53-AAA-ea < 53-AAA-e (বিভিন্ন: 53-AAA-eaa থেকে 53-AAA-eat)
যে এলাকায় রাশিয়ান ভাষা হল সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু
যে এলাকায় সরকারি ভাষা রাশিয়ান বা ব্যাপকভাবে কথিত
রুশ ভাষা (রুশ ভাষায়: русский язык, রুস্কিই য়িযিক, আ-ধ্ব-ব: [ˈruskʲɪj jɪˈzɨk]) সবচেয়ে বেশি কথিত স্লাভীয় ভাষা। বেলারুশীয় ও ইউক্রেনীয় ভাষার সাথে এটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের স্লাভীয় শাখার পূর্ব স্লাভীয় দলটি গঠন করেছে। রুশ ভাষা মূলত রাশিয়ায়, প্রাক্তন সোভিয়েত দেশগুলি ও পূর্ব ইউরোপে কথিত হয়। এথ্নোলগ অনুসারে কেবল রাশিয়াতেই প্রায় ১২ কোটি রুশ ভাষাভাষী বিদ্যমান। সব মিলিয়ে বিশ্বের মোট রুশ ভাষাভাষীর সংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি।
১৪ শতকের আগে আধুনিক রুশ, বেলারুশ ও ইউক্রেনীয় জাতির আদিপুরুষেরা প্রাচীন পূর্ব স্লাভীয় ভাষার বিভিন্ন উপভাষায় কথা বলতেন। ১০০০ সালের দিকে পূর্ব স্লাভীয় ভাষার লিখিত রূপের আবির্ভাব ঘটে। এর নাম দেয়া হয়েছে প্রাচীন রুশ ভাষা। ভাষাবিজ্ঞানীরা মনে করেন ১৪ শতকের শেষ দিকে এসে এই ভাষাটি বর্তমান রুশ, বেলারুশীয় ও ইউক্রেনীয় ভাষায় ভাগ হয়ে যায়। এই বিভাজনের পেছনে স্থানীয় পূর্ব স্লাভীয় কথ্য ভাষার বৈশিষ্ট্য এবং দক্ষিণ স্লাভীয় ভাষাগুলি থেকে ধার করা বৈশিষ্ট্যের মধ্যকার সম্পর্ক যেমন কাজ করেছে, তেমনি পূর্ব স্লাভীয় কথ্য ভাষার বিভিন্ন উপভাষাগুলির মধ্যকার সম্পর্কেরও অবদান আছে।
১৭ শতকের শেষভাগ পর্যন্তও রাশিয়ার সরকারি ভাষা ও রুশ অর্থডক্স গির্জার ধর্মীয় স্তোত্রের ভাষা ছিল চার্চ স্লাভোনীয় ভাষার একটি পূর্ব স্লাভীয় সংস্করণ। ১৮ শতকে সম্রাট মহান পিটার রুশ বর্ণমালার সংস্কার সাধন করেন এবং পশ্চিম ইউরোপীয় ভাষাগুলি থেকে উদারহস্তে ঋণগ্রহণ করে ভাষাটির পশ্চিমীকরণ ত্বরান্বিত করেন। ফলে রুশ ভাষা গির্জায় ব্যবহৃত ভাষা থেকে স্বতন্ত্র একটি আধুনিক ভাষায় পরিণত হয়। বর্তমান আদর্শ রুশ ভাষাটি ১৯ শতকে এসে সুস্থিত রূপ ধারণ করে।
১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের পর রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপটে ১৯১৮ সালে রুশ ভাষার বানান সংস্কার করা হয় এবং প্রচুর নতুন পরিভাষা আমদানি হয়; এগুলি রুশ ভাষাকে আধুনিক রূপ দান করে। সোভিয়েত শাসনের সময় রাশিয়ার প্রায় সবাই সাক্ষরতা অর্জন করে। শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ও গণযোগাযোগ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে রুশ ভাষার ঔপভাষিক বৈচিত্র্য কমে আসে। বিংশ শতাব্দীতে সোভিয়েত ইউনিয়ন সামরিক, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত দিকে থেকে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলে রুশ ভাষা সারা বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাসম্পন্ন ভাষায় পরিণত হয়।
১৯১৭ সাল পর্যন্ত রুশ সাম্রাজ্যের একমাত্র ভাষা ছিল রুশ ভাষা। সোভিয়েত আমলে যদিও প্রতিটি প্রজাতন্ত্রের নিজস্ব সরকারি ভাষা ছিল, তা সত্ত্বেও রুশ ভাষার আধিপত্য ছিল সুস্পষ্ট। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রগুলি তাদের নিজস্ব ভাষার পৃষ্ঠপোষকতায় আরও তৎপর হয়েছে, ফলে এ দেশগুলিতে রুশ ভাষার মর্যাদা হ্রাস পেয়েছে। তা সত্ত্বেও বৃহত্তর সোভিয়েত অঞ্চলের সার্বজনীন ভাষা (lingua franca) হিসেবে রুশ ভাষার মর্যাদা প্রায় অপরিবর্তিত রয়ে গেছে।
প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলিতে রুশ ভাষায় সমস্ত প্রকার শিক্ষা গ্রহণের হার এখনও অনেক উঁচু। উদাহরণস্বরূপ বেলারুশ, কাজাকিস্তান ও ইউক্রেনে রুশ ভাষায় সমস্ত প্রকার শিক্ষা গ্রহণের হার যথাক্রমে ৭৫%, ৪০% ও ২৫%।
ইতিহাস
দশম শতকের শেষে খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তনের সাথে সাথে রাশিয়াতে লিখিত ভাষার প্রচলন ঘটে। রুশদের খ্রিস্টীয়করণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ধর্মীয় সাহিত্যের ভাষা হিসেবে গির্জা স্লাভীয় ভাষার প্রচলন ঘটে। গির্জা স্লাভীয় ভাষা একটি দক্ষিণ স্লাভীয় ভাষা। ধারণা করা হয় যে, সেই সময়ে গির্জা স্লাভীয় ভাষা এবং প্রাচীন রুশ ভাষার মধ্যে বড় মাত্রার পারস্পরিক বোধগম্যতা ছিল। তবে পূর্ব স্লাভীয় ও দক্ষিণ স্লাভীয় ভাষার মধ্যে যেসব সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে, তা এই দুইটি ভাষার মধ্যেও বিদ্যমান ছিল। এই সময়ে বেশির ভাগ রচনা ছিল ধর্মীয় প্রকৃতির। গির্জার সন্ন্যাসীরা বাইবেলের অনুবাদ, সাধুসন্ততিদের জীবনকাহিনী ইত্যাদি রচনা করতেন। তারা স্থানীয় পূর্ব স্লাভীয় ভাষা ব্যবহার না করে গির্জা স্লাভোনীয় ভাষাতেই রচনা করার চেষ্টা করতেন। তবে মাঝে মাঝেই তাদের লেখার স্থানীয় ভাষার শব্দ ও বৈশিষ্ট্য ঢুকে পড়ত। ধর্মীয় লেখা ছাড়াও আইনি প্রয়োজনে আইনকানুন, উত্তরাধিকারের দলিল, বিভিন্ন চুক্তি, ইত্যাদিও রচিত হত। এই দ্বিতীয় প্রকারের রচনাগুলিতে তৎকালীন পূর্ব স্লাভীয় ভাষার বেশ বড় প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। এসময় রাশিয়ার লিখিত ভাষাতে তাই এক ধরনের দ্বিভাষা-অবস্থা (diglossia) বিরাজ করছিল। গির্জা স্লাভীয় "সাধু" ভাষায় যেমন লেখা হত, তেমনি স্থানীয় "চলিত" ভাষাতেও লেখালেখি চলত।
সময়ের সাথে সাথে লিখিত ভাষায় এই পার্থক্যের পরিমাণ কমে আসে। গির্জা স্লাভীয় ভাষার বহু শব্দ ও সংগঠন রুশ কথ্য ভাষার একেবারে নিম্ন-মর্যাদাসম্পন্ন রূপেও প্রচলিত হয়ে যেতে শুরু করে। চতুর্দশ শতকের শেষ দিকে ও পঞ্চদশ শতকের শুরুর দিকে বেশ কিছু দক্ষিণ স্লাভীয় কেরানিকে রাশিয়ার ধর্মালয়গুলিতে উচ্চপদে আসীন করা হয়। এদেরই লেখার প্রভাবে রুশ ভাষার গতি আরেকবার পরিবর্তিত হয়। এরা ধর্মীয় রচনাবলীতে অতিশুদ্ধ প্রাচীন গির্জা স্লাভীয় ভাষা বেশি করে অনুকরণ করতে শুরু করেন। যদিও রুশ নিম্ন মর্যাদাসম্পন্ন রূপগুলিতে ইতোমধ্যেই দক্ষিণ স্লাভীয় বিভিন্ন সংগঠন প্রচলিত হয়ে গিয়েছিল, উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন রূপগুলিতে আরও প্রাচীন একটি গির্জা স্লাভীয় রূপ ব্যবহার হওয়া শুরু হয়, যা ছিল প্রচলিত কথ্য ভাষা থেকে আগের চেয়ে অনেক বেশি দূরবর্তী। ফলে রুশ ভাষাতে দ্বিতীয়বারের মত দ্বিভাষা-অবস্থার সৃষ্টি হয়।
১৮শ শতকে এসে সম্রাট মহান পিওতর রাশিয়ার আধুনিকীকরণ ও ধর্মনিরপেক্ষীকরণ সাধন করেন। এসময় শিক্ষিত লোকেদের মুখে প্রচলিত ভাষার একটি লিখিত রূপ উদ্ভাবনের প্রয়োজন দেখা দেয়। ১৭৫৫ সালে রুশ বহুশাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত লোমোনোসফ তার রুশ ব্যাকরণে তিনটি ভিন্ন ভাষারীতির একটি তত্ত্ব প্রদান করেন। এই তত্ত্ব অনুসারে রুশ ভাষার একটি উচ্চ রীতি থাকবে, যাতে ধর্মীয় রচনাবলী ও উচ্চস্তরের কাব্য রচিত হবে। আরও থাকবে একটি নিম্ন রীতি, যা প্রায় সম্পূর্ণতই পূর্ব স্লাভীয় ভাষা; এই রীতিটি ব্যক্তিগত যোগাযোগে এবং লঘু নাটকে ব্যবহার করতে হবে। আর থাকবে একটি মধ্য রীতি, যাতে ছন্দকবিতা, সাহিত্যিক গদ্য এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র লিখিত হবে। আধুনিক আদর্শ রুশ ভাষার সাথে এই মধ্য রীতির মিল সবচেয়ে বেশি। ১৯শ শতকের শুরুতে বিখ্যাত রুশ লেখক পুশকিনের সময়ে আধুনিক আদর্শ রুশ ভাষার আবির্ভাব ও প্রতিষ্ঠা ঘটে। এর পর দুই শতাব্দী ধরে ভাষাটির বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটলেও আধুনিক রুশ ভাষা বলতে পুশকিনের সময় থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত প্রচলিত রুশ ভাষাকেই বোঝায়।
রুশ ভাষার একেবারে প্রাচীন রূপ থেকে বর্তমান আধুনিক রূপ পর্যন্ত পূর্ব ও দক্ষিণ স্লাভীয় ভাষার বিভিন্ন রূপ ও সংগঠনের দ্বৈত সহাবস্থান ভাষাটির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। আধুনিক রুশ ভাষায় প্রায়শই একই ধারণার জন্য একই শব্দমূল থেকে সাধিত দুইটি শব্দ দেখতে পাওয়া যায়, যাদের একটি হল গির্জা স্লাভীয় সংস্করণ এবং অন্যটি পূর্ব স্লাভীয় সংস্করণ।
রুশ ভাষার প্রাচীন পর্যায়ে ভাষাটি মূলত উত্তর ও দক্ষিণে দুইটি ঔপভাষিক অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। মস্কো শহরের মধ্য দিয়ে কল্পিত পূর্ব-পশ্চিমে চলে যাওয়া একটি অক্ষরেখার উত্তরে ও দক্ষিণে ছিল এই দুই উপভাষার অবস্থান। দক্ষিণের উপভাষাটির সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল বর্তমান ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। উত্তরের উপভাষাটির বেশ কিছু সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল নভোগোরাদ শহর। উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে এসময়ে প্রতিষ্ঠিত কিছু পার্থক্য এখনও রুশ কথ্য উপভাষাগুলিতে রয়ে গেছে।
ত্রয়োদশ শতাব্দীতে রাশিয়া তাতারদের পদানত হয়। অন্যদিকে ইউক্রেন ও বেলারুশ প্রথমে লিথুয়ানিয়া ও পরে পোলীয়দের সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায়। এসময়েই ভাষা তিনটি একে অপরের থেকে পৃথক হতে শুরু করে। রুশ ভাষা ধ্বনিব্যবস্থায় এসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটে: শ্বাসাঘাতহীন o (ও)-কে a (আ) হিসেবে উচ্চারণ করা শুরু হয় (যেমন doma ("বাড়িগুলি")-কে দোমা-র পরিবর্তে দামা উচ্চারণ করা)। এই পরিবর্তনটি (যার নাম দেওয়া হয়েছে "আকানিয়ে") প্রথমে দক্ষিণ রাশিয়ায় শুরু হয় এবং পরবর্তীতে মধ্য রাশিয়ার কিছু অঞ্চলেও প্রচলিত হয়ে যায়। উত্তর রাশিয়ার ভাষাতে এই পরিবর্তনটি ঘটেনি (এর নাম দেওয়া হয়েছে "ওকানিয়ে")। পঞ্চদশ শতকে তাতারদের বিরুদ্ধে রুশদের সংগ্রামে ও পরবর্তীকালে একতাবদ্ধ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার আবির্ভাবে মস্কো অঞ্চল প্রধান ভূমিকা পালন করে। মস্কো ছিল একটি আকানিয়ে এলাকা, এবং এখানকার ভাষায় উত্তর ও দক্ষিণ উপভাষা অঞ্চলের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের সম্মিলন ঘটেছিল। ফলে মস্কো ও এর আশেপাশে একটি মধ্যবর্তী ঔপভাষিক এলাকার সৃষ্টি হয়। এই মধ্য রুশ উপভাষাটিই পরে আদর্শ আধুনিক রুশ ভাষার ধ্বনিতাত্ত্বিক ভিত্তি গড়ে দেয়। রুশ লিপিতে আকানিয়ে আলাদাভাবে বোঝানো হয় না, কিন্তু মস্কোর কথ্য ভাষাতে ব্যবহারের সুবাদে আধুনিক আদর্শ রুশ উচ্চারণের এটি একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। রুশ ভাষা একটি বিশাল এলাকা জুড়ে প্রচলিত হলেও ঔপভাষিক বৈচিত্র্য খুবই কম, এবং শিক্ষার বিস্তারের সাথে সাথে এই পার্থক্য আরও হ্রাস পাচ্ছে।
বিংশ শতাব্দীতে এসে রুশ ভাষা রাশিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে অন্য বহু দেশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের সমস্ত অ-রুশ প্রজাতন্ত্রে রুশ ভাষাই ছিল মূল সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক ভাষা। দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে রুশ ভাষায় কথা বলতে পারেন, এরকম লোকের সংখ্যা বিশাল। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার সময় অন্য আরও পাঁচটি ভাষার সাথে রুশ ভাষাও একটি দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে মর্যাদা পায়।
ধ্বনি ব্যবস্থা
রুশ উচ্চারণ বেশ সহজ। রুশ লিখিত বর্ণ ও উচ্চারিত ধ্বনির মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। রুশ ভাষায় দীর্ঘ ও হ্রস্ব স্বরকে আলাদা ধরা হয় না। তবে রুশ ভাষার ব্যঞ্জনগুলিকে তালব্যীভূত ও অতালব্যীভূত এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। রুশ ভাষায় কোন দ্বিস্বরধ্বনি নেই। রুশ ভাষা র ধ্বনিগুলি বেশি জোর দিয়ে উচ্চারণ করা হয় না। শব্দের যেকোন অংশে ঝোঁক (stress) পড়তে পারে, ঝোঁকের ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা কম।
রুশ একটি বিভক্তিমূলক ভাষা। অর্থাৎ বাক্যের বিভিন্ন পদের সাথে বিভক্তি জোড়া লাগিয়ে এর নানা রূপভেদ তৈরি করা হয়। তবে রুশ ভাষা সংযোগমূলক নয়, অর্থাৎ শব্দমূলের পর একেকটি ব্যাকরণিক ক্যাটেগরির জন্য আলাদা আলাদা বিভক্তি পরপর জোড়া লাগিয়ে পদ তৈরি হয় না। বরং শব্দমূলের পর একটি বিভক্তি লাগিয়ে অনেকগুলি ব্যাকরণিক ক্যাটগরি পরিবর্তন করে ফেলা যায়। আবার একই বিভক্তি অন্য ভিন্ন ভিন্ন ধরনের শব্দমূলের সাথে যুক্ত হয়ে ভিন্ন রকম পদ উৎপাদন করতে পারে।
রুশ ভাষায় তিনটি পুরুষ (১ম, ২য় ও ৩য়), দুইটি বচন (একবচন ও বহুবচন) ও তিনটি লিঙ্গ (পুং, স্ত্রী ও ক্লীব) আছে। এই ভাষায় কোন নির্দেশক (article) নেই। রুশ ভাষার বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, সংখ্যাশব্দ ও ক্রিয়ার ব্যাকরণিক বৈশিষ্ট্যভেদে রূপভেদ (declension) হয়। রুশ ব্যাকরণে বিশেষ্য ও সর্বনামের ৬টি কারক হয়: কর্তা, সম্বন্ধ, গৌণ কর্ম, মুখ্য কর্ম, করণ ও পূর্বসর্গীয়। রুশ ভাষায় সম্বোধন কারক নেই (তবে ইউক্রেনীয় ও অন্যান্য অনেক স্লাভীয় ভাষায় তা আছে)। বিশেষ্যগুলির রূপভেদগুলিকে সাধারণত তিনটি বিন্যাস বা ছকে ফেলা যায়।
রুশ বিশেষণগুলিও কারক, লিঙ্গ ও বচনভেদে পরিবর্তিত হয় এবং বিশেষ্যের সাথে ঐ সমস্ত ব্যাকরণিক ক্যাটেগরিতে সাযুজ্য রক্ষা করে। তবে কিছু কিছু ছোট বিশেষণ আছে যেগুলির রূপভেদ হয় না।
রুশ ক্রিয়াগুলি পুরুষ, বচন, কাল, বাচ্য ও ভাবভেদে পরিবর্তিত হয়। ক্রিয়ার মূলত দুই শ্রেণীর conjugation হয়: তিনটি কালভেদে (বর্তমান, অতীত, ভবিষ্যত) এবং তিনটি ভাবভেদে (নির্দেশক, সম্ভাবক এবং অনুজ্ঞা)। এছাড়া ক্রিয়াগুলির দুইট প্রকার (aspect) আছে: অসম্পন্ন ও সম্পন্ন/পুরাঘটিত।
ক্রিয়াজাত পদ (participle) চার রকমের হয়: বর্তমান কর্তৃবাচ্যমূলক, অতীত কর্তৃবাচ্যমূলক, বর্তমান কর্মবাচ্যমূলক ও অতীত কর্মবাচ্যমূলক। তবে কিছু কিছু ছোট participle ও ক্রিয়াবিশেষণীয় participle আছে যেগুলির রূপভেদ হয় না।
রুশ বাক্যে পদক্রম উন্মুক্ত। বাক্যে শব্দের অবস্থান পরিবর্তন করে সেই শব্দটিতে জোর দেয়া সম্ভব।