নাগরপুর চৌধুরীবাড়ী

নাগরপুর চৌধুরীবাড়ী
মানচিত্র
স্থানাঙ্ক২৪°০৩′১৩″ উত্তর ৮৯°৫২′৩০″ পূর্ব / ২৪.০৫৩৬৪৪° উত্তর ৮৯.৮৭৫০৫২° পূর্ব / 24.053644; 89.875052
অবস্থাননাগরপুর, টাঙ্গাইল

নাগরপুর চৌধুরীবাড়ী টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলায় অবস্থিত একটি জমিদার বাড়ী।[]

ইতিহাস

প্রায় ৫৪ একর জমির উপর শৈল্পিক কারুকার্যমণ্ডিত নাগরপুর চৌধুরীবাড়ী প্রতিষ্ঠা করেন যদুনাথ চৌধুরী। কথিত আছে কলকাতার আদলে নাগরপুরকে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। এখান থেকেই তিনি জমিদারি পরিচালনা করতেন। রঙ্গমহলের পাশে ছিল সুদৃশ্য চিড়িয়াখানা। সেখানে শোভা পেত- ময়ূর, কাকাতোয়া, হরিণ, ময়না ইত্যাদি। ঊনবিংশ শতাব্দী। ইতিহাস থেকে যতদুর জানা যায় – সুবিদ্ধা-খাঁ-র সূত্র ধরেই চৌধুরী বংশু নাগরপুরে জমিদারী শুরু করেন। চৌধুরী বংশের প্রথম পুরুষ যদুনাথ চৌধুরী। প্রায় ৫৪ একর জমির উপর জমিদারী প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের বংশক্রমে দেখা যায় – এমন তার তিন ছেলেঃউপেন্দ্র মোহন চৌধুরী, জগদীন্দ্র মোহন চৌধুরী, শশাঙ্ক মোহন চৌধুরী।ব্রিটিশ সরকার উপেন্দ্র মোহন চৌধুরীর বড় ছেলে সতীশ চন্দ্র রায় চৌধুরীকে সাধারণ জনগোষ্ঠীর জন্যে বিভিন্ন মুখীন সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ রায় বাহাদুর খেতাবে ভূষিত করে। ছোট ছেলে সুরেশ চন্দ্র রায় চৌধুরী অপেক্ষাকৃত পাশ্চাত্য সংস্কৃতিঘেষা। তিনি ছিলেন অনেকের চেয়ে সৌখিন প্রকৃতির মানুষ। তিনি ছিলেন খুব ক্রীড়ামোদী। উপ-মহাদেশের বিখ্যাত ফুটবল দল ইষ্ট বেঙ্গল ক্লাবের তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী। পাশ্চত্য এবং মোঘল সংস্কৃতির মিশ্রনে এক অপূর্ব নান্দনিক সৌন্দর্যে নির্মিত এই বৈঠকখানা বিল্ডিং এর উপরে ছিল নহবতখানা।সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রতিদিন ভোর সকালে সানাই-এর ভৈরবী ধ্বনীতে চৌধুরী বংশের তথা এলাকার প্রজাবৃন্দের ঘুম ভাঙ্গত। শোনা যায় রায় বাহাদুরের ছোট ভাই সুরেশ চৌধুরীকে নাগরপুরে রেখে সম্পূর্ণ রাজধানী কলকাতার আদলে নাগরপুরকে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। চৌধুরী বাড়ীর রঙ্গমহলের পাশে এক সুদৃশ্য চিড়িয়াখানা ছিল। সেখানে শোভা পেত- ময়ূর, কাকাতোয়া, হরিণ, ময়না আর শেষ দিকে সৌখিন সুরেশ চৌধুরীর ইচ্ছায় চিড়িয়াখানায় স্থান করে নিল বাঘ (কেতকী) এবং সিংহ(দ্যুতি)। ১৯৪৭ এর দেশ বিভক্তির পর একসময় তদানিন্তন সরকার চৌধুরী বাড়ীর সকল সম্পদ অধিগ্রহণ করে। অট্টালিকাটির অভ্যন্তরের পুরো কাজটি সুদৃশ্য শ্বেত পাথরে গড়া। বর্তমানে চৌধুরী বাড়ীর এই মুল ভবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নাগরপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজ। চৌধূরীবাড়ীর অন্যান্য স্থাপনা ঝুলন দালান: প্রাচীন ভারতে বিভিন্ন শিল্প কর্মে মন্ডিত চৌধুরী বংশের নিত্যদিনের পূজা অনুষ্ঠান হত এই ঝুলন দালানে। বিশেষ করে বছরে শ্রাবনের জ্যোৎস্না তিথিতে সেখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের নাটক, যাত্রা মঞ্চায়িত হত। এখানেই চৌধুরী বংশের শেষ প্রতিনিধি মিলন দেবী (মিলন কর্ত্রী) স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে চৌধুরীদের উপাসনা বিগ্রহ ‘‘বৃন্দাবন বিগ্রহ’’ -এর নিরাপত্তা দিতে গিয়ে দুষ্কৃতকারীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। ঘোড়ার দালান জমিদারী পরিচালনা এবং বাবসায়িক প্রয়োজনে চৌধুরীবাড়ীতে সুঠাম সুদৃশ্য ঘোড়া পোষা হত। আর এই ঘোড়া এবং তার তদারকীতে নিয়োজিতদের থাকার জন্য নির্মাণ করা হয় শৈল্পিক কারুকাজ খচিত এই স্থাপনা। যা জমিদারদের ঘোড়ার দালান হিসাবে পরিচিত।

অন্যান্য স্থাপনা

ঝুলন্ত দালান, ঘোড়ার দালান, রংমহল, পরীর দালান, বাঘের দালান।

কারুকার্য

অট্টালিকাটির অভ্যন্তরের কাজটি সুদৃশ্য শ্বেত পাথরের। পাশ্চত্য এবং মোঘল সংস্কৃতির মিশ্রনে এক অপূর্ব নান্দনিক সৌন্দর্যে নির্মিত এই চৌধুরীবাড়ী।

অধিগ্রহণ

দেশ বিভক্তির পর তদানিন্তন সরকার চৌধুরীবাড়ীর সকল সম্পদ অধিগ্রহণ করে (১৯৪৭)।

বর্তমান অবস্থা

নাগরপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজটি চৌধুরীবাড়ীর মুল ভবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চৌধুরীবাড়ীর দক্ষিণে ১১ একর জমির ওপর একটি বিরাট দিঘি রয়েছে, এটি উপেন্দ্র সরোবর নামে পরিচিত।

অবস্থান

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় এ চৌধুরী বাড়ী অবস্থিত। টাঙ্গাইল থেকে সিএনজি যোগে এখানে পৌঁছানো যায়।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. নাগরপুর উপজেলা  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!