পানাম সেতু একটি মুঘল আমলে নির্মিত ইটের তৈরি সেতু। এটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকার অন্তর্ভুক্ত হাবিবপুর এর পূর্ব দিকে পঙ্খীরাজ খালের উপর নির্মিত। আদিতে এর নাম ছিল ‘কোম্পানি কে গঞ্জ কা পুল’ বা কোম্পানিগঞ্জের সেতু। [১]
অবস্থান
পানাম সেতুটি সোনারগাঁ উপজেলাধীন হাবিবপুরের পূর্বদিকে কোম্পানিগঞ্জ ও বারি-মজলিশ এলাকার মধ্যবর্তী পাকা রাস্তা সংযোগ সড়কে পঙ্খীরাজ খালের উপর নির্মিত। সেতুটি হাজীগঞ্জ এলাকাকে বৈদ্যের বাজার এলাকার সংযোগকারী কাঁচা সড়কে সপ্তদশ শতকে নির্মিত হয়।[১]
ইতিহাস ও বিবরণ
পানাম নগর বা পানাম শহর নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলাধীন প্রাচীন শহর গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগড়াপাড়া পয়েন্ট থেকে আড়াই কিঃ মিঃ উত্তরে অবস্থিত।
মূঘল সম্রাজ্যের প্রত্যক্ষ শাসনে আসার পর মুঘলরা সোনারগাঁতে বেশ কিছু সড়ক ও সেতু নির্মাণের ফলে সোনারগাঁ ও পানাম শহর নতুন রূপে আবির্ভূত হয়। মূঘল আমল উপমহাদেশের যে কোন এলাকার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ছিল । ব্যপক সংখ্যক স্থাপনা ও উন্নয়ন মূলক কাজ এ সময় পরিলক্ষিত হয়। পানামও এর ব্যতিক্রম নয়। সম্ভবত পানাম সেতু সেই সময়কালের নির্মাণ।[২]
সোনারগাঁ এলাকার বেশ কয়েকটি মুঘল স্থাপনা বর্তমানে সময়ে অক্ষত রয়েছে তার ভেতর তিনটি সেতু রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- পানাম সেতু, দালালপুর সেতু ও পানাম নগর সেতু। সেতুটির প্রকৃত নির্মাণ কাল সংক্রান্ত কোন প্রামাণ্য শিলালিপি না থাকলেও স্থাপত্যরীতি বিবেচনা করে ঐতিহাসিকরা এটিকে মুঘল আমলে অর্থাৎ সপ্তদশ শতকে নির্মিত স্থাপনা হিসেবে একমত হয়েছেন। তিন খিলান বিশিষ্ট সেতুটি দৈর্ঘে ১৭৩ ফুট এবং প্রস্থে ১৪ ফুট। সেতুটির খাঁড়া ইটের গাথুনি বৃত্তাকারে সন্নিবেশিত। সেতুর মধ্যবর্তী খিলানটি অপর দুটি অপেক্ষা উচু এবং প্রশস্ত। যার ফলে সেতুটির নিচ দিয়ে জলযান চলাচল করতে পারত ।
[১][২] সেতুটি এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে।[৩]