অসহযোগ আন্দোলন হলো ২০২৪-এ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি হওয়া বাংলাদেশের সরকার বিরোধী একটি আন্দোলন। এই আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়।[৮] ৩ আগস্ট ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন,[৯][১০] এজন্য একে এক দফা আন্দোলন নামেও ডাকা হয়ে থাকে। আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আপামর জনতা অংশগ্রহণ করা ও ব্যাপক গণহত্যার মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত হওয়ায় একে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলেও অভিহিত করা হয়।[১১][১২]
আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান, সেনাপ্রধান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে ৮ আগস্ট ২০২৪ সালে মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ গ্ৰহণ করে।
২০২৪-এ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের হয়রানি, গণ-গ্ৰেফতার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে শত শত শিক্ষার্থী ও জনসাধারনের মৃত্যু এবং হাজার হাজার ছাত্র-জনতা আহত হওয়ার প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারের কাছে নয় দফা দাবি পেশ করে।[১৩] উক্ত দাবিগুলো না মেনে গ্ৰেফতার ও আন্দোলনে বলপ্রয়োগ অব্যহত রাখায় বাংলাদেশের জাতীয় শহীদ মিনারে এক দফা হিসাবে শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
অসহযোগ কর্মসূচি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৩ আগষ্টে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেয়া হয় অসহযোগ আন্দোলনের রূপরেখা।
রূপরেখাগুলো ছিল:
কেউ কোনো ধরনের ট্যাক্স বা খাজনা প্রদান করবেন না।
বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিলসহ কোনো ধরনের বিল পরিশোধ করবেন না।
সকল ধরনের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত ও কল কারখানা বন্ধ থাকবে। আপনারা কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন তুলবেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোনো ধরনের রেমিটেন্স দেশে পাঠাবেন না।
সকল ধরনের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন।
বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না। কোনো ধরনের পণ্য খালাস করবেন না।
দেশের কোনো কলকারখানা চলবে না, গার্মেন্টকর্মী ভাই বোনেরা কাজে যাবেন না।
গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কেউ কাজে যাবেন না।
জরুরি ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রোববারে ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে।
পুলিশ সদস্যরা রুটিন ডিউটি ব্যতীত কোনো ধরনের প্রটোকল ডিউটি, রায়ট ডিউটি ও প্রটেস্ট ডিউটিতে যাবেন না। শুধু থানা পুলিশ নিয়মিত থানার রুটিন ওয়ার্ক করবে।
দেশ থেকে যেন একটি টাকাও পাচার না হয়, সকল অফশোর ট্রানজেকশন বন্ধ থাকবে।
বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যতীত অন্যান্য বাহিনী সেনানিবাসের বাইরে ডিউটি পালন করবে না। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যারাক ও কোস্টাল এলাকায় থাকবে।
আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, ডিসি বা উপজেলা কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে যাবেন না।
বিলাস দ্রব্যের দোকান, শো রুম, বিপণিবিতান, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। তবে হাসপাতাল, ফার্মেসি, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহন, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট সেবা, জরুরি ত্রাণ সহায়তা এবং এই খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহন সেবা চালু থাকবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।[১৪]
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় রাজধানী ঢাকায় এক দফা আন্দোলন শুরু হয়। দুপুরের আগেই বেশ কিছু সড়কে নেমে আসেন বিক্ষোভকারীরা। সরকারি দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের হামলায় বাঁধে সংঘর্ষ। বিভিন্ন স্থানে গুলি, টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেডে আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয় রাজধানী ঢাকা। উত্তরার আজমপুর এলাকায় দিনভর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। অন্যদিকে সকাল ১০টা থেকেই যাত্রাবাড়ীতে সংঘর্ষ শুরু হয়।[১৫]
সরকারের পক্ষ থেকে দুপুর ১২টার পর মোবাইল অপারেটরদের ফোরজি ইন্টারনেট বন্ধ করতে বলা হয়।[১৬]
অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে এদিন অনেক জেলায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, এতে ৯৮ জন সাধারন মানুষ ও পুলিশ নিহত হয়। লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় এক কলেজছাত্র। আহত হয় অর্ধশতাধিক মানুষ। বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী থেকে ঝুমুর পর্যন্ত এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুপুর ১২টার দিক থেকে সরকারের নির্দেশে মোবাইল অপারেটররা দেশজুড়ে ফোর-জি নেটওয়ার্ক সেবা বন্ধ রাখে।[১৭] ৫ আগস্ট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বেলা ২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়।[১৮]
সারা দেশের মধ্যে সংঘর্ষে সিরাজগঞ্জে পুলিশের ১৩ সদস্যসহ ২২ জন, রাজধানীতে ১১, ফেনীতে ৮[১৯], লক্ষ্মীপুরে ৮, নরসিংদীতে ৬, সিলেটে ৫, কিশোরগঞ্জে ৫, বগুড়ায় ৫, মাগুরায় ৪, রংপুরে ৪, পাবনায় ৩, মুন্সিগঞ্জে ৩[২০], কুমিল্লায় পুলিশের সদস্যসহ ৩, শেরপুরে ৩[২১], জয়পুরহাটে ২, ভোলায় ১, হবিগঞ্জে ১, ঢাকার কেরানীগঞ্জে ১, সাভারে ১, বরিশালে ১ জন, কক্সবাজারে ১, গাজীপুরের শ্রীপুরে ১ জন নিহত হয়েছেন।[২২]
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক বার্তায় জানানো হয়, ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক আন্দোলন ঘিরে ৪ আগস্ট দেশের বিভিন্ন জায়গায় ২৭টি থানা-ফাঁড়ি, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, রেঞ্জ অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় তিন শতাধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।[২৩]
ত্রিমুখী সংঘর্ষে প্রথম দিনেই নীলফামারী রণক্ষেত্রে পরিণত হয়, ভাংচুর করা হয়েছে নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বাড়ী। এতে আহত হয় অন্তত ১২জন।[২৪]
অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তিন দিনের (৫,৬ ও ৭ আগস্ট) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সাধারণ ছুটিকালীন সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিসগুলো বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস ও বন্দরগুলোর কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা এবং এ-সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।[২৫] এছাড়া ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা ও উপজেলা সদরের জন্য সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়।[২৬]
সুপ্রিম কোর্টের পৃথক তিনটি বিজ্ঞপ্তিতে এদিন জানানো হয় সান্ধ্য আইন (কারফিউ) চলাকালে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম ও আপিল বিভাগের সব দপ্তর ও শাখা বন্ধ থাকবে। তবে প্রধান বিচারপতি জরুরি বিষয়ে প্রয়োজন সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। একই সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতিতে ৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগ ও দেশের সব অধস্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের বিচারিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।[২৭]
সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে অবিলম্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব ‘রূপান্তরের রূপরেখা’ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। প্রস্তাব অনুসারে, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করবে।[২৮] এদিন গান বাংলার দপ্তরে হামলা চালানো হয়।
এদিন জুলাই মাসের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন অধ্যাপক নিজ কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলেন।[২৯] এদিন বেলা তিনটার দিকে শাহবাগে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন,
“
আমাদের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও গন্তব্য পরিষ্কার। বিজয় এবং একমাত্র বিজয়ই আমাদের লক্ষ্য। আমরা এখনো সময় দিচ্ছি। সরকার যদি এখনো সহিংসতা চালিয়ে যায়, আমরা কিন্তু গণভবনের দিকে তাকিয়ে আছি। শেখ হাসিনাকে ঠিক করতে হবে, এখনো সহিংসতা চালাবেন, রক্তপাত চালাবেন, নাকি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে পদত্যাগ করবেন।
তিনি আজই সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানান।[৩১]
৫ আগস্ট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তন করে ৬ আগস্টের পরিবর্তে ৫ আগস্ট সোমবার এ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। এতে সারা দেশ থেকে আন্দোলনকারীদের ঢাকায় আসার আহ্বান জানানো হয়।[৩২]
ঢাকায় এদিন ভোর হয়েছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে। সকালটা ছিল মেঘলা, রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। বেলা ১০টার পর থেকে যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, শহীদ মিনার, বাড্ডা, মিরপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভকারীদের জমায়েতের খবর আসতে শুরু করে। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও শুরু হয়।[৩৩] এদিন সকাল ১০ টায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও সরকারের তরফ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়, ফলে পুরো দেশ আন্দোলনের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মত ইন্টারনেট বিভ্রাটের মধ্যে পড়ে যায় এবং বাংলাদেশ বহির্বিশ্ব থেকে অনলাইনে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।[১৬]
সকাল ১০ টার পর থেকে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। এসময় ছাত্র-জনতার গনমিছিল ও বিক্ষোভকে যেকোন উপায়ে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছিলো আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিন বাহিনীর প্রধান ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে ডাকা হয়। এসময় নিরাপত্তা বাহিনী কেন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না তার জন্য শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া বিশ্বাস করে এই কর্মকর্তাদের শীর্ষ পদে যে বসান সেটাও তিনি স্মরন করিয়ে দেন। ওই সময়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, বলপ্রয়োগ করে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা মানতে চাচ্ছিলেন না।[৩৪]
ক্রমেই যখন পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে তখন গনভবনে অবস্থানরত কর্মকর্তারা শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ ও পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে শেখ রেহানার সঙ্গে আরেক কক্ষে আলোচনা করেন। তাঁকে পরিস্থিতি জানিয়ে শেখ হাসিনাকে বোঝাতে অনুরোধ করেন। শেখ রেহানা এরপর বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু তখনও ক্ষমতা ধরে রাখার ব্যাপারে শেখ হাসিনা অনড় থাকেন। একপর্যায়ে বিদেশে থাকা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। এরপর জয় তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর শেখ হাসিনা পদত্যাগে রাজি হন। তিনি তখন একটা ভাষণ রেকর্ড করতে চান জাতির উদ্দেশে প্রচারের জন্য। ততক্ষণে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা শাহবাগ ও উত্তরা থেকে গণভবন অভিমুখে রওনা হয়েছে। দূরত্ব বিবেচনায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে শাহবাগ থেকে গণভবনে আন্দোলনকারীরা চলে আসতে পারে বলে অনুমান করা হয়। ভাষণ রেকর্ড করতে দিলে গণভবন থেকে বের হওয়ার সময় না-ও পাওয়া যেতে পারে। এই বিবেচনায় শেখ হাসিনাকে ভাষণ রেকর্ডের সময় না দিয়ে ৪৫ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে হেলিপ্যাডে আসেন শেখ হাসিনা। সেখানে তাঁদের কয়েকটি লাগেজ ওঠানো হয়। তারপর তাঁরা বঙ্গভবনে যান। সেখানে পদত্যাগের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বেলা আড়াইটার দিকে সামরিক হেলিকপ্টারে করে ছোট বোনসহ ভারতের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেন শেখ হাসিনা।[৩৩][৩৪]
দেড়টার দিকে আবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়, যা সকালে বন্ধ করা হয়েছিল। বেলা ২ টায় খবর আসে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে সে সময় পর্যন্ত জনসাধারণকে সহিংসতা পরিহার করে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করেন। তখনই মানুষ বুঝে যায়, পট বদলে যাচ্ছে। মানুষ একে একে ঘর থেকে বের হতে শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাস্তায় মানুষকে আর বাধা দেয়নি। বেলা আড়াইটায় শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবরের পর লাখো মানুষের মিছিল, স্লোগানে মুখর হয় ঢাকা।[৩৩] বেলা পৌনে দুইটার দিকে মোবাইল ইন্টারনেটও চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসময় রাজধানীর শাহবাগে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন জায়গা থেকে সেখানে মানুষ স্লোগান দিয়ে আসতে থাকেন। একি সময়ে মিরপুরের পল্লবী ও ১১ নম্বর থেকে হাজারো মানুষ ১০ নম্বর গোল চত্ত্বরে জড়ো হন। সেখান থেকে তাঁরা আগারগাঁওয়ের দিকে রওনা দেন। প্রায় একি সময়ে রাজধানীর উত্তরা থেকে বনানী অভিমুখে আগিয়ে আসেন আন্দোলনকারীদের আরেকটি দল। সেখানে থাকা শিক্ষার্থী-অভিভাবক ছাড়াও স্থানীয় সাধারন মানুষ রয়েছে ওই দলে যোগ দেন। তারা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান। সবার উদ্দেশ্য হলো গনভবন।[৩৫]
অবশেষে ছাত্র ও জনতার ৩৬ দিনের[৩৬] দেশ কাঁপানো আন্দোলনে পতন হলো আওয়ামী লীগ সরকারের। পালিয়ে যাবার আগে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। বেলা আড়াইটায় হাসিনা পালিয়ে যাবার পর মিছিল নিয়ে গণভবনে ঢুকে পড়ে অসংখ্য মানুষ। পরে তাঁদের অনেককে গণভবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস নিয়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।[৩৭]প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকেন কেউ কেউ। এসব গ্রাফিতিতে লেখা ছিল, ‘হাসিনা পালাইছে’, ‘লিবারেশন ওয়ার ২০২৪’, ‘বিজয়’, ‘খুনি হাসিনা’ প্রভৃতি।
পরে অবশ্য বিভিন্ন ব্যক্তি যেসব সরঞ্জাম নিয়ে যেতে চাইছিলেন, তাঁদের অনেকের কাছ থেকে সেসব সরঞ্জাম উদ্ধার করেন ছাত্ররা। উদ্ধারকারী সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র দেলোয়ার হোসেন জনি বলেন, "অনেকেই এখান থেকে বিভিন্ন সরঞ্জামাদি নিয়ে যাচ্ছিলেন। কেউ বলছিলেন, তাঁরা স্মৃতি হিসেবে নিচ্ছেন। তবে যেহেতু এগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ, তাই এসব সম্পদ ও তথ্য যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য আমরা কাউকে কিছু নিতে দিচ্ছি না।"[৩৮]
বিকেল চারটায় জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ভাষনে সেনাপ্রধান বলেন,
“
দেশে একটা ক্রান্তিকাল চলছে। সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ করেছিলাম। আমরা সুন্দর আলোচনা করেছি। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীন দেশের সব কার্যক্রম চলবে। আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে ওনার সঙ্গে কথা বলব। তাঁর সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হবে।
সমস্ত হত্যা ও অন্যায়ের বিচার হবে বলে জনগণের উদ্দেশে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আরো বলেন,
“
আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আমরা সমস্ত দায়দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনাদের কথা দিচ্ছি, আশাহত হবেন না। যত দাবি আছে, সেগুলো আমরা পূরণ করব। দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে আসব। আমাদের সহযোগিতা করেন। প্রতিটি হত্যার বিচার হবে।
ভাঙচুর, হত্যা, সংঘর্ষ ও মারামারি থেকে জনগণকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, "আপনারা যদি কথামতো চলেন, একসঙ্গে কাজ করি। নিঃসন্দেহে সুন্দর পরিণতির দিকে অগ্রসর হতে পারব। মারামারি ও সংঘাত করে আর কিছু পাব না। তাই দয়া করে ধ্বংসযজ্ঞ, অরাজকতা ও সংঘর্ষ থেকে বিরত হন। সবাই মিলে সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হব।"
রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে জানিয়ে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, "তাদের সঙ্গে সুন্দর আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে কাজ পরিচালনা করব। ধৈর্য ধরেন, সময় দেন। আমরা সবাই মিলে সব সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হব।"
সংঘাতে দেশের ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, "অর্থসম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। লোকজন মারা যাচ্ছে। সংঘাতের পথে যাবেন না। শান্তিশৃঙ্খলার পথে ফিরে আসেন।" এছাড়াও সেনাপ্রধান আন্দোলনরত ছাত্র–জনতা সবাইকে ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।[৪০] পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অতি শিগগির ছাত্র-শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসবেন।[৪১]
বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক দেশের সর্বস্তরের জনগণকে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ জানান। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা। তিনি বলেন,
“
গণতন্ত্রের এই বিজয়ের মুহূর্তে সব নাগরিককে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জুলাই হত্যাকাণ্ডে নিহত শহীদদের স্মরণ করছি। তবে আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই যে সম্পূর্ণ বিজয় এখনো অর্জিত হয়নি। এই সংবেদনশীল মুহূর্তে প্রত্যেক নাগরিকের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা দয়া করে শান্তি বজায় রাখুন। আমাদের জাতীয় সম্পদ গণভবন, সংসদ ভবনসহ যেকোনো ধ্বংস, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গনির্বিশেষে সবার। ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন মতাদর্শ ও ভিন্ন পরিচয়ের সবার সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। এই অর্থহীন হিংসা-বিদ্বেষ ও প্রতিশোধপরায়ণতা অনেক ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের এই অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে জনগণকে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করছি। আপনারা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকুন।
”
— অধ্যাপক সামিনা লুৎফা
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার খবর শুনে আনন্দে ফেটে পড়ে পুরো দেশ। বিকেলে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় জড়ো হওয়া হাজারো মানুষকে বিজয় উল্লাস করতে দেখা গেছে। হাসপাতালের কর্মীদের রাস্তায় এসে নাচতে দেখা গেছে। অসুস্থ নারীরা হুইলচেয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসেন। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় রিকশায় করে তরুণ-তরুণীদের হাতে ও মাথায় পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।[৪২]
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার খবর শুনে চট্টগ্রামের ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর, বায়েজিদ, জিইসি, আগ্রাবাদ, এ কে খান, কাজীর দেউড়ি, প্রবর্তকসহ বিভিন্ন সড়কে মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে হাজারো মানুষ। সাধারন মানুষ জাতীয় পতাকা নিয়ে উল্লাস করে ও স্লোগান দেয়। পরে তারা সড়ক থেকে দলে দলে চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট এলাকায় জড়ো হয়ে স্লোগান দেয়।[৪৩]
বগুড়ায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে বেলা দুইটার পর কারফিউ ভেঙে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথাকে ঘিরে সব কটি রাস্তায় মিছিল নিয়ে লাখো ছাত্র-জনতার ঢল নামে। এ সময় শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, নারী থেকে কিশোরী সব বয়সীকে উল্লাস করতে দেখা যায়। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের বেশ কিছু গাড়ি দেখে মিছিলকারীরা সেনাসদস্যদের স্যালুট দিয়ে ও হাত নাড়িয়ে ধন্যবাদ জানান। মিছিলে আসা বগুড়া জিলা স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন,
“
১৯৭১–এ দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাঙালির বিজয়ের সেই দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হয়নি, কিন্তু ২০২৪ সালের আমার শত শত ভাইদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়ের অন্য রকম অনুভূতি। ঠিক যেন একাত্তরের সেই বিজয়ের স্বাদ অনুভব করছি আজ।
রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সংগে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে জাতির উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি জরুরি ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা জানান।[৪৫]
শেখ হাসিনার পদত্যাগ
রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।[৪৬] তার বোন শেখ রেহানার সাথে বিমানবাহিনীর একটি সি-১৩০ হারকিউলিস হেলিকপ্টারে দেশত্যাগ করেন। হেলিকপ্টারটি উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছেন এয়ার কমোডর আব্বাস, যিনি ১০১ স্কোয়াড্রনের সদস্য।[৪৭] শেখ হাসিনা দেশত্যাগের আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন, তবে তিনি সে সুযোগ পাননি।[৪৮] ঐ হেলিকপ্টারটি বেলা ১:৩০-এ ভারতের আগরতলায় অবতরণ করে। সেখান থেকে ভারতীয় বিমানে শেখ হাসিনা দিল্লির উপকণ্ঠে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের কাছে হিন্দন বিমানঘাঁটিতে পৌঁছান। শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চান।
কলকাতা থেকে আনন্দবাজার পত্রিকা দাবি করে, সেনাবাহিনী এবং দিল্লির সঙ্গে আলোচনার সাপেক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তরফে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ৪৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য। তার পরেই শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।[৪৯]
আন্দোলন পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেউ যেন লুটপাটের সুযোগ না পায়, তা নিশ্চিত করতে ছাত্র–জনতার প্রতি আহ্বান জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নয়জন সমন্বয়ক। সেখানে বক্তব্যে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র–জনতাকে শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে অবস্থানের আহ্বান জানান নাহিদ ইসলাম। লুটপাটকারীদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন,
“
আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। এই সুযোগে কেউ যেন লুটপাটের সুযোগ না পায়।
আওয়ামী লীগের কর্মী ও পুলিশের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশের হত্যা, বাসা বাড়ি ভাংচুর ও থানা পুড়িয়ে দেবার ঘটনা ঘটে। হাসিনার পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবন ও সংসদ ভবনে অসংখ্য মানুষ ঢুকে পড়েন। তারা গণভবন ও সংসদ ভবন লুট করেন। বেলা ৪টায় আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা।[৫১][৫২] প্রধান বিচারপতি বাসভবনে হামলা করে বিক্ষোভকারীরা। এরপর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। এদিন একাত্তর টিভি, সময় টিভি, এটিএন বাংলা ও মাই টিভির কার্যালয় হামলা করা হয়।[৫৩]আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায় ভাঙচুর করা হয়।[৫৪] সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কয়েক শত ব্যক্তি আকস্মিকভাবে পুলিশ সদরদপ্তরে হামলা চালায়।[৫৫] ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সন্ধ্যা ৬টা হতে ৬ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। রাজধানী গুলিস্তানে পুলিশ সদর দপ্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুটি ভবনে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।[৫৬] রাজধানীর গুলশানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার বাড়ি এবং সাবেক অর্থ মন্ত্রী লোটাস কামাল টাওয়ার ভবনে আগুন দিয়েছে উত্তেজিত জনতা।[৫৭] রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরের ৭১ নম্বর সড়কে অবস্থিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে উত্তাল জনতা। এসময় বাসার সামনে থাকা দুটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।[৫৮]
ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশে অন্যান্য জেলাতেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়ি, কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনা ঘটে:
নওগাঁয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়, খাদ্যমন্ত্রী ও এমপির বাসায় হামলা, অগ্নিসংযোগ।[৫৯][৬০][৬১]
বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা, আওয়াম লীগ কার্যালয়ে আগুন।[৬২] বগুড়ায় যুবলীগের দুই নেতাকে কুপিয়ে হত্যা[৬৩]
প্রতিমন্ত্রী পলক ও এমপি শিমুলের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন[৬৪][৬৫]
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিজয়মিছিলে থাকা বিক্ষুব্ধ জনতা। ওই ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়।[৬৬][৬৭][৬৮]
কয়রায় ছাত্র-জনতার আনন্দমিছিল থেকে ভাঙচুর, গুলিতে আহত ১০[৬৯]
সাভারে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ গুলি করলে ৯ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অর্ধশতাধিক লোক বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়।[৭০]
গাজীপুরে আনসার একাডেমিতে হামলা, গুলিতে নিহত ২।[৭১] গাজীপুরে বিজিবির গাড়ি অবরোধ-গুলি, এক বিজিবি সদস্যসহ নিহত ৬।[৭২]
কসবায় আইনমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন[৭৩]
নড়াইলে হুইপ নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফিসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ। কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়, যার মদ্ধে সাধারণ মানুষ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী রয়েছে।[৭৪][৭৫]
হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা ঘেরাও করে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ লোকজন। এতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় ৮ জন। আহত হয় পুলিশসহ দেড় শতাধিক।[৭৬][৭৭][৭৮][৭৯]
রাজশাহীর নগর ভবন, পুলিশ সদর দপ্তর, থানাসহ আ.লীগের একাধিক কার্যালয়ে আগুন[৮০]
শামীম-সেলিম ওসমানের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ[৮১]
দিনাজপুরে মেয়রের বাসা থেকে ২ যুবকের লাশ উদ্ধার।[৮২] বিরামপুর থানা ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেন উত্তেজিত জনতা। এ সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্ষমা চেয়ে আত্মসমর্পণ করলে উত্তেজিত জনতা থানা ছেড়ে যান।[৮৩]
সাঁথিয়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়, বেড়ায় ডেপুটি স্পিকারের বাসায় অগ্নিসংযোগ[৮৪]
মাগুরায় সাবেক দুই এমপির বাড়ি ও অনেক প্রতিষ্ঠানে হামলা[৮৫]
শেরপুর কারাগারে ছাত্র-জনতার ভাঙচুর-আগুন, সব বন্দী পালিয়েছেন।[৮৬][৮৭][৮৮][৮৯]
কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাসায় ভাঙচুর-লুটপাট।[৯০] কিশোরগঞ্জ শহরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর সংঘর্ষে এক নারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।[৯১]
চুয়াডাঙ্গায় যুবলীগ নেতার বাড়িতে আগুন, চারটি লাশ উদ্ধার।[৯২][৯৩] চুয়াডাঙ্গার মোমিনপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কৃষক লীগ নেতা গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দারকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।[৯৪]
পঞ্চগড়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘরে হামলা, আহত অন্তত ২০।[৯৫]
ঝিনাইদহে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরণসহ অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন।[৯৬][৯৭]
ভৈরবে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী এবং বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসভবনে, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর।[৯৮]
কয়রায় নিজ বাড়ি থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পোড়া মরদেহ উদ্ধার।[১১৩]
নাটোরে এমপি শফিকুলের পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার। নাটোরে সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাসভবন জান্নাতি প্যালেস থেকে আগুনে পোড়া চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।[১১৪][১১৫][১১৬]
আমুর বাসভবনে আগুন নেভাতে গিয়ে মিলল ৫ কোটি টাকা।[১১৯][১২০]
লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখোয়াত হোসেন সুমন খানের জেলা শহরের থানা রোড (কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন) এলাকার বাসা থেকে ৬ জনের দগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দু’টি কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে। জেলা শহরের মুজিব সড়কের বাসায় উদ্ধার কঙ্কাল দু’টির একটি জানপুরের ছাত্রলীগ কর্মী শাহিন আহম্মেদের। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।[১২১][১২২][১২৩][১২৪][১২৫]
সিলেটে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আগুন।[১২৬] সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।[১২৭] সিলেটের কোতোয়ালি থানায় লুট করেছে দুর্বৃত্তরা।[১২৮]
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় ১২ জন মারা গেছে। নিহতদের মধ্যে আটজন ছাত্রলীগ-যুবলীগের সদস্য এবং চারজন আন্দোলনকারী।[১২৯] লক্ষ্মীপুরে যুবলীগনেতাসহ নিহত ৩।[১৩০]
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আ. লীগ কার্যালয় ভাঙচুর, আহত ১৭।[১৩১]
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা এবং সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি জান্নাত আরা হেনরীর বাসায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯ জনে।[১৩২]
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা।[১৩৩] সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা সদরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এবং আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করেছে দূর্বৃত্তরা। এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়েও।[১৩৪]
গাজীপুরের টঙ্গীতে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা।[১৩৮] গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবির সদস্য বহনকারী দুই গাড়িতে আগুন, ৬ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হন।[১৩৯][১৪০]
ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ।[১৪১] নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী ও চাটখিল থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সোনাইমুড়ি থানা পুলিশ হামলাকারীদের ওপর গুলি ছুড়লে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়। এতে সোনাইমুড়ি থানার চার পুলিশসহ সাতজন নিহত হয়েছেন।[১৪২][১৪৩]
ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত জনতা।[১৪৪]
৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাদেশে জনসাধারনের উপর ব্যাপক গুলি করে, যাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতে নিহত হন অন্তত ১০৯ জন। দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনরত গনমানুষের উপর লক্ষ্য করে গুলি করেন। এতে ৩০ জন নিহত হয়।[১৪৬] যাত্রাবাড়ীর ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন,
“
জোহরের নামাজ আদায়ের পর আমরা সবাই যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ছিলাম। হঠাৎ পুলিশ আমাদের ওপর গুলি করতে শুরু করে। আমি অন্তত ১০–১৫ জনকে থানার সামনে মরে পড়ে থাকতে দেখি। পরে যখন গোলাগুলি থামে, তখন থানার সামনে পড়ে থাকা লাশগুলো নিয়ে আসি।
”
রাজধানীর উত্তরায় পুলিশের গুলিতে ১০ জন, সাভারে ১৮ জন, কুষ্টিয়া শহরে পুলিশের গুলিতে ৬ জন, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পুলিশের গুলিতে ৬ জন, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় নৌ পুলিশের গুলিতে ব্যক্তি ১ জন, গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবির গুলিতে ৫ জন নিহত হন ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুর আনসার–ভিডিপি একাডেমিতে আনসার সদস্যদের গুলিতে প্রান হারান ২ জন।[১৪৬]
পুলিশ কর্তৃক মানবতাবিরোধী অপরাধ
আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানারাত ইউনিভার্সিটির ইইই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহসহ ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে আশুলিয়া থানায় কয়েকজন এসআই লাশ পুড়িয়ে ফেলে।[১৪৭] এই ঘটনার সন্দেহভাজন ‘কারিগর’ ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফিকে বিমানবন্দর দিয়ে পালিয়ে যাবার সময় আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক ভাইরাল হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন পুলিশ সদস্য কয়েকটি মরদেহ একটি ভ্যানে তুলে সেগুলো ব্যানার দিয়ে ঢাকছেন। গুগলের জিওলোকেশন উপাত্ত ও আশপাশের ছবি বিশ্লেষণ করার পর পুলিশ সূত্র ভিডিওটির তারিখ ও অবস্থান নিশ্চিত করে। মানবতাবিরোধী এ অপরাধটি বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কাছে থানার সামনের এক গলিতে ঘটে। ভিডিওতে দেখা যায়, দুই পুলিশ কর্মকর্তা মরদেহ স্তূপ করে রাখছেন। পরে পুলিশ ভ্যানে স্তূপ করে রাখা লাশগুলো পুড়িয়ে দেয়।[১৪৮] এএফপির বাংলাদেশ ব্যুরোর ফ্যাক্ট চেকিং এর প্রধান কদর উদ্দিন শিশির বলেন, বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কাছে থানার সামনের একটি গলিতে এ ঘটনা ঘটে।[১৪৯]
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা
শুধু ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, ফেনীসহ ৩০টি জেলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের মন্দির ও অবকাঠামোয় হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।[১৫০][১৫১]ডেইলি স্টারের তথ্যমতে, সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার প্রথম ঘণ্টায় অন্তত ২৭টি জেলায় হিন্দুদের বাড়ি, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে।[১৫২]আজকের পত্রিকা সংবাদমাধ্যমের মতে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালিয়ে তাদের বাড়ি পোড়ানো হয়।[১৫৩] প্রথম আলো অনুযায়ী দিনাজপুরে হিন্দুদের ৪০ দোকানপাটে ভাঙচুর–লুটপাট করা হয়।[১৫৪] বিডি জার্নাল অনুযায়ী ৫ - ৯ আগস্ট দেশের ৫২টি জেলায় কয়েক হাজার সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মন্দির ভাংচুর, হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।[১৫৫][১৫৬][১৫৭][১৫৮] এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় আদিবাসীদের ওপরও হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।[১৫৯] দেশের কিছু দরবার ও মাজার শরিফ হামলার শিকার হয়।[১৬০]প্রথম আলোর তথ্যানুযায়ী ৫ থেকে ২০ আগস্ট সারাদেশে ১০৬৮ টি সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ২২ টি উপসানালয় হামলার শিকার হয়।[১৬১]
এছাড়াও অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের নোয়াখালীতে বসবাসকারী সদস্যদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট লাকসাম উপজেলার বিপুলাসার এলাকায় হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রজেক্টে কর্মরত হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট ও বিনষ্ট করে।[১৬২] এর বাইরে সংগঠনটির শেরপুর, জয়পুরহাট, পঞ্চগড়, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ ৮টি কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির সুযোগে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী এ হামলা চালায় বলে এক বিবৃতিতে জানায় সংগঠনটি।[১৬৩][১৬৪]
শেখ হাসিনার পালিয়ে যাবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যম বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার ভুয়া খবর ও গুজব ছড়াতে শুরু করে। ভারতজুড়ে নানা গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও বিভ্রান্তিকর নানা ভিডিও, ছবি ও সংবাদ প্রকাশ পেতে শুরু করে। আল জাজিরা স্বাধীনভাবে যাচাই করে দেখেছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের দিন দুজন হিন্দু নিহত হয়েছেন। নিহতদের একজন পুলিশ সদস্য এবং একজন হাসিনার দল আওয়ামী লীগের কর্মী। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা ঐতিহ্যগতভাবেই সাধারণত আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন। যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকার গনহত্যা ও দুঃশাষনের সাথে জড়িত তাই জনরোষ স্বাভাবিকভাবেই আওয়ামী লীগের উপরে এসে পড়ে, এক্ষেত্রে হিন্দু মুসলিম খোজা হয়নি। আল–জাজিরার প্রতিনিধিরা যে কয়েকটি জেলায় আক্রমণ ও লুটের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে নয়, বরং রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে ওই সব বাড়িতে হামলা ও লুটের ঘটনা ঘটেছে।বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন নেতা গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক আল–জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যত দূর তিনি জানতে পেরেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে, এমন হিন্দু ব্যক্তিরা ছাড়া সাধারণ হিন্দু ব্যক্তি বা পরিবার আক্রমণের শিকার হয়নি। গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন,
“
হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন নেতা হিসেবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, হামলার কারণ রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক নয়। দেশজুড়ে যতগুলো হিন্দু বাড়ি বা অবস্থানে হামলা হয়েছে, তার থেকে ১০ গুণ বেশি মুসলমান বাড়িতে হামলা হয়েছে, শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে।
অন্যদিকে ভারতের গুজবের ফলে কোন হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের বাড়িতে যাতে আক্রমন না হয় সেজন্য দেশের সব স্থানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হিন্দুদের মন্দির পাহারা দেন ছাত্র-জনতা। রংপুর মহানগরী ও জেলার আট উপজেলায় হিন্দু ধর্মাবলাম্বীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়গুলো পাহারা দেন বিএনপি নেতারা।[১৬৬] পিরোজপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির পাহারা দেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।[১৬৭] চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে কালীমন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দেন হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্ররা।[১৬৮] যশোরে হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে রাত জেগে পাহারা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা[১৬৯] টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় মন্দির পাহারা দেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।[১৭০]
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণ–আন্দোলন এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা, গুজব ও অপতথ্য ছড়ানো নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানান দেশের শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকেরা। বাংলাদেশ নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ১৩ই আগস্ট ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর উদ্দেশে একটি খোলাচিঠি দেন তাঁরা। চিঠিতে ভারতের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের গণ–আন্দোলনকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। এছাড়াও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ছাত্রলীগ যে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা ভারতের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যমের খবরে উপেক্ষিত। এর বদলে তারা নানা গুজব ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে বলে তারা চিঠিতে অভিযোগ করেন।[১৭১]
এছাড়া এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভারতীয় মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে বলেন। এছাড়াও তিনি ভারতীয় মিডিয়াকে বাংলাদেশে এসে সাংবাদিকদের রিপোর্ট করার আহ্বান জানান যাতে সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছে সেটি সবাই জানতে পারে।[১৭২]
বিবিধ
আতঙ্কে জলপাইগুড়ির মানিকগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ১২ শতাধিক[১৭৩][১৭৪] এবং ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল সীমান্ত দিয়ে ৩ শতাধিক নারী–শিশুসহ সাধারণ বাংলাদেশী ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে।[১৭৫]
১৩ আগস্ট ২০২৪ প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান কে সদরঘাটে নৌকায় করে পালানোর চেষ্টাকালে গ্রেফতার করা হয়।[১৭৯] কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই ২০২৪ এ ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে মো. শাহজাহান নামে এক হকার নিহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮০] ২৪ আগস্ট ২০২৪ নিউমার্কেট থানায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সবুজ আলী ও লালবাগ থানায় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় করা পৃথক মামলায় সালমান ফজলুর রহমান কে আবার ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[১৮১] ২৯ আগস্ট ২০২৪ রাজধানীর বাড্ডা থানায় করা সুমন শিকদার হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ০৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮২]
১৩ আগস্ট ২০২৪ সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীআনিসুল হক কে সদরঘাটে নৌকায় করে পালানোর চেষ্টাকালে গ্রেফতার করা হয়।[১৭৯] কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই ২০২৪ এ ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে মো. শাহজাহান নামে এক হকার নিহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮০] ২৪ আগস্ট ২০২৪ নিউমার্কেট থানায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সবুজ আলী ও লালবাগ থানায় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় করা পৃথক মামলায় আনিসুল হক কে আবার ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[১৮১] ২৯ আগস্ট ২০২৪ রাজধানীর বাড্ডা থানায় করা সুমন শিকদার হত্যা মামলায়সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীআনিসুল হক এর ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮২]
১৪ আগস্ট ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।[১৮৩] পল্টন থানায় দায়ের করা কামাল মিয়া হত্যা মামলায় ১৫ আগস্ট তাকে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত ১৯ জুলাই রিকশাচালক কামাল মিয়া পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।[১৮৪] ২৫ আগস্ট ২০২৪ লালবাগ থানায় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় করা মামলায় শামসুল হক টুকু কে ০৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৫] ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ লালবাগ থানায় দায়ের করা কলেজছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৬]
১৪ আগস্ট ২০২৪ সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীজুনাইদ আহ্মেদ পলক কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।[১৮৩] পল্টন থানায় দায়ের করা কামাল মিয়া হত্যা মামলায় ১৫ আগস্ট তাকে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত ১৯ জুলাই রিকশাচালক কামাল মিয়া পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।[১৮৪] ২৫ আগস্ট ২০২৪ লালবাগ থানায় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় করা মামলায় শামসুল হক টুকু কে ০৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৫] ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বাড্ডা থানায় দায়ের করা সুমন শিকদার হত্যা মামলায় পলক কে আদালত ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সূত্রাপুর থানার দায়ের করা কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন কাউসার ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজর ছাত্র ওমর ফারুক হত্যা মামলায় পলক কে আদালত ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।[১৮৬][১৮৭] ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।[১৮৮]
১৪ আগস্ট ২০২৪ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।[১৮৩] পল্টন থানায় দায়ের করা কামাল মিয়া হত্যা মামলায় ১৫ আগস্ট তাকে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত ১৯ জুলাই রিকশাচালক কামাল মিয়া পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।[১৮৪] ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ আদাবর থানায় দায়ের করা পোশাককর্মী রুবেল হত্যা মামলায় ০৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৬]
১৬ আগস্ট ২০২৪ ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাচনী বোর্ডের অন্যতম সদস্য সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনকে (৮৪) আটক করা হয়। বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যসহ সর্বশেষ কেন্দ্রীয় নির্বাচনি বোর্ডের সদস্য ছিলেন।[১৮৯][১৯০] ১৭ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতে মামলাটি করে ঠাকুরগাঁওয়ের হাজীপাড়া এলাকার রিপন। রমেশ চন্দ্র সেন অসুস্থ থাকায় রিমান্ড চাওয়া হয়নি।[১৯১]
১৯ আগস্ট ২০২৪ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী,সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি কে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় করা একটি হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।[১৯২][১৯৩] মুদিদোকানি আবু সায়েদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ১৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। দীপু মনির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৯৪][১৯৫] ২৪ আগস্ট ২০২৪ বাড্ডা থানায় দায়ের করা সুমন শিকদার হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি কে ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[১৯৬]
১৯ আগস্ট ২০২৪ সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী ও নেত্রকোণা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আরিফ খান জয় কে গ্রেপ্তার করা হয়।ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় করা একটি হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মুদিদোকানি আবু সায়েদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ১৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। আরিফ খান জয়ের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৯৫] ২৫ আগস্ট ২০২৪ লালবাগ থানায় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় করা মামলায় আরিফ খান জয় কে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৫] ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ লালবাগ থানায় দায়ের করা কলেজছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৬]
২০ আগস্ট ২০২৪ চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে গ্রেফতার করা হয়।[১৯৭] কক্সবাজারের টেকনাফে একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় আবদুর রহমান বদিকে গ্রেফতার করা হয়।[১৯৮]
২১ আগস্ট ২০২৪ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-৫ আসন এর সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন কে পল্টন থানায় করা যুবদল নেতা ও মুদিদোকানদার নবীন তালুকদার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।[১৯৯] আহমদ হোসেনকে ০৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৯৭][২০০] ২৫ আগস্ট ২০২৪ লালবাগ থানায় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় করা মামলায় আহমদ হোসেন কে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৫] ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ আদাবর থানায় দায়ের করা পোশাককর্মী রুবেল হত্যা মামলায় ০৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৬]
২১ আগস্ট ২০২৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।[১৯৭][২০১] ২১ মাস আগে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে করা এক মামলায় তার ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২০২]
২২ আগস্ট ২০২৪ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এর সভাপতি রাশেদ খান মেনন কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।[২০৩][২০৪] রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে ০৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি। আওয়ামী লীগ আমলে রাশেদ খান মেনন প্রথমে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এবং পরে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।[২০৫][২০৬] আদাবর থানায় করা পোশাকশ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এর সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন কে আরও ০৬ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[২০৭] ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এর সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন কে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।[১৮৮]
২৩ আগস্ট ২০২৪ জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ ও পটুয়াখালী-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পটুয়াখালী-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ দশম জাতীয় সংসদে চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন।[২০৮][২০৯] ২৪ আগস্ট ২০২৪ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে ভাটারা থানাধীন ফরাজী হাসপাতালের সামনে সোহাগ মিয়া হত্যা মামলায় ০৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।[২১০] ৩১ আগস্ট ২০২৪ রাজধানী ভাটারা থানা এলাকায় সোহাগ মিয়া নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এর ফের ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২১০][২১১]
২৪ আগস্ট ২০২৪ ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোহাম্মদপুর-আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা–১৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সাদেক খান।[২১২] ২৪ আগস্ট ২০২৪ ট্রাকচালক মো. সুজন (২৪) হত্যা মামলায় ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান এর ০৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২১৩] ২৯ আগস্ট ২০২৪ রাজধানী আদাবরে জাকির নামের এক যুবককে হত্যা মামলায় সাদেক খানের ০৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২১৪]
২৫ আগস্ট ২০২৪ নারায়ণগঞ্জ-১ আসন এর সাবেক সংসদ সদস্য বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী রাজধানী ঢাকার শান্তিনগর এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রূপগঞ্জ থানায় করা দশম শ্রেণির ছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলায় ০৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে প্রথমবারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর টানা চারবার তিনি একই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে তৃতীয় দফায় সংসদ সদস্য হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি।[২১৫][২১৬] ৩০ আগস্ট ২০২৪ এ ০৬ দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।[২১৭] ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুবদলকর্মী শফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর কে ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ নারায়ণগঞ্জের দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর কে ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।[২১৮][২১৯] ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে চতুর্থ দফায় ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা চার হত্যা মামলায় দুইদিন করে ০৮ দিনের এই রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২২০]
২৫ আগস্ট ২০২৪ মাদারীপুর-৩ আসন এর সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ কে আদাবর থানা এলাকায় পোশাকশ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। এই হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ কে ০৭ দিন এর রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২২১]আব্দুস সোবহান গোলাপ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের পদ পান। এর আগে তিনি দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।[২২২] ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রাজধানীর আদাবরে পোশাকশ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এর আবার ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২২৩]
২৬ আগস্ট ২০২৪ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।[২২৪] রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় করা ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে ০৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[২০৭] ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ট্রাকচালক সুজন হত্যা মামলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ০৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২২৫][২২৬] ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ লালবাগ থানায় আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় ০৪ দিনের রিমান্ডে দেওয়া হয়।[২২৭] ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু কে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।[১৮৮]
২৯ আগস্ট ২০২৪ রংপুর-৪ আসনের (পীরগাছা-কাউনিয়া) সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করে র্যাব।[২২৮] রাজধানীর বাড্ডা থানায় দায়ের করা সুমন শিকদার নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগের মামলায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ০৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২২৯] ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বাড্ডায় সুমন শিকদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে কারাগারে পাঠানো হয়।[২২৩]
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুরান ঢাকার লালবাগ ও চকবাজার এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম দীর্ঘ দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৯৬ সালে তৎকালীন ঢাকা–৮ আসন থেকে। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা–৭ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন হাজি মোহাম্মদ সেলিম। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন হাজি মোহাম্মদ সেলিম।[২৩০][২৩১][২৩২][২৩৩] আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজি মোহাম্মদ সেলিম এর ০৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২৩৪][২৩৫][২৩৬] ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম অসুস্থ হয়ে পড়ায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।[২৩৭]
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু কে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পিরোজপুর জেলার কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও জিয়ানগর উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-২ আসন থেকে ৬ বারের (১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০১৪) নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি বিভিন্ন সরকারের মেয়াদে তিন বার বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের (পানিসম্পদমন্ত্রী,যোগাযোগমন্ত্রী ও জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের মন্ত্রী) দায়িত্ব পালন করে। তার পিতা তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া একজন রাজনীতিবিদ এবং দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ১৯৭২-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক ছিলেন।[২৩৮][২৩৯][২৪০] একই দিনে অসুস্থতা বিবেচনায় জামিন পায় জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।[২৪১]
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান কে গ্রেপ্তার করা হয়। মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন শাজাহান খান। তিনি এই আসন থেকে প্রথম ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। শাজাহান খান ৩১ জুলাই ২০০৯ – ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত নৌপরিবহনমন্ত্রী ছিলেন।[২৪২] রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা কিশোর আবদুল মোতালিব (১৪) হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২৪৩] ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রিমান্ডে থাকা অবস্থায় শাজাহান খান অসুস্থ বোধ করে। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।[২২৭]
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।[২৪৪] রাজধানীর বাড্ডা থানায় দায়ের করা সুমন শিকদার হত্যার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর ০৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২৪৫]
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নায়েব আলী জোয়ার্দ্দারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।[২৪৬] ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নায়েব আলী জোয়ার্দ্দারকে দুই মামলায় পৃথকভাবে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। তবে পৃথকভাবে নয়; একই সঙ্গে চার দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।[২৪৭]
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন কে গ্রেপ্তার করে র্যাব।[২৪৮] রাজধানীর আদাবর থানায় করা পোশাককর্মী রুবেল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন কে ০৫দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[২৪৯]
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বীর মুক্তিযোদ্ধা নাট্য অভিনেতা হিসেবে খ্যাতিমান আসাদুজ্জামান নূর ২০০১ সালে প্রথম আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনেও আসাদুজ্জামান নূর সংসদ সদস্য হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর তিনি সংস্কৃতিমন্ত্রী হয়েছিলেন।[২৫০] মিরপুর থানায় দায়ের করা সিয়াম সরদার হত্যা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।[২৫১]
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন মো. মাহবুব আলী। ২০১৮ সালে তিনি বিমান প্রতিমন্ত্রী হন।[২৫০] মিরপুর থানায় দায়ের করা সিয়াম সরদার হত্যা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।[২৫১]
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি রেলপথমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নূরুল ইসলাম।[২৫২] রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা ইমরান হাসান হত্যা মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী, নূরুল ইসলাম সুজনকে ০৩ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।[২৫৩] ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ যাত্রাবাড়ী থানার রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনকে ৫ দিনের রিমান্ড দেয় আদালত।[২৫৪]
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি ও লেখক শাহরিয়ার কবির কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।[২৫২] রমনা থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরকে ০৭ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।[২৫৫]
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ কুষ্টিয়া-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।[২৫৬] মো. রনি নামের এক তরুণকে হত্যার মামলায় কুষ্টিয়া-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে ০৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[২৫৭] ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অটোরিকশাচালক মো. রনি হত্যা মামলায় কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে আরও ০২ দিনের রিমান্ড দেয় আদালত।[২৫৮]
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুককে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক ২০১৯ সাল থেকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন।[২৫৯]
হাসিনা প্রশাসনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও বেশ কয়েকজন সাবেক সেনা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকদের কে গ্রেফতার করা হয়।
১৬ আগস্ট ২০২৪ সেনাবাহিনীর পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।[২৬১] ১৭ আগস্ট সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান এর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২৬২] ২৪ আগস্ট ২০২৪ নিউমার্কেট থানায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সবুজ আলী ও লালবাগ থানায় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় করা পৃথক মামলায় জিয়াউল আহসানকে কে আবার ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[১৮১] ২৯ আগস্ট ২০২৪ রাজধানীর আদাবরে জাকির নামের এক যুবককে হত্যা মামলায় জিয়াউল আহসানকে ০৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২১৪]
২১ আগস্ট ২০২৪ চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল কে পল্টন থানায় করা যুবদল নেতা ও মুদিদোকানদার নবীন তালুকদার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ৭ আগস্ট ২০২৪ বন্দর চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে তাকে নৌবাহিনীর ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিনের কমান্ডার হিসেবে বদলি করা হয়। ১৯ আগস্ট মোহাম্মদ সোহায়েলকে চাকরিচ্যুত করে চিঠি দেয় নৌবাহিনী। ১২ এপ্রিল ২০২৩ চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন। কমান্ডার থাকা অবস্থায় ২০১০ সাল থেকে দুই বছর র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মোহাম্মদ সোহায়েলকে ০৪ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[১৯৭][১৯৯][২০০][২০১] ২৫ আগস্ট ২০২৪ লালবাগ থানায় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় করা মামলায় মোহাম্মদ সোহায়েল কে ০৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৫] ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ লালবাগ থানায় দায়ের করা কলেজছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[১৮৬]
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক কে গ্রেপ্তার করা হয়। এ কে এম শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন।[২৬৩][২৬৪] রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় এ কে এম শহীদুল হক এর.০৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২৬৫][২৬৬]
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন কে গ্রেপ্তার করা হয়। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন।[২৬৩][২৬৪] রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মুদিদোকানি আবু সায়েদ হত্যা মামলায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের ০৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২৬৫][২৬৬] ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাবেক পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।[১৮৮]
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিমএপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।[২৬৭] খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে ০৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[২৬৮]
২১ আগস্ট ২০২৪ একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রূপা ও প্রধান বার্তা সম্পাদক শাকিল আহমেদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উত্তরা পূর্ব থানার ফজলুল করিম হত্যা মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।[২৬৯] ২২ আগস্ট ২০২৪ তাদেরকে ০৪ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয় আদালত।[২৭০] ২৬ আগস্ট ২০২৪ রাজধানীর আদাবর থানায় গার্মেন্টস কর্মী রুবেল হত্যা মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ও উপস্থাপক ফারজানা রুপার ০৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।[২৭১] ৩১ আগস্ট ২০২৪ সাংবাদিক দম্পতি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রধান প্রতিবেদক-উপস্থাপক ফারজানা রুপা কে ০৯ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।[২৭২]
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ভাষানটেক থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তকে ০৭ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় আদালত।[২৫৫]
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রমনা থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু কে ০৭ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় আদালত।[২৫৫]
গুজব
দৈনিক ইত্তেফাকে বলা হয়, ৯ আগস্ট লালমনিরহাটের জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী সীমান্ত দিয়ে বসত ভিটেসহ সব ফেলে রেখে কয়েক হাজার লোক দেশ ত্যাগের চেষ্টা করে।[২৭৩] কিন্তু পরবর্তীতে প্রথম আলোর একটি সংবাদে প্রমাণিত হয় যে, উক্ত সংবাদটি ভুলভাবে পরিবেশিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় নেতারা এসেছেন, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা এমন গুজব ছড়িয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের সীমান্ত এলাকায় জড়ো করেন।[২৭৪][২৭৫]
প্রথম কথা হলো আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এত দিন আমরা ছিলাম দখল হয়ে যাওয়া একটি দেশে থাকার মতো। এখানে শেখ হাসিনা যে আচরণ করছিলেন তা দখলদার বাহিনী, একজন স্বৈরশাসক, একজন জেনারেল এবং আরো অনেকের মতো। তিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। সোমবার বাংলাদেশের সব মানুষ নিজেদের স্বাধীন মনে করছেন। আবারো তারা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করলেন। সারা দেশে এই স্বাধীনতা উদযাপিত হচ্ছে।
যারা এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই তরুণদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন সবাই। তারা আমাদের স্বাধীন করেছেন। সবাইকে একত্র করেছেন। পুরো দেশকে স্বাধীন করেছেন। সবাই স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করছেন। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ শুরু করতে হবে। আমাদের সামনে এখন সব সমস্যা।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার সংবাদে লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে বিজয়োৎসবে শামিল হন হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশি। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নারী, পুরুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে এ পার্কের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ।[২৭৮] এদিকে বাংলাদেশে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও প্রাণহানি রোধ করতে সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি।[২৭৯]
চিত্রশালা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনকারীরা
প্রতিবাদী ব্যানার হাতে এক তরুণী যাতে লেখা রয়েছে "মানবে না হার এই গণজোয়ার"
প্রতিবাদী ব্যানার হাতে রাজু ভাস্কর্যের উপর এক আন্দোলনকারী যাতে লেখা রয়েছে "১৮ কোটি গুলি আছে তো?"
আন্দোলনকারীদের স্যালুট দিচ্ছেন এক রিকশা চালক
শেখ হাসিনার পতনের পর আন্দোলনকারীদের স্যালুট দিচ্ছেন একজন আন্দোলনকারী
↑হাসান, আহমদুল (১২ আগস্ট ২০২৪)। "৪-৬ আগস্ট: তিন দিনেই নিহত ৩২৬ জন"। ঢাকা পোষ্ট। ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪।এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
↑দিগন্ত, Daily Nayadiganta-নয়া। "৯ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা"। Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত) : Most Popular Bangla Newspaper। ২০২৪-০৮-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৩।
↑"হাজী সেলিম ৫ দিনের রিমান্ডে"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪।এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
↑"আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গ্রেপ্তার"। channel24bd.com। ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪। ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪।এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
American mixed martial artist Miesha TateMiesha Tate in 2018BornMiesha Theresa Tate[1] (1986-08-18) August 18, 1986 (age 37)Tacoma, Washington, U.S.[2]Other namesCupcakeHeight5 ft 6 in (1.68 m)Weight125 lb (57 kg; 8.9 st)DivisionBantamweight FlyweightReach65 in (165 cm)Fighting out ofLas Vegas, Nevada, United States[4]TeamXtreme CoutureRankPurple belt in Brazilian Jiu-Jitsu[4]Years active2007–2016, 2021–present (...
Arteria tibialis posterior Die Arteria tibialis posterior (hintere Schienbeinarterie) – bei Tieren als Arteria tibialis caudalis bezeichnet – ist eine Schlagader am Unterschenkel. Sie ist die direkte Fortsetzung der Kniekehlarterie (Arteria poplitea) nach Abgang der schwächeren vorderen Schienbeinarterie (Arteria tibialis anterior). Die Arteria tibialis posterior zieht in die Wadenmuskulatur und in dieser in Richtung Innenknöchel. In ihrem Verlauf entlässt sie mehrere Äste: Die Arteri...
1931 film BrandedLobby cardDirected byD. Ross LedermanWritten byRandall FayeProduced byHarry CohnStarringBuck JonesEthel KenyonWallace MacDonaldCinematographyElmer DyerBenjamin H. KlineEdited byOtto MeyerGene MilfordDistributed byColumbia Pictures CorporationRelease date September 1, 1931 (1931-09-01) Running time61 minutesCountryUnited StatesLanguageEnglish Branded is a 1931 American Pre-Code Western film directed by D. Ross Lederman.[1] Plot Dale (Buck Jones) and side...
BitTorrent clientThis article needs to be updated. The reason given is: Transmission 3.0.0 changed quite a bit, this article is now very out of date.. Please help update this article to reflect recent events or newly available information. (July 2021) TransmissionTransmission 3.0.0 with an active downloadOriginal author(s)Eric Petit, Josh Elsasser, Bryan VarnerDeveloper(s)Mike Gelfand (Windows), Charles Kerr (aka Jordan Lee), Mitchell LivingstonInitial release15 September 2005; 1...
Johann Heinrich von Schmitt (* 1744 in Pest (Budapest); † 11. November 1805 bei Dürnstein (gefallen)) war ein österreichischer Feldmarschallleutnant und Chef des Generalquartiermeisterstabes (Generalstabes) 1796–1800 und 1805. Unter seiner Regie entstand ein Kartenwerk von Südwestdeutschland. Leben Heinr. v. Schmidt. Nach dem frühen Tod seines Vaters, eines Rittmeisters, erhielt der Vierzehnjährige 1758 einen Stiftungsplatz in der Ingenieurschule in Wien. Am 15. November 1761 wurde e...
1986 novel by Stanislaw Lem This article includes a list of general references, but it lacks sufficient corresponding inline citations. Please help to improve this article by introducing more precise citations. (August 2009) (Learn how and when to remove this template message) Fiasco First published edition (Germany)AuthorStanisław LemOriginal titleFiaskoTranslatorMichael KandelCountryGermany (first published)LanguageGerman (First published)GenreScience fictionPublisherFischer Verlag (G...
1989 single by Belinda Carlisle Leave a Light OnSingle by Belinda Carlislefrom the album Runaway Horses B-sideShades of MichaelangeloReleasedSeptember 25, 1989Length4:15Label MCA Virgin Songwriter(s) Rick Nowels Ellen Shipley Producer(s)Rick NowelsBelinda Carlisle singles chronology Love Never Dies (1988) Leave a Light On (1989) (We Want) The Same Thing (1989) Leave a Light On is a song written by Rick Nowels and Ellen Shipley, produced by Nowels for American rock singer Belinda Carlisle's th...
Artikel ini sebatang kara, artinya tidak ada artikel lain yang memiliki pranala balik ke halaman ini.Bantulah menambah pranala ke artikel ini dari artikel yang berhubungan atau coba peralatan pencari pranala.Tag ini diberikan pada Januari 2023. FBFC (Fabrikasi Franco-Belge de Fabrication du Flustible, Prancis-Belgia) adalah perusahaan pembuat bahan bakar nuklir. Dari tahun 1977 dan seterusnya kantor pusatnya berlokasi di Romans-sur-Isère. Perusahaan mengoperasikan dua fasilitas lagi, satu di...
Desktop publishing application iStudio PublisheriStudio PublisherDeveloper(s)iStudio SoftwareInitial release6 January 2009; 14 years ago (2009-01-06)Stable release1.5.4 / 30 November 2020; 2 years ago (2020-11-30) Operating systemmacOSTypeDesktop publishingLicenseTrialwareWebsitewww.istudiopublisher.com iStudio Publisher is a page layout and desktop publishing (DTP) application developed by iStudio Software.[1] iStudio Publisher 1.0 was released on ...
Computer bugs related to the year 2000 January 1, 2000 redirects here. For the date, see January 2000. For the event, see Millennium celebrations. An electronic sign at École centrale de Nantes incorrectly displaying the year 1900 on 3 January 2000 (On the screen it translates to Welcome to the École centrale de Nantes (Central School of Nantes) 12:09 p.m. January 3, 1900.) The year 2000 problem, also commonly known as the Y2K problem, Y2K scare, millennium bug, Y2K bug, Y2K glitch, Y2K err...
Questa voce sull'argomento atletica leggera è solo un abbozzo. Contribuisci a migliorarla secondo le convenzioni di Wikipedia. Segui i suggerimenti del progetto di riferimento. 2500 metri siepiL'arrivo dei 2500 m siepi ai Giochi olimpici di Parigi 1900FederazioneWorld Athletics ContattoNo GenereMaschile Indoor/outdoorOutdoor Campo di giocoPista Olimpicosolo nel 1900 Manuale I 2500 metri siepi sono stati una disciplina dell'atletica leggera inserita nel programma olimpico esclusivamente ...
PH Hall PH-3 Role Patrol Flying BoatType of aircraft Manufacturer Hall Aluminum Aircraft Corporation First flight 1929 Introduction 1931 Retired 1944 Primary users United States Coast GuardUnited States Navy Number built 24 Developed from Naval Aircraft Factory PN The Hall PH was an American flying boat of the 1930s. It was a twin-engined biplane, developed from the Naval Aircraft Factory PN and could hence trace its lineage back to the Felixstowe flying boats of World War I. The PH was...
اوجسطس فريدريك دوق ساسكس (بالانجليزى: Prince Augustus Frederick, Duke of Sussex) معلومات شخصيه الميلاد 27 يناير 1773[1][2][3][4][5][6] قصر بكنجهام الوفاة 21 ابريل 1843 (70 سنة)[1][2][4][5][6] مواطنه المملكه المتحده لبريطانيا العظمى و ايرلاندا عض...
No debe confundirse con Nuevo Puente Pueyrredón. Puente Pueyrredón Visto desde la Av. Don Pedro de MendozaUbicaciónPaís ArgentinaUbicación Buenos Aires y AvellanedaCruza RiachueloCoordenadas 34°39′24″S 58°22′25″O / -34.65677778, -58.37358333CaracterísticasTipo Puente basculanteUso VehicularMaterial HierroHistoriaProyectista Prilidiano PueyrredónConstrucción 1791 (original)1931 (actual)Inauguración 1931Mapa de localización Situación Aguas arriba:Puent...
Highest men's association football league in Slovakia Football leagueNiké ligaOrganising bodySlovak Football AssociationFounded2009CountrySlovakiaConfederationUEFANumber of teams12Level on pyramid1Relegation to2. ligaDomestic cup(s)Slovak CupInternational cup(s)UEFA Champions LeagueUEFA Europa LeagueUEFA Europa Conference LeagueCurrent championsŠK Slovan Bratislava (14th title) (2023–24)Most championshipsSlovan Bratislava (14 titles)TV partnersDomesticMarkízaRTVS (highlights)Internationa...