আনিয়েস ভারদা (ফরাসি : [aɲɛsvaʁda]; ৩০ মে ১৯২৮ - ২৯ মার্চ ২০১৯)[১] ছিলেন একজন বেলজিয়ামে জন্মগ্রহণকারী ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক, আলোকচিত্রী ও চিত্রশিল্পী। তার কাজগুলো ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকের প্রভাবশালী ফরাসি নবকল্লোল চলচ্চিত্র আন্দোলনের বিকাশে অগ্রদূত ও কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।[২][৩] তার চলচ্চিত্রগুলো বিভিন্ন পরীক্ষণমূলক কৌশল অবলম্বন করে প্রামাণ্য বাস্তবতাবাদ, নারীবাদী বিষয়াবলি, ও অন্যান্য সামাজিক বিষয়াবলিকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
ভারদা ১৯২৮ সালের ৩০শে মে বেলজিয়ামেরব্রাসেলসের ইক্সেলেসে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মনাম আর্লেত ভারদা। তার পিতা ইউজিন জঁ ভারদা একজন প্রকৌশলী এবং মাতা ক্রিস্তিন (জন্ম পাস্কেত)।[৪] তার পিতা এশিয়া মাইনরের এক গ্রিক বাস্তুচ্যুত পরিবারের সদস্য ছিলেন এবং তার মাতা ফ্রান্সের সেতে জন্মগ্রহণ করেন। আনিয়েস তার পিতামাতার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। ১৮ বছর বয়সে তিনি আইনসিদ্ধভাবে তার নাম পরিবর্তন করে আনিয়েস রাখেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে তিনি তার পরিবারের বাকি সদস্যদের সাথে সেতে একটি নৌকায় থাকতেন। ভারদা লিস এ কলেজ ভিক্তর-দুরুইয়ে পড়াশোনা করেন এবং প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্য ও মনোবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।[৫]
আলোকচিত্র কর্মজীবন
ভারদা জাদুঘরের কিউরেটর হতে চেয়েছিলেন এবং একোল দ্যু লুভরে শিল্পকলার ইতিহাস বিষয়ে অধ্যয়ন করেন,[৫] কিন্তু এর পরিবর্তে তিনি ভোগিরার স্কুল অব ফটোগ্রাফিতে আলোকচিত্র বিষয়ে অধ্যয়ন করার সিদ্ধান্ত নেন।[৬] তিনি লেফট ব্যাংক চলচ্চিত্র ও ফরাসি নবকল্লোলের প্রধান কণ্ঠ হয়ে ওঠার পূর্বে একজন স্থির আলোকচিত্রী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি আলোকচিত্র ও চলচ্চিত্রের ধরনের মধ্যে একটি স্বচ্ছ মিথস্ক্রিয়া ধরে রাখেন, তার ভাষ্য অনুসারে, "আমি আলোকিচত্র তুলি বা আমি চলচ্চিত্র নির্মাণ করি। অথবা আমি চলচ্চিত্রে আলোকচিত্র স্থাপন করি, বা আলোকচিত্রে চলচ্চিত্র স্থাপন করি।"[৭]
ভারদা স্থির আলোকচিত্র মাধ্যমে তার শুরু বিষয়ে বর্ণনা করেন, "আমি সোজাসুজি আলোকচিত্র দিয়ে জীবনধারণ শুরু করি, অর্থ উপার্জনের জন্য আমি পারিবারিক ও বিবাহের আলোকচিত্র তুলতাম। কিন্তু অচিরেই আমি এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম যাকে আমি নাম দিয়েছিলাম "কম্পোজিশন"।[৭] ১৯৫১ সালে তার বন্ধু জঁ ভিলার থিয়েটার ন্যাশনাল পপুলার চালু করেন এবং ভারদাকে প্রাতিষ্ঠানিক আলোকচিত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। সেখানে যোগদানের পূর্বে তিনি থিয়েটার ফেস্টিভাল অব অ্যাভিগননে মঞ্চ আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করতেন।[৫] তিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত দশ বছর থিয়েটার ন্যাশনাল পপুলারে কাজ করেন, এবং এই সময়ে তার খ্যাতি ছড়িয়ে যায় ও এর ফলে তিনি ইউরোপ জুড়ে আলোকচিত্র-সাংবাদিকতার চাকরি পেতে থাকেন।[৬]
ভারদার স্থির আলোকচিত্র তার পরবর্তী কয়েকটি চলচ্চিত্রে প্রভাব ফেলে।[৮] তিনি বলেন, "যখন আমার প্রথম চলচ্চিত্র লা পোয়্যাঁত কুর্ত নির্মাণ করি, আমার কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না, সহকারী হিসেবে কাজ করিনি, কোন চলচ্চিত্র স্কুলেও যায়নি - আমি যা কিছুর দৃশ্যধারণ করতে চেয়েছি তার সবকিছুর আলোকচিত্র তুলেছি, আলোকচিত্রগুলো দৃশ্যধারণের মডেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এবং আমি কেবল আলোকচিত্রের অভিজ্ঞতা থেকেই - বলতে গেলে, কোথায় ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে, কতটুকু দূরত্বে, কোন লেন্স ও কি আলো ব্যবহার করে? চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করি।"
তিনি পরবর্তী কালে আরেকটি উদাহরণ টেনে বলেন:
আমি ১৯৮২ সালে উলিস নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করি, যা ১৯৫৪ সালে আমার তোলা একটি আলোকচিত্রের উপর ভিত্তি করে নির্মিত, যা আমি একই রকম নিম্ন ক্যামেরা দিয়ে নির্মাণ করি, এবং আমি উলিস শুরু করি এই কথা দিয়ে যে, 'আমি ছবিগুলোকে উপর থেকে নিচে দেখতাম।' মাঠে একটি ছাগলের ছবি আছে, অনেকটা নক্ষত্রপঞ্জির মত, এবং এটি আলোকচিত্রটির মূল ছিল। এই ক্যামেরাগুলো দিয়ে আপনি ছবিকে উপর থেকে নিচে ফ্রেম করতে পারেন, তাই আমি ক্যামেরা মধ্য দিয়ে তার মাথা ব্রাসাইকে দেখেছিলাম।[৭]
২০১০ সালে ভারদা নাথালি অবাদিয়া চিত্রশালায় যোগদান করেন।[৯]
চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মজীবন
ভারদার চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মজীবন শুরু হয় ফরাসি নবকল্লোল শুরুর আগে থেকে, কিন্তু তাতে এই আন্দোলনের অনেক উপাদান জড়িত ছিল।[১০] আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করাকালীন ভারদা চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হন, যদিও তিনি বলেন যে তিনি এই মাধ্যম সম্পর্কে অল্পই জানতেন এবং পঁচিশ বছর বয়সে মাত্র বিশটির মত চলচ্চিত্র দেখেছিলেন। তিনি পরবর্তীকালে বলেন যে তিনি তার প্রথম চিত্রনাট্য লিখেছিলেন, "ঠিক যেভাবে একজন ব্যক্তি তার প্রথম বই লিখেন। যখন আমি এটি লেখা শেষ করি, আমি নিজেই এটি নিয়ে ভাবি: আমার এই পাণ্ডুলিপিতে দৃশ্যধারণ করতে হবে, এবং সেজন্য কয়েকজন বন্ধু ও আমি এটি নির্মাণের জন্য একত্রে কাজ করি।" তিনি দেখেন যে চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রক্রিয়া খুবই জটিল কারণ এতে উপন্যাস লেখার মত একই রকম স্বাধীনতা পাওয়া যায় না, যাই হোক তিনি বলেন যে তার কৌশল ছিল সহজাত ও নারীসুলভ। দ্য বিলিভারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে তিনি ঐতিহ্য ও ধ্রুপদী মানদণ্ডকে ছাপিয়ে এমন চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চেয়েছেন যা তার সময়কে ধরতে পারবে (যেমন লা পোয়্যাঁত কুর্ত)।[১১]
লা পোয়্যাঁত কুর্ত (১৯৫৪)
ভারদা আলোকচিত্রশিল্প পছন্দ করতেন, পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রে যেতেও আগ্রহী ছিলেন। ফরাসি জেলে গ্রাম লা পোয়্যাঁত কুর্তে তার এক অসুস্থ্য বন্ধুর জন্য কয়েকদিন ছবি তোলার পর ভারদা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের জন্য চিত্রধারণের সিদ্ধান্ত নেন। এইভাবে ১৯৫৪ সালে একটি মফস্বল শহরে এক অসুখী দম্পতির সম্পর্ক নিয়ে নির্মিত ভারদার প্রথম চলচ্চিত্র লা পোয়্যাঁত কুর্ত (ফরাসি: La Pointe Courte) মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রটি ফরাসি নবকল্লোলের অগ্রদূত হিসেবে বিবেচিত।[১২] এই সময়ে ভারদা তার সরবনের শিক্ষক গাস্তোঁ বাশলারে দর্শনের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। তিনি মূলত তার 'লিমাজিনাতিওঁ দে মাতিয়ের' তত্ত্বে আকৃষ্ট ছিলেন, যে তত্ত্বে বলা হয় বস্তুগত বিশ্বের এক প্রকার মনোবিশ্লেষণের কঠিন উপাদানগুলোতে ব্যক্তিক বৈশিষ্টগুলো পাওয়া যায়। লা পোয়্যাঁত কুর্ত ছবির চরিত্রগুলোর ব্যক্তিক বৈশিষ্টগুলোর দ্বন্দ্বেও এই ধারণা পাওয়া যায়, যা কিছু বস্তু যেমন - কাঠ ও স্টিলের মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করা হয়। চরিত্রের বিমূর্ততার জন্য ভারদা দুজন পেশাদার অভিনয়শিল্পীকে ব্যবহার করেন। তারা হলেন সিলভিয়া মঁফো ও ফিলিপ নোয়ারে, যারা লা পোয়্যাঁত কুর্তের একটি বাড়িতে বসবাস করেন। বাস্তব উপাদানগুলো ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে ছবিটি নয়াবাস্তববাদ দ্বারা প্রভাবিত নান্দনিক প্রামাণ্যচিত্রে রূপ নেয়। ভারদা তার চলচ্চিত্রে এই ধরনের কল্পনা-আশ্রিত ও প্রামাণ্যচিত্রের উপাদানের সমন্বয় ব্যবহার করতে থাকেন।[১৩]
চলচ্চিত্রটি সম্পাদনা করেন ভারদার বন্ধু ও সমকালীন বামপন্থী চলচ্চিত্র নির্মাতা আল্যাঁ রেনে। রেনে এই চলচ্চিত্রে কাজ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন কারণ তিনি নিজেও এরকম একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন এবং এর গঠন তার নিজের হিরোশিমা মোঁ আমুর (১৯৫৯) চলচ্চিত্রের কাছাকাছি। ভারদার অ্যাপার্টমেন্টে ছবিটির সম্পাদনা করার সময়ে রেনে ছবিটিকে লুচিনো ভিসকন্তি, মিকেলাঞ্জেলো আন্তোনিওনি ও অন্যান্যদের কাজের সাথে তুলনা করে তাকে বিরক্ত করতে থাকেন। ভারদা তাদের সম্পর্কে অবগত ছিলেন না এবং বিরক্ত হয়ে সিনেমাতিকে যান ও তিনি যা বলছিলেন তা খুঁজে বের করেন। রেনে ও ভারদা আজীবন বন্ধু ছিলেন, রেনে বলেন যে "বিড়াল ছাড়া" তাদের মধ্যে কোন কিছুর মিল ছিল না।[৬] মুক্তির পরপরই কাইয়ে দ্যু সিনেমা চলচ্চিত্রটির প্রশংসা করে, অঁদ্রে বাজ্যাঁ বলেন, "কৌশলের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে, যা এই ভাব তৈরি করতে পেরেছে, চলচ্চিত্রে এটি এতই বিরল যে আমরা এমন একটি কাজ দেখতে পেয়েছি যা কোন প্রকার বহিঃবাধা উপেক্ষা করে লেখকের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছে।"[১৪]ফ্রঁসোয়া ত্রুফো ছবিটিকে "নিরীক্ষাধর্মী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী, সৎ ও বুদ্ধিদীপ্ত কাজ" বলে অভিহিত করেন।[১৫] যাই হোক, চলচ্চিত্রটি ব্যবসায়িক দিক থেকে ব্যর্থ হয় এবং ভারদা পরের সাত বছর শুধু স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রই নির্মাণ করেন।[৬]
ভারদাকে ফরাসি নবকল্লোলের মাতামহী ও জননী হিসেবে অভিহিত করা হয়। লা পোয়্যাঁত কুর্ত অনানুষ্ঠানিকভাবে কিন্তু সর্বোপরি এই আন্দোলনের প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচিত।[১৬] এটি তার নির্মিত অনেকগুলো চলচ্চিত্রের মধ্যে প্রথম চলচ্চিত্র যা সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরেছে। জীবনের পরবর্তী সময়ে ভারদা বলেন যে তিনি মানুষের ক্ষমতার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন না; তার পরিবর্তে তিনি বিদ্রোহীদের ব্যাপারে অধিক আগ্রহী ছিলেন, যারা তাদের নিজের জীবনের জন্য সংগ্রাম করে থাকে।"[১৭]
ক্লেও দ্য স্যাঁক আ সেত (১৯৬১)
লা পোয়্যাঁত কুর্ত নির্মাণের পর ভারদা কয়েকটি প্রামাণ্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, তন্মধ্যে দুটি ছবিকে অর্থায়ন করে ফরাসি পর্যটন দপ্তর। এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের মধ্যে একটি ছিল ভারদার নিজের প্রিয় কাজ - রু মুফতার বাজার নিয়ে নির্মিত লোপেরা-মুফ, যার জন্য ভারদা ১৯৫৮ সালে ব্রাসেলস নিরীক্ষাধর্মী চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুরস্কার অর্জন করেন।[৬]
ক্লেও দ্য স্যাঁক আ সেত (ফরাসি: Cléo from 5 to 7) ছবিতে দুই ঘণ্টা ধরে ময়না তদন্তের জন্য অপেক্ষারত একজন পপ গায়িকা জীবন তুলে ধরা হয়েছে। এই ছবিতে একজন নারীকে তার মরনশীলতার দৃষ্টিকোণ থেকে ভাসাভাসাভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা ভারদার সাধারণ ওতোরবাদী বৈশিষ্ট।[১৮] গভীরভাবে ক্লেও দ্য স্যাঁক আ সেত ছবিটি ক্লেও চরিত্রটিকে তার দিব্যদৃষ্টি প্রদান করে প্রথাগতভাবে আপত্তিতে জর্জরিত নারীর মুখোমুখি করেছে। তিনি অন্যদের দৃষ্টিতে তাকে নির্ণয় করা যায় না, যা প্রায়ই প্রতিবিম্বিতকরণের বৈশিষ্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় এবং ক্লেওয়ের তার শরীরকে খোলে ফেলার সক্ষমতা অনেকে কাপড় বা পরচুলা খোলার মত ছিল। কৌশলগতভাবে, ক্লেও দ্য স্যাঁক আ সেত প্রামাণ্যচিত্র ও কল্পনার মিশ্রণ, যা লা পোয়্যাঁত কুর্ত ছবিতেও ছিল। যদিও অনেকে মনে করেন যে ৯০ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাস্তব সময়ে ঘটা একটি ঘটনার উপস্থাপন করছে, মূলত এতে আধা ঘণ্টার পার্থক্য ছিল।[১৩]
পরবর্তী কর্মজীবন
১৯৭৭ সালে ভারদা চিত্রধারণ ও সম্পাদনায় আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ লাভের জন্য তার নিজের প্রযোজনা কোম্পানি সিনে-তামারিস প্রতিষ্ঠা করেন।[১৯] ২০১৩ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি মিউজিয়াম অব আর্ট ক্যালিফোর্নিয়াল্যান্ডে আনিয়েস ভারদা শীর্ষক ভারদার প্রথম মার্কিন প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এই প্রদর্শনীতে ভাস্কর্য স্থাপন, কয়েকটি আলোকচিত্র, ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং ১৯৬০-এর দশকে লস অ্যাঞ্জেলেসে তার অতিবাহিত সময়ের অনুপ্রেরণার বর্ণনা প্রদর্শিত হয়।[২০]
সাঁ তোয়া নি লোয়া
১৯৮৫ সালে ভারদা সাঁ তোয়া নি লোয়া (ফরাসি: Sans toit ni loi) চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এটি মোনা নামক একজন ভবঘুরে তরুণীর মৃত্যু নিয়ে নির্মিত নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র। মৃত্যু তদন্ত করেন একজন অদৃশ্য ও অশ্রুত তদন্তকারী, যিনি তাকে শেষবার দেখেছিল এমন ব্যক্তিদের উপর নজর দেন। এই চলচ্চিত্রটির গল্প অসরলরৈখিক কৌশলে বর্ণিত হয়েছে, যেখানে ছবিটি ৪৭টি পর্বে বিভক্ত করা হয়েছে এবং প্রতি পর্বে ভিন্ন ভিন্ন লোকের দৃষ্টিকোণ থেকে মোনাকে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর শরীরের অতিরিক্ত মনোযোগ তুলে ধরার কারণে সাঁ তোয়া নি লোয়া ছবিটিকে ভারদার অন্যতম সেরা নারীবাদী কর্ম হিসেবে গণ্য করা হয়।[২১]
জাক্যু দ্য নঁত
১৯৯১ সালে তার স্বামী জাক দ্যমির মৃত্যুর পর ভারদা দ্যমির জীবনী ও মৃত্যু নিয়ে জাক্যু দ্য নঁত (ফরাসি: Jacquot de Nantes) চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। চলচ্চিত্রটিতে প্রথমে দ্যমির প্রারম্ভিক জীবনের পুনঃসৃজন ও চলচ্চিত্র নির্মাণের বিভিন্ন কারুকার্য তথা অ্যানিমেশন ও সেট পরিকল্পনার প্রতি তার মোহের চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু পরে ভারদা দ্যমির চলচ্চিত্রসমূহের অংশবিশেষ ও তার মৃত্যুর দিকে ধাবিত হওয়ার ফুটেজসহ প্রামাণ্যধর্মী উপাদান যোগ করেন। এই চলচ্চিত্রেও মৃত্যুকে গ্রহণ করা বিষয়ক ভারদার মূলভাব তুলে ধরা হয়েছে, কিন্তু মূলত এই ছবিটিকে তার প্রয়াত স্বামী ও তাদের কর্মের প্রতি ভারদার শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শন হিসেবে গণ্য করা হয়।[১৮]
লে গ্লানোর এ লা গ্লানোস
লে গ্লানোর এ লা গ্লানোস (ফরাসি: Les Glaneurs et la Glaneuse) প্রামাণ্যচিত্র ফরাসি গ্রামে বসবাসরত কৃষকদের সাথে ভারদার আলাপচারিতা এবং বিভিন্ন বস্তু পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে শিল্পে রূপান্তর ও মনোবিশ্লেষক জঁ লাপ্লানশের সাথে সাক্ষাৎকার চিত্রিত হয়েছে। চলচ্চিত্রটি এর খণ্ড খণ্ড ও স্বাধীন প্রকৃতি এবং প্রথমবারের মত ভারদার ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহারের জন্য উল্লেখযোগ্য। এই চলচ্চিত্র নির্মাণের ধরনকে প্রায়ই ব্যাখ্যা করা হয় যে অব্যবহার্য বস্তু থেকেও শিল্পের মত মহৎ বস্তু তৈরি করা যায়, যদিও আধুনিক অর্থনীতিতে শুধু সেরা পণ্য ব্যবহারের জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়।[২২]
ভিসাজ ভিলাজ
২০১৭ সালে ভারদা ও চিত্রশিল্পী জেআর যৌথভাবে ভিসাজ ভিলাজ (ফরাসি: Visages Villages) প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এতে ভারদা ও জেআরকে ফ্রান্সের গ্রামে ভ্রমণ করতে এবং তাদের সাথে সাক্ষাৎ হওয়া লোকজনের পোট্রেট তৈরি করতে দেখা যায়। ছবিটি ২০১৭ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতার বাইরে প্রদর্শিত হয়,[২৩][২৪] এবং লেইল দর পুরস্কার অর্জন করে।[২৫] ভারদা এই ছবিটির জন্য শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, ফলে তিনি প্রতিযোগিতামূলক অস্কারের মনোনীত বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।[২৬] যদিও এটি তার প্রথম অস্কারের মনোনয়ন, ভারদা এটিকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে করেননি, এবং বলেন, "এতে গর্বিত হওয়ার কিছু নেই, কিন্তু খুশি হয়েছি। খুশি হয়েছি কারণ আমরা চলচ্চিত্র নির্মাণ করি ভালোবাসা পেতে। আমরা চলচ্চিত্র নির্মাণ করি যাতে আপনারা চলচ্চিত্রটি ভালোবাসেন।"[২৭][২৮]
পদ্ধতি ও প্রভাব
ভারদার অনেক চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল সমাজের নিম্নবিত্ত বা সমাজচ্যুত ব্যক্তি এবং প্রামাণ্যচিত্রগুলো প্রকৃতি সম্পর্কিত। তিনি ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টির নেতা হুই নিউটন একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করার কারণে গ্রেফতার হওয়ার পর এই দলটিকে নিয়ে দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, সেগুলো হল হুই ও ব্ল্যাক প্যান্থারস। চলচ্চিত্র দুটিতে নিউটনের সমর্থনে জনগণের মিছিল এবং "ফ্রি হুই" ক্যাম্পেইনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।[২৯]
অন্যান্য ফরাসি নবকল্লোলের পরিচালকদের মত ভারদাও ওতোর তত্ত্বে প্রভাবিত ছিলেন এবং ক্যামেরাকে "কলমের মত" ব্যবহার করে নিজস্ব কৌশল সৃষ্টি করেন। ভারদা তার চলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতিকে "সিনেক্রিতুর" (চলচ্চিত্রে লেখনী) বলে অভিহিত করেন।[৩০] একটি চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত মৌলিক ভূমিকাগুলো, তথা চিত্রগ্রহণ, চিত্রনাট্য, পরিচালনাকে আলাদা না করে তিনি বিশ্বাস করতেন সকল ভূমিকাগুলোকে একই সাথে কাজের মাধ্যমে আরও সংযোজক চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যায় এবং চলচ্চিত্রের সকল উপাদান এর বার্তার সাথে সংগতিপূর্ণ হবে। তিনি দাবী করেন তিনি তার বেশিরভাগ আবিষ্কার সম্পাদনার সময় করে থাকেন এবং মূলভাব তৈরিতে চিত্র ও সংলাপে বিভিন্ন সুযোগ খুঁজে থাকেন।[৩১]
আলোকচিত্র ধারণের পূর্ব অভিজ্ঞতার কারণে তার চলচ্চিত্রে স্থির চিত্র প্রায়ই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। স্থির চিত্র প্রতীকী বা বর্ণনামূলক বিষয় ফুটিয়ে তুলতে পারে এবং এর সকল উপাদানই গুরুত্বপূর্ণ। তার চলচ্চিত্রে মাঝে মাঝে স্থির ও চলমান চিত্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব লক্ষণীয়, এবং তিনি প্রায়ই চলমান চিত্রের সাথে স্থির চিত্রের (স্ন্যাপশট) মিশ্রণ ঘটাতেন। ভারদা বর্ণনায় খুব বেশি মনোযোগ দেন এবং তার চলচ্চিত্রায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কাজের ব্যাপারে অতি সতর্ক ছিলেন। তার চলচ্চিত্রের উপাদানগুলো খুব কমই কেবল প্রায়োগিক ছিল, সকল উপাদানগুলোর নিজস্ব সংশ্লিষ্টতা, তথা এর নিজস্ব এবং সামগ্রিক চলচ্চিত্রের বার্তার সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল।[৩২]
সাহিত্যিক প্রভাবের কারণে এবং ফরাসি নবকল্লোলের পূর্ববর্তী সময়ের তার কাজের কারণে ভারদার চলচ্চিত্রগুলো ক্রিস মার্কার, আল্যাঁ রেনে, মার্গেরিত দ্যুরা, আল্যাঁ রব-গ্রিলে, জঁ কেরল, ও অঁরি কল্পির চলচ্চিত্রগুলোর মত বামপন্থী (রিভ গোচ) চলচ্চিত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত। নবকল্লোল আন্দোলনের বামপন্থী অংশ কাইয়ে দ্যু সিনেমা দলের থেকে আরও বেশি নিরীক্ষাধর্মী পদ্ধতি অনুসরণ করে। যাই হোক, প্রথাগত পদ্ধতি ও বিষয়ের উপর জোড় দিতে গেলে নবকল্লোল নিজেই নিরীক্ষাধর্মী এই বিবেচনায় বামপন্থী ও কাইয়ে দ্যু সিনেমার এই স্বাতন্ত্র্য শ্লেষাত্মক বলে গণ্য করা হয়।[৩৪]
বামপন্থী চলচ্চিত্র সাহিত্যের নব্য রোমান আন্দোলনের সাথে গভীরভাবে জড়িত। এই দলের সদস্যদের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের একই রকম অভিজ্ঞতা ছিল, তা হল বামপন্থী রাজনৈতিক পরিচিতি এবং নিরীক্ষা এবং চলচ্চিত্রকে শিল্প রূপে দেখার প্রতি প্রবল আগ্রহ। ভারদা ও অন্যান্য বামপন্থী চলচ্চিত্র নির্মাতাগণ এক ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণশৈলী তৈরি করেন যা চলচ্চিত্র নির্মাণের সবচেয়ে আনুষ্ঠানিক নিরীক্ষাধর্মী কৌশন আভান্ত-গার্দ-এর সাথে চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সামাজিকভাবে প্রেরণাদানকারী কৌশল তথা প্রামাণ্যচিত্রের সাথে মিশে যায়। বামপন্থী চলচ্চিত্রের সদস্যরা প্রায়ই একে অপরের সাথে মিলে কাজ করতেন। পণ্ডিত দেলফিন বেনেজে'র মতে ভারদা প্রদর্শনের প্রথা ও নির্মাণের একনায়কতন্ত্রের লোভ সংবরণ করেছিলেন।[৩৫]:৬
নারীবাদী চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে
নারী মুখ্য চরিত্রের ব্যবহার ও চলচ্চিত্রের নারীবাদী কণ্ঠের জন্য ভারদার কাজগুলোকে প্রায়ই নারীবাদী বলে গণ্য করা হয়।[১৯] ভারদা বলেন, "আমি নারীবাদের কোন তাত্ত্বিক নই, আমি আমার আলোকচিত্র, আমার চলচ্চিত্র, আমার কারুকাজ, আমার জীবন - আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, আমার নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে করে থাকি, এবং কোন পুরুষের মত করি না।"[৩৬] যদিও তিনি নারীবাদী আন্দোলনের কোন নির্দিষ্ট কর্মসূচির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন না, ভারদা প্রায়ই নারীর প্রসঙ্গের দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কখনো তার কারুকাজকে অধিকতর প্রথাগত বা পুরুষপ্রধান হিসেবে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেননি।[৩৭][৩৮]
ঐতিহাসিকভাবে, ভারদাকে নবকল্লোলের জননী হিসেবে দেখা হয়। চলচ্চিত্র সমালোচক দেলফিন বেনেজে একক নারী ও চলচ্চিত্রের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা "একক নারীসুলভ" (au feminin singulier) কাজের জন্য ভারদার গুরুত্ব সম্পর্কিত যুক্তি প্রদর্শন করেন। ভারদা ভিন্ন ধরনের সাহসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তার নারীবাদী সত্তাকে গ্রহণ করেছিলেন।[৩৫]
ব্যক্তিগত জীবন ও মৃত্যু
১৯৫৮ সালে ভারদা প্যারিসে তার হবু স্বামী জাক দ্যমির সাথে পরিচিত হন। দ্যমিও একজন ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক। তারা ১৯৫৯ সালে একত্রে বসবাস শুরু করেন। ১৯৬২ সালে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, যা ১৯৯০ সালে দ্যমির মৃত্যু পর্যন্ত টিকেছিল। ভারদার দুই সন্তান রয়েছে। কন্যা রোজালি ভারদার (জ. ১৯৫৮) জন্ম হয় অভিনেতা অঁতোয়ান বুর্সেইলের সাথে তার সম্পর্কে ফলে, বুর্সেইলে তার পরিচালিত ক্লেও দ্য স্যাঁক অ সেত ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তার পুত্র মাতিও দ্যমি (জ. ১৯৭২) দ্যমির সাথে তার বিবাহের পর জন্মগ্রহণ করে।[১৯] দ্যমি আইনসিদ্ধভাবে রোজালি ভারদাকে দত্তক নেন।[১৮] ভারদা তার কন্যাকে নিয়ে অস্কার মনোনীত ভিসাজ ভিলাজ প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন।[২৭]
১৯৭১ সালে ভারদা গর্ভপাত করেছেন একন ৩৪৩ নারীর একজন হিসেবে এক লিখিত ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন, যদিও ফ্রান্সে সেসময় গর্ভপাত আইনবিরোধী ছিল, এবং তারা গর্ভপাতকে আইনসিদ্ধ করার দাবী জানান।
আনিয়েস ভারদা চিত্রশিল্পী জঁ ভারদার চাচাতো বোন। ১৯৬৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় তাদের প্রথম সাক্ষাৎ হয়। জঁ ভারদা তার স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র আঙ্কল ইয়াঙ্কো'র প্রধান বিষয়বস্তু। জঁ ভারদা নিজেকে ইয়াঙ্কো নামে পরিচিত করিয়ে দিতেন এবং আনিয়েস তাদের বয়সের ব্যবধানের জন্য তাকে "আঙ্কল" বলে ডাকত।[৩৯]
ভারদা ২০০৫ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের এবং ১৯৮৩ সালে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি সদস্য ছিলেন।[৪৪][৪৫] ২০০২ সালে তিনি ফরাসি আকাদেমি পুরস্কার র্যনে ক্লেয়ার পুরস্কার লাভ করেন।[৪৬] ২০০৭ সালের ৪ঠা মার্চ তিনি ফ্রান্সের জাতীয় মর্যাদাপূর্ণ গ্র্যান্ড অফিসার খেতাব লাভ করেন।[৪৭] ২০০৯ সালের ১২ই এপ্রিল তিনি লেজিওঁ দনরের কমান্ডার উপাধিতে ভূষিত হন।[৪৮] ২০১০ সালে মে মাসে তিনি কান চলচ্চিত্র উৎসবের আজীবন সম্মাননা হিসেবে ডিরেক্টরস ফোর্টনাইটের ৮ম কারোস দর পুরস্কার লাভ করেন।[৪৯] ২০১০ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর ভারদা বেলজিয়ামের লিয়েগ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি অর্জন করেন।[৫০] ২০১৩ সালের ১৪ই মে ভারদা ফ্রান্সের জাতীয় মর্যাদাপূর্ণ গ্র্যান্ড ক্রস খেতাব লাভ করেন।[৪৭] ২০১৩ সালের ২২শে মে ভারদা চলচ্চিত্র সংরক্ষণ ও নতুনভাবে গুদামজাতকরণের ক্ষেত্রে তার অবদানের জন্য এফআইএএফ পুরস্কার লাভ করেন।[৫১] ২০১৪ সালের ১০ই আগস্ট তিনি ৬৭তম লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসব থেকে লেওপার্ড অব অনার পুরস্কার লাভ করেন।[৫২] তিনি কিরা মুরাতভার পর দ্বিতীয় নারী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন।[৫৩] ২০১৪ সালের ১০ই আগস্ট ইউরোপিয়ান ফিল্ম একাডেমি থেকে প্রদত্ত সম্মানসূচক আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন।[৫৪] ২০১৫ সালের ২৪শে মে তিনি সম্মানসূচক পাল্ম দর লাভ করেন। তিনি প্রথম নারী হিসেবে সম্মানসূচক পাল্ম দর লাভ করেন।[৫৫] ২০১৭ সালের ১৬ই এপ্রিল ভারদা লেজিওঁ দনরের গ্র্যান্ড অফিসার উপাধিতে ভূষিত হন।[৫৬] ২০১৭ সালে সিনেমা আই-এর "বিস্মরণীয়" তালিকায় ভারদার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৫৭]
১৯৮৫ সালে তার প্রামাণ্যচিত্র ধারার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সঁ তোয়া নি লোয়া-এর জন্য তিনি ৪২তম ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব থেকে গোল্ডেন লায়ন অর্জন করেন।[৫৮] ২০০৯ সালে লে প্লাগে দানিয়েস ৩৪তম সেজার পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার অর্জন করে।[৫৯]
২০১৭ সালের ১১ই নভেম্বর ভারদা চলচ্চিত্রে তার সামগ্রিক অবদানের জন্য সম্মানসূচক একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। তিনিই প্রথম নারী পরিচালক হিসেবে এই পুরস্কার অর্জন করেন।[৬০][৬১][৬২] ৯ম বার্ষিক গভর্নর পুরস্কার আয়োজনে এই পুরস্কারটি প্রদান করা হয়।[৬৩] দুই মাস পর তিনি তার ভিসাজ ভিলাজ প্রামাণ্যচিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, ফলে তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে কোন প্রতিযোগিতামূলক অস্কারের জন্য মনোনীত হন, তিনি সে সময় পূর্বের বয়োজ্যেষ্ঠ মনোনয়ন গ্রহীতা জেমস আইভরির থেকে আট দিনের বড় ছিলেন।[৬৪]
↑ কখগএমা, উইলসন (১৯৯৯)। "3. Mourning Films I.". French Cinema since 1950: Personal Histories (ইংরেজি ভাষায়)। ল্যানহাম: রোম্যান অ্যান্ড লিটলফিল্ড। পৃষ্ঠা ৪২–৪৬। আইএসবিএন0715628496।
↑ কখগকার্টার, হেলেন। "Varda, Agnès"। সেন্স অব সিনেমা (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৯।
↑হেওয়ার্ড, সুজান; ভিনসেন্দো, জিনেত (২০০০)। Beyond the Gaze and Into Femme-Filmécriture." French Film: Texts and Contexts। লন্ডন: রটলেজ। পৃষ্ঠা ২৬৯–২৮০।
↑ক্রুইকশ্র্যাঙ্ক, রুথ (২০০৭)। "The Work of Art in the Age of Global Consumption: Varda's Les Glaneurs et la glaneuse"। লেসপ্রিত ক্রেয়াতোর। ৪৭: ১১৯–১৩২।
↑"The 2017 Official Selection"। কান (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ এপ্রিল ২০১৭। ১৪ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৯।
↑মিন্টজার, জর্ডান; কেসলাসি, এলসা (৭ এপ্রিল ২০১০)। "Spotlight on sidebars"। ভ্যারাইটি। ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৯।
স্মিথ, অ্যালিসন (১৯৯৮)। Agnes Varda (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ২১৩। আইএসবিএন9780719050619। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
উইকিমিডিয়া কমন্সে আনিয়েস ভারদা সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।