দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল যা ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চিকিৎসা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত একটি মেডিকেল কলেজ।[১]
ইতিহাস
১৯৭৮-৭৯ সালে বাংলাদেশ সরকার দেশে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বগুড়া, কুমিল্লা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, খুলনা, নোয়াখালীতে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৮০-৮১ সালে কুমিল্লা, খুলনা, পাবনা এবং আইপিএমজিআর (ঢাকা) - এ সেখানকার মেডিকেল কলেজগুলোর কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে সেই মেডিকেল কলেজগুলোর কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায় এবং শিক্ষার্থীদের দেশে বিদ্যমান আটটি মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। আবার ১৯৯১-৯২ সালে সরকার আবারও আরও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এবং আরও ৫টি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেজন্য উক্ত বছরে সরকার দিনাজপুর, বগুড়া, খুলনা, ফরিদপুর এবং কুমিল্লাতে প্রতিটিতে ৫০ জন ছাত্র ভর্তি করানোর মাধ্যমে আরোও ৫টি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে।[২]
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ ১৯৯২ সালের ১৬ই আগস্ট দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ নামে কার্যক্রম শুরু করে এবং ১লা জুলাই ২০০০ সালে দিনাজপুর শহরে আনন্দ সাগর এলাকায় নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ৭ই মার্চ ২০১০ সালে কলেজের নিজস্ব ভবনে ১৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তার কার্যক্রম স্থানান্তর করে।[২]
২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার কলেজটিকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ থেকে পরিবর্তন করে এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর নামকরণ করে।
২০২৪-এর ৩০ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের (চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখা) এর প্রজ্ঞাপনের দ্বারা কলেজটির নাম পুনরায় "দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ" হয়।[৩]
শিক্ষাঙ্গন
মসজিদ
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের খেলার মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে দুটি তলা ভবন বিশিষ্ট মসজিদ অবস্থিত।
আবাসন সুবিধা
ছেলেদের হলের নাম ডাঃ মোঃ ইউসুফ আলী হল। এটি খেলার মাঠের পাশে দুটি চারতলা বিশিষ্ট ভবন।
মেয়েদের হলের নাম ডাঃ মোঃ তৈয়বুর রহমান হল। এটি তিনটি চারতলা বিশিষ্ট ভবন। এটিতে পূর্ব ভাগ, পশ্চিম ভাগ এবং মাঝের ভাগ নামে তিনটি অংশ রয়েছে।
ইন্টার্ন ডাক্তারদের জন্য দুটি চারতলা বিশিষ্ট ভবন রয়েছে। যার মধ্যে একটি ছেলেদের জন্য এবং একটি মেয়েদের জন্য। মূল হাসপাতালের পিছনে আধুনিক সুবিধাসহ ভবন।
নার্সিং ইনস্টিটিউটের কাছে প্রশিক্ষণার্থী নার্সদের জন্য দুটি হোস্টেল রয়েছে। শিক্ষক, ডাক্তার, নার্স এবং অতিথিদের জন্য অনেকগুলো ভবন রয়েছে।
দিনাজপুর নার্সিং কলেজ
হাসপাতালের সাথে একটি আধুনিক সুবিধা বিশিষ্ট নার্সিং কলেজ রয়েছে। এটি তরুণ নার্সদের প্রশিক্ষণ দেয়। হাসপাতালের কাছে নার্সদের জন্য হোস্টেলও রয়েছে।
হাসপাতাল
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম হাসপাতাল। এটি একটি ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। হাসপাতালে ১৭ টি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে। যার মধ্যে ১২ টি সাধারণ এবং দুটি জরুরি অপারেশন থিয়েটার। হাসপাতালটি ক্যান্সার, ইউরোলজি এবং রেডিওথেরাপিসহ কয়েকটি নতুন বিভাগ চালু করেছে। হাসপাতাল ভবনে একটি ভূগর্ভস্থ গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা রয়েছে। হাসপাতালে ১০০০ জনেরও বেশি রোগীর সেবা দিবার ক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে সরকার এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ শয্যার বার্ন ইউনিট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পিজিটি প্রশিক্ষণও এই হাসপাতালে দেওয়া হয়।