দি ওভাল (ইংরেজি: The Oval) লন্ডনের কেনিংটনে অবস্থিত একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠ। ইংল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট খেলাগুলো এখানে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ব্যবসায়িক অংশীদারত্বের কারণে এটি বর্তমানে কিয়া ওভাল নামে পরিচিত। অতীতে স্টেডিয়ামটিকে মাঝে-মধ্যেই কেনিংটন ওভাল নামে ডাকা হতো। কয়েক বৎসর পূর্বে ফস্টার্স ওভাল, এএমপি ওভাল, ব্রিট ইন্স্যুরেন্স ওভাল নামে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচিতি ঘটানো হয়েছিল মূলতঃ পূর্বেকার বাণিজ্যিক অংশীদারি চুক্তির কারণে।
ওভাল মাঠটি সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের নিজ মাঠরূপে পরিচিত। এছাড়াও, সনাতনী পন্থায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড তাদের চূড়ান্ত টেস্ট খেলার জন্যে প্রত্যেক ইংলিশ গ্রীষ্মকালকে এ মাঠের জন্যে ব্যবহার করে যা আগস্টের শেষদিক থেকে সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকের সময়কাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। স্মর্তব্য যে, টেস্ট ক্রিকেটের জন্যে ব্যবহৃত ওভাল মাঠটি যুক্তরাজ্যের প্রথম মাঠ ও বিশ্বের দ্বিতীয় মাঠ হিসেবে স্বীকৃত। প্রথমস্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড বা এমসিজি।
ইতিহাস
১৮৭২ থেকে ১৯০৭ সাল পর্যন্ত সি. ডব্লিউ. অ্যালকক সারে ক্রিকেট দলের সচিব থাকা অবস্থায় ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্ট খেলা ওভালে অনুষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার খেলায় অস্ট্রেলিয়া দি অ্যাশেজ টেস্টে দুই দিনের মধ্যে ৭ রানে জয়লাভ করেন। দ্য স্পোর্টিং টাইমস পত্রিকাটি ইংলিশ ক্রিকেটের দূরবস্থা দেখে ছদ্ম শোকবার্তা প্রকাশ করে যা পরবর্তীকালে অ্যাশেজ ট্রফির প্রবর্তন ঘটে। এখনো ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যেকার টেস্ট খেলাগুলো অ্যাশেজ ট্রফি নামে পরিচিত। ১৮৮৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিলি মারডক ওভালে প্রথম দ্বি-শতক হাঁকান।[১]
ওভালের বর্তমান প্যাভিলিয়নটির নির্মাণ কাজ ১৮৯৮ মৌসুমে সম্পন্ন হয়।[২]
দ্বিতীয় দল হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল ১৯০৭ সালে ওভালে খেলতে আসে। ১৯২৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৯৩১ সালে নিউজিল্যান্ড দল এখানে খেলে। ৫ম সফরকারী দল হিসেবে ১৯৩৬ সালে ভারতীয় দল এখানে খেলে। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান এবং ১৯৯৮ সালে শ্রীলঙ্কা খেলে। এছাড়াও জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশ দলও এখানে খেলেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে ওভালকে যুদ্ধবন্দীদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হলেও কখনো তা কার্যকর করা হয়নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে ঘিরে ফিলিপ লার্কিন তাঁর কবিতায় ওভালের কথা তুলে ধরেছেন।[৩]
৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ তারিখে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৩ এবং ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বেশকিছু খেলা আয়োজনের অধিকারী হয় ওভাল। ২০০৪ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ১৫ খেলার মধ্যে ফাইনালসহ ৫টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। অদ্যাবধি কোন ধরনের আন্তর্জাতিক খেলা ফ্লাডলাইটের সাহায্যে অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে, সারে দল বেশ কয়েকটি একদিনের খেলা ফ্লাডলাইটের সাহায্যে পরিচালনা করে। ১৮৮৯ সালের পর গ্যাসের আলোর সাহায্যে খেলা আয়োজন করেছে সারে দলটি।[৪]
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ