নলিনীবালা দেবী (অসমীয়া: নলিনীবালা দেৱী) অসমের এজকন কবি ও লেখিকা।[১] তিনি অসম সাহিত্য সভার প্রথম সভাপতি ছিলেন। তিনি কোন ধরনের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ না করেই অসাধরন পাণ্ডিত্যের পরিচয় দিয়েছেন। অসমীয়া কাব্য সাহিত্যে অতিন্দ্রিয়বাদী কবি বা রহস্যবাদী কবি নামেও তিনি পরিচিত। তিনি পিতার সহিত ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
জন্ম ও শিক্ষা
১৮৯৮ সনের ২৩ মার্চ তারিখে অসমেরবরপেটায় নলিনীবালা দেবীর জন্ম হয়। তার পিতার নাম নবীন চন্দ্র বরদলৈ ও মাতার নাম হেমন্ত কুমারী। সেই সময়ে অসমে মেয়েদের স্কুলের শিক্ষা প্রাপ্তের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হত না। তাই তিনি গোপাল দে নামক এক ব্যক্তির তত্বাবধানে গৃহে শিক্ষা গ্রহণ করেন। গৃহেই তিনি সংস্কৃত, সাহিত্য, গীত, ছবি ইত্যাদি নানান দিকে শিক্ষা লাভ করেন ।
বিবাহ
১৯০৯ সনে মাত্র ১১ বৎসর বয়সে শিবসাগরের জীবেশ্বর চাংকাকতী নামক ব্যক্তির সহিত তার বিবাহ হয়। কিন্তু তার ২১ বৎসর বয়সে স্বামীর অকাল মৃত্যু হয় ফলে তিনি নিজ পিতৃগৃহে ফিরে আসেন।[১]
সাহিত্যিক অবদান
স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর তিনি পাঁচটি সন্তান নিয়ে অশেষ কষ্টে দিনযাপন করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই তার দুই পুত্রের অকাল মৃত্যু হয়। স্বামী ও দুই পুত্রের অকাল মৃত্যুর বেদনায় জর্জরিত হয়ে তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ রুপে ঈশ্বরকে অর্পণ করেন। সেই সময়ে তিনি বেদ, গীতা, উপনিষদ ও ভাগবত অধ্যয়নে মনোনিবেশ করেন। শৈশবে অঙ্কুরিত সুপ্ত প্রতিভা সেই সময়ে জাগ্রত হয়। বিবাহের পর শ্বশুর তাকে একটি স্বর্ন কলম উপহার দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি কলমটির মান রাখেন। পিতার উপদেশ ও অনুপ্রেরণা তাকে জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করেছিল। মাত্র দশ বৎসর বয়দে পিতা নামক কবিতার মাধ্যমে কবি জীবনে প্রবেশ করেন।[১]
তাছাড়াও ১৯৮৬ সনে গুয়াহাটিরকটন কলেজের মহিলা হোষ্টেলের নাম পদ্মশ্রী নলিনীবালা দেবী নামে নামকরণ করা হয়।[৬]৷
অন্যান্য
১৯৫৪ সনে তিনি অসম সাহিত্য সভার সভানেত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হন।[৭] অসম সাহিত্য সভায় এই পদ লাভ করা তিনি প্রথম মহিলা। তাছাও তিনি অসম সংঘ ও প্রাদেশিক মহিলা সমিতি নঁগাও অধিবেশনের সভানেত্রী ছিলেন। তিনি সদৌ অসম মইনা পারিজাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠাপক।[১]