Share to: share facebook share twitter share wa share telegram print page

কামার

কামার একটি প্রাচীন পেশা যার কাজ লোহার জিনিসপত্র তৈরি করা। পেশাগতভাবে গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার্য লৌহজাত সামগ্রী তৈরি করেন। অতি প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দু সমাজের শূদ্র সস্প্রদায় গ্রামাঞ্চলে কামার পেশায় জড়িত। আগেকার দিনে অধিকাংশ ঘরবাড়ি এবং কৃষি-যন্ত্রপাতি কামারদের দ্বারা তৈরি হতো। তাদের প্রস্ত্ততকৃত গৃহ এবং কৃষি সামগ্রীর  মধ্যে দা, কোদাল, কুড়াল, শাবল, বটি, পেরেক, ছুরি, লাঙলের ফলা, কাস্তে, নিড়ানি, বেদে কাটি, খুন্তি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।


পেশাগতভাবে গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার্য লৌহজাত সামগ্রী তৈরি করেন। অতি প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দু সমাজের শূদ্র সস্প্রদায় গ্রামাঞ্চলে কামার পেশায় জড়িত।

কামার
প্রাচীন কামারশালার ছবি - একজন কামার হাতুড়ি পেটাচ্ছে, আরেকজন হাপর চালাচ্ছে
পেশা
পেশার ধরন
পেশা
প্রায়োগিক ক্ষেত্র
কারবার
বিবরণ
যোগ্যতাশারীরিক শক্তি, ধারণা
কর্মক্ষেত্র
শিল্পী, কারিগর
সম্পর্কিত পেশা
যুদ্ধাশ্বপাল

গ্রামের নির্দিষ্ট পাড়ায় ছিল কামার পাড়া। লোহার কারিগরদের লোহা দিয়ে নানা দ্রব্যসামগ্রী বানানো, লোহা পেটানোর কর্কশ শব্দ, পোড়া গন্ধ, পোড়া লোহা থেকে বিচ্ছুরিত আগুনের স্ফুলিঙ্গই কামার পাড়ার সাধারণ দৃশ্যচ্ছবি। এখন শুধু গ্রামেই নয় শহরেও ছড়িয়ে পড়েছেন তারা।

নিজ কামারশালায় একজন কামার, ঢাকা, ২০০৯৤
বাংলাদেশের একটি কামারশালায় হাপর


দূর অতীতে কৃষিকাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গভূমিতে কামার পেশার উৎপত্তি ঘটে। হিন্দু সমাজের শূদ্র সস্প্রদায়ের মধ্যে লোহার কারিগর তথা কর্মকার শ্রেণির আবির্ভাব ঘটে। প্রচলিত লোককাহিনী মতে কোনো এক শূদ্র মহিলার সঙ্গে দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার প্রণয় থেকে কর্মকার বা কামারের জন্ম হয়। কামারদের চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা বসুন্দরী, রানা, গঙ্গালিরি এবং বাহাল অথবা খোটা। এরা একই শ্রেণিভুক্ত না হলে বৈবাহিক সস্পর্ক স্থাপন করে না। এইচ.এইচ রিসলে-র মতে, পূর্ববাংলায় কামারদের তিনটি সামাজিক শ্রেণি হচ্ছে বুষ্ণপতি, ঢাকাই এবং পশ্চিমা। বুষ্ণপতিরা আবার তিন ভাগে বিভক্ত, যথা নালদিপতি, চৌদ্দসমাজ ও পঞ্চসমাজ। এদের নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক বৈবাহিক সস্পর্ক স্থাপনে কোনো বাধা নেই। বাংলাদেশের অধিকাংশ কামারই বৈষ্ণব কিন্তু অল্পসংখ্যক কামার শাক্ত ধর্মাম্বলম্বী। তাদের প্রিয় দেবতা বিশ্বকর্মা, যাকে ভাদ্র মাসের শেষদিনে  মিষ্টান্ন, চিড়া, গুড়, ফুলফল, চন্দনের রস বা বাটা, গঙ্গাজল, কাপড় ও রৌপ্যালঙ্কার দিয়ে পূজা-অর্চনা করা হয়। একই সময় কামারদের ব্যবহূত যন্ত্রপাতিসমূহকেও উপাসনা করা হয়। মহিলারা অনন্তা, সাবিত্রী, ষষ্ঠী, পঞ্চমী ইত্যাদি ব্রত পালন ও নিস্তারিণী এবং মঙ্গলচন্ডীর কাহিনী পরিবেশন করে। মহিলা ও শিশুরা মিষ্টান্ন, দুধ, ফলমূল ইত্যাদি দিয়ে পূজা-অর্চনা করে। গোঁড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শূদ্র সস্প্রদায়ের কামাররা অপেক্ষাকৃত ভাল অবস্থায় রয়েছে। সমাজে তারা অস্পৃশ্য নয়। গ্রামাঞ্চলে তারা তাদের কার্যক্রম, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য নিয়ে পৃথকভাবে বসবাস করছে। তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী নিয়ে গ্রামের মেলায় অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে এ পেশায় অনেক মুসলমানকেও দেখা যায়। অনেক কামার তাদের পছন্দ অনুযায়ী গ্রাম এবং শহর উভয় অঞ্চলে অন্যান্য পেশাও গ্রহণ করে থাকে।

তথ্যসূত্র

কামার-বাংলাপিডিয়া https://bn.banglapedia.org/index.php/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0

Prefix: a b c d e f g h i j k l m n o p q r s t u v w x y z 0 1 2 3 4 5 6 7 8 9

Portal di Ensiklopedia Dunia

Kembali kehalaman sebelumnya