গুলাম আহমেদ (উর্দু: غلام احمد, উচ্চারণⓘ; জন্ম: ৪ জুলাই, ১৯২২ - মৃত্যু: ২৮ অক্টোবর, ১৯৯৮) ব্রিটিশ ভারতের হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে অফ স্পিন বোলিং করতেন। এছাড়াও, টেস্ট ক্রিকেটে ভারত দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর অনেকগুলো বছর বিসিসিআইয়ে সচিবের দায়িত্ব পালন করেন ও ৫ বছরের জন্য পাকিস্তানে বসবাস করেন।[১]
ঘরোয়া ক্রিকেট
১৯৩৯-৪০ থেকে ১৯৫৮-৫৯ মৌসুম পর্যন্ত হায়দ্রাবাদের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতেমাদ্রাজের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সেরা বোলিং করেন। উভয় ইনিংসে যথাক্রমে ৫/২৮ ও ৯/৫৩ পান। ১৯৫০-৫১ মৌসুমে হোলকার হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ৭৫৭ রান করলেও তার বোলিং ছিল ৯২.৩-২১-২৪৫-৪।
খেলোয়াড়ী জীবন
১৯৪৮-৪৯ থেকে ১৯৫৮-৫৯ মৌসুম পর্যন্ত সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ভারতের পক্ষে ২২ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে কলকাতায় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে মন্টু ব্যানার্জী’র সাথে একযোগে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।
১৯৫২ সালে ইংল্যান্ড ও ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে পাকিস্তান সফরে যান। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক টেস্টে দলের নেতৃত্বে ছিলেন। ঐ টেস্টটি ড্রয়ে পরিণত হয়। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। উভয় টেস্টেই তার দল পরাজিত হয়।
১৯৫২ সালে ইংল্যান্ড সফরে দলের শীর্ষ বোলার ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলোয় ২১.৯২ গড়ে ৮০ উইকেট এবং চার টেস্টে ২৪.৭৩ গড়ে ১৫ উইকেট পান। এ প্রসঙ্গে উইজডেন মন্তব্য করে যে, ‘বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকা স্বত্ত্বেও অন্যদিকে তাঁর দারুণ ব্যর্থতা ছিল।’[২] প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬৩ ওভার বোলিং করে ৫/১০০ পান। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ৮/৮৪ ও ৫/৬৬ পেয়েছিলেন।
১৯৫২-৫৩ মৌসুমে পাকিস্তানের বিপক্ষে উদ্বোধনী টেস্টে তিনি পাঁচ উইকেট পান। এছাড়াও, ১১ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ তোলেন। তন্মধ্যে, দশম উইকেটে হিমু অধিকারী’র সাথে জুটি গড়ে ১০৯ রান তোলেন।[৩] ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে কলকাতায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে ৭/৪৯ ও ৩/৮১ পান যা ইনিংসে তার সেরা বোলিং ও খেলায় সেরা বোলিং পরিসংখ্যান।[৪]
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে ভারত দলের ম্যানেজার ছিলেন তিনি।[৫]
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক আসিফ ইকবাল তার ভাতিজা এবং ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা সম্পর্কে তার আত্মীয়।[৬] ২৮ অক্টোবর, ১৯৯৮ তারিখে অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদে ৭৬ বছর বয়সে গুলাম আহমেদের দেহাবসান ঘটে।