জৈন মন্দিরগুলি বিভিন্ন প্রকার স্থাপত্যশৈলী অনুসারে নির্মিত হয়ে থাকে।[৪] উত্তর ভারতের জৈন মন্দিরগুলি দক্ষিণ ভারতের জৈন মন্দিরগুলির সম্পূর্ণ বিপরীত শৈলীতে নির্মিত। অন্যদিকে পশ্চিম ভারতের জৈন মন্দিরগুলিও অনেকটা পৃথক শৈলীতে নির্মিত। জৈন মন্দির দুই ধরনের হয়:
সকল শিখর-বন্দি মন্দিরে বহু-সংখ্যক শ্বেতপাথরের স্তম্ভ থাকে। এই স্তম্ভগুলির গায়ে উপদেবতাদের ছবি বিভিন্ন ভঙ্গিমায় সুন্দরভাবে খোদাই করা থাকে। প্রত্যেক দেরাসরে একজন প্রধান দেবতা থাকেন। তাঁকে বলা হয় ‘মূলনায়ক’।[৫] জৈন মন্দিরের প্রধান অংশটিকে বলা হয় ‘গম্ভরা’ (গর্ভগৃহ)। এখানেই মূলনায়কের প্রস্তরখোদিত মূর্তিটি রাখা থাকে। কাউকেই অস্নাত অবস্থায় এবং পূজার উপযোগী পোশাক ছাড়া গম্ভরায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। মন্দিরগুলির সামনে মানস্তম্ভ (সম্মানের স্তম্ভ) নামে এক ধরনের স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। শতবর্ষপ্রাচীন জৈন মন্দিরকে বলা হয় তীর্থ।
মন্দির-দর্শন বিধি
জৈন মন্দির দর্শন করতে গেলে কয়েকটি নিয়ম পালন করতে হয়:[৬]
মন্দিরের প্রবেশের আগে স্নান করে পরিষ্কার ধৌত বস্ত্র অথবা পূজার উপযোগী বিশেষ বস্ত্র পরিধান করতে হয় – এই ধরনের বস্ত্র পরিধানের আগে কিছু খাওয়া চলে না বা শৌচালয়ে যাওয়া চলে না। তবে জল পান করা যায়।
জুতো ও মোজা পরে মন্দিরে প্রবেশ করা যায় না। কোমরবন্ধ, টাকাপয়সার ব্যাগ প্রভৃতি চর্মজাত দ্রব্য নিয়ে মন্দির চত্বরের মধ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
কোনও খাদ্যদ্রব্য (খাবার, গাম, মিন্ট ইত্যাদি) চিবানো চলে না এবং কোনও খাদ্যদ্রব্য মুখে রাখতেও দেওয়া হয় না। জল পান করাও নিষিদ্ধ।
মন্দিরের মধ্যে যথাসম্ভব নীরবতা পালন করতে হয়।
মন্দিরের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। এগুলি বন্ধ রাখতে হয়।
মন্দিরে পূজা ও বিগ্রহ স্পর্শ করার ক্ষেত্রে প্রথাগত নিয়ম অনুসৃত হয়ে থাকে। এগুলি অঞ্চল বা সম্প্রদায় ভেদে পরিবর্তন সাপেক্ষ।