মাইকেল বিয়ার

মাইকেল বিয়ার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
মাইকেল অ্যান্থনি বিয়ার
জন্ম (1984-06-09) ৯ জুন ১৯৮৪ (বয়স ৪০)
ম্যালভার্ন, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামফ্রোথি[]
উচ্চতা১.৮৭ মিটার (৬ ফুট ২ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪১৮)
৩ জানুয়ারি ২০১১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৫ এপ্রিল ২০১২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০১০/১১ - ২০১৪/১৫ওয়েস্টার্ন ওয়ারিয়র্স (জার্সি নং ১৯)
২০১১/১২ - ২০১৪/১৫পার্থ স্কর্চার্স
২০১৪/১৫ - ২০১৮/১৯মেলবোর্ন স্টার্স
২০১৬/১৭ভিক্টোরিয়া
২০১৯ - বর্তমানহোবার্ট হারিকেন্স (জার্সি নং ১৯)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ টি২০
ম্যাচ সংখ্যা ৩০ ২৭ ৭১
রানের সংখ্যা ২৯৩ ৬৫ ৪০
ব্যাটিং গড় ২.০০ ১০.৮৫ ৯.২৮ ১০.০০
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান * ২৯* ১৩* ১১*
বল করেছে ৪০৬ ৬,০৪৯ ১,৪২৭ ১,৬১৮
উইকেট ৭৪ ২৬ ৫০
বোলিং গড় ৫৯.৩৩ ৪০.৩৭ ৩৯.৬৯ ৩২.৩৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৫৬ ৭/৪৬ ৩/৩৯ ৩/১৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ১৬/– ৪/– ১০/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৫ মে ২০১৯

মাইকেল অ্যান্থনি বিয়ার (ইংরেজি: Michael Beer; জন্ম: ৯ জুন, ১৯৮৪) ভিক্টোরিয়ার ম্যালভার্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১০-এর দশকের শুরুরদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে মেলবোর্ন স্টার্স, পার্থ স্কর্চার্স, সাউথ পার্থ, ভিক্টোরিয়া ইমার্জিং প্লেয়ার্স ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন ‘ফ্রোথি’ ডাকনামে পরিচিত মাইকেল বিয়ার

শৈশবকাল

ম্যালভার্নের শহরতলী মেলবোর্নে মাইকেল বিয়ার তার শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। ভিক্টোরিয়ান সাব-ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের দল ম্যালভার্ন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে কিশোরদের ক্রিকেটে খেলতে থাকেন। ঐ ক্লাবের সাথে তার পরিবারের জোড়ালো সম্পর্ক ছিল ও তার পিতা শতাব্দীর সেরা দল হিসেবে ক্লাবের সদস্য ছিলেন। ম্যালভার্নের ডে লা সলে কলেজে অধ্যয়ন করেছেন তিনি। ২০০২ সালে স্নাতকধারী হন। ক্লাবের প্রথম একাদশে খেলতেন। এরপর, ১৭ বছর বয়সে ভিক্টোরিয়ান প্রিমিয়ার ক্রিকেটের ক্লাব দল সেন্ট কিল্ডার পক্ষে খেলতে থাকেন।[]

সেন্ট কিল্ডার পক্ষে কিছুটা সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। দুই মৌসুমে শতাধিক উইকেট লাভ করেন এবং দুইবার প্রিমিয়ার ক্রিকেটে বর্ষসেরা দলের সদস্য হন।[] ব্রাইস ম্যাকগেইন, ক্যামেরন হোয়াইটজন হল্যান্ডের ন্যায় অন্য স্পিন বোলারদের দাপটে ভিক্টোরিয়া ক্রিকেট দলের সদস্য হতে পারেননি।[] তবে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কাপে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে দ্বিতীয় একাদশের সদস্যরূপে কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এরপর, ২০০৭ সালে ভিক্টোরিয়ান এমার্জিং প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন।[][]

২০০৬-০৭ মৌসুমে ১৯.৮৮ গড়ে ৪৩ উইকেট নিয়ে ক্রুসেডার্স/রবার্ট রোজ স্কলারশিপ লাভ করেন।[] ২০০৯-১০ মৌসুমের পর ভিক্টোরিয়া ত্যাগ করে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। ২০১০-১১ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন ওয়ারিয়র্সের সাথে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন।[]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

২০১০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মাইকেল বিয়ারের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। বামহাতি স্পিনার হিসেবে মেলবোর্নের ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটে তাকে কয়েক মৌসুম বেশ পরিশ্রম করতে হয়। তবে, ২০১০ সালে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার দিকে পা বাড়ান ও ওয়ারিয়র্সের সম্মুখসারির স্পিনারের মর্যাদা পান। ২০১০-১১ মৌসুমে সফররত ইংরেজ দলের বিপক্ষে একটি খেলায় পাঁচ উইকেট। ফলশ্রুতিতে, ডিসেম্বরে পার্থ টেস্টে আকস্মিকভাবে তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে রাখা হয়। এ পর্যায়ে তিনি মাত্র পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অভিজ্ঞতাপুষ্ট হয়েছিলেন। তবে, সিডনিতে সিরিজের শেষ টেস্ট পর্যন্ত তাকে ব্যাগি গ্রীন ক্যাপ লাভের জন্যে অপেক্ষা করতে হয়।

২০১০-১১ মৌসুমের রাইয়োবি কাপে ওয়ারিয়র্সের পক্ষে প্রথম খেলেন। অক্টোবর, ২০১০ সালে ঐ খেলায় প্রতিপক্ষীয় দল ছিল ভিক্টোরিয়া।[] ২০১৬-১৭ মৌসুমে ম্যাটাডোর কাপ ঘরোয়া একদিনের প্রতিযোগিতায় মাইকেল বিয়ার ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। নিজ রাজ্য দলের পক্ষে প্রথম খেলায় তিনি হ্যাট্রিক করেন।[] এরফলে, মাত্র সাতজন অস্ট্রেলীয় বোলারের অন্যতম হিসেবে ঘরোয়া একদিনের ক্রিকেটে হ্যাট্রিক করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। ওয়াকা গ্রাউন্ডে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার এ হ্যাট্রিকটি দুই ওভারে সম্পন্ন হয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন মাইকেল বিয়ার। ৩ জানুয়ারি, ২০১১ তারিখে সিডনিতে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ১৫ এপ্রিল, ২০১২ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

ডিসেম্বর, ২০১০ সালে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে মাত্র পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের পরপরই ২০১০-১১ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজকে ঘিরে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রিত হন। ওয়াকা গ্রাউন্ডে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তাকে দলে রাখা হয়।[] অবসরপ্রাপ্ত অস্ট্রেলীয় বিখ্যাত স্পিনার শেন ওয়ার্নের বক্তব্যের একদিন পরই তাকে দলে রাখা হয়। তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, ২০১০-১১ মৌসুমে মাইকেল বিয়ার বেশ ভালো অবদান রেখেছেন। ১৬ উইকেট পান তিনি। তন্মধ্যে, নভেম্বর, ২০১০ সালে সফররত ইংরেজ দলের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন।[] দ্বিতীয় টেস্টে তাসমানীয় স্পিনার জেভিয়ার ডোহার্টি মাত্র এক উইকেট পান ও অস্ট্রেলিয়া দল পরাজিত হলে তাকে মাঠের বাইরে রাখা হয়।[১০] তবে, দলে তার অন্তর্ভূক্তিতে সাবেক অস্ট্রেলীয় টেস্ট বোলার স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল[১১]নাথান ব্র্যাকেন সমালোচনায় মুখরিত হন।[১০] তবে, ঐ খেলায় দলে চারজন ফাস্ট বোলার রাখায় অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে তাকে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে রাখা হয়।[১২]

টেস্ট অভিষেক

৩ জানুয়ারি, ২০১১ তারিখে ব্যাটসম্যান উসমান খাওয়াজা’র সাথে সিডনিতে ২০১০-১১ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়।[১৩]

ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অ্যালাস্টেয়ার কুকের ক্যাচ মিড-অফ অঞ্চলে দণ্ডায়মান বেন হিলফেনহস তালুবন্দী করলেও সামনে পায়ে নো-বল করায় প্রথম টেস্ট উইকেট প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হন।[১৪] তবে, পল কলিংউডকে ১৩ রানে আউটের মাধ্যমে প্রথম উইকেট পান তিনি। এ পর্যায়েও বেন হিলফেনহস ডিপ মিড-অন এলাকায় ক্যাচ নেন।[১৫] খেলার শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হন। ইংল্যান্ড দল ইনিংস ও ৮৩ রানে জয়ের পাশাপাশি ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। দ্বিতীয় ইনিংসে দুই রান ও প্রথম ইনিংসে দুই রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

বেশ ভালোমানের বোলিং করলেও একটিমাত্র উইকেট পান। তাসত্ত্বেও, দল নির্বাচকমণ্ডলীর মন থেকে দূরে সড়ে যান। ২০১১ সালে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ তার সাথে চুক্তি করেনি। তাসত্ত্বেও, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। ২০১১-১২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনার্থে মনোনীত হন। প্রথম টেস্টে তাকে দলে রাখা হয়নি। তবে, দ্বিতীয় টেস্টে খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের উভয় ইনিংসেই তিনি বোলিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন।

কয়েক মৌসুম ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার পর ২০১৬-১৭ মৌসুমে নিজ রাজ্য ভিক্টোরিয়ায় চলে যান। সেখানে তিনি পেশাদারী পর্যায়ে ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন।

তথ্যসূত্র

  1. Amy, Paul (১০ ডিসেম্বর ২০১০)। "All eyes on St Kilda's Beer"Caulfield-Glen Eira Leader। ১৭ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১০ 
  2. Amy, Paul (১০ ডিসেম্বর ২০১০)। "Malvern's Michael Beer gets Ashes call-up"Stonnington Leader। ১২ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১০ 
  3. "Minor Counties v Victoria Emerging Players"Victoria Emerging Players in England 2007। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১০ 
  4. "Second Ryder for Rummans"। Cricket Victoria। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১০ 
  5. "Marsh earns full-time contract with WA"The Sydney Morning Herald। ৫ মে ২০১০। 
  6. Hogan, Jesse (৭ অক্টোবর ২০১০)। "Victorian hopeful gets nod for WA"Bendigo Advertiser। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১০ 
  7. "Three cheers as Beer grabs Matador hat-trick"Cricket.com.au। ৫ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১৬ 
  8. "Frosty Beer on menu for Perth Test"Wwos.ninemsn.com.au। ১৫ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১০ 
  9. "Shane Warne calls for West Australian spinner Michael Beer"Heraldsun.com.au 
  10. Lane, Daniel (১১ ডিসেম্বর ২০১০)। "Hauritz snub puts selectors in spotlight"Brisbane Times 
  11. "MacGill slams selection panel"Cricinfo। ১১ ডিসেম্বর ২০১০। 
  12. Faulkner, Andrew (১৬ ডিসেম্বর ২০১০)। "Michael Beer confined to drinks waiter"The Australian। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১০ 
  13. "Australia pick Usman Khawaja and Michael Beer for Test"BBC Sport। ২ জানুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১১ 
  14. Hoult, Nick (৪ জানুয়ারি ২০১১)। "The Ashes: Michael Beer no-ball highlights major issue for Australia's bowlers, says Mitchell Johnson"The Daily Telegraph। London। 
  15. Barrett, Chris (৬ জানুয়ারি ২০১১)। "Hauritz should get nod: MacGill"Sydney Morning Herald 

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!