ঢাকার টিপু সুলতান রোডে রাধাকৃষ্ণ মন্দির, সূত্রাপুর এর পশ্চিমদিকে ভজহরি লজ নামের একটি দ্বিতল সুরম্য দালান ছিল। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ঢাকার বিত্তশালী সাহা বণিক ভ্রাতৃত্রয়ের জ্যেষ্ঠভ্রাতা ভজহরি সাহা বণিক এটি নির্মাণ করেছিলেন।
ইতিহাস
বিশ শতকের শুরুর দিকে লালমোহন সাহা বণিক, ভজহরি সাহা বণিক ও গৌর নিতাই সাহা বণিক ব্যাবসায় বেশ উন্নতি লাভ করেন। বিত্তশালী হওয়ার পর তারা বণিক উপাধি বর্জন করে ‘শঙ্খনিধি’ (শঙ্খের বাহক) উপাধি গ্রহণ করেন। ১৯২০-১৯২৬ সালের দিকে তারা ঢাকার কিছু ভূসম্পত্তির মালিক হন এবং সেখানে কিছু ভবন নির্মিত হয়। ঢাকার টিপু সুলতান রোড থেকে ওয়ারীর র্যাঙ্কিন স্ট্রিট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে এই ভবনগুলো গড়ে ওঠে।[১][২] ১৯২৫ সালে বসবাসের জন্য ভজহরি সাহার এই বাড়িটি নির্মাণ করা হয়।
গঠনরীতি
ভজহরি সাহার বাড়িটি দুইতলাবিশিষ্ট। এর দক্ষিণমুখী দরজার সামনে প্রায় ১৫০ ফুট দীর্ঘ আঙিনা রয়েছে। এর প্রধান দরজার সাপেক্ষে ভবনটি প্রায় প্রতিসম, যদিও পশ্চিম ভাগটি পূর্বভাগের চেয়ে কিছুটা বড়। তিনটি প্রধান দরজার উপরস্থিত তলায় রয়েছে তিনটি জানালা, কেন্দ্রীয় জানালাটিতে রয়েছে বহকোণী উপরিভাগ আর দুপাশের জানালাগুলোয় অর্ধ-গম্বুজ। কেন্দ্রীয় অংশের উপরের প্যারাপেটে রয়েছে ত্রিকোণাকার সুশোভন প্লাস্টার। প্রত্যেক তলায় ৫০ ফুট বাই ২০ ফুট মাপের তিনটি করে বড় হলঘর আছে যেগুলোর প্রত্যেকটির সাথে ৬ ফুট প্রশস্ত বারান্দা বিদ্যমান। উপরের তলায় যাওয়ার জন্য দক্ষিণপূর্ব কোণে একটি কাঠের সিঁড়ি আছে, এছাড়া পিছনদিকেও আছে একটি। হলঘরের তক্তাগুলো উজ্জ্বল টালি দ্বারা শোভিত।
ভবনের সম্মুখভাগে একটি সুদৃশ্য ফোয়ারা ছিল, যদিও পরে তা সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।[৩]
বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে এই ভবনটি আর নেই। ভবনটির স্থানে পরবর্তীকালে গ্রাজুয়েট হাইস্কুল ও সলিমুল্লাহ কলেজ নির্মিত হয়।[৪] ঢাকার নগর ভবন এর চতুর্থ ফ্লোরে অবস্থিত নগর ভবন যাদুঘরে ভজহরি লজের ছবি রয়েছে। [৫]
↑BUILDINGS OF THE BRITISH RAJ IN BANGLADESH, by Najimuddin Ahmed, edited by John Sanday, THE UNIVERSITY PRESS LIMITED, November1986 first edition, page 56-57