মার্চেন্ট আইভরি প্রডাকশন্স হল ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত চলচ্চিত্র কোম্পানি। প্রযোজক ইসমাইল মার্চেন্ট (১৯৩৬-২০০৫) ও পরিচালক জেমস আইভরি (জ. ১৯২৮) এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। মার্চেন্ট ও আইভরি ১৯৬১ সাল থেকে ২০০৫ সালে মার্চেন্টের মৃত্যু পর্যন্ত আজীবন সঙ্গী ছিলেন। তারা একত্রে ৪৪টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। চলচ্চিত্রসমূহ অধিকাংশই মার্চেন্ট প্রযোজনা করেছেন এবং পরিচালনা করেছেন আইভরি, তন্মধ্যে ২৩টি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য রচনা করেছেন রুথ প্রাভার জাবভালা (১৯২৭-২০০৩)। এই চলচ্চিত্রসমূহ বিভিন্ন উপন্যাস বা ছোটগল্প অনুসারে নির্মিত, বিশেষ করে হেনরি জেমস, ই. এম. ফরস্টার ও জাবভালার নিজের সাহিত্যকর্ম অবলম্বনে নির্মিত।
তাদের একসাথে কাজ সম্পর্কে মার্চেন্ট মন্তব্য করেন, "আমি ভারতীয় মুসলমান, রুথ জার্মান ইহুদি, ও আইভরি প্রটেস্ট্যান্ট মার্কিন। কেউ একজন আমাদের তিন-মাথাওয়ালা ঈশ্বর বলে অভিহিত করেছিলেন। সম্ভবত আমাদের তিন-মাথাওয়ালা দানব বলেও ডাকতে পারতেন!"[১]
শুরুতে এই কোম্পানির উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য ভারতে ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র নির্মাণ করা। ভারতের পটভূমিতে ও ভারতে চিত্রায়িত মার্চেন্ট আইভরির চলচ্চিত্রসমূহ জনপ্রিয়তা লাভ করে। পরবর্তী কালে এই কোম্পানি যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করে।
ইতিহাস
ইসমাইল মার্চেন্ট ও জেমস আইভরি ১৯৬১ সালে মার্চেন্ট আইভরি প্রডাকশন্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।[২] তাদের উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য ভারতে ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র নির্মাণ করা।[৩]
শুরুতে দ্য হাউজহোল্ডার, শেকসপিয়ার ওয়ালা ও বম্বে টকি চলচ্চিত্রসমূহ দিয়ে মাঝারি মানের সফলতা অর্জন করলেও ১৯৭০-এর দশকে কোম্পানিটি কিছু সময় ব্যবসা করতে ব্যর্থ হয়। জেন অস্টেন ইন ম্যানহাটন ও দ্য ওয়াইল্ড পার্টি চলচ্চিত্রসমূহ দর্শকের সাড়া পেতে ব্যর্থ হয়। ১৯৭৯ সালে হেনরি জেমসের উপন্যাস অবলম্বনে দ্য ইউরোপিয়ান্স চলচ্চিত্র দিয়ে তারা পুনরায় সফলত লাভ করে। তাদের হিট অ্যান্ড ডাস্ট (১৯৮৩) চলচ্চিত্রটি ইউরোপ জুড়ে, বিশেষ করে ইংল্যান্ডে সফলতা লাভ করে। আ রুম উইথ আ ভিউ (১৯৮৫) চলচ্চিত্র দিয়ে তারা বড় পরিসরে সফলতা অর্জন করে।
১৯৯০-এর দিকে তারা ইংল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করে। রুথ প্রাভার জাবভালা তাদের সাথে চিত্রনাট্যকার হিসেবে একাধিক চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন।[৪] বড় চলচ্চিত্র নির্মাণ কোম্পানিগুলো চলচ্চিত্র পরিবেশনার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করে, তন্মধ্যে ডিজনি ১৯৯১ সালে তাদের সাথে তিন বছরের পরিবেশনার চুক্তি করে।[৫][৬]
২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে কোহেন মিডিয়া গ্রুপ মার্চেন্ট আইভরি ব্র্যান্ড ও লাইব্রেরি, ২১টি চলচ্চিত্র ও ৯টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র অধিগ্রহণ করে। আইভরি চলচ্চিত্রের পুনরুদ্ধার, পুনঃমুক্তি ও প্রচারের সৃজনশীল পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করে।[৪]
সদস্য
জেমস আইভরি মার্চেন্ট আইভরি প্রডাকশন্সের চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য সুপরিচিত। মার্চেন্ট আইভরি একত্রে কাজের মধ্যে তিনি তিনটি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, কিন্তু কোনটি জিততে পারেন্নি। তিনি তার প্রথম একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন ৮৯ বছর বয়সে কল মি বাই ইওর নেম চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যের জন্য। তিনি লেখনীর জন্য একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি।
ইসমাইল মার্চেন্ট মার্চেন্ট আইভরি প্রডাকশন্সের চলচ্চিত্র প্রযোজনার জন্য পরিচিত। তিনি চারটি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, কিন্তু কোনটিই জিততে পারেননি।
রুথ প্রাভার জাবভালা মার্চেন্ট আইভরি প্রডাকশন্সের চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যের উপযোগকরণের জন্য পরিচিত। তিনি তিনটি একাডেমি পুরস্কার মনোনয়ন থেকে দুটি পুরস্কার অর্জন করেন।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
|
---|
১৯৭১–২০০০ | |
---|
২০০১–বর্তমান |
- অ্যালবার্ট ফিনি, জন থ ও জুডি ডেঞ্চ (২০০১)
- ওয়ারেন বেটি, মার্চেন্ট আইভরি প্রডাকশন্স, অ্যান্ড্রু ডেভিস ও জন মিলস (২০০২)
- সল জ্যান্ট্স ও ডেভিড জেসন (২০০৩)
- জন বুরমান ও রজার গ্রায়েফ (২০০৪)
- জন ব্যারি ও ডেভিড ফ্রস্ট (২০০৫)
- ডেভিড পুটনাম ও কেন লোচ (২০০৬)
- অ্যান ভি. কোটস, রিচার্ড কুর্টিস ও উইল রাইট (২০০৭)
- অ্যান্থনি হপকিন্স ও ব্রুস ফরসিথ (২০০৮)
- ডন ফ্রেঞ্চ, জেনিফার সন্ডার্স, টেরি ইলিয়াম ও নোলান বুশনেল (২০০৯)
- ভানেসা রেডগ্রেভ ও শিগেরু মিয়ামোতো (২০১০)
- ক্রিস্টোফার লি, পিটার মলিনেয়ো ও ট্রেভর ম্যাকডোনাল্ড (২০১১)
- মার্টিন স্কোরসেজি ও
রল্ফ হ্যারিস (২০১২)
- অ্যালান পার্কার, গেব নেওয়েল ও মাইকেল পালিন (২০১৩)
- রকস্টার গেমস ও জুলি ওয়াল্টার্স (২০১৪)
- মাইক লেই, ডেভিড ব্রাবেন ও জন স্নো (২০১৫)
- সিডনি পোয়াটিয়ে, জন কারম্যাক ও রে গ্যাল্টন ও অ্যালান সিম্পসন (২০১৬)
- মেল ব্রুক্স ও জোয়ানা লুমলি (২০১৭)
- রিডলি স্কট, টিম শেফার ও কেট অ্যাডি (২০১৮)
- থেলমা স্কুনমেকার ও জোন বেকওয়েল (২০১৯)
- ক্যাথলিন কেনেডি (২০২০)
|
---|