কাগোশিমার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জোমোন যুগের বসতির চিহ্ন উদ্ধার করা হয়েছে। ১৯৯৭ খ্রিঃ উয়েনোহারা অঞ্চলে একটি ৯,৫০০ বছরের পুরোনো বসবাসের চিহ্নযুক্ত গুহা পাওয়া গিয়েছিল।
ঐতিহাসিকভাবে কাগোশিমা অঞ্চলটি অষ্টম শতাব্দী থেকে ওওসুমি ও সাৎসুমা প্রদেশ এবং রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জের উত্তরাংশে বিভক্ত ছিল।[৩]
কিউশু দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থানের ফলে নিকটবর্তী বিভিন্ন দেশের সঙ্গে জাপানের বাণিজ্য চালাতে কাগোশিমা অঞ্চল বরাবর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। ১৫৪৩ খ্রিঃ চীনা জাহাজে প্রত্যাবর্তনরত পথ হারানো পোর্তুগীজ নাবিকরা কাগোশিমায় প্রথম আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসে। জেসুইট পাদ্রী সন্ত ফ্রান্সিস জেভিয়ার কাগোশিমা তথা জাপানে প্রথম খ্রিষ্টধর্ম প্রচার করেন।
মেইজি পুনর্গঠনের সময় এখানকার বিশিষ্ট ব্যক্তি সাইগো তাকামোরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জাপানের বিংশ শতাব্দীর যুদ্ধসমূহে এই অঞ্চলটি গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি ছিল।[৪]
ভূগোল
কাগোশিমা প্রশাসনিক অঞ্চল কিউশু দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। ওওসুমি উপদ্বীপ ও সাৎসুমা উপদ্বীপ এর দুটি প্রধান ভূভাগ। এর পশ্চিমে পূর্ব চীন সাগর, দক্ষিণে ওকিনাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চল, পূর্বে মিয়াযাকি ও উত্তরে কুমামোতো প্রশাসনিক অঞ্চল অবস্থান করছে। ২৮ টি দ্বীপ সমেত এর অতি ভগ্ন উপকূলভাগের মোট দৈর্ঘ্য ২,৬৩২ কিমি। সাৎসুমা ও ওওসুমি উপদ্বীপের মাঝে রয়েছে কাগোশিমা উপসাগর।
সমগ্র প্রশাসনিক অঞ্চলটিতে অনেকগুলি সক্রিয় ও সুপ্ত আগ্নেয়গিরি আছে। এদের মধ্যে মুখ্য হল সাকুরাজিমা, যা কাগোশিমা নগরের দক্ষিণে কাগোশিমা উপসাগরের মাঝখানে দণ্ডায়মান। প্রায় দৈনিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিস্ফোরণ ও একটি নিরবচ্ছিন্ন ধোঁয়ার রেখা এর জ্বালামুখ থেকে নিঃসৃত হয়। ১৯১৪ খ্রিঃ এই পর্বত শেষ বারের মত বড় মাপের অগ্ন্যুৎপাত ঘটিয়েছিল। এই অগ্ন্যুৎপাতের ফলে নিঃসৃত লাভা জমাট বেঁধেই আজ এটি কাগোশিমার মূল ভূখণ্ডের সাথে জুড়ে গেছে।
প্রশাসনিক অঞ্চলটির দক্ষিণ-পশ্চিমে ইবুসুকি নামে একটি আগ্নেয় গহ্বরজাত হ্রদ আছে। এটি এক বিরল প্রজাতির দৈত্যাকার ঈল মাছের বাসস্থান।
২০০৮ এর ৩১শে মার্চের হিসেব অনুযায়ী কাগোশিমা প্রশাসনিক অঞ্চলের মোট ভূমির ৯ শতাংশ সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এর মধ্যে আছে কিরিশিমা-য়াকু ও উন্যেন-আমাকুসা জাতীয় উদ্যান; আমামি গুন্তোও ও নিচিনান কাইগান উপ-জাতীয় উদ্যান এবং নয়টি প্রশাসনিক আঞ্চলিক উদ্যান।[৫]
অর্থনীতি
কাগোশিমা ঐতিহাসিকভাবে কৃষিনির্ভর হলেও বর্তমানে কাগোশিমা নগর সন্নিহিত অঞ্চলে শিল্পের ব্যাপক বিকাশ হয়েছে। পূর্বতন ওওসুমি প্রদেশের অংশটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত ও এখানে জনসংখ্যা হ্রাসমান। প্রশাসনিক অঞ্চলটির কৃষিজ পণ্যের মধ্যে আছে সবুজ চা, মিষ্টি আলু, মুলো, পোঙ্গী চাল ও উনাগি ঈল মাছ। অন্যদিকে জাপান মহাকাশ গবেষণা সংস্থার অনেকগুলি গবেষণাগার ও উৎক্ষেপণ কেন্দ্রও এখানে অবস্থিত। এগুলির মধ্যে তানেগাশিমার উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ও উচিনোউরা মহাকাশ কেন্দ্রটি মুখ্য।[৬]