ইয়ান জোনাথন লিওনার্ড ট্রট (ইংরেজি: Ian Jonathan Leonard Trott; জন্ম: ২২ এপ্রিল, ১৯৮১) দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে জন্মগ্রহণকারী ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ও সাবেক টেস্টক্রিকেট তারকা। ঘরোয়া ক্রিকেট লীগে তিনি ওয়ারউইকশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষ হয়ে খেলেন। এছাড়াও তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ডেও খেলেছেন। ২০১১ সালে তিনি আইসিসি এবং ইসিবি’র বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা পেয়েছেন ট্রট।[২]
প্রারম্ভিক জীবন
ইংরেজ বংশোদ্ভূত দক্ষিণ আফ্রিকান পরিবারে কেপটাউনে জন্মগ্রহণ করেন ট্রট। রনডেবোস বয়েজ’ হাই স্কুল এবং স্টেলেনবস বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৯ এ উভয় ধরনের ক্রিকেটেই দক্ষিণ আফ্রিকা দলের পক্ষ হয়ে খেলেছেন তিনি।[৩] ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সে থাকাকালে দক্ষিণ আফ্রিকার ভবিষ্যতের টেস্ট খেলোয়াড় পল হ্যারিসের সাথে একত্রে খেলেন।[৪]
এপ্রিল, ২০০৯ সালে ওয়ারউইকশায়্যারের প্রেস অফিসার আবি ডলারি নাম্নী সাবেক ওয়ারউইকশায়ারের অধিনায়কটম ডলারির নাতনীকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে লিলি নাম্নী এক কন্যা সন্তান অক্টোবর, ২০১০ তারিখে ভূমিষ্ঠ হয়।
ট্রট শীর্ষসারির ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও মাঝে-মধ্যে মিডিয়াম-পেস বোলিং করে থাকেন। ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষ হয়ে দুইটি টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেন। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে চমকপ্রদ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করায় ২০০৮-০৯ মৌসুমে ইংল্যান্ড লায়ন্সের সাথে বৈশ্বিক সফরে বের হন। এরপর আগস্ট, ২০০৯ সালে অ্যাশেজের ৫ম টেস্টে অংশ নেন। অভিষেক ঐ টেস্টে শতক গড়ে ১৮তম ইংরেজ ক্রিকেটার হিসেবে রেকর্ড করেন।[৫] আঠারো মাস পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪র্থ টেস্টে এমসিজিতে অপরাজিত ১৬৮* রান গড়ে ইংল্যান্ডের বিজয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি অ্যাশেজ অক্ষুণ্ন রাখেন। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচেরপুরস্কার লাভ করেন।[৬] ২৮ মে, ২০১০ তারিখে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিপক্ষে লর্ডসে নিজস্ব সর্বোচ্চ ২২৬ রান করেন। একই খেলায় তিনি তার প্রথম উইকেট শিকার করেন।[৭] দ্বি-শতক লাভের পর ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে তিনি মাত্র ৩ রান করেছিলেন। স্পিনারদের সহযোগিতা করতে স্লিপেই তিনি দাঁড়ান।
ক্রমাগত চাপ ও দুঃচিন্তা অনুভূত হওয়ায় নভেম্বর, ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ সফর থেকে দেশে ফিরে আসেন। সাময়িকভাবে সকল স্তরের ক্রিকেট খেলা থেকে বিরত রাখেন নিজেকে। এপ্রিল, ২০১৪ সালে একবার খেলার জগতে ফিরে আসার চেষ্টা চালান। অবশেষে ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সম্পৃক্ত হন।[৮] কিন্তু সিরিজে তাকে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। তিন টেস্টের সিরিজে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন তিন। প্রথম টেস্টে ০, ৪; দ্বিতীয় টেস্টে ৫৯ ও ০ এবং তৃতীয় টেস্টে ০ ও ৯ করেন। সিরিজে তিনি তিনবার শূন্য রানের সন্ধান পান।
অবসর
৪ মে, ২০১৫ তারিখে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি।[৯] তবে কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে খেলা চালিয়ে যাবার কথা ব্যক্ত করেন।[১০]