গুরুদাসপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় হলো বাংলাদেশের নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলায় অবস্থিত একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।[১][২] এটি নাটোর জেলার একটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ।[৩]
১৯১৭ সালে এলাকার শিক্ষাপ্রেমী কর্মকারের পূর্বপুরুষ এবং ভোলানাথ কুন্ডুর উদ্যোগে উপজেলা সদরের কেন্দ্রস্থলে এই বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। সেই সময়ে ভোলানাথ কুন্ডু, গোপীনাথ কুম্ভকার, গোবিন্দ কুন্ডু এবং দেবনাথ কর্মকার একত্রিত হয়ে কয়েক একর জমি দান করেন। সেখানে টিন দিয়ে ঘর তৈরি করা হয়। তখন বিদ্যালয়টির নাম ছিল ‘জিসি স্কুল’ (গুরুদাসপুর-চাঁচকৈড়)। প্রথমে ১১ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে এটির যাত্রা শুরু হয়। সে সময় বিরেশ্বর মজুমদার নামে একজন ব্যক্তি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪১ সালে এটি মাইনর স্কুল থেকে উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।[৪]
গুরুদাসপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের অবস্থান ২৪°২২′৫″ উত্তর ৮৯°১৪′৫১″ পূর্ব থেকে ২৪.৩৬৮০৬° উত্তর ৮৯.২৪৭৫০° পূর্ব।[৫]
বিদ্যালয়টিতে মোট চারটি ভবন রয়েছে। এর মধ্যে একটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য, একটি কারিগরি ভবন এবং অন্যটি বিদ্যালয়ের পুরনো ভবন আরেকটি স্কাউট ভবন। ভবনগুলোতে মোট কক্ষের সংখ্যা ৮৯টি; যার মধ্যে ৫৬টি ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া একটি কক্ষ গ্রন্থাগার এবং একটি কক্ষ সততা স্টোর হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুদাসপুর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষকের সংখ্যা ৩৬ জন। বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক হলেন জাহাঙ্গীর আলম।[৬]
গুরুদাসপুর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করার সুযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১,৫০০ জন। এর মধ্যে ছাত্র প্রায় ৮৫০ জন ও ছাত্রী প্রায় ৫৫০ জন। প্রতিটি শ্রেণি দুই থেকে তিনটি শাখায় বিভক্ত। এছাড়া নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়ার সুযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য পোশাকের নির্ধারিত রঙ সাদা ও কালো। অন্যদিকে মেয়ে শিক্ষার্থীদের পোশাকের নির্ধারিত রঙ সবুজ ও সাদা। তবে, শিক্ষার্থীরা সহশিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ স্কাউটসের নির্ধারিত পোশাক পরিধান করে থাকে।
বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসেবে কাব স্কাউটিং চালু আছে।[৭] এছাড়া অন্যান্য সংঘের মধ্যে “সূর্য কিশোর”, “স্বর্ণ কিশোরী” প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উন্নয়নের জন্য বিদ্যালয়ে একটি “সততা স্টোর” নামক একটি মুদি দোকান রয়েছে। এই দোকানে কোনো ব্যক্তি উপস্থিত থাকেন না; শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে বাক্সে টাকা রেখে যায়।