আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর হল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মিডিয়া ও সংবাদ সংস্থা। এটি দেশের প্রচার মাধ্যম ও সাধারণ জনগণের কাছে সামরিক সংবাদ ও তথ্য প্রচার করে। এই পরিদপ্তরটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ।[১][২]
ইতিহাস
১৯৭২ সালে সশস্ত্র বাহিনী এবং অন্যান্য আন্তঃবাহিনী সংস্থার প্রচার ও জনসংযোগ কাজ পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রপতির আদেশবলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩] প্রথমে পুরাতন হাইকোর্ট ভবন এলাকায় অবস্থিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস ভবনের সাথে ছোট একটি অংশে ৩৭ জন জনবল নিয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের অফিস স্থাপন করা হয়। এটির প্রথম পরিচালক হন যাহিদ হোসেন।[৩]
এটির কর্মপরিধি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ১৯৭৭ সালে জনবল বৃদ্ধি করে ৫৬ জন করা হয় ও দপ্তরটির সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করা হয়। পরে ১৯৮২ সালে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের সচিবালয় থেকে জারিকৃত আদেশের মাধ্যমে এই পরিদপ্তরের সাংগঠনিক কাঠামো পুনঃবিন্যাস করা হয় ও দপ্তরটির জনবল হ্রাস করে ৩৩ জনে আনা হয়।[৩]
১৯৯৩ সালে পুরাতন হাইকোর্ট ভবন থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস গণভবন কমপ্লেক্সে স্থানান্তর করা হলে এই পরিদপ্তরের অফিসও গণভবনে আনা হয়। পরে আরো দুইবার পরিদপ্তরের অফিসস্থান পরিবর্তন হয়। ২০০৪ সালে এর অফিস অস্থায়ীভাবে পুরাতন লগ এরিয়া সদরদপ্তররের দোতলায় স্থানান্তরিত করা হয় ও বর্তমানে এই অবস্থান থেকে এটি এর কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
কাজ
সকল গণমাধ্যমের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে, সশস্ত্র বাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের যাবতীয় কার্যক্রমের প্রচারণা ও জনসংযোগের কার্যক্রম পরিচালনা করা।
পরিদপ্তরের প্রধান কার্যাবলী নিম্নরূপঃ
সশস্ত্র বাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থার কার্যক্রম বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম যেমন সংবাদপত্র, বেতার এবং টেলিভিশনে সঠিকভাবে উপস্থাপন এবং প্রচারণার উদ্দেশ্যে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
কোন তথ্য যাতে ফাঁস/বিকৃত না হয় সেজন্য তিন বাহিনীর তথ্য, সংবাদ, মতামত, ছবি এবং বিজ্ঞাপন প্রকাশ/প্রচারের ক্ষেত্রে একমাত্র সংস্থা হিসাবে যথাযথ পন্থা অনুসরণ করা।
সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্যান্য দপ্তর/সংস্থার জন্য ঘরোয়া সাময়িকী প্রকাশ করা।
সশস্ত্র বাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্যান্য দপ্তর/সংস্থা সমূহের সদস্য কর্তৃক লিখিত নিবন্ধ/প্রবন্ধ প্রকাশনা/প্রচারণার জন্য সম্পাদনা ও ছাড়পত্র প্রদান করা।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণ/উপস্থাপনায় বেতার ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠানাদি প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ ও সমন্বয় সাধন করা।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।
সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রেস ক্লিপিং ও তথ্যসূত্র সংরক্ষণ করা।
প্রয়োজনে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সংক্রান্ত খবর বিদেশী সংবাদ প্রতিবেদনে অনুসন্ধান ও পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করা।
প্রয়োজনে, সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষে মনস্তাত্ত্বিক প্রচারাভিযান (Psychological Warfare) পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করা।