মহানায়ক আলমগীর কবির রচিত ও পরিচালিত ১৯৮৪ সালের রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্র।[১] বুলবুল আহমেদ নিবেদিত চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেছে ত্রয়ী চিত্রম।[২] এক বেকার যুবকের রোমাঞ্চকর প্রেমের গল্প নিয়ে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ।[৩] অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাজরী, জুলিয়া, রিনা খান, শওকত আকবর, আহমেদ শরীফ প্রমুখ।
এই চলচ্চিত্রের "আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়" গানের জন্য সুবীর নন্দী ৯ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেন।[৪]
কাহিনী সংক্ষেপ
বেকার রানা চাকরি পাচ্ছে না। তার বন্ধু দিলদারের সাথে একই মেসে থাকে। দিলদার তাকে নিয়ে যায় তার উস্তাদের কাছে। উস্তাদ কালু খাঁর অনুমতি নিয়ে সে লোকের পকেট মারা শুরু করে। পকেট মারায় তাকে পরিপক্ব করে তুলে দিলদার। কিন্তু সে ধরা পরে যায় পিটার সাক্সেনার কাছে। পিটার তাকে তার চোরাকারবারিতে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। রানা সাড়া দিয়ে পিটারের সাথে তার অফিসে দেখা করতে যায়। কিন্তু কালুর লোক তা দেখে ফেলে এবং কালুকে জানিয়ে দেয়। কালু রানাকে শাসায়। রানা পিটারের সাথে ফন্দি করে কালুকে এক বাগান বাড়িতে ডেকে নিয়ে খুন করে।
পিটার তাকে তার হীরা ব্যবসায়ের ক্রেতাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং তাকে থাইল্যান্ড পাঠায়। থাইল্যান্ডে পিটারের লোক তাকে সাদরে গ্রহণ করে। সেখানে তার পরিচয় হয় আধা-বাঙালি আধা-থাই লিন্ডার সাথে। লিন্ডা তাকে থাইল্যান্ড ঘুরিয়ে দেখায়। এরই মাঝে লিন্ডার সাথে তার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। কিন্তু তাকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে হয়। তাকে আবার যেতে হয় নেপালের কাঠমান্ডুতে। সেখানে পিটারের ব্যবসায়িক বন্ধু জোশির হোটেলে গিয়ে ওঠে। জোশির সহকারী শিলা তাকে তাদের ব্যবসায়ের সকল কথা ফাঁস করে দিলে রানা জোশিকে সে কাজ করতে মানা করে। জোশি পিটারকে বাংলাদেশ থেকে ডাকিয়ে নিয়ে যায় এবং কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জোশির গুলি পিটারের গায়ে লাগে। রানা তাকে ধাওয়া করলে জোশি পাহাড় থেকে পড়ে মারা যায়।
রানা বাংলাদেশে ফিরে এসে রেসেপশনিস্ট রেহানাকে বিয়ে প্রস্তাব দেয়। রেহানা প্রথমে নিমরাজি থাকলেও রানার অর্থবিত্তের কথা ভেবে রাজি হয়। কিন্তু পরদিন সে জানতে পারে আসলে রানা তার পূর্ব অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছে। কালু খাঁ মারা যাওয়ার পর দিলদার তার অধীনে কাজ করতে চায়। তারা দুজনে পরিকল্পনা করে চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা বলে গায়িকা ইয়াসমিন খানের গহনা হাতিয়ে নেওয়ার সময় তার কাছে ধরা পড়ে। ইয়াসমিন তাদেরকে শহর ত্থেকে যেতে বলে ছেড়ে দেয়। এভাবেই মানুষকে ধোঁকা দিয়ে চলতে থাকে তার জীবন।
কুশীলব
নির্মাণ
চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, নেপালের কাঠমান্ডু, ও বার্মা ফ্রন্টিয়ারে চিত্রায়িত হয়েছে।
সঙ্গীত
মহানায়ক চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন শেখ সাদী খান। গীত রচনা করেছেন মাসুদ করিম, মনিরুজ্জামান মনির, নজরুল ইসলাম বাবু ও জাহিদুল হক। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন রুনা লায়লা, এন্ড্রু কিশোর, সুবীর নন্দী, হৈমন্তী শুক্লা ও সাবিনা ইয়াসমিন।
গানের তালিকা
|
১. | "তুমি যাও প্রিয়া নদী হয়ে" | মনিরুজ্জামান মনির | হৈমন্তী শুক্লা | ৪:২৪ |
২. | "আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়" | জাহিদুল হক | সুবীর নন্দী | ৩:৩১ |
৩. | "আমি কারে বলি ভালো" | | রুনা লায়লা | : |
৪. | "পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই" | মাসুদ করিম | সুবীর নন্দী | ৪:৩০ |
মূল্যায়ন
সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া
চলচ্চিত্র সমালোচক রহমান মতি এই চলচ্চিত্রের পরিচালনায় সৃজনশীলতা এবং বুলবুল আহমেদের স্টাইলিশ অভিনয়েরর প্রশংসা করেন। তার মতে প্রেম, প্রতারণা, বিবেকবোধ সব মিলিয়ে মহানায়ক একটি পুর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র।[৫]
পুরস্কার
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে মহানায়ক (ইংরেজি)
টেমপ্লেট:আলমগীর কবির
বাংলা মুভি ডেটাবেজে মহানায়ক ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ আগস্ট ২০১৭ তারিখে