এমআরটি লাইন ১ হচ্ছে নির্মাণাধীন ঢাকা মেট্রোরেলের একটি রেলপথ। এটি ঢাকা মেট্রোরেলের দ্বিতীয় রেলপথ যা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) দ্বারা পরিচালিত হবে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে এবং ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইতিহাস
২০০৫ সালে বিশ্ব ব্যাংকবাংলাদেশ সরকারকে ঢাকায় একটি গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। একই বছর মার্কিন পরামর্শক ফার্ম লুই বার্জার গ্রুপ ঢাকার জন্য একটি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা তৈরি করে।[১] বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় এই পরিকল্পনাটি তৈরি করা হয় যাতে ঢাকায় পাঁচটি এমআরটি লাইন নির্মাণের প্রস্তাবনা ছিল।[২] এই পাঁচটি মেট্রো লাইন ছিল এমআরটি লাইন ১, এমআরটি লাইন ২, এমআরটি লাইন ৪, এমআরটি লাইন ৫ ও এমআরটি লাইন ৬। এমআরটি লাইন ১-এর জন্য বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছিল ৳৫২,৫৬১.৪৩ কোটি যার মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা ৭৫% অর্থায়ন করতে সম্মত হয়। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই রেলপথটির নির্মাণ সমাপ্তির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।[৩] ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার রেলপথটি নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে।[৪] কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার সাথে সাথে প্রকল্পের অগ্রগতি থমকে যায়।[৫] ২০২২ সালের ১৫ জুন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক এমআরটি লাইন ১-এর লাইসেন্স ডিএমটিসিএলের কাছে হস্তান্তর করা হয়।[৬] ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর সরকার এমআরটি লাইন ১-এর পরামর্শক হিসাবে নিপ্পন কোয়েই বাংলাদেশ লিমিটেডকে নিয়োগ করে।[৭] একই বছর পিতলগঞ্জে প্রকল্পের প্রস্তাবিত একমাত্র ডিপোর ভূমি উন্নয়ন কাজের জন্য টোকিও কনস্ট্রাকশন ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[৪] ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে এমআরটি লাইন ৬-এর উদ্বোধনের দিন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে ২০২৩ সালের প্রথম মাসে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব।[৮] এটির নির্মাণ প্রাথমিকভাবে ২৬ জানুয়ারি ২০২৩-এ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা ২ ফেব্রুয়ারিতে পরিবর্তন করা হয়।[৯] অবশেষে, ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমআরটি লাইন ১-এর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।[১০] ২২ মার্চ ২০২৩ সালে প্রকাশিত ডিএমটিসিএলের বাস্তবায়ন কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকের তথ্য অনুযায়ী অধিগ্রহণের জন্য ভূমির পরিমাণ ৩৯.১৭ একর বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হওয়ায় ও জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাইনটির নির্মাণ ব্যয় ২,৩১৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেতে পারে।[১১]
শাখা রেলপথ
বিমানবন্দর রুট
এর দৈর্ঘ্য ১৯.৮৭২ কিমি যা সম্পূর্ণরূপে মাটির নিচে নির্মিত হতে যাচ্ছে। এই রুটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১২টি স্টেশন দিয়ে যাবে।[১২] যাত্রীরা একটি ইন্টারচেঞ্জের মাধ্যমে নতুন বাজার স্টেশন থেকে এমআরটি লাইন ৫-এ স্থানান্তর হতে পারবেন।[১০]
১১.৩৬১ কিলোমিটার বিশিষ্ট এই রুটে ৯টি স্টেশন থাকবে। এই রুট দিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত যাওয়া যাবে। নদ্দা ও নতুন বাজার স্টেশন দুটো মাটির নিচে নির্মাণ করা হবে ও বাকিগুলি উত্তোলিত অবস্থায় নির্মাণ করা হবে। নদ্দা ও নতুন বাজার উভয় স্টেশনেই ইন্টারচেঞ্জ থাকবে।[১২]
↑আব্দুল্লাহ, মামুন (২ সেপ্টেম্বর ২০২১)। "মেট্রোর অন্য লাইন গতিহীন"। দেশ রূপান্তর। ১১ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২৩।