ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন সরকারি জাতীয় চিহ্ন রয়েছে, যার মধ্যে ঐতিহাসিক নথি, পতাকা, প্রতীক, সঙ্গীত, স্মারকস্তম্ভ, এমনকি বিভিন্ন জাতীয় নায়কও রয়েছে। স্বাধীনতার আগে ২২ জুলাই ১৯৪৭-এ গণপরিষদ জাতীয় পতাকার নকশাকে সরকারিভাবে গ্রহণ করেছিল।[১] বিভিন্ন উপলক্ষে চিহ্নিত জাতীয় প্রতীকের মধ্যে জাতীয় প্রাণী, পাখি, ফুল, ফল ও গাছ রয়েছে।[২]
তালিকা
চিহ্ন
নাম
চিত্র
টীকা
সরকারি নাম
ভারতীয় প্রজাতন্ত্র ইংরেজি: Republic of India, প্রতিবর্ণীকৃত: রিপাব্লিক্ অভ়্ ইন্ডিঅ্য হিন্দি: भारत गणराज्य, প্রতিবর্ণীকৃত: ভারত গণরাজ্য
বাংলা ও হিন্দি "ভারত" নামটি "ভরত" শব্দ হতে উদ্ভূত, যা মূলত অগ্নি দেবতার অপর নাম। এই "ভরত" শব্দটি আবার √ভৃ ধাতু থেকে নিষ্পাদিত, যার অর্থ "পালন/বহন করা"। ইংরেজি India (ইন্ডিঅ্য) নামটি সিন্ধু নদের গ্রিক নাম হতে উদ্ভূত।
এটি একটি অনুভূমিক আয়তাকার তেরঙা পতাকা, যার উপরের রং গাঢ় গেরুয়া, মাঝের রং সাদা এবং নিচের রং সবুজ। গেরুয়া হচ্ছে আত্মবলিদান ও শৌর্যের প্রতীক, সাদা হচ্ছে শান্তি, সততা ও শুদ্ধতার প্রতীক এবং সবুজ হচ্ছে সমৃদ্ধি, স্পন্দনশীলতা ও জীবনের প্রতীক। দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের মধ্যে ৩:২ অনুপাত অনুযায়ী জাতীয় পতাকা তৈরি করা হয়।[৩] পতাকার মাঝে ২৪টি শিকবিশিষ্ট নেভি ব্লু রঙের একটি চক্র রয়েছে, যা অশোক চক্র নামে পরিচিত। পিঙ্গলী ভেঙ্কায়ার দ্বারা তৈরি করা স্বরাজ পতাকার উপর ভিত্তি করে এই পতাকাটি তৈরি করা হয়েছে।[১]
ভারতের স্বাধীনতা ও বিভাজনের পর দেবনাগরী লিপিতে লিখিত হিন্দি ভাষাকে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সরকারি ভাষা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, যার উল্লেখ সংবিধানের ৩৪৩ নং অনুচ্ছেদে পাওয়া যায়।[৫] কিন্তু হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে অহিন্দিভাষীরা, বিশেষত দক্ষিণ ভারতীয়রা, বিক্ষোভ শুরু করেছিল, যার ফলে সরকারি ভাষা আইন, ১৯৬৩ লাগু হয়েছিল এবং সমস্ত সরকারি কাজকর্মে অনির্দিষ্টকাল ধরে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার হতে লাগল।[৬]
২৬ জানুয়ারি ১৯৫০-এ ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়েছিল এবং ভারত এক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল। ১৫ আগস্ট ১৯৪৭-এ ভারত ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিল। ২ অক্টোবর ১৮৭৯-এ "জাতির জনক" হিসাবে পরিচিত মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
১৯৬২ সালে পিদিমারি ভেঙ্কট সুবা রাওতেলুগু ভাষায় এটি রচনা করেছিলেন। কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা পর্ষদ বিদ্যালয়ে এই অঙ্গীকার গাওয়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল এবং ২৬ জানুয়ারি ১৯৬৫-এ এই প্রথা শুরু হয়েছিল।[৭] কোনো পাবলিক অনুষ্ঠানে, বিশেষ করে বিদ্যালয় এবং সাধারণতন্ত্র দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের সময় ভারতীয়রা একসঙ্গে এই গান গায়।
ভারতীয় টাকা (আইএসও কোড: INR) ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সরকারি মুদ্রা। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই মুদ্রার ইস্যুকরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। ভারতীয় টাকার প্রতীকটি দেবনাগরী ব্যঞ্জনবর্ণ "र" ও ইংরেজি ব্যঞ্জনবর্ণ "R" হতে উদ্ভূত এবং ২০১০ সালে এটি গৃহীত হয়েছিল। এই প্রতীকের নকশাকার উদয় কুমার ধর্মলিঙ্গমের মতে ভারতীয় তেরঙার উপর ভিত্তি করে এই প্রতীক তৈরি করা হয়েছে।
বেঙ্গল টাইগার হচ্ছে বাঘের (Panthera tigris) এক উপজাতি, যা এপ্রিল ১৯৭৩ থেকে ভারতের জাতীয় প্রাণী।[৮] বাঘ হচ্ছে বিড়ালশ্রেণির মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রজাতির মধ্যে অন্যতম। নাগপুর "ভারতের ব্যাঘ্র রাজধানী" হিসাবে পরিচিত। অরণ্যের এলাকা হ্রাস এবং আইইউসিএন লাল তালিকায় বাঘের অন্তর্ভুক্তির ফলে ১৯৭৩ সালে ভারত সরকার ব্যাঘ্র প্রকল্প শুরু করেছিল।[৮]
ভারতীয় হাতি ২২ অক্টোবর ২০১০ থেকে ভারতের জাতীয় ঐতিহ্যবাহী প্রাণী হয়ে এসেছে। দেশের প্রায় ২৯,০০০টি হাতিকে সংরক্ষিত করার জন্য ভারতের পরিবেশ মন্ত্রক ভারতীয় হাতিকে "জাতীয় ঐতিহ্যবাহী হাতি" হিসাবে ঘোষণা করেছিল।
শঙ্খচূড় বা রাজসর্প (Ophiophagus hanna) হচ্ছে ভারতের জাতীয় সরীসৃপ। ভারত ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অরণ্যে শঙ্খচূড় পাওয়া যায়। শঙ্খচূড় ২৫ বছর পর্যন্ত বাঞ্চতে পারে এবং এটি ১৯ ফুট (৫.৮ মিটার) পর্যন্ত বাড়তে পারে।[৯]
↑ কখ"National Flag"। ভারত সরকার। ১৫ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৪।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Indian Flag"। ১৩ মার্চ ২০২২।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"State Emblem"। ভারত সরকার। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১২।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"National Tree"। ভারত সরকার। ২২ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১২।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"National Bird"। ভারত সরকার। ১৫ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১২।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"National Fruit"। ভারত সরকার। ২২ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১২।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)