কালীচরণ ঘোষ ১৯১০ সালের ১৪ মার্চ পালপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম উদয়চাঁদ ঘোষ। তিনি চন্দননগরের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বিদ্যালয়ের বছরগুলিতে, তিনি বিপ্লবী দলগুলির সাথে জড়িত হন, দুর্গাদাস শেঠ নামে একজন সহকর্মী বিপ্লবীর মধ্যে অনুপ্রেরণা খুঁজে পান, যা তাঁর দেশপ্রেমের বোধকে বাড়িয়ে তোলে।[১][২]
সশস্ত্র আন্দোলনের মধ্যে গোপনে কাজ করে, কালীচরণ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের অনুভূতিকে প্রভাবিত করতে তাঁর লেখাগুলি ব্যবহার করেছিলেন। দুর্গাদাস শেঠ সম্পাদিত এবং রামেশ্বর দে থেকে প্রকাশিত 'স্বদেশী বাজার' পত্রিকায় তাঁর একটি প্রবন্ধ প্রকাশের ফলে রাজদ্রোহিতার অভিযোগে তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়। কালীচরণের প্রচেষ্টায় চন্দননগরে 'যুব সমিতি' গড়ে ওঠে।
গ্রেফতার
১৯৩০ সালে মেদিনীপুরে 'লবণ আইন অমান্য আন্দোলনে' অংশ নেওয়ার জন্য তিনি গ্রেফতার হন। এক বছর কারাভোগের পর তিনি অল্প সময়ের জন্য চন্দননগরে ফিরে আসেন, কিন্তু মেদিনীপুরে বিপ্লবী দল গঠনের চেষ্টা করলে ব্রিটিশ পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। তাঁর বিপ্লবী কার্যকলাপের ফলে দেউলি, হিজলি এবং বক্সা শিবিরে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছিল।[৩]
পরবর্তী জীবন
১৯৩৭ সালে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি হুগলি জেলার কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৩৯ সালে দলটি নিষিদ্ধ হলে আবারও কয়েক মাস কারাভোগ করতে হয়। ১৯৪৪ সালে তিনি পন্ডিচেরিতে ভারতের মুক্তি আন্দোলনের জন্য একটি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন, কিন্তু আবারও গ্রেপ্তার হন। এই সময়ে, তিনি যক্ষ্মা নির্ণয় করা হয়েছিল, যার ফলে তার একটি ফুসফুস অপসারণ করা হয়েছিল।[৪]
কালীচরণ তাঁর মৃত্যুর আগে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দান করেছিলেন এবং একটি শিশু হাসপাতাল ও গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সরকার তাকে একটি তাম্রলিপি এবং স্বাধীনতা পেনশনের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু তিনি এই সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
কালীচরণ ঘোষ ১৯৭৩ সালের ৩০ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।[৫]
তথ্যসূত্র
↑বসু, অঞ্জলি (নভেম্বর ২০১৩)। বসু, অঞ্জলি; সেনগুপ্ত, সুবোধচন্দ্র, সম্পাদকগণ। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। ১ (পঞ্চম সংস্করণ, দ্বিতীয় মুদ্রণ সংস্করণ)। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৫১২। আইএসবিএন978-8179551356।|সংগ্রহের-তারিখ= এর |ইউআরএল= প্রয়োজন (সাহায্য)