বাংলাদেশ টেলিভিশন, সাধারণত বিটিভি নামে পরিচিত, হচ্ছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সংস্থা। এটি মূলে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশনেরপূর্ব পাকিস্তান বিভাগ হিসেবে স্থাপিত হয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম বাংলা ভাষার টেলিভিশন সংস্থা, এবং এটি বাংলাদেশ বেতারের ভ্রাতৃপ্রতিম, যা, বিটিভির সাথে, সরকার মালিকানাধীন এবং পরিচালিত।[১]
বাংলাদেশ টেলিভিশন টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনে উপলব্ধ দেশের একমাত্র টেলিভিশন সংস্থা।[২] এটি প্রাথমিকভাবে টেলিভিশন লাইসেন্স ফি এর মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়। যদিও এটি অনেক পুরষ্কারপ্রাপ্ত অনুষ্ঠানসমূহ প্রযোজনা করেছে, এটি প্রায়শই সরকারের মুখপত্র এবং তাদের মানসম্পন্ন অনুষ্ঠানসমূহের অভাব বলে অভিযোগ করা হয়েছে। উভয় বাংলাদেশ টেলিভিশনের সদর দপ্তর এবং প্রশাসনিক ভবন ঢাকার রামপুরা থানায় অবস্থিত।[৩]
১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকের পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ছিল বাংলাদেশের একমাত্র টেলিভিশন চ্যানেল, এবং এটি প্রচুর জনপ্রিয় একটি টেলিভিশন চ্যানেল ছিল। বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের উত্থানের পর, বিশেষত বেশিরভাগ সময় এটিকে সরকারি প্রচারযন্ত্র হিসেবে ব্যবহারের কারণে, বিটিভির জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়।[৪]
বাংলাদেশ টেলিভিশন দুটি পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্র এবং ১৪টি রিলে কেন্দ্র চালায়। ২০০৪ সালে এটি স্যাটেলাইটে বিটিভি ওয়ার্ল্ড এর উদ্বোধন করে। এটি এশিয়া প্যাসিফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন এবং এশিয়াভিশনের সদস্য, এবং ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের সহযোগী সদস্য।[৫][৬] স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিটিভির সিগনাল এশিয়া এবং ইউরোপ ও আফ্রিকার কিছু অংশে গ্রহণ করা যায়। বাংলাদেশ টেলিভিশন সংসদীয় টেলিভিশন চ্যানেল, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন, এরও ভ্রাতৃপ্রতিম। বিটিভি ওয়ার্ল্ডকেও বিটিভি ঢাকার তুলনায় ভিন্ন সময়সূচী সহ একটি স্বাধীন বিনোদন টেলিভিশন চ্যানেলে রূপান্তরিত করা হবে।[৭]
আর অনুষ্ঠান বিভাগের প্রথম ব্যবস্থাপক ছিলেন কলিম শরাফী। সেসময় টেলিভিশনে প্রযুক্তির অভাবের কারণে সব অনুষ্ঠান লাইভ অর্থাৎ সরাসরি সম্প্রচার করা হতো এবং চ্যানেল ছিল একটি, চলতো সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত। টিভির সম্প্রচার সীমা ছিল ঢাকা শহরের চারপাশে দশ মাইল, তবে এর বাইরে ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, ফরিদপুর থেকেও তা দেখা যেত। ঢাকা টেলিভিশনের স্থাপনা তৈরি, পুরোপুরি চালু করা ও কিছুদিন দেখাশোনা করার দায়িত্বে ছিল জাপানি টেলিভিশন কোম্পানি এনএইচকে।
১৯৭১ সালের ৪ মার্চে পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্র অনানুষ্ঠানিকভাবে "ঢাকা টেলিভিশন" নামে পরিবর্তন হয়, এবং টেলিভিশন শিল্পীরা পাকিস্তান টেলিভিশনের জন্য কাজ করা প্রত্যাখ্যান করেছে, যেহেতু পূর্ব পাকিস্তানিরা স্বায়ত্তশাসনের জন্য সংগ্রাম করেছে।[৮] ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চে যখন বাংলাদেশ একটি মুক্ত রাষ্ট্র ঘোষিত হয়, টেলিভিশন বাংলাদেশের পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত, আমার সোনার বাংলা, দেখানো শুরু করে, পাকিস্তানের পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তে।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে, পাকিস্তানের পতাকা টেলিভিশনে প্রদর্শন না করলে বাঙালি শ্রমিকদের টেলিভিশন কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া হবে। কিন্তু ২৩ মার্চের রাতে ঢাকা টেলিভিশনে বাংলাদেশপন্থী গান প্রচারিত হয়। ফলস্বরূপ, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী ডিআইটি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয়, কিন্তু মুক্তিবাহিনী দ্বারা আক্রমণ করা হয়। সেই মুহুর্তে, মানুষ তার টেলিভিশন শিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে যোগ দেয়।[৯][১০]
স্বাধীনতা এবং সরকারি একচেটিয়া (১৯৭১-১৯৯৭)
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্র বাংলাদেশ টেলিভিশন নামে পরিবর্তন হয়, এবং পিটিভির সাথে সম্পর্ক হারিয়েছে। পরের সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত কর্পোরেশন থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর হয়।[৬] ১৯৭৪ সালে নেটওয়ার্কটি এটির প্রথম উপকেন্দ্র নাটোরে উদ্বোধন করে।[১১] ১৯৭৫ সালে এটির দপ্তর এবং স্টুডিও ঢাকার রামপুরায় নতুনভাবে নির্মিত সদর দপ্তরে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৭ সালে ফজলে লোহানী বিবিসির দ্য ডেভিড ফ্রস্ট শো এর উপর ভিত্তি করে বিটিভির জন্য একটি নতুন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান তৈরি করেন, যদি কিছু মনে না করেন, যা উনার মৃত্যুর ঠিক পরেই শেষ হয়।[১২]
১৯৮০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন রঙিন সম্প্রচার শুরু করে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম আনুষ্ঠানিক পূর্ণকাল রঙিন টেলিভিশন সম্প্রচারের চিহ্নিত করেছে।[৬][১১] ১৯৮৫ সাল হিসেবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে টেলিভিশন সেট বিটিভির টেরেস্ট্রিয়াল সিগনাল গ্রহণ করতে পারে, সাতক্ষীরা উপকেন্দ্রের মাধ্যমে। এটি ১৯৯২ সালে বিবিসি এবং সিএনএনের সম্প্রচার রিলে করে শুরু করে, যা বাংলাদেশে বিদেশী টেলিভিশনের প্রথম উপস্থিতির চিহ্নিত করেছে।[১৩] ১৯৯৪ সালে বিটিভি এটির প্রথম প্যাকেজ নাটক, আতিকুল হক চৌধুরী পরিচালিত প্রাচীর পেরিয়ে, প্রচারিত করে।[১৪] ১৯৯৫ সালের ১৯ ডিসেম্বরে নেটওয়ার্কটি এটির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্বোধন করে।[১৫]
১৯৮০ থেকে ১৯৯০ দশকের পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন অনেক গুলো জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান তৈরি করেছে, যেমন এইসব দিনরাত্রি, বহুব্রীহি, অয়োময়, ইত্যাদি, কোথাও কেউ নেই, আজ রবিবার, এবং আরও কিছু। এটিতে আলিফ লায়লা এবং দ্য সোর্ড অব টিপু সুলতান এর মতো বিদেশি অনুষ্ঠানও প্রচারিত হতো, এমনকি অনেক জনপ্রিয় কার্টুনও দেখানো হতো যেগুলো নেটওয়ার্কের সাফল্যে সাহায্য করেছে।[১৬] ১৯৯৭ সালের মেতে বাংলাদেশ টেলিভিশন এটির সেই সালে ঘটিত ঘূর্ণিঝড়ের উপরের কভারেজের জন্যে একটি এশিয়াভিশন অ্যাওয়ার্ড জিতেছে।[১৭]
বিটিভির পতন এবং বেসরকারি টেলিভিশনের উত্থান (১৯৯৭-২০১৮)
বাংলাদেশ টেলিভিশন বাংলাদেশের একমাত্র টেলিভিশন সম্প্রচারক ছিল[১৮] ১৯৯৭ সালে স্যাটেলাইট টেলিভিশনে এটিএন বাংলার উদ্বোধন এবং ২০০০ সালে টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনে একুশে টেলিভিশনের উদ্বোধনের পর্যন্ত। বছর ধরে প্রতিযোগিতা বাড়ার সাথে সাথে বিটিভি হ্রাস পায় এবং স্থবির হয়ে পড়ে এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলি স্থানীয়দের মধ্যে আরও জনপ্রিয়তা লাভ করে। বাংলাদেশ কেবল টিভি ভিউয়ারস ফরাম দ্বারা একটি ২০১৭ সালের জরিপে দেখায় যে কেবল টেলিভিশন দর্শকের মধ্যে শুধু ২৫% থেকে ৩০% স্থানীয় টেলিভিশন দেখে, এর মধ্যে বিটিভি সবচেয়ে কম দর্শকসংখ্যা পায়, এবং বেশিরভাগ গ্রামীণ দর্শকরা দেখেছিলেন, যাদের কাছে শুধুমাত্র টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন উপলব্ধি আছে।[১৯] বিটিভির মহাপরিচালক, হারুন-অর-রশীদ, একবার বলেছিলেন যদি বিটিভি পরিবর্তন না করে এটি 'অপ্রচলিত' হয়ে যাবে।[১৮]
কিন্তু ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন চৌদ্দটি উপকেন্দ্র স্থাপিত করেছে, যেগুলো দেশের ৯৩% এলাকায় পৌঁছে যায়।[১১] ২০০৪ সালে বিটিভি ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিভিশন আন্তর্জাতিক স্যাটেলাইট সম্প্রচার শুরু করেছে। ২০০৭ উত্তর ভারত মহাসাগরের ঘূর্ণিঝড় মৌসুম দ্বারা ঘটিত বিদ্যুত বিচ্ছিন্নের কারণে ২০০৭ সালের ১৭ নভেম্বরে বিটিভি তিন ঘণ্টার কাছাকাছির জন্য সম্প্রচার বন্ধ রাখে।[২০] ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারিতে এটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু করে, যা জাতীয় সংসদ ভবনের থেকে সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে।[২১] সেই দিনে বাংলাদেশ টেলিভিশন ডিজিটাল টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনে সম্প্রচার শুরু করে।[৬] ২০১৪ সালের জুনে বিটিভির একটি অব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সি বাতিল করা হয়েছে যেহেতু এটি বাংলাদেশে মোবাইল অপারেটরদের ৩জি সার্ভিস ব্যাহত করেছে।[২২] ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ টেলিভিশন দেশের প্রথম টেলিভিশন জাদুঘর উদ্বোধন করেছে।[২৩]
বিটিভির নবজাগরণ (২০১৮-বর্তমান)
২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন এটির জনপ্রিয়তা এবং প্রাসঙ্গিকতা আবার ফিরে পায়, নেটওয়ার্কটি এটির অনুষ্ঠানসমূহ সংশোধন করার পর, যার ফলে দর্শকসংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করে সরকার। তথ্যমন্ত্রীহাসানুল হক ইনু বললেন দেশের ৮৩ শতাংশ বিটিভি দেখেছে সেই সালে।[২৪]মাছরাঙ্গা টিভি এবং নাগরিকের সাথে বিটিভি বাংলাদেশে ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপ প্রচারিত করার সম্প্রচারক ছিল।[২৫]
২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এটি ভারতের ডিডি ফ্রি ডিশে সম্প্রচার শুরু করেছে।[২৬][২৭] ২০১৯ সালে বিটিভির ৫৫তম বার্ষিকী উদযাপন করার জন্য বেসরকারি চ্যানেল আই এটির সদর দপ্তরে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজিত করে, এবং সেটি উভয় নেটওয়ার্কে সম্প্রচার হয়।[২৮] বিটিভি ভবনে বিটিভি ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারিতে দুটি নতুন ডিজিটাল স্টুডিও উদ্বোধন করেছে, নেটওয়ার্কের রেনেসাঁর অংশে।[২৯]
কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারীর সময় বিটিভি, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাথে, মাধ্যমিক ছাত্রদের জন্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা শুরু করে।[৩০] এটি এটির কিছু পুরোনো অনুষ্ঠানের পুনঃপ্রচারও দেখায়।[৩১] বিটিভি ছাত্রদের জন্য দূরবর্তী শিক্ষাকে আরও কার্যকর করার জন্য একটি শিক্ষামূলক চ্যানেল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে, যা ২০০৮ সালেও পূর্বের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।[৩২][৩৩]
২০২১ সালের ১৩ মার্চে বাংলাদেশ টেলিভিশন আরও ছয়টি আঞ্চলিক টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপন করার ঘোষণা করে, যা ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে।[৬][৩৪] ২০২১ সালের মেতে নেটওয়ার্কটি এটির অ্যাপ চালু করে, যেটির মধ্যে চারটি চ্যানেল, বিটিভি ঢাকা, বিটিভি চট্টগ্রাম, বিটিভি ওয়ার্ল্ড, এবং সংসদ টেলিভিশন, দেখা যাবে।[৩৫] ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বিটিভির খুলনা কেন্দ্রকে উপকেন্দ্রের থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রে রূপান্তর করার ঘোষণা করেন।[৩৬] ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের এইচডি সম্প্রচার শুরু হয়।[৩৭][৩৮]
বিটিভি ঢাকা - বাংলাদেশ টেলিভিশনের মূল কেন্দ্র, স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনের নামে। এটি 'বিটিভি' নামে পরিচিত। বিটিভি ঢাকার সম্প্রচার স্যাটেলাইটে বিটিভি ওয়ার্ল্ডৈর মাধ্যমে সারাদেশে রিলে করা হয়।
বিটিভি চট্টগ্রাম - বাংলাদেশ টেলিভিশনের দ্বিতীয় এবং একমাত্র আঞ্চলিক কেন্দ্র, স্থাপিত হয় ১৯৯৬ সালে। স্যাটেলাইটে যাত্রা শুরু করে ২০১৬ সালে এবং ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বরে এটির ২৪ ঘন্টা সম্প্রচার উদ্বোধন করা হয়।
ফজলে লোহানীর উপস্থাপিত ম্যাগাজিন-জাতীয় অনুষ্ঠান। সেসময় করাচি টেলিভিশনে গর তু বুরা না মানে নামে একটি অনুষ্ঠান চলছিল, এই অনুষ্ঠানটি সেটির সাথে খানিকটা সাদৃশ্যপূর্ণ। কিছুদিন পর লোহানী লন্ডনে চলে যান এবং অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯৮২ সালের দিকে দেশে ফিরে তিনি অনুষ্ঠানটি পাক্ষিকভাবে আবার শুরু করেন। এবার অনুষ্ঠানটিতে বিনোদনের অংশে মূল কাজ করেন হানিফ সংকেত, লোহানী থাকেন প্রতিবেদন অংশে। ১৯৮৫ সালে লোহানীর মৃত্যুর পর অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদেরই আরেকটি ধাঁধার অনুষ্ঠান। হারজিতের চেয়ে বড় পরিসরে এটি আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই সেসময় নবপরিচিত পপসংগীতকে (এখন ব্যান্ডগান) প্রথম জাতীয় কোনো গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের গাননির্ভর ধাঁধাগুলোয় অংশ নেন পপশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, ফিরোজ সাঁই, ফকির আলমগীর ও পিলু মমতাজ। অনুষ্ঠানটির শেষ পর্বে পপশিল্পী আজম খানও উপস্থিত হন এবং তার নতুন গান আলাল ও দুলাল গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানটির জন্য সায়ীদ ১৯৭৭ সালে শ্রেষ্ঠ টিভি উপস্থাপকের পুরস্কার লাভ করেন।
আপনার ডাক্তার (১৯৭০ দশক)
খ্যাতিমান ডাক্তার একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি) চিকিৎসাবিষয়ক এই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করতেন এবং এর জন্য ১৯৭৮ সালে শ্রেষ্ঠ টিভি উপস্থাপকের পুরস্কার লাভ করেন।
আনন্দমেলা (১৯৭৫-বর্তমান)
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই "ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান" নামক ধারাটি সৃষ্টি করেন। শুরুতে ১৯৭৫ সালে ঈদ উপলক্ষে এই বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান তৈরি করা হয়, প্রথম ৫ বছরে এর ১০টি পর্ব প্রচারিত হয়, যার আটটি সায়ীদ করেছিলেন; পরবর্তীতে অন্য অনেকে এটি উপস্থাপনা করে চলেছেন। বিটিভি এটিকে ঈদের মূল অনুষ্ঠান হিসেবেই প্রচার করে থাকে।
চতুরঙ্গ (১৯৭৮-৭৯)
আনন্দমেলার পর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি শুরু করেন। নাচ, গান, নাটিকা, ধাঁধা সবকিছু মিলিয়ে নিজস্ব উপস্থাপনায় তিনি অনুষ্ঠানটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই জাদুকর জুয়েল আইচ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
হানিফ সংকেতের নির্মিত ও উপস্থাপিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। এটি প্রথমে পাক্ষিক, পরে মাসিক এবং এখন ত্রৈমাসিকভাবে প্রচারিত হয়; তবে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ পর্বের আয়োজন করা হয়।
শুভেচ্ছা (১৯৯৭?)
আবদুন নূর তুষার এই বিনোদনমূলক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি প্রচার করেন।
মুস্তফা মনোয়ারের এই অনুষ্ঠানটি ছিল মূলত শিশুশিল্পীদের নিয়ে।
বিটিভি জাতীয় বিতর্ক
মাতৃভাষা
জনপ্রিয় নাটক
মুখরা রমণী বশীকরণ (১৯৬০ দশক)
উইলিয়াম শেক্সপিয়রের লেখা নাটক টেমিং অফ দ্য শ্রুর অনুবাদ করেন মুনীর চৌধুরী এবং মুস্তাফা মনোয়ার সেটি নিয়ে নাটক পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন। নাটকটিতে মূল অভিনেতা ও অভিনেত্রী ছিলেন গোলাম মুস্তফা ও আজমীরী জামান (রেশমা)।
এনালগ টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার: সারাদেশের সকল ট্রান্সমিশন কেন্দ্র থেকে
ডিজিটাল টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার: শুধুমাত্র ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা ট্রান্সমিশন কেন্দ্র থেকে
স্যাটেলাইট সম্প্রচার: দেশব্যাপী ও দেশের বাইরে।
ইন্টারনেট সম্প্রচার: btvlive.gov.bd অফিশিয়াল সম্প্রচার মাধ্যম এ