যাদব পায়েং |
---|
যাদব পায়েং |
জন্ম | যাদব পায়েং ১৯৬৩
|
---|
অন্যান্য নাম | মুলাই |
---|
পেশা | অরণ্য নির্মাতা |
---|
কর্মজীবন | ১৯৮০ সন থেকে বর্তমান পর্যন্ত |
---|
দাম্পত্য সঙ্গী | বিনীতা পায়েং |
---|
পুরস্কার | পদ্মশ্রী (২০১৫) |
---|
যাদব পায়েং (অসমীয়া: যাদৱ পায়েং) অসমের একজন প্রকৃতিপ্রেমী।[১] তার অপর নাম মুলাই। তিনি অসমের যোরহাট জেলার কলিকামুখের নিকটবর্তী ব্রহ্মপুত্রের ঔনামুখ চাপরি নামক স্থানের এক বৃহৎ এলাকায় গাছ রোপণ করে এলাকাটিকে অরণ্যে রূপান্তরিত করেন। এই ৫৫০ হেক্টর বিস্তৃত অঞ্চলটি তার সম্মানার্থে মুলাই কাঠনি নামে নামকরণ করা হয়েছে। ঔনামুখ চাপরি প্রকৃতপক্ষে ব্রহ্মপুত্র নদীর একটি বৃহৎ দ্বীপ। এর আয়তন হচ্ছে দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ কিমি ও প্রস্থ প্রায় ১৫ কিমি। ১৯৮০ সনে তিনি অরণ্য সৃষ্টির অভিযান আরম্ভ করেন। বর্ত্তমান অরণ্যটিতে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। এখানকার বণ্যপ্রাণীর মধ্যে গণ্ডার, চিতাবাঘ, হরিন ও বিভিন্ন ধরনের পরিযায়ী পাখি ইত্যাদি প্রধান। নতুন দিল্লিতে অবস্থিত জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ফরেষ্ট মেন অফ ইণ্ডিয়া (ভারতের বন মানব) উপাধিতে বিভূষিত করেছে।
কর্মজীবন
১৯৭৯ সনে মাত্র ষোল বৎসর বয়সে যাদব পায়েং বন্যায় মৃত্যু হওয়া অসংখ্য সাপের মৃত্যু দেখে ব্যথিত হন। ১৯৮০ গোলাঘাট বন বিভাগে ককিলামুখ থেকে ৫কি.মি. দূরত্বে ঔনামুখ চাপরি নামক স্থানে ২০০ হেক্টর জমিতে বৃক্ষরোপণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পাঁচ বৎসরে সম্পূর্ণ হওয়া এই প্রকল্পটিতে যাদব ছিলেন একজন অগ্রণী কর্মচারী। তিনিই অধিক বৃক্ষ রোপণ করেন। প্রকল্প শেষ হওয়ার পর অন্যান্য কর্মচারী চলে গেলও যাদব বৃক্ষ যত্নের কার্যে মনোনিবেশ করেন।
বর্ত্তমান মুলাই কাঠনিবারী নামে পরিচিত অরণ্যটিতে চিতাবাঘ, অসমের বিখ্যাত এক খর্গী গণ্ডার, ১০০ অধিক হরিণ, বানর ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আছে। এখানে অবস্থিত গাছের মধ্যে বাঁশ, অর্জুন গাছ, সেগুন ও কৃষ্ণচূড়া ইত্যাদি প্রধান। ৫৫০হেক্টর অঞ্চল জুড়ে শুধু বাঁশ গাছ আছে। [২]
প্রায় ১০০টি হাতির এক দল প্রতিবৎসর অরণ্যটিতে আসে ও প্রায় ৬মাস এখানেই থাকে। বিগত কয়েক বৎসরে হাতির দলটি ১০ বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। ২০০৮ সনে হাতির দলটি অরণ্য থেকে প্রায় ১.৫কিঃমিঃ দূরত্বে ঔনাচাপরি নামক স্থানের সম্পত্তির অনিষ্ট করে। হাতির সন্ধান করার সময় বনবিভাগে তথ্যগুলি জানতে সক্ষম হয়।
কয়েক বৎসর পূর্বে চোরাং শিকারী অরণ্যে স্থিত গণ্ডার হত্যা করার প্রচেষ্টা করে। যাদব এই কথা জানতে পেরে বনবিভাগকে অবগত করায়। বনবিভাগে চোরাং শিকারীর বিভিন্ন অস্ত্র জব্দ করে।
যাদব পায়েং অরণ্যটি সঠিকভাবে দেখাশোনা করা ও অন্য স্থানে এইধরনের কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ব্রহ্মপুত্র নদীর অন্যান্য দ্বীপে বৃক্ষ রোপণ করা তার অন্যতম লক্ষ্য।
ব্যক্তিগত জীবন
যাদব তার পত্নী বিনীতা পায়েং ও দুইটি পুত্র এবং এক কন্যার সহিত অরণ্যে বসবাস করেন। দুগ্ধ বিক্রি করা তার একমাত্র জীবিকা। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন যে তার ১০০টি গরু ও মহিষ বাঘে বধ করেছে। কিন্তু এরজন্য তিনি মানুষকে দোষারোপ করেন।
সম্মান ও স্বীকৃতি
২০১২ সনে আয়োজিত ধরিত্রী দিবসে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ যাদব পায়েংকে সম্মান জানানোর জন্য একটি সভার আয়োজন করে। উক্তদিনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পাঁচটি বৃক্ষ রোপণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে তিনি তার অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে তাকে ফরেস্ট ম্যান অফ ইন্ডিয়া আখ্যা দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে ভারত সরকার তাঁকে চতুর্থ বেসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করে।
তথ্যসূত্র
অসমের প্রসিদ্ধ ব্যক্তি |
---|
আধ্যাত্মিক | |
---|
ইতিহাস | |
---|
গণনায়ক | |
---|
সাহিত্যিক | |
---|
ভাষাবিদ | |
---|
সমাজ সেবক | |
---|
কণ্ঠশিল্পী | |
---|
নাট্যকার | |
---|
অভিনয় শিল্পী | |
---|
চলচ্চিত্র নির্মাতা নির্দেশক | |
---|
খেলোয়াড় | |
---|
শিক্ষাবিদ | |
---|
প্রকৃতিবিদ | |
---|
বিজ্ঞানী | |
---|
স্বাধীনতা সংগ্রামী | |
---|