৮। রাহু - ভোগ, কপটাচার, বিভ্রান্তি, অতৃপ্তি, আকাশ পথ, বিদেশ যাত্রা, উচ্চস্থান, শ্বাসপ্রশ্বাস, অপবাদ, তমোগুণ, যথেচ্ছাচার, সর্প, ইন্দ্রজাল, অনির্ণিত রোগ ইত্যাদি। অপর নাম - তম, অহি, অসুর, ভুজঙ্গ প্রভৃতি।
৯। কেতু - গোপনিয়তা, ব্রণ, আচম্বিতে ঘটা ঘটনা, আঘাত, ক্ষত, মোক্ষ, কৈবল্য ইত্যাদি। অপর নাম - শিখী, ধবজ, রাহুপুচ্ছ, ধুমবর্ণ প্রভৃতি।
জ্যোতিষশাস্ত্রে একটা খুব প্রচলিত কথা আছে। ‘শনিবত্ রাহু’ ও ‘কুজবৎ কেতু’। রাহু ও কেতু অনেক বিষয়েই যথাক্রমে শনি ও মঙ্গলের মত বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে ও তদনুরূপ ফল প্রদান করে।
সূর্য
সূর্য (সংস্কৃত: सूर्य, "সর্বোচ্চ আলোক"[২]) নবগ্রহের মধ্যে প্রধান। তিনি ঋষি কশ্যপের পুত্র ৷ তার কেশ এবং বাহু স্বর্ণের ৷ তার রথ সাতটি ঘোড়া দ্বারা চালিত হয়। তার রথের সারথি হলো অরুণদেব। তার সম্মানার্থে সপ্তাহের একটি দিন হল রবিবার ৷ তার স্ত্রীর নাম সংঙ্গা ও ছায়া। তার অস্ত্র ভগবান বিষ্ণুর অস্ত্রের মতোই।যথাঃ শঙ্খ,চক্র,গদা ও পদ্ম।
তার কয়েকটি নাম হলোঃ সূর্য নারায়ণ,আদিত্য,রবি ইত্যাদি।
এনার সন্তানরা হলেনঃ— কর্ণ,যম,যমুনা,শনি,ভদ্রা,তপতী,অশ্বিনী-কুমারদ্বয় প্রমুখ।
চন্দ্র
চন্দ্র একজন দেবতা ৷ তিনি সুদর্শন, সুপুরূষ, দ্বি-বাহুযুক্ত ও তার এক হাতে অস্ত্র ও অন্য হাতে পদ্ম ৷ তিনি তার সাতটি হরিণের শ্বেত রথে চড়ে রাত্রে আকাশে উদিত হন ৷ [৩] তার সম্মানার্থে সপ্তাহের একটি দিন হল সোমবার ৷ তার গায়ের রং শ্বেতবর্ণ। তিনি মহাদেবের জটায় অর্ধচন্দ্র রুপে বিরাজমান। তিনি প্রজাপতি দক্ষের ২৭টি কন্যার জামাতা।
মঙ্গল
"মঙ্গল" (সংস্কৃত: मंगल, কন্নড়: ಮಂಗಳ, তেলুগু : మంగళ, তামিল: செவ்வாய்) হলেন ভূমির পুত্র ৷ [৪] তিনি যুদ্ধের দেবতা এবং অবিবাহিত ৷ তাকে পৃথিবী/ভূমি দেবীর পুত্র বলা হয়। তার দেহে বিজয় এবং গর্বের চিহ্ন বর্তমান, তার চতুর্বাহু ৷ তার সম্মানার্থে সপ্তাহের একটি দিন হল মঙ্গলবার। তার গায়ের রং লাল। তার বাহন মেষ।
বুধ
বুধ (সংস্কৃত: बुध) হল একটি সংস্কৃত শব্দ যে শব্দের অর্থ হল গ্রহ। বুধগ্রহ.[১] বুধ, হলেন একজন পৌরাণিক চরিত্র,এছাড়াও তিনি একজন দেবতাও।[২] এছাড়াও তিনি আরও অনেক নামে পরিচিত যেমন সৌম্য (সংস্কৃত: सौम्य, অর্থ: চন্দ্রের পুত্র), রোহিনেয়(রোহিণীর পুত্র) এবং Tunga।[২] তার নামানুসারে সপ্তাহের একটি দিনের নাম বুধবার।বুধ'কে ভারতীয় গ্রন্থে একজন দেবতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায়শই তাকে চন্দ্র এবং তারার(বৃহস্পতির পত্নী) পুত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এবং তিনি বিকল্পভাবে দেবী রোহিণী এবং চন্দ্রদেবের পুত্র হিসেবে বর্ণিত হন। তার চার হাত। তার পত্নী ইলা। শ্রীবুধের বাহন সিংহ।
বৃহস্পতি/দেবগুরু
বৃহস্পতি (সংস্কৃত: बृहस्पति ): বৃহস্পতি দেবতাদের গুরু। তিনি অঙ্গীরা ঋষির পুত্র। তিনি মহাদেবের তপস্যা করেন। মহাদেব তার তপস্যায় তুষ্ট হয়ে তাকে দেবতাদের গুরু বা আচার্য পদে নিযুক্ত করেন। বৃহস্পতি চার হাত বিশিষ্ট। তার হাতে থাকত দন্ড, পদ্ম ও জপমালা। তিনি হলুদ বর্ণের বস্ত্র পরিধান করেন। তার বাহন হস্তি। তার পত্নী তারা দেবী।
তার সম্মানার্থে সপ্তাহের একটি দিন হল বৃহস্পতিবার।
শনি
শনি (সংস্কৃত: शनि, কন্নড়: ಶನಿ , তামিল: சனி, Caṉi, তেলুগু: శని) নবগ্রহের একটি অন্যতম গ্রহ, শনি গ্রহকেগ্রহরাজ-ওমহাগ্রহ বলা হয়ে থাকে। শনিদেব হিন্দুধর্ম মতে একজন দেবতা। জ্যোতিষীদের মতে শনির কুদৃষ্টি অশুভ ফল নিয়ে আসে। তিনি খারাপের জন্য খারাপ ও ভালোর জন্য ভালো ফল বয়ে আনেন। সৌরজগতের শনি গ্রহ ও সপ্তাহের শনিবার দিনটি শনিদেবের নামে নামকরণ করা হয়। শনিদেব কে শনিশ্চর বা শনৈশ্চর নামেও ডাকা হয়। তার পত্নী ধামিনী। তার সন্তান মান্দী ও কূলিগ্না। তিনি সূর্যদেব ও ছায়ার পুত্র। তার চার হাত। তার হাতে ধনুক,বাণ,ত্রিশুল ও গদা থাকে। তার গায়ের রং কালো। তিনি ধীর গতির তাই তিনি আস্তে চলেন। তার বাহন কাক বা শকুন।
শুক্র/দৈত্যগুরু
শুক্র (সংস্কৃত: शुक्र) যে শব্দের অর্থ "নির্মল, স্বচ্ছ, উজ্জ্বল, একজন প্রাচীন ঋষি ও দেবতা যিনি বৈদিক পুরাণ অনুসারে অসুর ও দৈত্যদের গুরু। তার সম্মানার্থে সপ্তাহের একটি দিন হল শুক্রবার। তিনি মহাদেবের তপস্যা করে মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যা প্রাপ্ত হন। এঁর বাহন হল সাদা ঘোড়া।
রাহু
রাহু(), হিন্দু জ্যোতিষ অনুসারে,স্বরভানু নামে এক অসুরের কর্তিত মুন্ড, যে গ্রহণের সময় সূর্য বা চন্দ্রকে গ্রাস করে। জ্যোতিষশাস্ত্রে, একে নবগ্রহের মধ্যে একটি স্থান দেওয়া হয়েছে। দিবাভাগে রাহুকাল নামক মুহূর্তকে (২৪ মিনিট) অশুভ বলে গণ্য করা হয়।[৫] এর আবাস পাতাললোকে। এর বাহন নীল বা কালো ঘোড়া। স্বরভানুর মুন্ডকে রাহু ও দেহকে কেতু নাম দেওয়া হয়েছে। ব্রহ্মাদেব রাহু ও কেতুকে গ্রহের স্থান দিয়েছে।
কেতু
কেতু(),
পুরাণ অনুসারে, ইহা স্বরভানু নামক এক অসুরের মস্তকহীন দেহ যা সমুদ্র মন্থনের সময় ভগবান বিষ্ণু আপন সুদর্শন চক্রের মাধ্যমে এর মুন্ড ছিন্ন করে দেন। বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্রে, একে নবগ্রহের মধ্যে একটি স্থান দেওয়া হয়েছে। [৬] কেতুর আবাস অসুরলোকে। কেতুর বাহন চিল।
↑Gopal, Madan (১৯৯০)। K.S. Gautam, সম্পাদক। India through the ages। Publication Division, Ministry of Information and Broadcasting, Government of India। পৃষ্ঠা 75।
↑Gopal, Madan (১৯৯০)। K.S. Gautam, সম্পাদক। India through the ages। Publication Division, Ministry of Information and Broadcasting, Government of India। পৃষ্ঠা 77।