ক্রেগ হোয়াইট

ক্রেগ হোয়াইট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ক্রেগ হোয়াইট
জন্ম (1969-12-16) ১৬ ডিসেম্বর ১৯৬৯ (বয়স ৫৪)
মর্লে, পশ্চিম ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
ডাকনামচকি, ব্যাসি
উচ্চতা৬ ফুট ১ ইঞ্চি (১.৮৫ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, কোচ
সম্পর্কডিএস লেহম্যান (ভগ্নীপতি), জেএস লেহম্যান (ভাগ্নে)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৬৭)
২ জুন ১৯৯৪ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৬ ডিসেম্বর ২০০২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১২৯)
৬ ডিসেম্বর ১৯৯৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ ওডিআই২ মার্চ ২০০৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই শার্ট নং
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯০ - ২০০৭ইয়র্কশায়ার (জার্সি নং ১৩)
১৯৯০/৯১ভিক্টোরিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩০ ৫১ ২৭৫ ৩৫১
রানের সংখ্যা ১,০৫২ ৫৬৮ ১২,৩৯৫ ৭,১১১
ব্যাটিং গড় ২৪.৪৬ ১৫.৭৭ ৩২.৭০ ২৬.৪৩
১০০/৫০ ১/৫ ০/১ ২১/৬২ ৫/১৯
সর্বোচ্চ রান ১২১ ৫৭* ১৮৬ ১৪৮
বল করেছে ৩,৯৫৯ ২,৩৬৪ ২১,২৮৬ ১১,৫৮১
উইকেট ৫৯ ৬৫ ৩৯৫ ৩৩৭
বোলিং গড় ৩৭.৬২ ২৬.৫৫ ২৮.৫০ ২৫.১০
ইনিংসে ৫ উইকেট ১১
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৩২ ৫/২১ ৮/৫৫ ৫/১৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৪/– ১২/– ১৬৭/– ৯৯/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ মার্চ ২০২০

ক্রেগ হোয়াইট (ইংরেজি: Craig White; জন্ম: ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৬৯) পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের মর্লে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৪ থেকে ২০০৩ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তিনি ক্রিকেট কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।[]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে অনূর্ধ্ব-১৯, অস্ট্রেলিয়া ইয়ং ক্রিকেটার্স ও ভিক্টোরিয়া এবং নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন ‘চকি’ ডাকনামে পরিচিত ক্রেগ হোয়াইট।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

ফ্লোরা হিল হাইস্কুলে অধ্যয়ন করেন। এরপর, বেন্ডিগো সিনিয়র হাইস্কুলে পড়াশুনো করেন। পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের মর্লে এলাকায় জন্মগ্রহণ করলেও অস্ট্রেলিয়ায় বড়ো হন। এরপর জন্মসূত্রের কারণে অস্ট্রেলিয়া থেকে পুনরায় ইংল্যান্ডে চলে আসেন। ইয়র্কশায়ারের প্রথম বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন। ঐ সময়ে ইয়র্কশায়ারে কেবলমাত্র জন্মসূত্রে থাকা ক্রিকেটারদেরকেই কেবল নিযুক্ত করতো। তখন অবশ্য ইংরেজ কাউন্টি দলগুলো ইচ্ছে করলে দুইজন বিদেশী খেলোয়াড়কে নিত পারতো। ইতোপূর্বে অস্ট্রেলিয়ায় খেলায় ইংল্যান্ডে ফিরেই খেলার যোগ্যতা পাননি। ফলশ্রুতিতে, ইয়র্কশায়ারে তিনি বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে তালিকাভূক্ত হন।

১৯৯০ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ক্রেগ হোয়াইটের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে অল-রাউন্ডার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন ক্রেগ হোয়াইট। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ স্পিনে দক্ষ ছিলেন। তবে, স্পিন বোলিংয়ের ভঙ্গীমায় সন্দিহান হওয়ায় বিশ বছর বয়সে খেলার ধরন পাল্টে ফাস্ট বোলিংয়ের দিকে ধাবিত হন।

২০০০ সালে অদ্ভুতভাবে নিজেকে স্কারবোরায় দেখতে পান।[] এ ঘটনায় আকস্মিকভাবে তাকে ক্রিকেটার হিসেবে পুণরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। কাউন্টিতে বেশ ভালো খেলতে থাকেন।

২০০৪ সালে ইয়র্কশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। ২০০৫ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের দ্বিতীয় বিভাগ থেকে দলের উত্তরণে নেতৃত্ব দেন। তাসত্ত্বেও, ২০০৬ সাল শেষে অধিনায়কত্ব থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেন ও দলের অবনমন থেকে রক্ষা করেন। ১২ বছরের মধ্যে ক্লাবটি সর্বাপেক্ষা বাজে ফলাফল করে। তবে, মাত্র সাতটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরের বছর দলকে চাঙ্গা করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ত্রিশটি টেস্ট ও একান্নটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন ক্রেগ হোয়াইট। ২ জুন, ১৯৯৪ তারিখে নটিংহামে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৬ ডিসেম্বর, ২০০২ তারিখে মেলবোর্নে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৯৪ সালে ইংরেজ ক্রিকেট দলের দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরূপে রেমন্ড ইলিংওয়ার্থ নতুন সভাপতি নিযুক্ত হলে তিনি ছয় নম্বরে ব্যাটিং ও প্রথম পরিবর্তিত বোলারের ন্যায় অল-রাউন্ডারের সন্ধান করছিলেন। তিনি সতীর্থ ইয়র্কশায়ারীয় ক্রেগ হোয়াইটকে এ দায়িত্বে মনোনীত করলে অনেক ক্রিকেটবোদ্ধা ও সমর্থক বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ সময় থেকে ইংল্যান্ডের পক্ষে ক্রেগ হোয়াইট খেলতে শুরু করেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়। তবে, তার খেলায় ধারাবাহিকতা ছিল না ও আট খেলার পর দলের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলার জন্যে তাকে দলে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ সিরিজটি বেশ সফলতার সাথে খেলেন। সাত কিংবা আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ কার্যকর রান তুলে দলে অবদান রাখেন। এছাড়াও, পেস বোলিং আক্রমণ পরিচালনায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তন্মধ্যে, ব্রায়ান লারাকে তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে প্রথমবারের মতো গোল্ডেন ডাক লাভে বাধ্য করান।[] তিনি তার বোলিংয়ের উত্তরণ ঘটান ও রিভার্স সুইংয়ে দক্ষ হয়ে উঠেন। সংক্ষিপ্ত দূরত্ব নিয়ে ঘণ্টায় ৯০ মাইল বেগে বোলিংয়ে সক্ষম ছিলেন।

ভারত গমন

পরবর্তীতে ভারতীয় উপমহাদেশ গমন করেন। তন্মধ্যে, ২০০০ সালে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৩ রানের উল্লেখযোগ্য ইনিংস খেলেন।

এরপর, ২০০১ সালে আহমেদাবাদের সরদার প্যাটেল স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ১২১ রানের মনোমুগ্ধকর সেঞ্চুরি করেন। ডিসেম্বর, ২০০১ সালে প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে নিজস্ব প্রথম টেস্ট শতরানের ইনিংস খেলেন। পরবর্তীতে এই ইনিংসটিই তার একমাত্র টেস্ট সেঞ্চুরি হিসেবে চিত্রিত হয়।

২০০২-০৩ মৌসুমে দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। অ্যাশেজ সিরিজে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজস্ব ত্রয়োদশ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। মেলবোর্ন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বেশ ভালোমানের ব্যাটিং করেন। তবে, সিরিজের পঞ্চম টেস্টে আঘাতের কারণে খেলতে পারেননি তিনি। আরোগ্য লাভের পর ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলেন। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই তার আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।

বিশ্বকাপের পর হোয়াইটের আঘাতপ্রাপ্তির ফলে বোলিং করা থেকে বিরত থাকেন। আঘাতের কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটের নয়টি খেলায় শুধুই ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে সমর্থ হয়েছিলেন। নিজেকে ইয়র্কশায়ারের ব্যাটিংয়ের দিকে মনোনিবেশ ঘটান। সর্বদাই আক্রমণাত্মক শট, দ্রুততার সাথে হুক ও ড্রাইভের দিকে চোখ রাখতেন। স্পিনারদের বলে ডিপ অঞ্চলে পাঠিয়ে খেলায় গভীরতা ও স্থিরতা আনয়ণে প্রয়াস চালাতেন।

মূল্যায়ন

ইংল্যান্ডের পক্ষে প্রথম খেলার পর থেকে তাকে রে ইলিংওয়ার্থের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির ফসলরূপে চিত্রিত হয়। ক্রেগ হোয়াইটের টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন ধারাবাহিকতাহীন অবস্থায় ছিল। বল হাতে নিয়ে প্রথম দশ টেস্টে মাত্র চৌদ্দ উইকেট পান। এরপর, দুইবার পাঁচ-উইকেট লাভ করলেও পরবর্তী চৌদ্দ টেস্টে দুইয়ের অধিক উইকেট পাননি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজের তিন টেস্টে অংশগ্রহণের পর দল থেকে বাদ পড়েন। পাশাপাশি, ব্যাট হাতে নিয়ে দুইবার দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। এশিয়ার উপমহাদেশে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি।

২০০৬ সাল শেষে সর্বমোট ২৬৫টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। ৩২.৯১ গড়ে ১১,৯৪৯ রান সংগ্রহ করেন। সেরা করেন ১৮৬। লিস্ট এ একদিনের খেলায় ২৬.৫৬ গড়ে ৮,৯৩৩ রান তুলেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন ১৪৮ রান। ২৮.৪৭ গড়ে ৩৯৫টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান। সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে ৮/৫৫। একদিনের খেলায় ২৫.০২ গড়ে ৩৩৭ উইকেট লাভ করেন। ব্যক্তিগত সেরা করেন ৫/১৯।

অবসর

২০১২ সালে কোচিং কর্মকর্তা হিসেবে হ্যাম্পশায়ারে নিযুক্ত করা হয়। ২০১৬ সালে হ্যাম্পশায়ার দলের কোচের দায়িত্বে থাকেন। এরপর, অক্টোবর, ২০১৮ সালে তাকে এ দায়িত্ব পালন করা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১৭ সাল পর্যন্ত রয়্যাল বার্টন অ্যাগ্নেস ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ফিল টাফনেলকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।[]

ক্রেগ হোয়াইটের বোন আন্দ্রিয়াকে সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ড্যারেন লেহম্যান বিয়ে করেন। লেহম্যানের সাথে অনেকগুলো বছর একত্রে ইয়র্কশায়ারে খেলেছেন তিনি।

তথ্যসূত্র

  1. Warner, David (২০১১)। The Yorkshire County Cricket Club: 2011 Yearbook (113th সংস্করণ)। Ilkley, Yorkshire: Great Northern Books। পৃষ্ঠা 381। আইএসবিএন 978-1-905080-85-4 
  2. Petropoulos, Thrasy, White built for speed, 5 September 2000, BBC Sport. Retrieved on 30 August 2010.
  3. http://www.burtonagnescricket.co.uk/blog/president

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!