নাটুয়া নাচ

নাটুয়া নাচ বা নাটা নাচ বা লাটা নাচ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় প্রচলিত এক লোকনৃত্য বিশেষ। সাধারণতঃ বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত এই নাচের আসর বসে।

বৈশিষ্ট্য

নাটুয়া নাচ পৌরুষ দৃপ্ত নৃত্য বিশেষ। এই নাচের মূল লক্ষ্য দৈহিক শক্তির প্রদর্শন। সুদৃঢ় বলিষ্ঠ পদসঞ্চার ও অঙ্গবিক্ষেপের মাধ্যমে ঢাল ও তলোয়ার দিয়ে আক্রমণাত্মক ও রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতে খেলা প্রদর্শন এই নাচের বৈশিষ্ট্য। এই নাচে দেহ সুগঠিত ও বলিষ্ঠ হওয়া একান্ত প্রয়োজনীয়।[]:১৭৪

নর্তক

পুরুলিয়া জেলায় সাধারণতঃ হাড়ি, বাউড়ী, ডোমমাহাতো সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই নৃত্যের শিল্পী হয়ে থাকেন। নর্তকদের উর্ধাঙ্গে কোন আবরণ থাকে না, তারা শুধু মালকোচা মেরে খাটো ধুতি পরে সারা শরীরে সাদা রঙ দিয়ে বিভিন্ন রকম চিত্র অঙ্কন করে নেন। মাথায় ফেট্টি বেঁধে তাতে পাখির পালক গোঁজা হয়। হাতের মণিবন্ধে ও বাহুতে রঙিন ফিতা বেঁধে রাখা হয়।[]:১৭৫

রীতি

বন্দনাগান দিয়ে নাচ শুরু হয়। নাচের এক একটি সারিতে চারজন করে নর্তক থাকেন। নাচের অংশ হিসেবে নৃত্যশিল্পী মাটিতে শুয়ে পড়লে তার ওপর দাঁড়িয়ে অন্য শিল্পীরা নৃত্য প্রদর্শন করেন। কখনো কখনো নৃত্যশিল্পীর পেটে ঢেঁকি দিয়ে আঘাত করা, জ্বলন্ত আগুনের গোলা বিভিন্ন অঙ্গে স্পর্শ করা বা জ্বলন্ত কয়লা মুখে ঢুকিয়ে নেওয়ার মতো রোমাঞ্চকর খেলা এই শিল্পীরা দেখিয়ে থাকেন। এই নাচে হাল, জোয়াল, মই, গরুর গাড়ীর চাকা প্রভৃতি কৃষি সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয়ে থাকে।[]:সাড়৫ এই নাচে ছয়ালি, চৈতালী, ধুমসী, হলুদখেড়ি প্রভৃতি তালের ব্যবহার হয়ে থাকে। []:৩১৪

তথ্যসূত্র

  1. দিলীপ কুমার গোস্বামী, সীমান্ত রাঢ়ের লোকসংস্কৃতি, প্রকাশক- পারিজাত প্রকাশনী, বিদ্যাসাগর পল্লী, পুরুলিয়া-৭২৩১০১, প্রথম প্রকাশ- ২৪শে ডিসেম্বর, ২০১৪
  2. তরুণদেব ভট্টাচার্য, পুরুলিয়া,ফার্মা কে এল প্রাইভেট লিমিটেড, ২৫৭-বি, বিপিন বিহারী গাঙ্গুলী স্ট্রিট, কলকাতা-১২, ২০০৯

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!