadischer Drehbuchautor und Fernsehproduzent mehrerer Fernsehserien. Größte Bekanntheit erreichte er mit Stargate – Kommando SG-1, Stargate Atlantis und Stargate Universe. In der Serie Stargate SG-1 hatte Wright zwei Cameo-Auftritte. So war er zunächst i...
هذه المقالة يتيمة إذ تصل إليها مقالات أخرى قليلة جدًا. فضلًا، ساعد بإضافة وصلة إليها في مقالات متعلقة بها. (أكتوبر 2018) ديفانتي كلوت معلومات شخصية الميلاد 16 أكتوبر 1995 (العمر 28 سنة)سيدني الطول 1.75 م (5 قدم 9 بوصة) مركز اللعب وسط الجنسية أستراليا معلومات النادي الناد...
Festín en la casa de Simón, de Frans Francken el Joven. La parábola de los dos deudores es una de las parábolas de Jesús, que aparece en Lucas 7:36-50, donde Jesús explica que la mujer que lo ungió lo ama más que el anfitrión, debido a que sus pecados han sido perdonados. Hay escenas similares de personas ungiendo a Jesús encontradas en Mateo 26:6-13 y Marcos 14:3-9. A su vez, esta parábola es similar a la Parábola del siervo despiadado. Pasaje La parábola, junto con su contexto,...
БайбуртBayburt Байбуртський замокБайбуртський замок Основні дані 40°15′16″ пн. ш. 40°13′33″ сх. д. / 40.25463888891677300° пн. ш. 40.22600000002777421° сх. д. / 40.25463888891677300; 40.22600000002777421Координати: 40°15′16″ пн. ш. 40°13′33″ сх. д. / 40.25463888891677300° пн. ш. 4...
مايكل أنجارانو معلومات شخصية اسم الولادة (بالإنجليزية: Michael Anthony Angarano) الميلاد 3 ديسمبر 1987 (العمر 36 سنة)بروكلين، نيويورك، الولايات المتحدة مواطنة الولايات المتحدة الطول 170 سنتيمتر الزوجة مايا أرسكين (2019-حتي الان) العشير كريستين ستيوارت (2005–2009)مايا أرسكين (2019–)جون...
Artikel ini merupakan bagain dari seriListrik dan MagnetMichael Faraday. Bapak kelistrikan dunia, dan sosok penting pada ilmu kemagnetan. Buku rujukan Statika listrik Muatan listrik Medan listrik Insulator Konduktor Ketribolistrikan Induksi Listrik Statis Hukum Coulomb Hukum Gauss Fluks listrik / energi potensial Momen polaritas listirk Statika magnet Hukum Ampere Medan magnet Magnetisasi Fluks magnetik Kaidah tangan kanan Kaidah tangan kiri Hukum Biot–Savart Hukum magnet Gauss Momen p...
This article has multiple issues. Please help improve it or discuss these issues on the talk page. (Learn how and when to remove these template messages) This article needs additional citations for verification. Please help improve this article by adding citations to reliable sources. Unsourced material may be challenged and removed.Find sources: Unsung TV series – news · newspapers · books · scholar · JSTOR (February 2017) (Learn how and when to ...
American photographer and journalist George Grantham BainBain ca. 1910–1915Born(1865-01-07)January 7, 1865Chicago, Illinois, U.S.DiedApril 20, 1944(1944-04-20) (aged 79)New York City, U.S.Known forFather of foreign photographic newsParent(s)George Bain Clara Mather George Grantham Bain (January 7, 1865 – April 20, 1944) was a New York City photographer. He was known as the father of foreign photographic news.[1] Biography He was born in Chicago, Illinois, on January 7, 1...
Public/magnet school in San Antonio, Texas, United StatesEngineering & Technologies AcademyAddress5110 Walzem RoadSan Antonio, Texas 78218United StatesCoordinates29°30′29″N 98°23′23″W / 29.508037°N 98.389595°W / 29.508037; -98.389595InformationTypePublic/MagnetFounded2004FoundersWilliam Bill Sturgis and Richard HoweSchool districtNorth East ISDDirectorRobert LozanoGrades9–12Color(s)Maroon and White Websitewww.neisd.net/eta The Engineering ...
Hoja 535 del Mapa Topográfico Nacional a escala 1:50.000 (Algete), en su edición de 2013 (2ª edición digital). El Mapa Topográfico Nacional es un conjunto de publicaciones cartográficas producidas por el Instituto Geográfico Nacional (IGN) de España. Está compuesto por seis series de mapas topográficos a diferentes escalas: 1:25.000, 1:50.000, 1:200.000, 1:500.000, 1:1.000.000 y 1:2.000.000, que abarcan la totalidad del territorio nacional. Esta cartografía topográfica es la base ...
Голова селянина Творець: Казимир МалевичЧас створення: 1911Зберігається: Санкт-ПетербургМузей: Собрание Кирилла и Юлии Наумовых «Голова селянина» — єдиний відомий ескіз до незбереженої картини російського та українського художника-авангардиста Казимира Малевича ...
This article needs additional citations for verification. Please help improve this article by adding citations to reliable sources. Unsourced material may be challenged and removed.Find sources: 78 number – news · newspapers · books · scholar · JSTOR (December 2010) (Learn how and when to remove this template message) Natural number ← 77 78 79 → ← 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 → List of numbersIntegers← 0 10 20 30 40 50 60 70 80 ...
Organized crime syndicateThe mafia redirects here. For other uses, see Mafia (disambiguation).Sicilian MafiaFounding locationSicily, ItalyYears activeSince the 19th centuryTerritoryMostly western Sicily, particularly Palermo, Trapani, and Agrigento; Widespread throughout the world, in particular: France, Spain, Malta, Venezuela, United States, Canada.[1]EthnicitySiciliansMembership5,500 members[2]Criminal activitiesProtection racketeering, extortion, vote buying, nar...
2011 film by Christian E. Christiansen The RoommateTheatrical release posterDirected byChristian E. ChristiansenWritten bySonny MallhiProduced by Roy Lee Doug Davison Starring Leighton Meester Minka Kelly Cam Gigandet Aly Michalka Danneel Harris Frances Fisher Billy Zane CinematographyPhil ParmetEdited byRandy BrickerMusic byJohn FrizzellProductioncompanyVertigo EntertainmentDistributed byScreen GemsRelease date February 4, 2011 (2011-02-04) Running time94 minutesCountryUnited ...
Type of train service For the clothing store formerly known as Limited Express, see Express, Inc. This article has multiple issues. Please help improve it or discuss these issues on the talk page. (Learn how and when to remove these template messages) This article relies largely or entirely on a single source. Relevant discussion may be found on the talk page. Please help improve this article by introducing citations to additional sources.Find sources: Limited express – news&...
Halaman ini berisi artikel tentang kesultanan historis di pulau Bacan. Untuk lainnya, lihat Bacan. Kesultanan Bacanكسلطانن باچن Dehe Ma-Kolano1322? Bendera Pulau Bacan dan ibukota (sekitar tahun 1616)Bahasa yang umum digunakanBacanPemerintahanMonarkiSultan, Dehe Ma-Kolano Sejarah • Pendirian 1322?• Mulai menganut Islam 1400-an• Penaklukkan Belanda 1609• Pemerintahan Swapraja diambil alih pemerintahan Kabupaten Indonesia 1965• Dihidu...
Teaching hospital in Cape Town, Western Cape, South Africa This article relies excessively on references to primary sources. Please improve this article by adding secondary or tertiary sources. Find sources: Groote Schuur Hospital – news · newspapers · books · scholar · JSTOR (June 2007) (Learn how and when to remove this template message) Hospital in Western Cape, South AfricaGroote Schuur HospitalWestern Cape Department of HealthOld Main Building of ...