চারি নৃত্য হল ভারতের রাজস্থান রাজ্যের একটি লোকনৃত্য ।[১] এই নৃত্য হল প্রকৃতপক্ষে একটি মহিলা দলগত নৃত্য। এটি আজমির এবং কিষাণগড়ের সাথে সম্পর্কিত।[২] চারি নৃত্য কিষাণগড় এবং আজমীরেরগুর্জর ও সাইনি সম্প্রদায়ের মধ্যে বেশি লক্ষ করা যায়, তবে এটি সমগ্র রাজস্থান জুড়ে পরিচিত। চারি নৃত্যটি বিবাহ উদযাপনে, পুরুষ সন্তানের জন্মের সময় এবং শুভ উদযাপন ও উৎসবগুলিতে পরিবেশিত হয়।
পরিবেশনা
চারি নাচের সময়, রঙিন পোশাক এবং রত্নখচিত গহনা পরা মহিলারা তাদের মাথায় মাটির পাত্র বা পিতলের চারি পাত্র ধরে রাখে। প্রায়শই, চারির মধ্যে আগুন জ্বালানো হয়, চারির মধ্যে জ্বলন্ত দিয়া (তেলের প্রদীপ) রেখে অথবা তেলে ডুবিয়ে রাখা জ্বলন্ত তুলার বীজ রেখে। নর্তকীরা তাদের মাথায় জ্বলন্ত পাত্রটি স্পর্শ না করেই বহন করে, এবং সঙ্গে সঙ্গে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুন্দর সঞ্চালন করে ও হাঁটু দিয়ে পাক খায়।[৩] নৃত্যটিকে আরও আকর্ষণীয় দেখাতে মাথার আলোকিত চারিগুলি বিভিন্ন নকশায় রেখে নর্তকীরা নিঃশব্দে মেঝেতে নেচে বেড়ায়।
উৎপত্তি
রাজস্থান একটি মরুভূমি অঞ্চল, যেখানে মহিলারা তাদের পরিবারের জন্য জল সংগ্রহ করতে বহু মাইল হেঁটে যায়। তারা চরিতে প্রতিদিনের জল সংগ্রহ করে। জল সংগ্রহের এই আজীবনের ক্রিয়াকর্ম তারা নাচের মাধ্যমে উদযাপন করে।
পোষাক এবং অলঙ্কার
নৃত্যশিল্পীরা রাজস্থানী সোনার অলঙ্কার পরিধান করে যাদের মধ্যে আছে হাঁসলি, তিমনিয়া, মোগরি, পুঞ্চি, বাংদি, গজরা, অনন্ত (বাহুর অলঙ্কার), করলি, কঙ্কা এবং নবর।[৪]
বাদ্যযন্ত্র
নগাড়া, ঢোলক, ঢোলহারমোনিয়াম, থালি (একটি অটোফোনিক যন্ত্র) এবং বাঙ্কিয়া বাজিয়ে চারি নৃত্য করা হয়। বাঙ্কিয়া হল সবচেয়ে সাধারণ বাদ্যযন্ত্র। নিপুণ হাতে বাজালে এতে একটি জোরদার, অতিপ্রাকৃত শব্দ তৈরি হয়।[৪]