এই নিবন্ধটি মূলত তিব্বত অঞ্চলের ডাকটিকিট এবং ডাক যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসের উপর লিখিত একটি সমীক্ষা।
১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ভারতের জারি করা ডাকটিকিটগুলোর উপর বিশেষ টাইপ লিখিত ওভারপ্রিন্ট করা টিকিটগুলো তিব্বতে ব্যবহারের জন্য জারি করা হয়। এগুলোই মূলত তিব্বতের প্রথম আসঞ্জক ডাকটিকিট ছিল।[১] এই সময়ের মধ্যে, ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই জুলাই, স্যার ফ্রান্সিস ইয়ংহাজব্যান্ডের নেতৃত্বে ব্রিটিশদের তিব্বত ফ্রন্টিয়ার কমিশন তিব্বতের কাম্বা জং পর্যন্ত পৌঁছে যায়।[২] তা সত্ত্বেও সিকিমের সাথে তিব্বতের সীমান্ত সমস্যার কূটনৈতিক নিষ্পত্তিতে কোনও অগ্রগতি না হওয়ায়, এর পরপরেই ইয়ংহাজব্যান্ডের অভিযানটি একটি সামরিক অভিযানের রূপ লাভ করে। এরপর ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির ফলে পশ্চিম তিব্বতের গার্তোয় এবং লাসা পর্যন্ত ভারতের বাণিজ্য পথের আশেপাশে গিয়ান্তসে, ফারিজং ও ইয়াতুং শহরে ভারতীয় ডাক বিভাগের দপ্তর প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে তিব্বতের ধর্মীয় নেতা ত্রয়োদশ দালাই লামা থব সেন গ্যা মৎসো সিকিম এবং পরে ভারতে পালিয়ে গেলে চীনা বাহিনী তিব্বত দখল করে নেয়। যদিও, এর আগে থেকেই তিব্বতে চীনা সম্প্রদায়ের লোকজন শান্তিতে অবস্থান করছিল। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৯ জানুয়ারি লাসার ওয়েন সাঙ ইয়াও এর লিখিত একটি চিঠি দ্বারা তিব্বতে চীনা সম্প্রদায়ের অবস্থানের বিষয়টি সম্পর্কে ভালো করে বোঝা যায়। তিব্বত দখলের পর চীনা শাসকেরা চীনের ডাকটিকিট এবং বিশেষ চীনা তারিখ সংবলিত ডাকটিকিটগুলো চাব্দো, গিয়ান্তসে, লাসা, ফারিজং, শিগাতসে এবং ইয়াতুং শহরের ডাক ঘরে ব্যবহারের জন্য নির্দেশ দিকে থাকে। তিব্বতে এই সময়ের ডাক ব্যবস্থা ও ডাক যোগাযোগ ছিল খুবই দুর্লভ এবং এ কারণে চীন ও তিব্বত উভয় অঞ্চলের বিশেষজ্ঞদের দ্বারাই এই সময়কার ডাকটিকিটগুলোর ব্যাপক অনুসন্ধান করা হয়।
বিশ শতকের শুরুর দিক থেকে তিব্বত ডাকটিকিট জারি করতে শুরু করে। তিব্বতের প্রথম ডাকটিকিটটি ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে রাজধানী লাসা থেকে জারি করা হয়েছিল। অন্যান্য সিরিজের ডাকটিকিটগুলো ১৯১৪ ও ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দ এবং ১৯৫০ এর দশকের শেষের দিক পর্যন্ত জারি করা হতে থাকে।
তিব্বতের প্রথম প্রকাশিত ডাকটিকিটগুলোতে মূলত তুষার সিংহের চিত্র ছিল, যা হলো তিব্বতের জাতীয় প্রতীক। এই টিকিটগুলোকে তিব্বতীয় লিপিতে "তিব্বত সরকার' কথাটি লেখা ছিল এবং সেই সাথে এতে ইংরেজিতে ভাষায় "তিব্বত" শব্দটি মুদ্রিত ছিল।[৩]
ডাকটিকিট সংগ্রহকারীরা ও বিশেষজ্ঞরা তিব্বতীয় নকল ও বাতিল উভয় ধরনের ডাকটিকিটেরই সম্মুখীন হন। এছাড়াও সংগ্রহকারীদের জন্য প্রকৃত টিকিটে ব্যবহৃত উপাদানও পুনরুৎপাদন করা হয়েছিল।[২]