থাইল্যান্ডের পতাকায় পাচটি অনুভূমিক সমান্তরাল ডোরা রয়েছে। উপর থেকে এদের রঙ যথাক্রমে লাল, সাদা, নীল সাদা এবং লাল। মাঝের নীল রঙের ডোরার ক্ষেত্রফল অপর চারটি ডোরার দ্বিগুন। লাল-সাদা-নীল রঙ তিনটি যথাক্রমে জাতি-ধর্ম-রাজার প্রতীকস্বরূপ, যা থাইল্যান্ডের অনানুষ্ঠানিক মূলনীতি হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। ১৯১৭ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর এই পতাকা জাতীয় পতাকা হিসাবে গ্রহণ করা হয়। থাই ভাষায় পতাকাটির নাম ธงไตรรงค์ (থং ত্রেইরং), যার অর্থ ত্রিরঙা পতাকা।
রাজা নারাইয়ের (১৬৫৬-১৬৮৮) অধীনে সম্ভবত প্রথম সিয়ামের (থাইল্যান্ড) জন্য প্রথম পতাকা উত্তোলন করা হয় যার রঙ ছিল লাল। পরবর্তীকালে নৌ-পতাকা (Naval Flag) হিসাবে ব্যবহারের সময় লাল জমিনের উপর সাদা চক্র (বৌদ্ধের চাকা), চক্রের মাঝে সাদা হাতি অথবা সাদা গোলাকৃতি পটভূমির মাঝে সূর্য প্রভৃতি নকশা ব্যবহার করা হয়।
১৮৫৫ সালে রাজা মংকুট (চতুর্থ রামা), মসৃন রঙের পতাকা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক নয় বলে পতাকার মাঝে সাদা হাতি (রাজকীয় প্রতীক) অঙ্কিত পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন করেন।
১৯১৬ সালে পতাকার জন্য বর্তমান নকশা গৃহীত হয়, তবে মাঝের ডোরার রঙ ছিল বহিঃস্থ রঙের মতো লাল। কথিত আছে একদিন বন্যার সময় রাজা ভাজিরাবুধ (ষষ্ঠ রামা) পতাকা উলটোভাবে উড়তে দেখে একে রোধ করার জন্য একই ধরনের আর একটি নতুন পতাকা নির্বাচন করেন। ১৯১৭ সালে পতাকার মাঝের রঙ নীল রঙে পরিবর্তন করা হয়। কারও মতে রাজা ভাজিরাবুধের জন্মদিন শুক্রবারের রঙ হিসাবে এই পরিবর্তন হয়েছিল। অন্যমতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধেমিত্রবাহিনীর সাথে সংহতি প্রকাশের জন্য নীল রঙ নির্বাচন করা হয়েছিল। উল্লেখ্য মিত্রবাহিনীর পতাকায় ছিল নীল-লাল-সাদা রঙের সমন্বয়।
মজার ব্যাপার হচ্ছে কোস্টা রিকার পতাকায় বিপরীত অবস্থানে একই ধরনের নীল ও লাল রঙের সমাবেশ। তাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি নিরসনকল্পে কোস্টা রিকা তাঁদের পতাকায় কোট অব আর্মস (Coat of Arms) বা রাষ্ট্রীয় প্রতীক ব্যবহার করে থাকে।