ড্যান কালেন
|
পূর্ণ নাম | ড্যানিয়েল জেমস কালেন |
---|
জন্ম | (1984-04-10) ১০ এপ্রিল ১৯৮৪ (বয়স ৪০) উডভিল, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া |
---|
ডাকনাম | ফাইরি |
---|
উচ্চতা | ১.৮৩ মিটার (৬ ফুট ০ ইঞ্চি) |
---|
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি |
---|
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক |
---|
ভূমিকা | বোলার |
---|
|
জাতীয় দল | |
---|
একমাত্র টেস্ট (ক্যাপ ৩৯৭) | ১৬ এপ্রিল ২০০৬ বনাম বাংলাদেশ |
---|
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৫৯) | ২৩ এপ্রিল ২০০৬ বনাম বাংলাদেশ |
---|
শেষ ওডিআই | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
---|
|
---|
|
বছর | দল |
২০০৪ - ২০০৯ | সাউথ অস্ট্রেলিয়া |
---|
২০০৬ | সমারসেট |
---|
|
---|
|
প্রতিযোগিতা |
টেস্ট |
ওডিআই |
এফসি |
এলএ |
---|
ম্যাচ সংখ্যা |
১ |
৫ |
৪৬ |
৫৫ |
রানের সংখ্যা |
– |
২ |
৫৬৭ |
১২৩ |
ব্যাটিং গড় |
– |
– |
১৫.৭৫ |
১০.২৫ |
১০০/৫০ |
–/– |
০/০ |
০/০ |
০/০ |
সর্বোচ্চ রান |
– |
২* |
৪২ |
২৭* |
বল করেছে |
৮৪ |
২১৩ |
১০,৫৪০ |
২,৫৩৭ |
উইকেট |
১ |
২ |
১৩০ |
৫৬ |
বোলিং গড় |
৫৪.০০ |
৭৩.৫০ |
৪৪.২৮ |
৩৫.৩৯ |
ইনিংসে ৫ উইকেট |
০ |
০ |
৪ |
০ |
ম্যাচে ১০ উইকেট |
০ |
০ |
০ |
০ |
সেরা বোলিং |
১/৫৪ |
২/২৫ |
৫/৩৮ |
৩/২৮ |
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং |
০/– |
২/– |
১০/– |
১০/– | |
|
---|
|
ড্যানিয়েল জেমস কালেন (ইংরেজি: Dan Cullen; জন্ম: ১০ এপ্রিল, ১৯৮৪) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উডভিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া ও ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি অফ-ব্রেক বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন ‘ফাইরি’ ডাকনামে পরিচিত ড্যান কালেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ড্যান কালেনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রতিভাবান ধীরগতিসম্পন্ন বোলারদের তালিকায় ড্যান কালেন তার নাম যুক্ত করেন। ক্ল্যারি গ্রিমেট, অ্যাশলে মলেট, টেরি জেনার ও টিম মে’র পর অফ স্পিনার হিসেবে ড্যান কালেনের অন্তর্ভুক্তি ঘটে। অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘদিনের এক নম্বর বোলার হিসেবে শেন ওয়ার্নের অংশগ্রহণের পর তিনি দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। একই বোলিং কৌশলের অধিকারী হিসেবে দশ বছর বয়সী ড্যান কালেন শেন ওয়ার্নের স্থলাভিষিক্ত হন ও তার কাছ থেকে অটোগ্রাফ নিয়েছিলেন। দুসরা বোলিংয়ের ন্যায় রহস্যময় বোলিং করতেন তিনি। ব্যতিব্যস্ত ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে ফ্লাইট, ডিপ ও স্পিন বোলিং করতেন।
২০০৪ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম অংশ নেন। দুই মৌসুমে চমৎকার ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে ২০০৫-০৬ মৌসুমে বাংলাদেশ গমনার্থে তাকে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য করা হয়। পরের মৌসুমে তার খেলায় দূর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট দলেও তাকে পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নিতে হয়। তবে, ২০০৭-০৮ মৌসুমে তার খেলার উত্তরণ ঘটে। বোলিং পরিসংখ্যানেও এর প্রভাব ফেলে। এক পর্যায়ে তাকে রাজ্য দলের বাইরে রাখা হয় ও ২০০৯-১০ মৌসুমে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার সাথে চুক্তিচ্ছিন্ন ঘটে তার।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের অভিষেক খেলায় সাউথ অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে খেলেন তিনি।[১] খেলায় তিনি চার উইকেট লাভ করেন ও দলের জয়ে কিঞ্চিৎ ভূমিকা রাখেন।[২] শেন ওয়ার্ন তার অভিষেক মৌসুমের খেলায় বিমোহিত হন ও ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার সম্ভাবনা তুলে ধরেন।[৩] ঐ বছরে ৩০.৩৭ গড়ে ৪৩ উইকেট দখল করেছিলেন। আঙ্গুল ভেঙ্গে ফেলা সত্ত্বেও দূর্দান্ত খেলেন ও পরের মৌসুমে বর্ষসেরা ব্র্যাডম্যান তরুণ ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন।[১]
জাতীয় দলের স্পিনারদের তালিকায় উপেক্ষিত ছিলেন। ২০০৭-০৮ মৌসুমের পুরা কাপে ৪৯.৪৪ গড়ে ১৮ উইকেট পান। একদিনের খেলায় রেডব্যাকসদের পক্ষে ১৩ উইকেট নিয়ে শীর্ষে থাকেন। গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত নিজেকে রাজ্য দলের সেরা স্পিনারের মর্যাদা ধরে রাখেন। তবে, কালেন বেইলি’র আবির্ভাবে প্রথম-শ্রেণীর খেলা থেকে তাকে দূরে সড়ে দাঁড়াতে হয়। ঐ মৌসুম শেষে ড্যান কালেন জাতীয় দলের চুক্তিতে থাকেন। কিন্তু, ২০০৮ সালে এ মর্যাদা হারান। পুরা কাপে ৪০.৭৬ গড়ে ১৩ ও সীমিত ওভারে প্রতিযোগিতায় ৪৮.১৪ গড়ে সাত উইকেট পান। শুষ্ক মৌসুমে সমারসেটে খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। নাথান হারিৎজের ন্যায় টেস্ট বোলারের অবনমনের সাথে তিনিও যুক্ত হন।
চার মৌসুম পূর্বে ৩০.৩৭ গড়ে ৪৩ উইকেট পেয়ে বেশ সাড়া জাগান। ২০০৫-০৬ মৌসুমের গ্রীষ্মে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হন। ভাঙ্গা আঙ্গুল নিয়েও ৪৭.৮৮ গড়ে ২৭ উইকেট পেয়েছিলেন। ঐ বছরের অ্যালান বর্ডার পদক বিতরণী অনুষ্ঠানে ব্র্যাডম্যান বর্ষসেরা তরুণ ক্রিকেটার হিসেবে নামাঙ্কিত হন। ২০০৫ সালের শেষদিকে ওয়ার্ন মন্তব্য করেছিলেন যে, তার মাঝে বেশ সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি তরুণ ও তিনি তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠতে পারেন। তিনি নিশ্চিতভাবেই অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলবেন। তার ন্যায় প্রকৃতমানের অফ স্পিনারকে দেখলে আনন্দিত হবো। টেরি জেনারের ছাত্র ছিলেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে ও পাঁচটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন ড্যান কালেন। ১৬ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে চট্টগ্রামে স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে, ২৩ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে একই মাঠে ও একই দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০০৬ তারিখে কুয়ালালামপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন তিনি।
এপ্রিল, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ গমন করেন। নিয়মিত খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রাখার ফলে তার অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এরপর ঐ সফরের তিনটি ওডিআইয়ে অংশ নেন। বাংলাদেশ সফরে ওয়ার্নের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট হন। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তিনজনের স্পিন আক্রমণে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে আউট করেন ও ১৪ ওভার বোলিং করেন।
অস্ট্রেলীয় ঘরোয়া মৌসুম শেষে স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে মুখোমুখি হবার জন্যে ড্যান কালেনকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সিরিজের প্রথম টেস্টে তাকে খেলানো হয়নি। তবে, দ্বিতীয় টেস্টে দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় অবসাদগত কারণে বিশ্রামে থাকলে তার খেলার সুযোগ ঘটে।[৪] ঐ খেলায় এক উইকেট পান তিনি। অস্ট্রেলিয়ার অপর দুই স্পিনার শেন ওয়ার্ন ও স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল ১৫ উইকেট নিজেদের মাঝে ভাগাভাগি করে ফেলেন।[৫] ঐ সফরের ৩ ওডিআই নিয়ে গড়া সিরিজের প্রত্যেকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। ৪৯ গড়ে দুই উইকেট পান।[৬]
কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ
২০০৬ সালে ক্যামেরন হোয়াইটের সাথে বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে একযোগে সমারসেটের পক্ষে খেলেন। তবে, তুলনামূলকভাবে কাউন্টি দলটির পক্ষে তেমন ভালো খেলা উপহার দিতে পারেননি।[৭] চার খেলায় ৫০-এর অধিক গড়ে মাত্র সাত উইকেট লাভ করেছিলেন।[৮]
মৌসুমের শুরুতেই সমারসেট ত্যাগ করেন। এরপর, ২০০৬ সালের টপ এন্ড সিরিজ খেলার জন্যে অস্ট্রেলিয়া এ দলের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন।[৭] পরবর্তীতে, ২০০৬-০৭ মৌসুমের ডিএলএফ কাপে দুইটি ওডিআইয়ে অংশ নেন। কিন্তু, উভয় খেলাতেই তিনি উইকেট শূন্য অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করেন। শুরুরদিকের প্রতিশ্রুতিশীলতার পাশাপাশি শেন ওয়ার্ন ও রিকি পন্টিংয়ের ইতিবাচক মন্তব্য থাকা সত্ত্বেও এগুলোই তার অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বশেষ খেলায় পরিণত হয়।[৯] সব মিলিয়ে ছয়টি খেলায় অংশ নিয়ে একটি টেস্ট উইকেট ও দুইটি ওডিআই উইকেট লাভের মাধ্যমে তার আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।[১]
দলে প্রত্যাখ্যান
২০০৬-০৭ মৌসুমে তাকে বেশ কঠিন সময় অতিবাহিত করতে হয়। পুরা কাপে মাত্র ১৩ উইকেট লাভে সক্ষম হন। ফলশ্রুতিতে, সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট দলে কালেন বেইলিকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।[১] ঐ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়া এ দলের সদস্যরূপে পাকিস্তান গমন করেন। সেখানে পাকিস্তান এ দলের বিপক্ষে তিনটি লিস্ট এ খেলায় অংশ নেন। তিন উইকেট পান তিনি। এ সংগ্রহটি যে-কোন অস্ট্রেলীয় খেলোয়াড়ের চেয়ে সেরা ছিল। তবে, সবগুলো খেলাতেই তার দল পরাজিত হয়।[১০] উভয় দলের মধ্যকার প্রথম অনানুষ্ঠানিক টেস্টে খেলায় পাঁচ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া এ দলকে ইনিংস বিজয়ে সহায়তা করেন।[১১]
২০০৭-০৮ মৌসুমের ঘরোয়া ক্রিকেটে আবারও দূর্বলমানের খেলা উপস্থাপন করেন। এরজন্যে তিনি অস্ট্রেলিয়ার পিচকে দোষারোপ করেন। প্রত্যেক খেলাই আমি স্পিনারদের বিপক্ষে নিজেকে তুলনা করি ও আমি অধিকাংশ সময়ই বোলিংয়ের বাইরে ছিলাম।[১২] এরফলে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ অসন্তুষ্ট হন ও ঐ মৌসুম শেষে তাকে জাতীয় পর্যায়ের চুক্তি থেকে দূরে রাখে।[১৩] ২০০৮-০৯ মৌসুমে ড্যান কালেন ৭৭.৭০ গড়ে দশটি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান।[১৪]
২০০৯-১০ মৌসুমে ফোর্ড র্যাঞ্জার কাপে কেবলমাত্র একবার খেলেন। কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ঐ খেলায় তিনি ছয় ওভার বোলিং করলেও কোন উইকেট লাভে ব্যর্থতার পরিচয় দেন।[১৫] এটিই সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে তার সর্বশেষ খেলায় অংশগ্রহণ ছিল। সবমিলিয়ে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৪৪.২৮ গড়ে ১৩০ উইকেট এবং লিস্ট এ ক্রিকেটে ৩৫.৩৯ গড়ে ৫৬ উইকেট পান।[১] ঐ মৌসুমে শেষে সাউথ অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ তার সাথে আর চুক্তি নবায়ণ করেনি।[১৬]
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ