এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদটি পরিবর্ধন বা বড় কোনো পুনর্গঠনের মধ্যে রয়েছে। এটির উন্নয়নের জন্য আপনার যে কোনো প্রকার সহায়তাকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। যদি এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদটি কয়েকদিনের জন্য সম্পাদনা করা না হয়, তাহলে অনুগ্রহপূর্বক এই টেমপ্লেটটি সরিয়ে ফেলুন। ৭ দিন আগে ShakilBoT(আলাপ | অবদান) এই নিবন্ধটি সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন। (হালনাগাদ)
বাসিল আল আসাদ (২৩ মার্চ, ১৯৬২-২১ জানুয়ারি,১৯৯৪) ছিলেন একজন সিরিয়ান প্রকৌশলী, কর্নেল, অশ্বারোহী এবং রাজনীতিবিদ। তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্টহাফিজ আল-আসাদ এর বড় ছেলে এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এর বড় ভাই। তাকে তার বাবার পরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিলো, কিন্তু ১৯৯৪ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু ঘটে।[১]
প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা
বাসিল আল আসাদ ২৩ মার্চ, ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং সামরিক বিজ্ঞান এ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[২][৩] তিনি তার শৈশব সম্পর্কে বলেন:
আমরা বাবাকে বাড়িতে দেখতাম, কিন্তু তিনি এত ব্যস্ত ছিলেন যে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও আমাদের মধ্যে একটি কথাও হতো না। আমরা কখনো একসঙ্গে নাস্তা বা রাতের খাবার খাইনি। পারিবারিকভাবে দুপুরের খাবার খাওয়ার স্মৃতি আমার মনে নেই। হয়তো এক বা দুইবার খেয়েছি, তবুও সম্ভবত রাষ্ট্রীয় বিষয় নিয়ে আলাপ কররা সময়। পারিবারিকভাবে আমরা গ্রীষ্মে লাতাকিয়ায় এক-দুই দিন কাটাতাম। কিন্তু তখনও তিনি অফিসে কাজ করতেন এবং আমরা তাকে খুব বেশি দেখতে পেতাম না।[৪]
পেশাগত জীবন
প্যারাসুটিংয়ে প্রশিক্ষিত বাসিল আল আসাদ সিরিয়ান স্পেশাল মিশন ফোর্স এর বিশেষ বাহিনীতে কমিশন পান। পরবর্তীতে সোভিয়েত সামরিক অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে আর্মার্ড কর্প্স ইউনিটে যোগ দেন।[৩] তিনি দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে মেজর হন এবং পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী গার্ডের একটি ব্রিগেডের কমান্ডার নিযুক্ত হন।[৫][৬] ১৯৮৪ সালে তার বাবা গুরুতর অসুস্থতা থেকে সেরে উঠার পর বাসিল তার সাথে কাজ করতে শুরু করেন এবং ১৯৮৭ সালে একটি আঞ্চলিক ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় কয়েকটি পদক জয় করার মাধ্যমে জাতীয় অঙ্গনে উত্থিত হন।[৬][৭] সিরিয়ার বাথ পার্টির প্রেস তাকে "গোল্ডেন নাইট" উপাধি দেয় তার অশ্বারোহী দক্ষতার জন্য।[৮] তিনি দ্রুতগামী গাড়ির প্রতি আগ্রহী ছিলেন এবং তার বন্ধুরা তাকে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বর্ণনা করতেন।[৯][১০] বাসেল পরবর্তীতে প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটির প্রধান নিযুক্ত হন।[১১][১২] ১৯৮৯ সালে তিনি সিরিয়ান কম্পিউটার সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে বাশার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।[১৩] মূলত আসাদের চাচা রিফাত আল-আসাদ হাফিজের নির্বাচিত উত্তরাধিকারী ছিলেন। তবে ১৯৮৪ সালে হাফিজ কোমায় থাকাকালীন রিফাত ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করলে তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়।[৩] এরপর, বাসেলকে উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রস্তুত করা হয়।[১৪] ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর হাফিজকে "আবু বাসেল" (বাসেলের পিতা) নামে উল্লেখ করা হতো।[১৫] বাসেলকে আরব এবং ইউরোপীয় নেতাদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় এবং তিনি জর্ডানের রাজা হুসেইন এর সন্তানদের, বিশেষ করে হায়া বিনতে হুসেইন এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। হায়া অশ্বারোহী প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পছন্দ করতেন।[১৬] বাসিল লেবাননের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং তিনি লেবাননের সকল সম্প্রদায়ের নেতাদের কাছে পরিচিত ছিলেন।[১৭] তিনি সরকারের মধ্যে একটি অত্যন্ত প্রচারিত দুর্নীতি-বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন এবং প্রায়ই সরকারি অনুষ্ঠানে পূর্ণ সামরিক পোশাকে উপস্থিত হতেন, যা সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করত।[৯]
১৯৯৪ সালের ২১ জানুয়ারি, বাসেল আল-আসাদ তার বিলাসবহুল মার্সিডিজ গাড়ি চালিয়ে দ্রুত গতিতে (প্রায় ২৪০ কিমি/ঘন্টাবেগে) চালিয়ে দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। একটি ব্যক্তিগত চার্টার্ড ফ্লাইটে ফ্রাঙ্কফুর্ট, জার্মানি তে যাওয়ার কথা ছিলো তার। সেখান থেকে আল্পস-এ স্কি ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।[২০][২১][২২] কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় তার গাড়ি একটি ব্যারিয়ারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। সিটবেল্ট না পরার কারণে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।[৯][২৩] তার সাথে থাকা হাফিজ মাখলুফ আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন এবং পেছনের আসনে থাকা চালক অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যান।[৯][২৩] বাসিলের মরদেহ আল-আসাদ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে তার জন্মস্থান কার্দাহতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে তার পিতার মরদেহও একই স্থানে সমাহিত করা হয়।[২১][২৪]
উত্তরাধিকার
তার মৃত্যুর পর সিরিয়ায় দোকান, স্কুল এবং সরকারি দফতর বন্ধ করা হয়েছিল। তার শ্রদ্ধায় মদ বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছিল।[৬] রাষ্ট্র তাকে "দেশের শহীদ, জাতির শহীদ এবং তাকে যুবকদের প্রতীক" হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলো।[৬] তার নামে অনেক স্কয়ার এবং রাস্তার নামকরণ করা হয়েছিল। নতুন আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স, বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্রীড়া ক্লাব এবং একটি সামরিক একাডেমি তার নামে নামকরণ করা হয়। লাতাকিয়া-এ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির নামও তার নামে রাখা হয় বাসেল আল-আসাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তার মূর্তি সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে স্থাপন করা হয়েছে। মৃত্যুর পরও তাকে তার পিতা ও ভাইয়ের সঙ্গে বিলবোর্ড এ দেখা যায়।[৬] তার আলেপ্পো-তে একটি অশ্বারোহী মূর্তি ছিল,[২৫] যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিদ্রোহীদের দ্বারা পালটে ফেলা হয়।[২৬][২৭] ১৭ নভেম্বর ২০২০ তারিখে, লাতাকিয়া স্পোর্টস সিটি-এ তার নামে একটি জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়।[২৮]
বাসেল আল-আসাদের মৃত্যু তার ভাই বাশার আল-আসাদ পরবর্তী প্রেসিডেন্ট পদাধিকারী হয়ে উঠেন। বাশার তখন লন্ডনেচক্ষু চিকিৎসা নিয়ে পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। বাশার তার পিতার মৃত্যুর পর ১০ জুন ২০০০ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন।[২৯][৩০]
↑Edwards, Alex (জুলাই–আগস্ট ২০১২)। "স্বৈরাচার বোঝা"(পিডিএফ)। The Majalla। 1574: 32–37। ৩০ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৩।
↑Alterman, Jon B. (১৯৯৮)। "নতুন মিডিয়া নতুন রাজনীতি?"(পিডিএফ)। The Washington Institute। 48। ১৩ মে ২০১৩ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৩।
↑Brownlee, Jason (Fall ২০০৭)। "গামাল মুবারকের উত্তরাধিকারের পরিকল্পনা"(পিডিএফ)। Arab Studies Journal: 36–56। ৪ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৩।
↑Cook, Steven A. (ডিসেম্বর ১৯৯৬)। "আসাদের দামাস্কাসে সফর"। Middle East Quarterly: 39–43। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৩।
↑ কখSipress, Alan (২২ জানুয়ারি ১৯৯৪)। "Assad's Son is Killed in a Car"। Inquirer। ৩০ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১৩।
↑"হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যু"। Ain al Yaqeen। ১৬ জুন ২০০০। ২ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১৩।
↑Zisser, Eyal (জুন ২০০৬)। "What does the future hold for Syria?"(পিডিএফ)। MERIA। 10 (2)। ২০ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১২।