ভারতের সংগীত

ভারতের সঙ্গীত বলতে বোঝায়: বহুমুখি বৈচিত্র্যের উচ্চাঙ্গ সংগীত, লোক সংগীত, চলচ্চিত্র সংগীত, রবীন্দ্র সংগীতভারতীয় রক সংগীত এবং ভারতীয় পপ সংগীত। ভারত রাষ্ট্রের উচ্চাঙ্গ সংগীত ঐতিহ্যের মধ্যে আছে হিন্দুস্থানি এবং কর্ণাটকি সংগীত, যার ইতিহাস সহস্রাব্দ জুড়ে নিহিত এবং ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তৃত হয়ে এক উন্নত রূপ নিয়েছে। ভারতে সঙ্গীত সামাজিক-ধার্মিক জীবনের সঙ্গে এক আত্মিক সম্পর্কযুক্ত অবস্থায় শুরু হয়েছিল।   

ইতিহাস

সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতা থেকে নৃত্যরত কন্যা স্থাপত্য (ছবি: ৪,৫০০ বছর আগে)

 মধ্য প্রদেশের ইউনেস্কো বিশ্ব উত্তরাধিকার স্থানে ভীমবেতকা পাথর আশ্রয়স্থিত ৩০,০০০ বছর আগেকারপুরোনো প্রস্তরযুগীয় এবং নতুন প্রস্তরযুগীয় গুহা চিত্রে সাংগীতিক যন্ত্রানুষঙ্গগুলো এবং নৃত্যভঙ্গিমা দেখা যায়।[]

নৃত্যরত কন্যা স্থাপত্য (২৫০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ) সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতা (আইভিসি) দৃশ্য থেকে দেখা যায়।[[][][][] সেখানে সিন্ধু সভ্যতা যুগের মাটির পাত্রের ওপর চিত্রে দেখা যায় পুরুষের কাঁধে ঝোলানো ঢোল এবং মহিলাদের বাঁহাতের নিচে একটা ড্রাম ধরা অবস্থায় আছে।[]

বেদগুলো (সি. ১৫০০ - সি. ৮০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ বৈদিক যুগ),[][][][১০] আচারআচরণের দলিলে প্রদর্শিত শিল্প এবং নাটক।[১১][১২] উদাহরণস্বরূপ, শতপথ ব্রাহ্মণ (~৮০০-৭০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ) অধ্যায় ১৩.২ অনুযায়ী দুজন অভিনেতার মধ্যে নাটকে প্রতিযোগিতা ছিল।[১১] তালা  অথবা তাল হল একটা সাংগীতিক ধারণা, যেটা বৈদিক যুগে হিন্দুধর্ম বইতে পাওয়া যায়, যেমন সামবেদ এবং বৈদিক স্তোত্র গাওয়ার পদ্ধতি।[১৩][১৪][১৫]স্মৃতি (৫০০ থেকে ১০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ) বৈদিক-পরবর্তী হিন্দু ধর্মগ্রন্থ [১৬][১৭][১৮] যার মধ্যে আছে বাল্মীকি রচিত রামায়ণ (৫০০ থেকে ১০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ), যাতে বিবৃত আছে নৃত্য ও সঙ্গীত (উর্বষী, রম্ভা, মেনকা, তিলোত্তমা পঞ্চাপ্সরা, এরকম অপ্সরাগণ দ্বারা নৃত্য, এবং রাবণ-এর মহত্তম ভঙ্গিমা, নৃত্যগীত অথবা 'গান গাওয়া এবং নাচা' এবং নৃত্যবাদিত্রা  অথবা 'সাংগীতিক বাদ্যযন্ত্র বাজানো'), গন্ধর্বদের দ্বারা  সঙ্গীত এবং গায়কী, নানা রকম তারের বাদ্যযন্ত্র (বীণা, তন্ত্রী, বিপানসি এবং বীণার সমতুল্য ভাল্লাকি), সুষির যন্ত্র (শঙ্খ, বেণু এবং বেণুগান - কয়েকটা বাঁশিকে একসঙ্গে বেঁধে একটা মাউথ অর্গানের মতো), রাগা (সঙ্গে রাগ কৌশিক ধাওয়ানির মতো কৌশিকা), স্বর প্রতিষ্ঠিত (সাত স্বর অথবা সুর, অনা অথবা একশ্রুতি স্বরলিপি, মন্ত্রতে স্বরের নিয়মিত ওঠা ও নামা হল মূর্ছনা এবং ত্রিপ্রমাণ ত্রি-স্তর তিন তাল লয় যেমন দ্রুত অথবা তাড়াতাড়ি, মধ্য অথবা মাঝামাঝি, বিলম্বিত অথবা ধীর), বাল কাণ্ডতে কবিতা আবৃত্তি এবং উত্তর কাণ্ডেলবকুশ দ্বারা মার্গ ধারায়।[১৯]

চোদ্দো শতকের অসমীয়া কবি মাধব কান্দালি লিখেছিলেন সপ্তকাণ্ড রামায়ণ, তিনি তার লেখা 'রামায়ণে' কিছু বাদ্যযন্ত্র তালিকাভুক্ত করেন, যেমন, মার্দালা, খুমুচি, ভেমাচি, দাগার, গ্রাতাল, রামতাল, তবল, ঝাঁঝর, জিঞ্জিরি, ভেরি মহরি, তোকারি, দোসারি,কেন্দারা, দোতারা, বীণা, রুদ্র-বিপঞ্চি, ইত্যাদি (যা থেকে বোঝা যায় যে, তার সময় অর্থাৎ চোদ্দো শতক থেকে এসব বাদ্যযন্ত্র চালু ছিল)।).[২০]

উচ্চাঙ্গ সংগীত

ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের দুটো প্রধান ঐতিহ্যের মধ্যে একটা হল কর্ণাটকি সঙ্গীত, যা প্রধানত ঔপদ্বীপ অঞ্চলে দেখা যায়; এবং হিন্দুস্থানি সঙ্গীত, যার প্রাধান্য আছে উত্তর, পূর্ব এবং মধ্যাঞ্চলগুলোতে। এই সঙ্গীতের মূল ধারণার মধ্যে আছে: শ্রুতি  (সূক্ষ্ম আওয়াজ), স্বর (লিপি),  অলংকার  (আলংকারিক), রাগ (সঙ্গীতের সাধারণ নিয়ম থেকে তান সম্পাদন), এবং তাল (আঘাত বাদ্য দিয়ে ছান্দিক ধরনকে ব্যবহার)। এই সঙ্গীতের সুরের পদ্ধতি অষ্টক ২২টা ভাগে বিভক্ত, যাকে বলে শ্রুতি, সবটা একই না-হলেও, পশ্চিমি সঙ্গীতের সার্বিক সুরের এক-চতুর্থাংশের সঙ্গে মোটামুটি সমান।

হিন্দুস্থানি সংগীত

হিন্দুস্থানি সঙ্গীতের ঐতিহ্য অনেক পুরোনো, সেই বৈদিক কাল থেকে, যেখানে একটা ধর্ম শাস্ত্র, সাম বেদের স্তোত্র থেকে সাম গান আবৃত্তি নয়, গাওয়া হোত। প্রাথমিকভাবে মুসলমানি প্রভাবের ফলে তেরো-চোদ্দো খ্রিস্ট শতকের আশপাশ এটা কর্ণাটকি সঙ্গীত থেকে আলাদা ছিল। অনেক শতক জুড়ে একটা মজবুত এবং আলাদা ঐতিহ্য উন্নতিলাভ করেছিল প্রাথমিকভাবে ভারতে, কিন্তু অধুনা পাকিস্তান এবং বাংলাদেশেও। দক্ষিণ থেকে উদ্ভূত অন্য এক ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ঐতিহ্য, কর্ণাটকি সঙ্গীতের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে, হিন্দুস্থানি সঙ্গীত যে শুধুমাত্র অতীত হিন্দু সাংগীতিক ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক বৈদিক দর্শন এবং দেশি ভারতীয় আওয়াজ দ্বারা প্রভাবান্বিত ছিল তা-ই নয়, বরং মুঘলদের পারসিক প্রদর্শন অনুশীলন দ্বারা সমৃদ্ধ ছিল। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ধরনগুলো হল: ধ্রুপদ, ধামার, খেয়াল, তারানাসাদ্রা, এবং এছাড়াও কতগুলো প্রায়-উচ্চাঙ্গ ধরনের সঙ্গীতও আছে।

কর্ণাটকি সংগীত

কর্ণাটকি সঙ্গীতের খোঁজ পাওয়া যায় চোদ্দো-পনেরো খ্রিস্ট শতক এবং তার পর থেকে। বিজয়নগর সাম্রাজ্য শাসনের সময়কালে দক্ষিণ ভারতে এই সঙ্গীতের উন্মেষ ঘটে। হিন্দুস্থানি সঙ্গীতের মতো এটাহল সুরসমৃদ্ধ, বৈচিত্র্যপূর্ণ সম্পাদনের সঙ্গে, কিন্তু অনেক স্থায়ী সমন্বয়ের দিকে ঝোঁক আছে। এর মধ্যে আছে সমন্বয়ের সঙ্গে অলংকরণ সম্পাদন রাগ আল্পনা, কল্পনাস্বরম, নিরাভাল ধরনের সঙ্গে যোগ করা, এবং আরো অগ্রগামী ছাত্রদের ক্ষেত্রে রাগ, তাল, পল্লবী। যে লিখিত সমন্বয়গুলো গাওয়া হবে   গায়কী নামে পরিচিত, প্রদর্শন করার সময় গাইবার ধরন, এমনকি যখন যন্ত্রানুষঙ্গে বাজানো হয়, আসলে স্বরক্ষেপণের ওপর জোর দেওয়া হয়। প্রায় ৩০০ রাগম বর্তমানে ব্যবহৃত হয়। আন্নামায়া হলেন কর্ণাটকি সঙ্গীতের প্রথম পরিচিত সঙ্গীতজ্ঞ। তিনি অন্ধ্র পদ কবিতা পিতামহ হিসেবে ভীষণভাবে বিখ্যাত (তেলুগু সঙ্গীত-রচনার ধর্মপিতা)। পুরন্দরা দাসা হলেন কর্ণটকি সঙ্গীতের জনক, যখন ত্যাগরাজা, শ্যামা শাস্ত্রী এবং মুথুস্বামী দিক্ষিতার প্রমুখ পরবর্তী সঙ্গীতজ্ঞদের কর্ণাটকি সঙ্গীতের একের ভিতর তিন বলা হয়।

বিশিষ্ট কর্ণাটকি সঙ্গীতের শিল্পীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন: আর্যকুদি রামানুজা আয়েঙ্গার (সাম্প্রতিক ঐকতান ধারার জনক),সেম্মানগুডি শ্রীনিবাসা আয়ার, পালাঘাট কে ভি নারায়ণাস্বামী, অলাথুর ভাইগণ, এমএস সুব্বুলক্ষ্মী, লালগুডি জয়ারামন; এবং অতি সাম্প্রতিক বালামুরলিকৃষ্ণা, টিএন শেষাগোপালন, কে জে জেসুদাস, এন রামানি, উমায়ালপুরম কে শিবারামন,সঞ্জয় সুব্রহ্মনিয়ান, মণিপল্লবম কে সরঙ্গন, বালাজি শঙ্কর, টিএম কৃষ্ণা, বোম্বে জয়শ্রী, টি এস নন্দকুমার, অরুণা সাইরাম মাইশোর মঞ্জুনাথ প্রমুখ।

প্রত্যেক বছর ডিসেম্বর মাসে চেন্নাই শহরে একটা দীর্ঘ আট সপ্তাহব্যাপী সংগীত ঋতু, বলা ভালো সঙ্গীতের অধিবেশন চলে, যেটাকে বিশ্বের দীর্ঘতম সঙ্গীত মেলা বলা যায়।

কর্ণাটকি সঙ্গীতকে দক্ষিণ ভারতীয় সঙ্গীতের মূল ভিত্তি হিসেবে ভাবা হয়ে থাকে; এর সঙ্গে যুক্ত আছে লোক সঙ্গীত, বিভিন্ন আঞ্চলিক উৎসবের সঙ্গীত এবং অবশ্যই এই বিস্তৃতি সামাজিকভাবে চলচ্চিত্র সঙ্গীতকেও গত ১০০-১৫০ বছর কিংবা তার আশপাশ প্রভাবান্বিত করেছে।

হালকা উচ্চাঙ্গ সংগীত

মানব জীবনের প্রয়োজনে সমাজের মধ্যে অনেক ধরনের সঙ্গীতের উন্মেষ ঘটে; যেগুলো হালকা উচ্চাঙ্গের অথবা প্রায়-উচ্চাঙ্গের। যেমন এই ধারার মধ্যে আছে: ঠুংরি, দাদরা, গজল, চৈতি, কাজরি, টপ্পা, নাট্য সংগীত অথবা নৃত-গীতিনাট্য এবং অবশ্যই কাওয়ালি। এই ধারাগুলো খুব স্পষ্টভাবেই শ্রোতাদের তরফ থেকে আবেগের ওপর জোর দেয়, যেখানে এগুলো আদি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের বিপরীত ধরন। 

লোক সংগীত

মেহেরগড় দুর্গ, যোধপুরে ধারোহর গোষ্ঠীর লোক সংগীতজ্ঞরা প্রদর্শনরত।

রবীন্দ্র সংগীত (বাংলার সংগীত)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলা ভাষায় স্বাক্ষরগুলো এই কাঠের তৈরি 'রোথো' কাঠের ছাপের শৈল্পিক প্রকাশ, যে নকশাগুলো ঐতিহ্যপূর্ণ হাইদা কারভিংয়ের সঙ্গে মিলে যায়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর পাণ্ডুলিপির অলংকরণে এধরনের শিল্পের ছোঁয়া উপহার দিতেন।
রবীন্দ্র সংগীত সহযোগে নৃত্যনাট্যের প্রদর্শন

রবীন্দ্র সঙ্গীত বাংলা ও বাঙালির সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে; রবীন্দ্র সংগীত, বাংলা উচ্চারণ: [ɾobind̪ɾo ʃoŋɡit̪], সারা বিশ্বে রবীন্দ্র সঙ্গীতকে টেগোর সঙ্গস্ বলা হয়, এই গান এশিয়ার প্রথম নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখিত এবং সুরারোপিত। এই গানের অভিনব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে বাংলার সংগীত, যেটা ভারত, বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।[২১]'সঙ্গীত' অর্থে গান, 'রবীন্দ্র সঙ্গীত' অর্থাৎ (অথবা যথাযথভাবে গান) রবীন্দ্রনাথের গান।

এন রমানি এবং এন রাজন, সঙ্গে সহশিল্পী  টি এস নন্দকুমার

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষায় ২,২৩০ সংখ্যক গান লিখেছিলেন, যেগুলোকে এখন রবীন্দ্র সংগীত  বলা হয়, উৎস হিসেবে উচ্চাঙ্গ সংগীত এবং লোক সংগীত ব্যবহার করা হয়েছিল।[২২][২৩]

অসমের বিহু সংগীত

বেঙ্গালুরুতে রঙ্গলি বিহু উদযাপনে জেং বিহু নৃত্যশিল্পীরা

বিহু (অসমীয়া: বিহু) হল মাঝ-এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়া অসম রাজ্যের নববর্ষ উৎসব। এই উৎসব হল প্রকৃতি এবং পৃথিবী মাকে উৎসর্গিত, যে উৎসবের প্রথম দিনটা গোরু এবং মহিষদের জন্যে বরাদ্দ করা হয়। দ্বিতীয় দিনের উৎসব হল মানুষের জন্যে। বিহু উৎসবের অতি প্রয়োজনীয় অঙ্গ হচ্ছে বিহু নাচ এবং গানগুলো ঐতিহ্যপূর্ণ ড্রাম এবং বাঁশিজাতীয় যন্ত্রানুষঙ্গের ব্যবহার। বিহু গানগুলো ভীষণ উত্তেজনাপূর্ণ এবং ছন্দের সঙ্গে ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানানো হয়ে থাকে। বিহুতে অসমীয়া ডাম (ঢোল), শিঙা (সাধারণত মহিষের শিং দিয়ে বানানো), গোগোনা এবং বেশির ভাগ বাদ্যযন্ত্র ব্যবহৃত হয়।[২৪][২৫]

ডান্ডিয়া

ডান্ডিয়া অথবা রাস হল দুহাতে দুটো কাঠি নিয়ে প্রদর্শিত একটা গুজরাতি সাংস্কৃতিক নৃত্য। বর্তমান সাংগীতিক ধারাটা ঐতিহ্যপূর্ণ লোকনৃত্যের সঙ্গত থেকে অনুগৃহীত। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রধানত গুজারাট রাজ্যে দেখা গেলেও সারা দেশে ছড়িয়ে গিয়েছে। ডান্ডিয়া/রাসের সঙ্গে অরো একটা ধারার নৃত্য এবং সঙ্গীত সংযুক্ত, যাকে বলা হয়গরবা। 

উত্তরাখণ্ডী সংগীত

আঞ্চলিক পার্বত্য ভূখণ্ডের প্রকৃতি মায়ের কোল থেকে মূল উৎসারিত হয়ে উত্তরাখণ্ডী লোক সঙ্গীত সমাজে প্রতিষ্ঠিত। উত্তরাখণ্ডের লোক সঙ্গীতের সাধারণ বিষয়গুলো হচ্ছে: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বিভিন্ন ঋতুবৈচিত্র্য, উৎসবগুলো, ধর্মীয় ঐতিহ্যগুলো, সাংস্কৃতিক কাজকর্মগুলো, লোক গাথাগুলো, ঐতিহাসিক চরিত্রগুলো, এবং পূর্বসূরিদের সাহসিকতার কাহিনি। উত্তরাখণ্ড রাজ্যের লোকগীতিগুলো হল সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার এবং হিমালয়ের কোলে বসবাসকারী জনগণের জীবন যাপনের প্রতিফলন।উত্তরাখণ্ড সঙ্গীত পরিচালনায় যেসব যন্ত্রসঙ্গীতের ব্যবহার হয় সেগুলো হল: ঢোল, দামৌন, তুরি, রণসিংহ, ঢোলকি, দাউর, থালি, ভাঙ্কোরা মসকভজা। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিশেষ করে নথিভুক্ত করা লোক সঙ্গীতের ক্ষেত্রে কখনো কখনো তবলা এবং হারমোনিয়াম ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আধুনিক জনপ্রিয় লোক সঙ্গীতশিল্পী নরেন্দ্র সিং নেগি, মোহন উপ্রেতি, গোপাল বাবু গোস্বামী এবং চন্দ্র সিং রাহী প্রমুখ দ্বারা লোক সঙ্গীতের ক্ষেত্রে ভারত বর্গীয় এবং বৈশ্বিক যন্ত্রসঙ্গীতগুলোর অবতারণা করা হয়েছিল।

লাবনি

লাবনি নামটা এসেছে 'লাবণ্য' শব্দ থেকে, যার অর্থ হল সুন্দর। এটা ভীষণভাবে জনপ্রিয় নৃত্য এবং সঙ্গীতের একটা ধারা, যেটা সারা মহারাষ্ট্র রাজ্যে প্রদর্শিত হয়ে থাকে। ঘটনাচক্রে এটা মহারাষ্ট্রীয় জনতার লোক সঙ্গীত প্রদর্শনগুলোর একটা অত্যাবশ্যকীয় অংশ। ঐতিহ্যগতভাবে এই গানগুলো মহিলা শিল্পীরাই গেয়ে থাকে, কিন্তু কখনোবা পুরুষ শিল্পীরাও লাবনি গান গায়।লাবনি গানের সঙ্গে যে নাচের ধারা সংযুক্ত তাকে বলা হয় তামাশা। লাবনি হল একটা ঐতিহ্যপূর্ণ গান  ও নাচের সমাহার, যেটা বিশেষত ড্রামের মতো এক যন্ত্র, 'ঢোলকি'র মোহিত করা বাজনা দিয়ে প্রদর্শিত হয়। ন-গজ শাড়ি পরে আকর্ষণীয় মহিলারা নাচ প্রদর্শন করে। তারা একটা ঝটিতি উত্তেজক গান গায়। মহারাষ্ট্র এবং মধ্য প্রদেশের শুকনো অঞ্চল থেকে লাবনির উদ্ভব হয়েছে

রাজস্থান

রাজস্থান রাজ্যের এক বিচিত্র ধরনের সাংস্কৃতিক সংগ্রহের সঙ্গীতজ্ঞের জাতিগোষ্ঠী আছে, যেমন: লঙ্গস, সপেরা, ভোপা, যোগী এবং মঙ্গনিয়ার (ভাষাগতভাবে, 'একজন, যে চায়/ভিক্ষে করে')। রাজস্থান ডায়েরি বয়ান দিয়েছে যে, এটা একটা ঐকতানের বৈচিত্র্য নিয়ে হৃদয়োৎসারিত, পূর্ণস্বরীয় সঙ্গীত। রাজস্থানের তান বিচিত্র সব যন্ত্রসঙ্গীত থেকে আসে। তারের বাজনার বহুমুখিতার মধ্যে আছে সারেঙ্গি, রাবণাহাতা, কামায়াচা, মরসিং এবং একতারা। পার্কাসান বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে সবরকম আকার ও সাইজের প্রচুর নাগারা এবং ঢোল থেকে ছোটো ড্রাম ছিল। ডাফ এবং চ্যাং হল হোলি খেলার (রঙের উৎসবের) জনপ্রিয় যন্ত্রবাদ্য। বাঁশি এবং ব্যাগপাইপারগুলো এসেছে স্থানীয় উদ্যম থেকে; যেমন সানাই, পুঙ্গি, আলগোজা, তার্পি, বীণ এবং বাঙ্কিয়া।

রাজস্থানি সঙ্গীত তন্ত্রবাদ্য, পার্কাসন বাদ্য এবং হাওয়া বাদ্যযন্ত্রের সংমিশ্রণে এবং সহযোগে উদ্ভূত যেটা লোক সঙ্গীতশিল্পীদের দ্বারা পেশ করা এক সম্মিলিত উদ্যোগ। এটা বলিউডে শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রমোদ সঙ্গীত হিসেবে মান্যতা পেয়েছে। 

জনপ্রিয় সংগীত

চলচ্চিত্র সংগীত

সবচেয়ে বড়ো আকারের ভারতীয় জনপ্রিয় সংগীত হল চলচ্চিত্র সংগীত, অথবা ভারতীয় সিনেমার গান, এটা ভারতের সঙ্গীত বিপণনের ৭২ শতাংশ সম্পূর্ণ করে.[২৬] ভারতের চলচ্চিত্র শিল্প একদিকে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ওপর শ্রদ্ধা রেখে সমর্থনযোগ্য সঙ্গীত এবং যখন অন্যদিকে পশ্চিমি অর্কেস্ট্রার সংমিশ্রণে ভারতীয় তানের একটা সমর্থনের সঙ্গীত বেরিয়ে আসছে। সঙ্গীত স্রষ্টাগণ: শচীন দেব বর্মন, শংকর জয়কিষান, রাহুল দেব বর্মন, মদন মোহন, নৌসাদ আলি, ওপি নায়ার, হেমন্ত কুমার, সি রামচন্দ্র, সলিল চৌধুরী, কল্যাণজি আনন্দজি, ইলাইয়ারাজা, এআর রহমান, যতীন ললিত, ক্যালকাটা কয়্যার ও কল্যাণ সেন বরাট, অনু মালিক, নাদিম-শ্রবণ, হরিশ জয়রাজ, হিমেশ রেশম্মাইয়া, বিদ্যাসাগর, শংকর এহসান লয়, সেলিম-সুলেমান, প্রীতম, এমএস বিশ্বনাথন, কেভি মহাদেবন, ঘণ্টাসালা এবং অরিজিৎ সিং, অনুপম রায়, এসডি বাতিশ একতার নীতিকে কার্যকর করেন যখন উচ্চাঙ্গ এবং লোক সঙ্গীতের সুরভিকে জাগ্রত রাখেন। রবি শংকর, বিলায়েৎ খান, আলি আকবর খান এবং রাম নারায়ণ প্রমুখ উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের কিংবদন্তীরাও চলচ্চিত্রের জন্যে সঙ্গীত রচনা করেছেন। ঐতিহ্যগতভাবে, গোড়ার যুগে সিনেমার নায়ক-নায়িকারা কাহিনির মধ্যে নিজেদের গলায় গান গাইতেন; যেমন কিশোর কুমার এবং কানন দেবী প্রমুখ। কিন্তু বর্তমান যুগের ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা গানের স্বর দেননা, তার বদলে নেপথ্য কণ্ঠশিল্পীরা তাদের গান গেয়ে দেন, শব্দকে আরো উন্নত, তানযুক্ত এবং হৃদয়গ্রাহী করতে, যখন অভিনেতারা পর্দায় গানের গলা মিলিয়ে ঠোঁট নাড়েন। অতীতে অল্প কয়েকজন সঙ্গীত শিল্পী হিন্দি চলচ্চিত্রে স্বর দিতেন। তাদের মধ্যে আছেন: কেজে জেসুদাস, মহম্মদ রফি, মুকেশ, এস পি বলসুব্রাহ্মণ, টি এম সুন্দররাজন, হেমন্ত কুমার, মান্না দে, পি সুশীলা, লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, কেএস চিত্রা, গীতা দত্ত, এস জানকী, শমসাদ বেগম, সুরাইয়া, নূরজাহান এবং সুমন কল্যাণপুর। সাম্প্রতিক নেপথ্য সঙ্গীত শিল্পীরা হলেন: উদিত নারায়ণ, কুমার শানু, কৈলাশ খের, আলিশা চিনাই, কেকে, শান, মধুশ্রী, শ্রেয়া ঘোষাল, নিহিরা যোশী, কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, হরিহরণ (গায়ক), ইলাইয়ারাজা, এআর রহমান, সোনু নিগম, সুখবিন্দর সিং, কুণাল গাঁজাওয়ালা, অণু মালিক, সুনিধি চৌহান, অনুষ্কা মানচন্দা,রাজা হাসান, অরিজিৎ সিং এবং অলকা যাজ্ঞিক। রক ব্যান্ডগুলো হল: ইন্দাস ক্রীড, ইন্ডিয়ান ওসেন, সিল্ক রুট এবং ইউফোরিয়া। কেবল্ টেলিভিশন সঙ্গীতের উন্নতির ফলে এগুলো বর্তমানে খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

অ-ভারতীয় সংগীতের সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়া

গত শতকের সাত এবং আটের দশকে ভারতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে রক অ্যান্ড রোল মিশ্রণের যে প্রকাশ হয়েছিল সেটা সারা ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকা জুড়ে সুপরিচিত হয়েছিল। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে আলি আকবর খান যে প্রদর্শন করেছিলেন সেটাই সম্ভবত এই প্রবণতার শুরুয়াত ছিল।

জ্যাজ অগ্রগামী যেমন জন কোল্ট্রান—যিনি ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরের সময়কাল নাগাদ 'ইন্ডিয়া' নামে একটা রচনা তার লিভ অ্যাট দ্য ভিলেজ ভ্যানগার্ড অ্যালবামের জন্যে রেকর্ড করেন (এই কাজটা ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে কোল্ট্রন-এর অ্যালবাম ইম্প্রেশন্স প্রকাশ না-হওয়া পর্যন্ত)-- এই মিশ্রণটা সাগ্রহে গ্রহণও করেন। জর্জ হ্যারিসন ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে (দ্য বিটলস-এর)'নরওয়েজীয় উড (দিস বার্ড হ্যাজ ফ্লোন)' এই গানে সেতার বাজিয়েছিলেন, যার ঝলকের আগ্রহ পেয়েছিলেন রবি শংকর থেকে, যিনি পরবর্তীকালে তাকে তার শিক্ষানবিশ হিসেবে নিয়েছিলেন। জ্যাজ প্রবর্তক মাইলস ডেভিস—খলিল বালাকৃষ্ণা, বিহারি শর্মা এবং বাদল রায় প্রমুখ সঙ্গীতজ্ঞদের সঙ্গে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের পরবর্তী সময়ে তার বৈদ্যুতিক ঐকতান বাদ্যযন্ত্রের রেকর্ড এবং প্রদর্শন করেছিলেন। ভির্তুয়োসো জ্যাজ গিটারবাদক জন ম্যাকলগলিন মাদুরাইতে কর্ণাটকি সঙ্গীত শিক্ষার জন্যে অনেক বছর কাটিয়েছেন এবং এই সঙ্গীত তার শক্তিসহ অনেক কাজের মধ্যে প্রয়োগ করেছেন যেখানে বিশিষ্ট ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞদের অবদান আছে। অন্যান্য পশ্চিমি শিল্পী যেমন গ্রেটফুল ডেড, ইনক্রেডিবল্ স্ট্রিং ব্যান্ড, দ্য রোলিং স্টোন্স, দ্য মুভ এবং ট্র্যাফিক এরা সেই সময়ই ভারতীয় প্রভাবে বাদ্যযন্ত্রগুলো এবং ভারতীয় প্রদর্শকদের প্রয়োগ করেছিলেন। কিংবদন্তি গ্রেটফুল ডেড প্রমুখ জেরি গার্সিয়া তার উচ্চাঙ্গের সিডি 'ব্লু ইনক্যান্টেশন' (১৯৯৫)-তে গিটারবাদক সঞ্জয় মিশ্রকে যুক্ত করেছিলেন।মিশ্রজি ফরাসি চিত্র পরিচালক এরিক হিউম্যানকে তার পোর্ট জেমা (১৯৯৬) ছবির জন্যে এক আসল স্বরলিপি রচনা করে দিয়েছিলেন, যেটা হ্যাম্পটন চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ রচনা বিবেচিত হয় এবং বার্লিনে স্বর্ণ ভালুক লাভ করে। তিনি ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে ড্রামার ডেনিস চেম্বার্স (কার্লোস সান্তানা, জন ম্যাকলগলিন প্রমুখ)-এর সঙ্গে রেসকিউ রেকর্ড করেন এবং ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে চাতেয়ু বেনারস ডিজে লজিক এবং কেলার উইলিয়ামস্ (গিটার এবং উদারা)-এর সঙ্গে কাজ করেন। 

যদিও ভারতীয় সঙ্গীতের উত্তেজনা দর্শক-শ্রোতার মূল স্রোত থেকে প্রশমিত হয়েছিল, গোঁড়া অনুগামী এবং অভিবাসীরা মিশ্রণ প্রবাহ জারি রেখেছিল। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে একটা বিট-প্রভাবিত রাগ রক শংকর, যাকে সেতার শক্তি বলা হয়, যা অশ্বিন বাতিশ সেতারকে পশ্চিমি জাতিগুলোর কাছে পুনরায় পরিচয় করিয়েছিলেন। সেতার শক্তি রেকর্ড প্রমাণ মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল এবং নিউ জার্সির শানাচি রেকর্ডস দ্বারা তীব্র আকর্ষণ করায় তাদের ওয়ার্ল্ড বিট এথনো পপ বিভাগে প্রধান হওয়ার জন্যে ডাকে। 

গত শতকের আটের দশকের শেষ দিকে ভারতীয়-ব্রিটিশ শিল্পীরা ভারতীয় এবং পশ্চিমি ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে তৈরি করেন এশিয়ান আন্ডারগ্রাউন্ড। গত শতকের নয়ের দশক থেকে কানাডীয় বংশোদ্ভূত সঙ্গীতজ্ঞ নাদাকা, যিনি তার জীবনের অনেকটা সময় ভারতে কাটিয়েছেন, পশ্চিমি ধারায় ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সংমিশ্রণে শ্রুতিমধুর এক সঙ্গীতের সৃষ্টি করেন। এরকমই একজন সঙ্গীতশিল্পী যিনি ভারতীয় ঐতিহ্যের ভক্তিগীতিকে পশ্চিমি অ-ভারতীয় সঙ্গীতের মিলিয়েছিলেন, তিনি হলেন কৃষ্ণ দাস এবং তিনি তার সঙ্গীত, সাংগীতিক সাধনা রেকর্ড বিক্রি করেছিলেন। আরেকটা উদাহরণ হল, ইন্দো-কানাডীয় সঙ্গীতজ্ঞ বন্দনা বিশ্বাস যিনি ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে তার মোনোলগস  অ্যালবামে পশ্চিমি সঙ্গীতের সঙ্গে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছিলেন।

নতুন সহস্রাব্দে আমেরিকানহিপ-হপ ভারতীয় চলচ্চিত্র এবং ভাঙড়া সঙ্গীতকে বৈশিষ্টযুক্ত করেছিল। মূলস্রোতের হিপ-হপ শিল্পীরা নমুনা হিসেবে বলিউড সিনেমা থেকে গানগুলো নিত এবং ভারতীয় শিল্পীদের সঙ্গে সহযোগে কাজ করত। উদাহরণ হিসেবে তিম্বালন্দ-এর 'ইন্ডিয়ান ফ্লুট', এরিক সারমন এবং রেডম্যান-এর 'রিঅ্যাক্ট', স্লাম ভিলেজ-এর 'ডিস্কো' ট্রুথ হান্টস-এর জনপ্রিয় গান 'অ্যাডিক্টিভ', যেটা নমুনা হিসেবে নেওয়া হয় একটা লতা মঙ্গেশকর গান এবং দ্য ব্ল্যাক আইড পিজ নমুনা হিসেবে আশা ভোঁসলেজির গান 'ইয়ে মেরা দিল' তাদের জনপ্রিয় গানটা 'ডোন্ট ফুঙ্ক উইথ মাই হার্ট' নেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ ব্যান্ড কর্নারশপ আশা ভোঁসলেকে তাদের গান ব্রিমফুল অফ আশা  দিয়ে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেছিল, যেটা আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল। ব্রিটিশ-জাত ভারতীয় শিল্পী পাঞ্জাবি এমসি-এরও আমেরিকায় একটা জনপ্রিয় ভাঙড়া 'মুন্দিয়ান তো বচ কে' ছিল, যা তীব্রভাবে জয়-জেড বিশিষ্টতা দিয়েছিল। এশিয়ান ডাব ফাউন্ডেশন সেরকম প্রচুর মূলস্রোতের শিল্পী নয়, তবুও তাদের রাজনৈতিকভাবে সমর্থিত র ্যাপ এবং পুঙ্ক রক নিজেদের দেশ যুক্তরাজে বহু-গোষ্ঠীযুক্ত দর্শকশ্রোতাদের প্রভাবে আওয়াজ উঠেছিল। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক শিল্পী স্নুপ ডগ সিং ইজ কিং ছবিতে একটা গানে আবির্ভূত হয়েছিল। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে হিপ-হপ প্রস্তুতকর্তা মদলিব প্রকাশ করেছিলেন বিট কন্ডাক্টা খণ্ড ৩-৪: বিট কন্ডাক্টা ইন ইন্ডিয়া; এই অ্যালবামটা প্রচণ্ডভাবে নমুনায়িত হয়েছিল এবং ভারতের সঙ্গীত দ্বারা উৎসাহিত হয়েছিল। 

কখনো কখনো ভারতের সঙ্গীত অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গীতের সঙ্গে সংমিশ্রিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, দিল্লি 2 ডাবলিন, একটা কানাডা ভিত্তিক ব্যান্ড, ভারত এবং আইরিশ সঙ্গীতের সংমিশ্রণ, এবং ভাঙড়াটন হল ভাঙড়া এবং রেগ্গাটন সঙ্গীতের একটা সংমিশ্রণ, যেটা নিজেই হিপ-হপের একটা সংমিশ্রণ, রেগ্গা, এবং ঐতিহ্যপূর্ণ লাতিন আমেরিকান সংগীত[২৭]

সাম্প্রতিকতম উদাহরণের মধ্যে আছে ভারতীয়-বিটিশ সংমিশ্রণ, লরা মার্লিন এবং পাশাপাশি মামফোর্ড অ্যান্ড সন্স সহযোগপূর্ণভাবে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে ধরোহার প্রোজেক্ট-এর সঙ্গে ফোর-সং ইপি-তে।[২৮] বিটিশ ব্যান্ড বোম্বে বাইসাইকল ক্লাবও 'মন দোলে মেরা তন দোলে' গানটাকে তাদের একক 'ফীল' সঙ্গীতের নমুনা হিসেবে নিয়েছিল।[২৯]

ভারতীয় পপ সংগীত

ভারতীয় লোক সঙ্গীত এবং উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সঙ্গে  মিলন ঘটিয়ে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ থেকে আধুনিক বিট নিয়ে ভারতীয় পপ সঙ্গীতের ভিত্তি গড়া হয়েছিল। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী আহমেদ রুশদির গান 'কো কো কোরিনা' দিয়ে প্রকৃতপক্ষে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে পপ সঙ্গীতের শুরুয়াত হয়েছিল, যেটা গত শতকের ছয়ের দশকে মহম্মদ রফি এবং সাতের দশকে কিশোর কুমার অনুসরণ করেছিলেন।[৩০]

পরবর্তীকালে, বেশির ভাগ ভারতীয় পপ সঙ্গীত এসেছিল ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প থেকে, বিগত শতকের নয়ের দশক পর্যন্ত অল্প কয়েকজন সঙ্গীতশিল্পী, ঊষা উত্থুপ, শারন প্রভাকর এবং পীনাজ মাসানি প্রমুখ ভারতের বাইরে একে জনপ্রিয় করেছেন। তখন পর্যন্ত ভারতীয় পপ সঙ্গীতশিল্পীরা হলেন: দালের মেহেন্দি, বাবা সাইগল, আলিশা চিনাই, কেকে, শান্তনু মুখার্জি, একেএ শান, সাগরিকা, কলোনিয়াল কাজিন্স (হরিহরণ, লেসলি লুইস), লাকি আলি, এবং শোনু নিগম, এবং সঙ্গীতকাররা হলেন: জিলা খান অথবা জওহর ওয়াত্তাল, যিনি উচ্চ বিপণনের অ্যালবাম প্রস্তুত করেছেন দালের মেহেন্দি, শুভা মুদগল, বাবা সাইগল, শ্বেতা শেট্টি এবং হংস রাজ হংস প্রমুখকে নিয়ে।[৩১]

ওপরের শিল্পী তালিকার পাশাপাশি অন্যান্য ইন্দ-পপ সঙ্গীতশিল্পীরা হলেন: গুরুদাস মান, সুখবিন্দার সিং, পাপন, জুবিন গর্গ, রাঘব সাচার রাগেশ্বরী, বন্দনা বিশ্বাস, দেবিকা চাওলা, বোম্বে ভাইকিংস, আশা ভোঁসলে, সুনিধি চৌহান, অনুষ্কা মানচন্দা, বোম্বে রকার্স, অণু মালিক, জ্যাজি বি, মালকিত সিং, রাঘব, জয় সিয়ান, জুগ্গি ডি, ঋষি রিচ, শীলা চন্দ্র, বালি সাগু, পাঞ্জাবি এমসি,ভাঙড়া নাইটস, মেহনাজ, সানোবার এবং বৈশালী সামন্ত। 

সাম্প্রতিককালে, ভারতীয় পপ 'রিমিক্সিং' অথবা পুনর্মিশ্রণের সঙ্গে একটা চমকদার মোড় নিয়েছে, যা নেওয়া হয়েছে অতীত চলচ্চিত্র সঙ্গীত থেকে, যেখানে নতুন নতুন বিট লাগিয়ে ভারতীয় পপ সঙ্গীতকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা চলছে। 

রক এবং মেটাল সংগীত

রাগা রক

রাগা রক হল রক অথবা একটা ভীষণ ভারতীয় প্রভাবযুক্ত পপ সঙ্গীত, হয় এটার গঠন, এর ধ্বনিবৈশিষ্ট্য, অথবা এর যন্ত্রানুষঙ্গ, যেমন সেতার ও তবলা। রাগা এবং অন্যান্য ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ধরন গত শতকের ছয়ের দশক ধরে অনেক রক গোষ্ঠীকে প্রভাবিত করেছিল; এর মধ্যে বিখ্যাত হল দ্য বীটলস। প্রথম খোঁজ পাওয়া 'রাগা রক' শুনতে পাওয়া যায়, যেমন দ্য কিঙ্কস দ্বারা 'সী মাই ফ্রেন্ডস' এবং দ্য ইয়ার্ডবার্ডস দ্বারা 'হার্ট ফুল অফ সোল', গিটারবাদক জেফ বেক দ্বারা সেতারের মতো ঝলকের বৈশিষ্ট্য দিয়ে আগের মাস প্রকাশ করেছিল।[৩২][৩৩] বীটলসদের গান 'নরওয়েজিয়ান উড (দ্য বার্ড হ্যাজ ফ্লোন)', যেটা ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্যান্ডের প্রথম প্রকাশিত রাবার সোল অ্যালবামে আবির্ভূত হয়েছিল, এটা ছিল প্রথম পশ্চিমি পপ গান যাতে প্রকৃতপক্ষে সেতার সহযোগ ছিল (প্রখ্যাত গিটারবাদক জর্জ হ্যারিসন প্রদর্শিত[৩৩][৩৪] মার্চ ১৯৬৬, দ্য ব্যর্ডস কৃত একক 'এইট মাইলস হাই' এবং এর পাশে 'হোয়াই' সমেত প্রভাবান্বিত হয়ে একট উপধরনের সঙ্গীত সৃষ্টি করেছিল। যদিও 'রাগা রক' শব্দটা উদ্ভাবিত হয়েছিল এভাবে - দ্য ব্যর্ডসের এই এককের প্রচারে  সংবাদ প্রকাশের ছাপানো সমীক্ষা 'এইট মাইলস হাই' দ্য ভিলেজ ভইস-এর জন্যে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন সাংবাদিক সেলি কেম্পটন।[৩৫][৩৬] জর্জ হ্যারিসনের ভারতীয় সঙ্গীতে আগ্রহে বিগত শতকের ছয়ের দশকের মাঝামাঝি যে গানগুলো জনপ্রিয় হয়েছিল, সেগুলো হল: 'লাভ ইউ টু', 'টুমরো নেভার নোজ' (লেনন-ম্যাককার্টনিকে কৃতজ্ঞতা), 'উইদিন ইউ উইদাউট ইউ' এবং 'দ্য ইনার লাইট'।[৩৭][৩৮][৩৯] বিগত শতকের ছয়ের দশকের রক কার্যকলাপ ব্রিটিশ ও আমেরিকা উভয় দেশের গোষ্ঠীগুলো এবং ভারতীয় রকের অবস্থান সব মিলিয়ে এক সামপ্রতিক ধারায় এল ভারতীয় রক

ভারতীয় রক

নিকোটিন প্রদর্শন করছেন 'পেডাল টু দ্য মেটাল', টিডিএস, ইন্দোর, ভারত, ২০১৪।এই ব্যান্ডকে মধ্য ভারত অঞ্চলের অগ্রগামী মেটাল সংগীত বিশষজ্ঞ বলা হয়।

ভারত রক সঙ্গীত 'দৃশ্য' চলচ্চিত্র অথবা মিশ্র সাংগীতিকতার 'দৃশ্যগুলো' কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এক ধরনের অবস্থানে গভীর ভক্তি অর্জন করে এর নিজের মতো আবির্ভূত হয়েছে। বিগত শতকের ছয়ের দশকে ভারতে রক সঙ্গীত আসল রূপ পেয়েছিল, যখন দ্য বিটলস প্রমুখ আন্তর্জাতিক শিল্পীরা ভারত সফর করেন এবং এখানে তারা তাদের সঙ্গীত উপস্থাপন করেন। এই শিল্পীদের ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ, যেমন রবি শংকর এবং জাকির হুসেন প্রমুখের সঙ্গে সহযোগিতা রাগা রক সঙ্গীতের উন্নয়নে ছাপ ফেলেছিল। আন্তর্জাতিক সফ্টওয়্যার রেডিয়ো স্টেশন, যেমন ভয়েস অফ আমেরিকা, বিবিসি, এবং রেডিয়ো শ্রীলঙ্কা জনগণের মধ্যে পশ্চিমি পপ, লোক সঙ্গীত, এবং রক সঙ্গীত স্প্রচারের ব্যাপারে বড়ো ভূমিকা নিয়েছিল। ভারতীয় রক ব্যান্ডগুলো পুরো চেহারা পেতে আরম্ভ করে একমাত্র খানিকটা পরে, ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া দশকের শেষদিক নাগাদ।

এটা ছিল এই সময়কাল নাগাদ যে, রক ব্যান্ড ইন্দাস ক্রীড, আগে বলা হোত দ্য রক মেশিন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই ব্যান্ড রক-এন-রোল রেনেগাদের সঙ্গে নিজের জায়গা খুঁজে পেয়েছিল। অন্যান্য ব্যান্ড তাড়াতাড়ি এটা অনুসরণ করে। নতুনকে সাদরে গ্রহণ করায় ভারতীয় রক সঙ্গীত দিনকে দিন অারো সমর্থন পেতে থাকে। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে শুরু দশকের গোড়ায় এমটিভি আবির্ভাবের সঙ্গে, ভারতীয়রাও বিভিন্ন ধারার রক, যেমন গ্রুঞ্জে এবং স্পিড মেটাল হাজির করতে থাকে। এই প্রভাব আজও বিভিন্ন ভারতীয় ব্যান্ডের মধ্যে পরিষ্কারভাবে দেখা যেতে পারে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহরগুলো, প্রধানত কলকাতা, গুয়াহাটি, শিলং, দিল্লি, মুম্বই এবং বেঙ্গালুরু হয়ে ওঠে রক এবং মেটাল সঙ্গীত উন্মাদনার আঁতুড়ঘর! বেঙ্গালুরু হয়ে ওঠে ভারতে রক এবং মেটাল আন্দোলনের পীঠস্থান। অনেক স্বনামধন্য ব্যান্ডের মধ্যে আছে: দোরিয়ান প্লেটোনিক, নিকোটিন, ক্যানিবলস, ফিনিক্স, জাস্ট, ভুদু চাইল্ড, রুবেলা, ক্রিস্টাল অ্যান, মর্গুই, ইন্ডিয়ান ওসেন, ক্রিপ্টোস,পেন্টাগ্রাম, থার্মাল অ্যান্ড এ কোয়ার্টার, অ্যাবান্ডন্ড অ্যাগনি, নো আইডিয়া, জিরো, হাফ স্টেপ ডাউন, স্ক্রাইব, ইস্টার্ন ফেয়ার, ডেমোনিক রেসারেকশন, জিগনেমা, মাদারজানে, সোলমাতে, অ্যাভিয়াল এবং পরিক্রমা। ভবিষ্যৎ আরো উদ্যমপূর্ণ অবস্থানকে ধন্যবাদ, যেমন গ্রিন ওজোন, ডগমা টোন রেকর্ডস, ইস্টার্ন ফেয়ার মিউজিক ফাউন্ডেশন, যারা ভারতীয় রককে সমর্থন এবং বিপণনে উৎসর্গিত। মধ্য ভারত থেকে নিকোটিন, একটা ইন্দোর-ভিত্তিক মেটাল ব্যান্ড, যাদের ওই অঞ্চলে অগ্রগামী মেটাল সংগীত স্রষ্টা হিসেবে বিস্তৃতভাবে সম্মান প্রাপ্য।[৪০][৪১][৪২][৪৩][৪৪][৪৫][৪৬][৪৭][৪৮][৪৯][৫০]

নৃত্য সংগীত

জ্যাজ এবং ব্লুজ

অধিকাংশ চলচ্চিত্র দৃশ্য প্রয়োজনে নগ্ন দৃশ্যের প্রচলন ছিল সময়কালীন ধারণাটি মোট ১২টি পর্যায়ে জ্যাজ এবং ব্লুজ

পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সংগীত

ভারতে পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ধারাবাহিকভাবে বিস্তৃতি এবং অনুসরণ প্রায় নেই বললেই চলে। এটা প্রধানত জরথুস্ট্রবাদী সম্প্রদায় এবং অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী দ্বারা পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ঐতিহাসিক প্রকাশে পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল। অন্য অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী হল চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরুর প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টান সম্প্রদায়, যারা বিশেষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল। পশ্চিমি সঙ্গীত ভারতে খুবই মারাত্মকভাবে অবহেলিত ছিল এবং যৎসামান্য অস্তিত্ব বজায় ছিল। পশ্চিমি কিবোর্ড, ড্রাম এবং গিটার নির্দেশনা এক ব্যতিক্রম হিসেবে কিছুটা আগ্রহ দেখা যেত প্রধানত সমসাময়িক জনপ্রিয় ভারতীয় সঙ্গীতের সেবায় সঙ্গীতজ্ঞ তৈরির ক্ষেত্রে। ভারতে পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অস্পষ্টতা বিষয়ে অনেক কারণ উল্লেখ করা যায়, একটা দেশ তার নিজস্ব সাংগীতিক উত্তরাধিকারে সমৃদ্ধ হওয়া তার অধিকার, যাই হোক, দুটো প্রধান কারণ হল, চূড়ান্ত প্রকাশে অনীহা এবং অসাড় অনাগ্রহ যাতে অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী প্রধানত যুক্ত। এছাড়াও, পশ্চিমি সাংগীতিক বাদ্যযন্ত্রগুলো এদেশে আমদানি করার অসুবিধে এবং তাদের অসাধারণত্ব পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের দুর্বোধ্যতাকে বাড়িয়ে দেয়।

এদেশে পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের প্রকট হওয়ার পর এক শতকের বেশি সময় গড়িয়ে যাওয়া সত্ত্বেও এবং প্রায় দু-শতক ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনেও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত কখনোই আনুষ্ঠানিক বা 'সাজানো' এর বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। অতীতে পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতকে জনপ্রিয় করার অনেক চেষ্টা ভারতে হয়েছে, কিন্তু সেগুলো আগ্রহ না-থাকা এবং উঁচুতে ধরে রাখার অবদানের অভাবে সফল হয়নি। বর্তমানে  ভারতে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিক্ষার হাল উন্নত হয়েছে। এধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে: কেএম মিউজিক কনজারভেটরি (অস্কার-বিজয়ী সঙ্গীতকার এআর রহমান প্রতিষ্ঠিত), ক্যালকাটা স্কুল অফ মিউজিক, ব্যাঙ্গালোর স্কুল অফ মিউজিক, ইস্টার্ন ফেয়ার মিউজিক ফাউন্ডেশন,[51] দিল্লি স্কুল অফ মিউজিক, উস্তাদগড় ফাউন্ডেশন, দিল্লি মিউজিক অ্যাকাডেমি,গিটারমঙ্ক এবং অন্যান্য অনেকে পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে উৎসর্গিত হয়ে প্রগতি অথবা উন্নতি এবং সমর্থনে অবদান রাখছে। ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে প্রখ্যাত মেহলি মেহতা বোম্বে সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা  তৈরি করেন। দার্জিলিঙে ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া দশকের গোড়ায় মিস্টার জীবন প্রধান প্রতিষ্ঠা করেন 'মেলোডি অ্যাকাডেমি'; যিনি নিজে একক চেষ্টায় দার্জিলিং পাহাড়ে পশ্চিমি সঙ্গীত এনেছিলেন, যেটা খুব উন্নত একটা সাংগীতক উত্তরাধিকাররূপে রয়ে গিয়েছে।  

১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে দ্য বোম্বে চেম্বার অর্কেস্ট্রা[৫১] (বিসিও) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে মুম্বইতে এনসিপিএ অঞ্চলে স্থাপিত এবং আশ্রিত হয় সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা অফ ইন্ডিয়া। বর্তমানে এটাই ভারতের একমাত্র পেশাদার সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা এবং যারা প্রতি বছর দুটো কন্সার্ট ঋতু দর্শক-শ্রোতাদের উপহার দেয়, যেখানে বিশ্ববিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক এবং একক সঙ্গীতজ্ঞরা প্রদর্শন করে থাকেন।

কয়েকজন বিশিষ্ট ভারতীয়, পশ্চিমি উচ্চাঙ্গ সংগীতবেত্তা হলেন:

দেশপ্রেম এবং সংগীত

স্বাধীনতা সংগামের যুগ থেকে ভারতীয়দের মধ্যে সঙ্গীতের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক অনুভূতি জাগ্রত হয়েছিল। দেশব্যাপী ঐক্যের অভিন্ন সুরে সঙ্গীতের মাধ্যমে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত জাতীয় জয়গাথা জনগণমন ভারতবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, এবং ঋষি বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দে মাতরম্ জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মর্যাদা পায়। ভারতের স্বাধীনতালাভের পর যে গানগুলো বৈশিষ্ট্য লাভ করে: অ্যয়ে মেরে ওয়াতন কে লোগো, মিলে সুর মেরা তুমহারা, অব তুমহারে হাওয়ালে ওয়াতন সাথিয়োঁ, এ আর রহমান কৃত মা তুঝে সালাম - এই গানগুলো দেশভক্তিকে মিলিত করা, জাতীয় সংহতি এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য আনে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Kapila Vatsyayan (১৯৮২)। Dance In Indian Painting। Abhinav Publications। পৃষ্ঠা 12–19। আইএসবিএন 978-81-7017-153-9 
  2. "Collections:Pre-History & Archaeology"। National Museum, New Delhi। ৬ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  3. Nalapat, Dr Suvarna (২০১৩-০২-১৬)। Origin of Indians and their Spacetime (ইংরেজি ভাষায়)। D C Books। আইএসবিএন 9789381699188 
  4. Singh, Upinder (২০০৮)। A History of Ancient and Early Medieval India : from the Stone Age to the 12th century। New Delhi: Pearson Education। পৃষ্ঠা 162। আইএসবিএন 9788131711200। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৪ 
  5. McIntosh, Jane R. (২০০৮)। The Ancient Indus Valley : New Perspectives। Santa Barbara, California: ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 281, 407। আইএসবিএন 9781576079072। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৪ 
  6. origin of Indian music and arts. Shodhganga.
  7. see e.g. MacDonell 2004, পৃ. 29–39; Sanskrit literature (2003) in Philip's Encyclopedia. Accessed 2007-08-09
  8. see e.g. Radhakrishnan ও Moore 1957, পৃ. 3; Witzel, Michael, "Vedas and Upaniṣads", in: Flood 2003, পৃ. 68; MacDonell 2004, পৃ. 29–39; Sanskrit literature (2003) in Philip's Encyclopedia. Accessed 2007-08-09
  9. Sanujit Ghose (2011). "Religious Developments in Ancient India" in Ancient History Encyclopedia.
  10. Gavin D. Flood (১৯৯৬)। An Introduction to Hinduism। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 37–39। আইএসবিএন 978-0-521-43878-0 
  11. ML Varadpande (1990), History of Indian Theatre, Volume 1, Abhinav, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১৭০১৭২৭৮৯, page 48
  12. Maurice Winternitz 2008, পৃ. 181–182।
  13. Sorrell ও Narayan 1980, পৃ. 3-4।
  14. Guy L. Beck (২০১২)। Sonic Liturgy: Ritual and Music in Hindu Tradition। University of South Carolina Press। পৃষ্ঠা 63–64। আইএসবিএন 978-1-61117-108-2 
  15. William Alves (২০১৩)। Music of the Peoples of the World। Cengage Learning। পৃষ্ঠা 266। আইএসবিএন 1-133-71230-4 
  16. Patrick Olivelle 1999, পৃ. xxiii।
  17. Jan Gonda (1970 through 1987), A History of Indian Literature, Volumes 1 to 7, Otto Harrassowitz Verlag, আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৪৪৭-০২৬৭৬-৫
  18. Teun Goudriaan and Sanjukta Gupta (1981), Hindu Tantric and Śākta Literature, A History of Indian Literature, Volume 2, Otto Harrassowitz Verlag, আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৪৪৭-০২০৯১-৬, pages 7–14
  19. Ananda W. P. Guruge, 1991, The Society of the Ramayana, Page 180-200.
  20. Suresh Kant Sharma and Usha Sharma, 2005, Discovery of North-East India, Page 288.
  21. Ghosh, p. xiii
  22. Huke, Robert E. (২০০৯)। "West Bengal"Encyclopædia Britannica। Encyclopædia Britannica Online। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-০৬ 
  23. Tagore: At Home in the World আইএসবিএন ৯৭৮-৮-১৩২-১১০৮৪-২ pp. 253-254
  24. "Bihu Dance" 
  25. "Bihu- Most prominent amongst folk dance forms of Assam" 
  26. Pinglay, Prachi (ডিসেম্বর ১০, ২০০৯)। "Plans to start India music awards"BBC News। সংগ্রহের তারিখ মে ১৯, ২০১০ 
  27. reggaetonline.net
  28. Irwin, Colin (২০১০-০৯-০৩)। "A triumphant experiment that feels surprisingly authentic"। BBC review। 
  29. Pundir, Pallavi (মার্চ ১৫, ২০১৩)। "A Little This, A Little That"। Indian Express 
  30. "Socio-political History of Modern Pop Music in Pakistan"Chowk। ২০১০-০৬-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-২৭ 
  31. "Music man with a golden touch"The Hindu। ডিসেম্বর ৯, ২০০২। জুলাই ৪, ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১২, ২০১৮ 
  32. Miller, Andy. (২০০৩)। The Kinks are the Village Green Preservation Society (33⅓ series)। Continuum International Publishing Group। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 0-8264-1498-2 
  33. Bellman, Jonathan. (১৯৯৭)। The Exotic in Western Music। Northeastern। পৃষ্ঠা 297। আইএসবিএন 1-55553-319-1 
  34. Lewisohn, Mark. (১৯৮৯)। The Complete Beatles Recording Sessions। The Hamlyn Publishing Group। পৃষ্ঠা 63। আইএসবিএন 0-600-55784-7 
  35. Bellman, Jonathan. (১৯৯৭)। The Exotic in Western Music। Northeastern Publishing। পৃষ্ঠা 351। আইএসবিএন 1-55553-319-1 
  36. Hjort, Christopher. (২০০৮)। So You Want To Be A Rock 'n' Roll Star: The Byrds Day-By-Day (1965-1973)। Jawbone Press। পৃষ্ঠা 88। আইএসবিএন 1-906002-15-0 
  37. Lavezzoli, Peter. (২০০৭)। The Dawn of Indian music in the West। Continuum International Publishing Group। পৃষ্ঠা 293। আইএসবিএন 0-8264-2819-3 
  38. Lavezzoli, Peter. (২০০৭)। The Dawn of Indian music in the West। Continuum International Publishing Group। পৃষ্ঠা 175। আইএসবিএন 0-8264-2819-3 
  39. Pedler, Dominic (২০০৩)। The Songwriting Secrets of the Beatles। London: Omnibus Press। পৃষ্ঠা 524। আইএসবিএন 978-0-7119-8167-6 
  40. "Does Indore have the mettle for metal? - DNA - English News & Features - Art & Culture - dnasyndication.com<"dnasyndication.com। ৬ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  41. "Metal mania"educationinsider.net। ১৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  42. "Indore has a bandtastic time!"dnaindia.com। ২০১৬-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  43. "The 10 Famous Rock Bands of India - Sinlung"sinlung.com। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  44. "Best Rock Bands In India"indiaonline.in। ২১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  45. "The 10 Famous Rock Bands of India"walkthroughindia.com। ১২ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  46. "Almost There: 6 Awesome Indian Music Bands To Look Forward To"Youth Ki Awaaz। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  47. "# 12 Prominent Indian Rock Bands Who Gave a New Definition To The Music."Witty9। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  48. "12 Cities That are Home to Awesome Bands and You Probably Din't Know It!"Travel India। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  49. Neelima K। "Top 10 Rock Bands in India"Top List Hub। ২ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  50. "DNA E-Paper - Daily News & Analysis -Mumbai, India"dnaindia.com। ২০১৬-০৩-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  51. "Outstanding Results for Eastern Fare in Trinity Guildhall Exam"G News। নভেম্বর ১৮, ২০০৯। ২৪ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৮ 

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!