অষ্টাদশ শতকে কাউন্টি ক্রিকেটের সূত্রপাত ঘটে। ১৭০৯ সালে প্রচলিত আন্তঃকাউন্টি খেলা শুরুর দিকের কাউন্টি ক্রিকেটের আওতাধীন। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৯০ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের প্রচলন ঘটে। সাত বছরের যুদ্ধে এর অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে। এছাড়াও, নেপোলিয়নের যুদ্ধে কাউন্টি ক্রিকেট স্থগিত হয়্ও ১৭৯৭ থেকে ১৮২৪ সাল পর্যন্ত কোন আন্তঃকাউন্টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।
অষ্টাদশ শতকে আন্তঃকাউন্টি ক্রিকেট খেলা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ১৭৪০-এর দশকে কেন্ট দল সেরা কাউন্টি দল হিসেবে বিবেচিত ছিল। এছাড়াও, তখনকার জনপ্রিয় দল হ্যাম্বলডন ক্লাব যা বর্তমানে হ্যাম্পশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট দলসর্বদলীয় ইংল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে খেলতো। হ্যাম্পশায়ার, কেন্ট, মিডলসেক্স, সারে ও সাসেক্স কাউন্টি ক্রিকেটে সর্বাপেক্ষা সফলতম দলের মর্যাদা পায়। কিন্তু শহর ও কাউন্টির মধ্যকার দলের মাঝখানে স্থানীয় পর্যায়ের বেশকিছু শক্তিশালী ক্লাব দলও সম্পূর্ণ কাউন্টির প্রতিনিধিত্ব করতো। তন্মধ্যে লন্ডন ক্রিকেট ক্লাব প্রায়শঃই কাউন্টি দলগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতো ও দলটি নিজেই কাউন্টি ক্লাবের মর্যাদা লাভ করতো। এছাড়াও, ১৭৪০-এর দশকে স্লিনডন ক্রিকেট ক্লাব বেশ কয়েক বছর সাসেক্স, ডার্টফোর্ড ক্রিকেট ক্লাব কেন্টের ও হ্যাম্বলডন ক্লাব সাসেক্স কাউন্টির প্রতিনিধিত্ব করতো। অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে বার্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট দল সেরা কাউন্টি দলের মর্যাদা পেলেও পরবর্তীকালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মর্যাদা ধরে রাখতে পারেনি।
১৯২১ সালে বাকিংহ্যামশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব পর্যাপ্ত খেলার সুবিধা না থাকায় আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৪৮ সালে ডেভন কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের যোগদানের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। ১৯৮৮ সালে সকল খেলার সময়সূচী তিনদিনব্যাপী করা হয়। সমগ্র দিনে ছয় ঘণ্টাসহ বিরতি রাখা হয়। প্রায়শঃই প্রথম দুই দিন এক ঘণ্টা বৃদ্ধি করে দীর্ঘসময় ও শেষদিনে সংক্ষিপ্ত সময় ধার্য্য করা হয়। ফলে কোন কারণে দলগুলোর অন্যত্র নির্ধারিত খেলায় অংশগ্রহণের জন্য বেশ কিছু সময় ভ্রমণে ব্যয় করতে পারতো। ১৯১৯ মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে দুই দিনের খেলায় দীর্ঘসময়ব্যাপী রাখা হয়। সকাল নয়টা থেকে মধ্য-গ্রীষ্মের সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সময়সীমা ছিল। পরবর্তীকালে এ ঘটনার কোন পুণরাবৃত্তি হয়নি। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কিছু খেলা চারদিন পর্যন্ত রাখা হয়। ১৯৯৩ থেকে অদ্যাবধি সকল খেলাই চারদিনের রাখা হয়েছে।
দলসমূহ
প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি দল
ইংল্যান্ডের আঠারোটি ইংরেজ প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি প্রধান ক্রিকেট দলরূপে পরিচিত। সবগুলো দলই প্রতিষ্ঠাকালীন প্রতিনিধিত্বকারী ও ঐতিহাসিক ইংরেজ কাউন্টির নাম অনুসারে পরিচিত। তন্মধ্যে ওয়েলসের কাউন্টিগ্ল্যামারগন রয়েছে যা ইংরেজ প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টিরূপে গণ্য করা হয়।
সচরাচর কাউন্টির নামের শেষে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব শব্দগুলো ক্রিকেট দলের পূর্ণাঙ্গ নামে যুক্ত করা হয়েছে যা সংক্ষেপে সিসিসি নামে পরিচিত।
প্রথম-শ্রেণীর মর্যাদাপ্রাপ্ত অন্যান্য দল
ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেট মৌসুমের প্রথম-শ্রেণীর উদ্বোধনী খেলাটি লর্ডসে অনুষ্ঠিত হয়। মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) সাথে পূর্ববর্তী বছরের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপ বিজয়ী দলের মধ্যে প্রত্যেক ক্রিকেট মৌসুমে এ খেলাটি প্রচলিত ধারা মোতাবেক হয়ে থাকে। যখন এমসিসি অন্য যে-কোন প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়, তখন তা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলারূপে মর্যাদা পায়।
ছয়টি এমসিসি-সৌজন্যেপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় দল (এমসিসিইউ) প্রথম-শ্রেণীর মর্যাদার দাবীদার। তারাও প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি দলের বিপক্ষে অংশ নেয়। সেগুলো হলো:
অধিকাংশ প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি দলগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলের বিপক্ষে ইংরেজ ক্রিকেট মৌসুম শুরুর প্রাক্কালে তিন-দিনের ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করে। আংশিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবর্ষ শেষ হয় ও ক্রিকেট মৌসুম শুরু হয় এবং আংশিকভাবে কাউন্টি ক্লাবগুলোর প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতিমূলক খেলা হিসেবে বিবেচিত হয়।[১]
ক্ষুদ্রতর কাউন্টি
প্রথম-শ্রেণীর মর্যাদাবিহীন ইংল্যান্ডের ক্রিকেট খেলার অধিকারী কাউন্টিগুলো মাইনর কাউন্টিরূপে পরিচিত। এ কাউন্টিগুলো তাদের নিজেদের জন্য পৃথক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। মাইনর কাউন্টিজ ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ নামে এ প্রতিযোগিতায় দলগুলো ভৌগোলিক কারণে দুই লীগে বিভক্ত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। প্রত্যেক বিভাগে দশটি দল থাকে ও তারা একে-অপরের সাথে একবার করে তিনদিনের খেলায় অংশ নেয়। দুই লীগের শীর্ষস্থানীয় দল চ্যাম্পিয়ন হবার লক্ষ্যে সর্বশেষ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। বর্তমান সদস্যগুলো নিম্নরূপ: