ইভো ফ্রান্সিস ওয়াল্টার ব্লাই, ডার্নলির ৮ম আর্ল, জেপি, ডিএল (ইংরেজি: Ivo Bligh; জন্ম: ১৩ মার্চ, ১৮৫৯ - মৃত্যু: ১০ এপ্রিল, ১৯২৭) লন্ডনে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ব্রিটিশ অভিজাত ব্যক্তিত্ব, সংসদ সদস্য ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। পাশাপাশি দলের অধিনায়কেরও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯০০ সাল পর্যন্ত তিনি সম্মানীয় ইভো ব্লাই পদবী ধারণ করেন।
ব্লাই ইংল্যান্ড ও এমসিসি দলেরঅধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৮২-৮৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের সর্বপ্রথম টেস্ট সিরিজে দলের নেতৃত্ব দেন।[৪] এছাড়াও ব্লাই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেন ও ১৮৭৭ থেকে ১৮৮৩ সময়কালে কেন্টের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন।
১৮৭৭ সালেইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্টের সূত্রপাত ঘটে। এরপর ১৮৮২ সালে ওভালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঙ্কি হর্নবি’র নেতৃত্বে ইংল্যান্ড দল পরাজিত হয়। এরফলে স্পোর্টিং টাইমসসংবাদপত্রে ইংরেজ ক্রিকেটকে ঘিরে বিদ্রুপাত্মক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাতে দেহ পুরোপুরি জ্বলে গেছে ও ছাঁই অস্ট্রেলিয়ায় প্রেরণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তী শীতকালীন সফরে অস্ট্রেলিয়া গমন করে ইংল্যান্ড দল ও অ্যাশেজ পুণরুদ্ধারের চেষ্টা চালায়। ব্লাইয়ের দল সফলতা পায়। তিন খেলার অ্যাশেজ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী হয়। চতুর্থ খেলাটি অ্যাশেজের অন্তর্ভুক্ত ছিল না ও পরাজিত হয়।[৫]
টেস্ট সিরিজ জয়ের পর মেলবোর্নের রমণীদের একটি দল সম্মানীয় ইভো ব্লাইকে একটি ছোট লালচে বাদামী বর্ণের পাত্র উপহার দেয়। ছাঁই ভর্তি পাত্রটি বেইল পুড়িয়ে ভরে দেয়া হয়েছিল যা ইংরেজ ক্রিকেটের ছাঁইয়ের প্রতীকিরূপ বহন করে। অ্যাশেজ সিরিজের প্রতীকীরূপে পাত্রটি আসলে দি অ্যাশেজ পরিভাষাটির উৎপত্তি ঘটে। তবে, অ্যাশেজ সিরিজের ট্রফিতে এ পাত্র ব্যবহার করা হয় না ও অ্যাশেজ সিরিজের ট্রফি যে-দলের অনুকূলেই থাকুক না কেন, লর্ডসের এমসিসি জাদুঘরে পাত্রটি রক্ষিত আছে।[৬] ১৯৯৮-৯৯ অ্যাশেজ সিরিজ থেকে বিজয়ী দলকে একটি ওয়াটারফোর্ড স্ফটিকট্রফি প্রদান করা হচ্ছে।[৭]
১৯০০ সালে বড় ভাই এডওয়ার্ডের স্থলাভিষিক্ত হয়ে ডার্নলির আর্ল মনোনীত হন। তবে, আইরিশ পদবী ধারণ করলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে লর্ডস সভায় আসন লাভ করেননি। মার্চ, ১৯০৫ সালে নির্বাচনে জয়লাভের পর আইরিশ প্রতিনিধিরূপে সংসদে প্রবেশের সুযোগ লাভ করেন তিনি।
পারিবারিক পদবী লর্ড ডার্নলি ধারণের পর ডেপুটি লেফট্যানেন্ট মনোনীত হন[৮] ও কেন্টের শান্তিবিষয়ক বিচারপতি হন।[১] ১৬ জুলাই, ১৯০২ তারিখে দ্য কুইন্স অওনের (রয়্যাল ওয়েস্ট কেন্ট রেজিম্যান্ট) ৪র্থ ভলান্টিয়ার ব্যাটালিয়নের সম্মানসূচক কর্নেলরূপে মনোনীত হন।[৯]
ব্যক্তিগত জীবন
৯ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৪ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার বীচওয়ার্থ এলাকার জন স্টিফেন মর্ফি'র কন্যা ফ্লোরেন্স রোজ মর্ফি নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন তিনি।[১]রুপার্টসউড এলাকায় তিনি সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন তার ভবিষ্যতের স্বামী ব্লাই অস্ট্রেলিয়া সফরে ছিলেন। তাদের দুই পুত্র ও এক কন্যা ছিল:[১]
লর্ড ডার্নলি ১০ এপ্রিল, ১৯২৭ তারিখে ৬৮ বছর বয়সে কেন্টের শর্ন এলাকায় দেহত্যাগ করেন। কেন্টের কোবহাম এলাকার সেন্ট মেরি মাগদালেন চার্চে পারিবারিক সংরক্ষিত জায়গায় তাকে সমাহিত করা হয়।[১০][১১]
তার মৃত্যুর পর জ্যেষ্ঠ সন্তান এসমে পারিবারিক পদবী ধারণ করেন। তার স্ত্রী ফ্লোরেন্স স্বামীর মৃত্যুর পর পাত্রটি এমসিসিতে দান করে দেন। ১৯১৯ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রথম ডেমের মর্যাদা লাভকারী ফ্লোরেন্স আগস্ট, ১৯৪৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[১২]