এলকুমেদো টনিটো উইলেট, এমবিই (ইংরেজি: Elquemedo Willett; জন্ম: ১ মে, ১৯৫৩) নেভিসের চার্লসটাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭০-এর দশকের শুরুরদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে লিওয়ার্ড আইল্যান্ডস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন তিনি। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন এলকুমেদো উইলেট।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
১৯৭০-৭১ মৌসুম থেকে ১৯৮৮-৮৯ মৌসুম পর্যন্ত এলকুমেদো উইলেটের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। নেভিসীয় বংশোদ্ভূত স্লো বামহাতি স্পিনার এলকুমেদো উইলেট লিওয়ার্ড আইল্যান্ডসের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে খেলার গৌরব অর্জন করেন।
১৭ বছর বয়সে ১৯৭০-৭১ মৌসুমে লিওয়ার্ড আইল্যান্ডসের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে এলকুমেদো উইলেটের। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে সর্বশেষ খেলায় অংশ নেন তিনি। ১৯৭৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান একাদশের সদস্যরূপে গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে ৮/৭৩ ও ৩/৪৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। পরবর্তীকালে ৮/৭৩ বোলিং পরিসংখ্যানই তার খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন এলকুমেদো উইলেট। ৯ মার্চ, ১৯৭৩ তারিখে ব্রিজটাউনে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৭ ডিসেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে কলকাতায় স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
১৯৭২ সালে নিউজিল্যান্ড দল ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে পদার্পণ করে। তন্মধ্যে, এলকুমেদো উইলেটকে প্রতিপক্ষীয় দলের বিপক্ষে সেরা বামহাতি ফিঙ্গার স্পিনার হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়।[১] ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেককালীন তার বয়স ছিল ১৯ বছর। ঐ টেস্টে তিনি দুই উইকেট লাভ করেন। পরবর্তী দুই টেস্টে তিনি আরও পাঁচ উইকেট পান। তন্মধ্যে, পোর্ট অব স্পেন টেস্টে ব্যক্তিগত সেরা ৩/৩৩ লাভ করেন।
ফলশ্রুতিতে, ১৯৭৩ সালে ইংল্যান্ড গমনার্থে তাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঐ সফরে ৩০ উইকেট পেলেও তাকে টেস্ট খেলার সুযোগ দেয়া হয়নি। এরপর, ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে ভারত ও পাকিস্তান গমন করেন। উভয় দলের বিপক্ষে একটি করে টেস্ট খেলে দুই উইকেট লাভ করেন। ঐ সময়ে দল নির্বাচনে ধারাবাহিকতা না থাকায় তাকে আর খেলার সুযোগ দেয়া হয়নি। এছাড়াও, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণের উত্থানে তাকে পর্দার অন্তরালে চলে যেতে হয়েছিল।
অবসর
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও আরও চৌদ্দ মৌসুম খেলা চালিয়ে যান। মাঠে তিনি খুব কমই প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। তবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তার অন্তর্ভুক্তিতে ক্যারিবীয় ক্ষুদ্র দ্বীপগুলো বিরাট প্রভাব ফেলে।
জুলাই, ২০১০ সালে গ্রোভ পার্কের নেভিসের প্রধান ক্রীড়া মাঠের নাম পরিবর্তন করে তার সম্মানার্থে এলকুমেদো উইলেট পার্ক রাখা হয়। নাম পরিবর্তনের বিষয়টি ঐ দ্বীপের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। দ্বীপের বেশ কয়েকজন প্রশাসকসহ নেভিসের প্রধানমন্ত্রী যোসেফ প্যারি ঐ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।[২]
এলকুমেদো’র ভ্রাতৃষ্পুত্র স্টুয়ার্ট উইলিয়ামস ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছেন। তার পুত্রদ্বয় টোনিটো উইলেট ও আকিতো উইলেট প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করছে।
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ