নলিনীকান্তের আদি নিবাস ছিল নদীয়া জেলার শিকারপুরে। তিনি মুর্শিদাবাদের কাঞ্চনতলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবার নাম ভুবনমোহন বাগচী। তিনি বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে লেখাপড়া করেন। পরে পাটনার বাঁকিপুর কলেজ এবং ভাগলপুর কলেজে পড়েন।[১]
বিপ্লবী কর্মকাণ্ড
বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ পড়াকালীন তিনি বিপ্লবী দলে যোগ দেন। তিনি পুলিশের দৃষ্টি এড়ানোর জন্য পাটনার বাঁকিপুর কলেজ এবং ভাগলপুর কলেজে পড়েন। তাকে আই. এ. পাস করার পর আত্মগোপন করতে হয়। তিনি দানাপুরের সৈন্যদের মধ্যে বিদ্রোহ ঘটানোর চেষ্টা করেন। তিনি দলের নির্দেশে গৌহাটীর আটগাও গোপন আশ্রয়ে আত্মগোপন করেন। এখানে ১২ জানুয়ারি (মতান্তরে ৭ জানুয়ারি) ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে পুলিশের সাথে সশস্ত্র যুদ্ধের পর তিনি এবং সতীশচন্দ্র পাকড়াশী পুলিশের বেষ্টনী পার হয়ে পাহাড় এলাকায় চলে যান। নবগ্রহ পাহাড়েও তিনি আর একটি আক্রমণ প্রতিহত করেন। সেখানে থেকে পরে ৬ দিন অনাহার, অনিদ্রায় পায়ে হেঁটে মুসলিম ছদ্মবেশে লামডিং স্টেশনে এসে পৌঁছেন। পরবর্তীতে কোনো রকমে তিনি বসন্ত রোগাক্রান্ত অবস্থায় কলকাতায় আসেন। তার একজন বিপ্লবী বন্ধু তাকে কলকাতা ময়দানে পড়ে থাকতে দেখে তার শুশ্রূষা করে তাকে সারিয়ে তোলেন। এরপরে তিনি ঢাকায় যান এবং সেখানকার কলতাবাজারের বিপ্লবী ঘাঁটি পুলিশ ১৫ জুন, ১৯১৮ তারিখে ঘিরে ফেললে তিনি গুলি বিনিময়ের ফলে মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে গ্রেপ্তার হন। তার সঙ্গী তারিণীপ্রসন্ন মজুমদার সেখানেই মারা যান। নলিনীকান্ত সেই দিনই ঢাকা জেলে মারা যান। মৃত্যুর পূর্বে পুলিসের অত্যাচার সত্ত্বেও তারা কেউ নিজেদের নাম পর্যন্ত বলেননি। এই লড়াইতে একজন পুলিশ নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছিল। তার আশ্রয়দাতা চৈতন্য দে-র ১০ বছর কারাদণ্ড হয়।[১][২]
স্মৃতি
তার পূণ্য স্মৃতিতে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর শহরে একটি রাস্তা ও বহরমপুর - জলংগী রাজ্য সড়কের ওপর একটি সেতু নামাঙ্কিত রয়েছে।
তথ্যসূত্র
↑ কখসুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৩৪৭, আইএসবিএন৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬