মার্কাস নর্থ

মার্কাস নর্থ
২০০৯ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে মার্কাস নর্থ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
মার্কাস জেমস নর্থ
জন্ম (1979-07-28) ২৮ জুলাই ১৯৭৯ (বয়স ৪৫)
পাকেনহাম, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামস্নর্কস, নর্থি
উচ্চতা৬ ফুট ২ ইঞ্চি (১.৮৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪০৯)
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৭ নভেম্বর ২০১০ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৭৬)
১ মে ২০০৯ বনাম পাকিস্তান
শেষ ওডিআই৩ মে ২০০৯ বনাম পাকিস্তান
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৮–২০১৪ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া
২০০৪ডারহাম
২০০৫ল্যাঙ্কাশায়ার
২০০৬–২০১৪ডার্বিশায়ার
২০০৭–২০০৮গ্লুচেস্টারশায়ার
২০০৯হ্যাম্পশায়ার
২০১১–২০১৩পার্থ স্কর্চার্স
২০১২–২০১৩গ্ল্যামারগন
২০১৩–২০১৪সিডনি সিক্সার্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ২১ ২১৪ ১৮১
রানের সংখ্যা ১,১৭১ ১৩,৭৬৪ ৫,৩১২
ব্যাটিং গড় ৩৫.৪৮ ৩.০০ ৪০.৭২ ৩৪.৯৪
১০০/৫০ ৫/৪ ০/০ ৩৭/৬৯ ৯/৩৪
সর্বোচ্চ রান ১২৮ ২৩৯* ১৩৭*
বল করেছে ১,২৫৮ ১৮ ১২,৪৫৫ ২,৮৮৫
উইকেট ১৪ ১৫৮ ৭৪
বোলিং গড় ৪২.২১ - ৩৯.০৮ ৩৩.১০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৬/৫৫ ০/১৬ ৬/৫৫ ৪/২৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৭/- ১/- ১৫৩/- ৬১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, 8 অক্টোবর ২০১৭

মার্কাস জেমস নর্থ (ইংরেজি: Marcus North; জন্ম: ২৮ জুলাই, ১৯৭৯) পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার পাকেনহাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ২১ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, পার্থ স্কর্চার্স, সিডনি সিক্সার্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডারহাম, ল্যাঙ্কাশায়ার, ডার্বিশায়ার, গ্লুচেস্টারশায়ার ও হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। বামহাতে ব্যাটিং করার পাশাপাশি ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিং করতেন 'স্নর্কস', 'নর্থি' ডাকনামে পরিচিত মার্কাস নর্থ

কেন্ট স্ট্রিট সিনিয়র হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন। কনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে বেশ সফলতা পান। ফলশ্রুতিতে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট একাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন মার্কাস নর্থ। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলে খেলেন।

১৯৯৯ সালে একাডেমি দলের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। একই বছর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে অভিষিক্ত হন। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া দলের পক্ষে খেলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০০২-০৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া এ দলের সদস্য হন তিনি। এরপর ২০০৩ মৌসুমে ইংরেজ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ডারহামের সদস্যরূপে চুক্তিবদ্ধ হন।

এরপর ২০০৫ সালে ল্যাঙ্কাশায়ার, ২০০৬ সালে ডার্বিশায়ার, ২০০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত গ্লুচেস্টারশায়ার, ২০০৯ সালে হ্যাম্পশায়ার ও ২০১২ সাল গ্ল্যামারগনের সদস্য হন। এরফলে যে-কোন দেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে পৃথক ছয়টি কাউন্টি দলের পক্ষে খেলার সৌভাগ্য লাভ করেন।

২০০৭-০৮ মৌসুমে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অধিনায়ক মনোনীত হন মার্কাস নর্থ। এরপর তিনি অস্ট্রেলিয়া এ দলের পক্ষে খেলার সুযোগ লাভ করেন। সেখানেও তিনি দলকে নেতৃত্ব দেন। বামহাতি ব্যাটসম্যান ও মাঝে-মধ্যে দলের প্রয়োজনে ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী নর্থের টেস্ট অভিষেক ঘটে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সালে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক ঘটা ঐ টেস্টে সেঞ্চুরি করে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন। এরপর তিনি আরও ২০ টেস্ট অংশগ্রহণসহ দুইটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে, ২০১০-১১ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজ থেকে বাদ পড়ে যান তিনি। নবপ্রবর্তিত বিগ ব্যাশ লীগের দল পার্থ স্কর্চার্সের অধিনায়ক হন। তবে, অক্টোবর, ২০১২ সালে খেলায় মনোযোগ দেয়ার অভিলাসে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া ও পার্থ স্কর্চার্স - উভয় দলের অধিনায়কত্ব থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন তিনি।

প্রারম্ভিক জীবন

১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সময়কালে তরুণদের ক্রিকেটে ওয়ানেরু ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট ক্লাবে মাইক হাসির সাথে একযোগে খেলেন। এ সময়ে তিনি ভীষণ সফলকাম হন। ১৯৯৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে যুবদের টেস্টে অপরাজিত ২০০* ও ১৩২ রান তুলেন।[]

১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট একাডেমি দলের সাথে জিম্বাবুয়ে সফর করেন। এ সফরেই মাতাবেলেল্যান্ড আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ ঘটে।[]

ঘরোয়া ক্রিকেট

১৯৯৯ সালে প্রতিপক্ষ ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে পুরা কাপে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে অভিষেক ঘটে তার। একই দলের বিপক্ষে অক্টোবর, ২০০৬ সালে ক্রিস রজার্সকে সাথে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে রেকর্ডসংখ্যক ৪৫৯ রানের গড়েন। পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে তিনি তার নিজস্ব সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৫৯ রান তুলেছিলেন। ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার সেরা রাজ্য খেলোয়াড় হিসেবে রজার্সের পর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন। সাবেক টেস্ট খেলোয়াড় জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে ওয়েস্টার্ন ওয়ারিয়র্সের অধিনায়কত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হলে ২০০৭-০৮ মৌসুমে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়। অধিনায়ক হিসেবে আঘাতের কারণে তিনি কেবলমাত্র চারটি প্রথম-শ্রেণীর খেলা ও তিনটি একদিনের খেলায় অংশ নিতে পেরেছিলেন।[]

ইংরেজ ক্রিকেট

২০০০ সালে নর্থ ইস্ট প্রিমিয়ার লীগে ইংল্যান্ডের গেটশেড ফেলের পক্ষে প্রথম খেলেন। ডারহাম ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির কয়েকটি খেলায়ও তার অংশগ্রহণ ছিল। পরের মৌসুমে ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে কোলন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। ২০০২ ও ২০০৩ মৌসুমে পুনরায় গেটশেড ফেলে ফিরে যান। এরপর হার্শেল গিবসের পরিবর্তে ডারহামের পক্ষে কাউন্টি ক্রিকেট খেলার জন্য চুক্তিতে আবদ্ধ হন।[]

২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজ খেলার জন্য অস্ট্রেলিয়ার সদস্য হলে ব্র্যাড হজের পরিবর্তে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলেন।[] ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়া এ দলের জন্য ট্রাভিস বার্ট মনোনীত হলে ডার্বিশায়ারে স্থানান্তরিত হন তিনি।[] ২০০৭ সালের কাউন্টি মৌসুমে নিউজিল্যান্ডীয় হামিশ মার্শালের পরিবর্তে চুক্তিবদ্ধ হন।

এ সময় তিনি মাত্র পাঁচটি খেলায় অংশ নিয়ে তিনটিতেই সেঞ্চুরি করে বসেন। ফলশ্রুতিতে ইংরেজ মৌসুমে দ্রুততম সেঞ্চুরির সুবাদে ওয়াল্টার লরেন্স ট্রফি লাভ করেন।[] ২০০৮ মৌসুমে গ্লুচেস্টারশায়ারে ফিরে যান।[] তবে মৌসুমের শুরুতে ইমরান তাহিরের পরিবর্তে হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে অংশ নেন।[]

২০১২ ও ২০১৩ মৌসুমে গ্ল্যামারগনের বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে দুই বছরের চুক্তিতে আবদ্ধ হন। এরফলে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ছয়টি পৃথক কাউন্টি দলের পক্ষে খেলার গৌরব অর্জন করেন।[১০] তন্মধ্যে, ২০১৩ সালে গ্ল্যামারগনের একদিনের দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরকে ঘিরে অস্ট্রেলিয়া দলে খেলার জন্য আমন্ত্রিত হন। সফরের একমাত্র প্রস্তুতিমূলক খেলায় নর্থ তার অল-রাউন্ড ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। বোর্ড সভাপতি একাদশের বিপক্ষে দুইটি অপরাজিত অর্ধ-শতক ও খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা বোলিং করেন ১১ ওভারে ৬/৬৯ লাভ করে। জোহেন্সবার্গের নিউ ওয়ান্ডেরার্স স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টের মাধ্যমে তার অভিষেক হয়। এরফলে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৪০৯তম টেস্ট ক্যাপ পড়ার সুযোগ লাভ করেন মার্কাস নর্থ।

ফিলিপ হিউজবেন হিলফেনহসের সাথে একযোগে তার অভিষেক ঘটে। প্রথম ইনিংসেই ১১৭ রানের মনোরম সেঞ্চুরি উপহার দেন তিনি। এরফলে প্রথম পশ্চিম অস্ট্রেলীয় ও অষ্টাদশ অস্ট্রেলীয় হিসেবে প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি করার কীর্তিগাঁথা রচনা করেন তিনি। এছাড়াও প্রথম অস্ট্রেলীয় হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেন নর্থ। এ খেলাতেই নিচেরসারির ব্যাটসম্যান পল হ্যারিসকে আউট করে প্রথম উইকেট তুলে নেন।

অ্যাশেজ সিরিজ

১১ জুলাই, ২০০৯ তারিখে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে নিজস্ব তৃতীয় টেস্টে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে বসেন। অপরাজিত ১২৫ রানের ইনিংস খেলাকালে ব্র্যাড হাড্ডিনের সাথে ২০০ রানের জুটি গড়েন। তন্মধ্যে, হাড্ডিন ঐ টেস্টের উভয় ইনিংসেই সেঞ্চুরির সন্ধান পেয়েছিলেন। তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৬ রান করেন ও মাইকেল ক্লার্কের সাথে ১৮৫ রানের জুটি গড়েন। এরফলে অস্ট্রেলিয়া টেস্টটি ড্র করতে সমর্থ হয়। হেডিংলিতে অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ১১০ রান তুলেন নর্থ। এ ইনিংসে ছক্কা মেরে তার সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।

নিজদেশে অংশগ্রহণ

জুলাই, ২০১০ সালে লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয় অস্ট্রেলিয়া দল। লর্ডসের প্রথম টেস্টে নর্থ তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৬/৫৫ লাভ করেন পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে। এরফলে তার উইকেট সংখ্যা দুই অঙ্কের কোঠা স্পর্শ করে। ১০ ডিসেম্বর, ২০১০ তারিখে দল থেকে বাদ পড়েন মূলতঃ ২০১০-১১ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে দূর্বল খেলা প্রদর্শনের কারণে।

তথ্যসূত্র

  1. Pakistan Under 19 vs Australia Under 19s scorecard
  2. "Matabeleland Invitation XI v Australian Cricket Academy scorecard"। ১৫ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৭ 
  3. First-class season averages and List-A season averages; Cricket Archive; Retrieved on 1 March 2009
  4. North heads for the North-East; 24 March 2004
  5. Lancashire sign North to replace Hodge; 19 May 2005
  6. Bolton, Paul; Birt Leads charge; 19 May 2006
  7. North wins award for season's fastest hundred
  8. North agrees new Gloucestershire contract; 30 August 2007
  9. North heads south ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে; 15 January 2009
  10. Lynch, Steven। "Who has played for the most different teams?"Ask Steven - Cricinfo.com 

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!