ভারতের সামরিক বাহিনীতে মোট ১,৩২৫,০০০ জন নিয়মিত সেনা,[১] ১,১৫৫,০০০ জন সংরক্ষিত সেনা,[১] এবং ১,২৯৩,৩০০ জন[১] আধাসামরিক সেনা রয়েছে। ভারতের সামরিক বাহিনীর সর্বমোট সেনা জওয়ানের সংখ্যা ৩,৭৭৩,৩০০ জন। ২০০৬ সালের হিসেব অনুযায়ী, ভারতের সামরিক বাহিনী গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের পরেই[৪] বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক বাহিনী।[৫]ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী, কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং স্ট্রাটেজিক ফোর্সেস কম্যান্ড সেনাবাহিনীর প্রধান সহকারী বাহিনী। ভারতের সরকারি প্রতিরক্ষা বাজেট ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।[৬] তবে সামরিক খাতে আরও অনেক অর্থ ব্যয় হয়ে থাকে।[৭] বর্তমানে সামরিক বাহিনীর ব্যাপক সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের কাজ চলছে।[৮] ভারতীয় সামরিক বাহিনী সক্রিয়ভাবে সামরিক মহাকাশ কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে।[৯] এছাড়া ভারতের সামরিক বাহিনী একটি মিশাইল প্রতিরক্ষা শিল্ড[১০] ও পারমাণবিক ট্রায়াড ক্ষমতাও গড়ে তুলছে। ভারতের সামরিক বাহিনীর ভাণ্ডারে পরমাণু অস্ত্র, কম ও মাঝারি দুরত্বের ব্যালিস্টিক মিশাইল এবং পারমাণবিক অস্ত্র বহনক্ষম বিমান ও নৌযান রয়েছে।
ভারতের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর লক্ষাধিক কর্মচারীর নিজস্ব ব্যবহারের জন্য ৯,৯৭০.১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ডেডিকেটেড, উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত, স্টেট-অফ-দি-আর্ট অপটিক্যাল ফাইবার কেবল (ওএফজি) নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। ভারতীয় সামরিক বাহিনীই কেবল এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবে।[১১]
ভারতের নৌ-ইতিহাস পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন।[১২][১৩][১৪][১৫] ২৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ অধুনা গুজরাত উপকূলের ম্যানগ্রোল বন্দরের কাছে সিন্ধু সভ্যতারলোথালে দেশের প্রথম টাইডাল ডকটি গড়ে উঠেছিল।[১৬][১৭] ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে রচিত ঋগ্বেদেবরুণকে সমুদ্রপথ সম্পর্কে অবগত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই গ্রন্থে নৌ-অভিযানেরও বর্ণনা রয়েছে। প্লব নামে জাহাজের একপ্রকার পার্শ্বপক্ষের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা ঝড়ের মধ্যে জাহাজকে স্থির রাখতে সাহায্য করত। খ্রিষ্টীয় চতুর্থ ও পঞ্চম শতাব্দীতে মৎস্য যন্ত্র নামে একপ্রকার কম্পাসের ব্যবহারও প্রচলিত ছিল।
খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে মৌর্য সাম্রাজ্যের অধীনে দেশের প্রথম সুসংহত নৌবাহিনী গড়ে ওঠে। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধানমন্ত্রী কৌটিল্যেরঅর্থশাস্ত্র গ্রন্থের একটি অধ্যায়ে নৌ-অধ্যক্ষ-এর অধীনস্থ একটি পূর্ণাঙ্গ বিভাগের বর্ণনা পাওয়া যায়।[১] এই গ্রন্থে নৌ দ্বীপান্তরগমনম্ শব্দটি এবং বৌধায়ন ধর্মসূত্র নামক বৌদ্ধগ্রন্থে সমুদ্রসাম্যনম শব্দটি থেকে সেযুগে নৌ-অভিযানের অস্তিত্বের কথা জানা যায়।
কয়েক শতাব্দীকাল ধরে সমুদ্রপথে ভারতের সঙ্গে অন্যান্য দেশের বাণিজ্য চলত। এমনকি অন্যান্য দেশের উপর ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রেও প্রধান ভূমিকাটি গ্রহণ করেছিল এই সমুদ্রপথগুলিই। মৌর্য, সাতবাহন, চোল, বিজয়নগর, কলিঙ্গ, মারাঠা ও মুঘলদের শক্তিশালী নৌবাহিনীর অস্তিত্ব ছিল।[১৮] চোলদের সমুদ্রবাণিজ্য ও সমুদ্রাভিযানের পরিধি প্রশস্ত হয়েছিল চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত।
সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীতে মারাঠা ও কেরল নৌবাহিনীর সম্প্রসারণ ঘটে। এই দুই বাহিনী ছিল সেযুগের শ্রেষ্ঠ নৌশক্তি। একাধিকবার ইউরোপীয় নৌবাহিনীকেও পরাজিত করেছিল এরা (কোলাচেলের যুদ্ধ দেখুন)। মারাঠাদের নৌপ্রদর্শনী হয়েছিল রত্নগিরি দুর্গে। এখানে পাল ও কালবাট জাহাজদুটিও অংশগ্রহণ করে।[১৯]সামুথিরির মারাঠা নৌ-সেনানায়ক কাহ্নোজি আংড়ে ও কুঞ্জলি মারাক্কার ছিলেন সেযুগের দুই শ্রেষ্ঠ নৌযোদ্ধা।
ঔপনিবেশিক যুগে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৮ সালে রয়্যাল ইন্ডিয়ান মেরিনে ইঞ্জিনিয়ার অফিসার হিসেবে যোগ দেন সাব-লেফটানেন্ট ডি. এন. মুখার্জি। তিনিই প্রথম ভারতীয় যাঁকে কমিশন অনুমোদন করা হয়েছিল। ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনীর নাবিকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবিদ্রোহ নামে পরিচিত এই বিদ্রোহ সারা ভারতে ব্যপ্ত হয়। ৭৮টি জাহাজ, ২০টি বন্দর প্রতিষ্ঠান ও ২০,০০০ নাবিক এই বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনীর নতুন নামকরণ হয় ভারতীয় নৌবাহিনী। এর জাহাজগুলি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ বা ইন্ডিয়ান ন্যাভাল শিপস (আইএনএস) নামে পরিচিত হয়। ১৯৫৮ সালের ২২ এপ্রিল ভাইস অ্যাডমিরাল আর. ডি. কাটারি প্রথম ভারতীয় হিসেবে নৌ-সেনাধ্যক্ষের পদে বৃত হন।
এছাড়াও ভারতের অন্যতম বিমান রাফাল।
↑ কখগঘঙIndia's Armed Forces, CSIS (Page 24)(পিডিএফ), ২৫ জুলাই ২০০৬, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল(PDF) থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১০উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)