আরামবাগ মহকুমা হল ভারতেরপশ্চিমবঙ্গরাজ্যেরহুগলি জেলার একটি প্রশাসনিক মহকুমা। এটি একটি গ্রামপ্রধান এলাকা। মহকুমার অন্তর্গত সকল সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকেরই একশো শতাংশ অধিবাসী গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। আরামবাগ পুরসভা সমগ্র মহকুমার একমাত্র শহরাঞ্চল। মহকুমার একটি বড়ো অংশ পলিমাটি সমৃদ্ধ দ্বারকেশ্বর-দামোদর আন্তঃ-নদী সমভূমিতে অবস্থিত। মহকুমার পশ্চিম প্রান্তের একটি ছোটো অংশই শুধু উচ্চভূমি অঞ্চলের অন্তর্গত। সমগ্র মহকুমাটিই গাঙ্গেয় বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত।[১][২]
ইতিহাস
১৭৯৫ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রশাসনিক কাঠামোয় বর্ধমান জেলাকে বিভাজিত করে উক্ত জেলার দক্ষিণাংশ নিয়ে হুগলি জেলা গঠিত হয়।[৩] ১৮৭৯ সালের আগে এই জেলা দু’টি মহকুমায় বিভক্ত ছিল: সদর ও শ্রীরামপুর মহকুমা। ১৮৭৯ সালে জাহানাবাদ নামে একটি পৃথক মহকুমা গঠিত হয়। কিন্তু গয়া জেলায় (অধুনা বিহার রাজ্যে অবস্থিত; কিন্তু তৎকালে বাংলা প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ছিল) একটি জাহানাবাদ থাকার দরুন ১৯০০ সালে জাহানাবাদ মহকুমার নাম পরিবর্তন করে আরামবাগ মহকুমা রাখা হয়।[৪] এর আগেই ১৮৮৬ সালে আরামবাগ পুরসভা গঠিত হয়।[৫] কথাসাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অতীতে এই মহকুমার মহকুমা-শাসক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন।[৬] এখানকার গড় মান্দারনে অবস্থিত একটি দুর্গের প্রেক্ষাপটে তিনি তাঁর দুর্গেশনন্দিনী উপন্যাসটি রচনা করেছিলেন। বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৬৫ সালে।[৭]
ভূগোল
কারিগরি সমস্যার কারণে গ্রাফ এই মূহুর্তে অস্থায়ীভাবে অনুপলব্ধ রয়েছে।
হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমার শহর ও অন্যান্য স্থান পু: পুরসভা, গ্রা: গ্রাম, ঐ: ঐতিহাসিক স্থান / তীর্থক্ষেত্র ছোটো মানচিত্রে স্থানসংকুলান হেতু বৃহত্তর মানচিত্রে অবস্থানের সামান্য হেরফের হওয়া সম্ভব
আরামবাগ মহকুমাটি দু’টি ভূপ্রাকৃতিক বিভাগে বিভক্ত। দ্বারকেশ্বর নদ এই দুই অংশের মধ্যে বিভাজন রেখাটি সৃষ্টি করেছে। এই নদের পশ্চিম দিকের অংশটি পাথুরে উচ্চভূমি, যা পার্শ্ববর্তী বাঁকুড়া জেলার ভূখণ্ডের সম্প্রসারিত অংশ। পূর্ব দিকের অংশটি পলিসমৃদ্ধ সমভূমি এলাকা। রেলপথ, সড়কপথ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগগুলি এই অঞ্চলের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছে।[৮] এই মহকুমাটি প্রধানত গ্রামীণ এলাকা নিয়েই গঠিত। মহকুমার মোট জনসংখ্যার ৯৪.৭৭ শতাংশই গ্রামের অধিবাসী, মাত্র ৫.২৩ শতাংশ মানুষ বাস করেন শহরাঞ্চলে।[৯]
আরামবাগ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকটি ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত। এগুলি হল: আরান্ডি ১, গৌরহাটি ২, মলয়পুর ১, সালেপুর ১, আরান্ডি ২, হরিণখোলা ১, মলয়পুর ২, সালেপুর ২, বাতানল, হরিণখোলা ২, মায়াপুর ১, তিরোল, গৌরহাটি ১, মাধবপুর ও মায়াপুর ২।
খানাকুল ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকটি ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত। এগুলি হল: আরুন্দা, খানাকুল ২, পোলে ২, ঠাকুরানিচক, বালিপুর, কিশোরপুর ১, রামমোহন ১, ঘোষপুর, কিশোরপুর ২, রামমোহন ২, খানাকুল ১, পোলে ১ ও তাঁতিশাল।
খানাকুল ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকটি ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত। এগুলি হল: চিংড়া, মাড়োখানা, পলাশপাই ১, রাজহাটি ২, ধান্যগোড়ি, নতিবপুর ১, পলাশপাই ২, সবলসিংহপুর, জগৎপুর, নতিবপুর ২ ও রাজহাটি ১।
গোঘাট ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকটি সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত। এগুলি হল: বালি-দেওয়ানগঞ্জ, গোঘাট, নাকুন্দা, সাওড়া, ভাদুর, কুমারসা ও রঘুবাটি।
গোঘাট ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকটি নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত। এগুলি হল: বদনগঞ্জ ফুলুই ১, হাজিপুর, মান্দারণ, বদনগঞ্জ ফুলুই ২, কামারপুকুর, পশ্চিমপাড়া, বেঙ্গাই, কুমারগঞ্জ ও শ্যামবাজার।
পুরশুড়া সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকটি আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত। এগুলি হল: ভাঙামোড়া, ডিহি বাদপুর, পুরশুড়া ১, শ্যামপুর, চিলাডাঙি, কেলেপাড়া, পুরশুড়া ২ ও শ্রীরামপুর।
অর্থনীতি
শিল্প
আরামবাগ হ্যাচারিজ লিমিটেড হল আরামবাগ-ভিত্তিক একটি পোলট্রি ও ডিম-সংক্রান্ত শিল্প। ১৯৭৩ সালে এটি নিগমায়িত হয়।[১৭]
কৃষি
পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলাটি কৃষিজ পণ্যে সমৃদ্ধ একটি জেলা। যদিও এই জেলার অর্থনীতির মূল ভিত্তিটি ক্রমশ কৃষিকার্যের থেকে সরে আসছে, তবু এখনও জেলার গ্রামাঞ্চলের মানুষ কৃষিকার্যের মাধ্যমেই জীবিকা নির্বাহ করেন। গ্রামীণ হুগলির প্রধান অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ কৃষিকাজকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। জেলার আয়ের এক-তৃতীয়াংশের উৎস হল কৃষি।[১৮] নিচে ২০১৩-১৪ সালের হিসেব অনুযায়ী আরামবাগ মহকুমা ও তার পরিপ্রেক্ষিতে হুগলি জেলার অন্যান্য মহকুমাগুলির কৃষি উৎপাদনের একটি চিত্র তুলে ধরা হল (প্রতিটি তথ্য টনে দেওয়া হয়েছে):[১৯]
খানাকুল ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের চক্রপুর গ্রামের ডাকাতকালীর থান আরামবাগ মহকুমার একটি উল্লেখযোগ্য ধর্মস্থান। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত এই অঞ্চলটি ছিল জঙ্গলাকীর্ণ এবং ঠ্যাঙাড়ে ডাকাত অধ্যুষিত। এই ডাকাতেরা দূরবর্তী গ্রামগুলিতে ডাকাতি করতে যেত। ডাকাতির ক্ষেত্রে নারীধর্ষণ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নির্যাতন ও অকারণ নরহত্যা না করার ব্যাপারে তারা অত্যন্ত সচেতন থাকত। বিশেষ করে কালীভক্ত এই ডাকাতদের মনে বদ্ধমূল ধারণা ছিল, নারী নির্যাতন করলে দেবী কুপিতা হন। এমনকি ডাকাতির সময় কামতাড়িত হয়ে কোনও ডাকাত নারীধর্ষণ করে ফেললে ডাকাত সর্দার তাকে মৃত্যুদণ্ড দান করত। চক্রপুরে এখন যেখানে ডাকাতকালীর থান অতীতে সেখানেই ডাকাতরা ঘটস্থাপন করে কালীপূজা করত। ডাকাতি-লব্ধ অর্থে তারা পূজার সামগ্রী ক্রয় করত এবং ডাকাতি-লব্ধ অর্থও দেবীর পায়ে সমর্পণ করত। শোনা যায়, এখনও এই পূজায় অন্তত এক টুকরো আদা চুরি করে এনে পূজায় দিতে হয়। চক্রপুরের ডাকাত ও তাদের পুরোহিতেরা ছিল ডোম-জাতীয়। এই ডোম-পুরোহিতেরা একটি পুকুরে অবগাহন করে ডানহাতে একটি বিরাট তামার বালা পরে ঘটস্থাপনা করে কালীপূজা করত। এই তামার বালাটিকে বলা হত "কালীর বালা"।[২৮]
বর্তমানে এই অঞ্চলে ডাকাতদলের অস্তিত্ব না থাকলেও ডাকাতকালীর থানটি স্বমহিমায় বিরাজমান। স্থানীয় মানুষেরা দেবী ডাকাতকালীকে অত্যন্ত জাগ্রত দেবী মনে করেন এবং মন্দির-সংলগ্ন দিঘির জলের অলৌকিকত্বের ধারণায় বিশ্বাস করেন। এখনকার কালীমন্দিরটি ইটের তৈরি ও টিনের চালবিশিষ্ট একটি কোঠাঘর। থানে দেবীর কোনও বিগ্রহ নেই। একটি পট আছে। প্রতি অমাবস্যায় সেই পটের সামনে ঘটস্থাপন করে পূজা হয়। কার্তিক মাসের অমাবস্যায় বিরাটাকার মৃন্ময়ী সিদ্ধেশ্বরী মূর্তি গড়ে আটদিন ধরে কালীপূজা হয় এবং পূজার শেষে বিগ্রহটি পার্শ্ববর্তী দিঘির জলে বিসর্জিত হয়। এই সময় চক্রপুরের ডাকাতকালীর থান ঘিরে একটি বড়ো মেলার আয়োজন করা হয় এবং এলাকায় প্রচুর জনসমাগম হয়। আগেকার রীতি অনুযায়ী এখনও ডোম-পুরোহিতেরাই “কালীর বালা” পরে এই কালীপূজা করেন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই “কালীর বালা” পরলে ও থান-সন্নিহিত দিঘির জলে স্নান করলে যে কোনও ধরনের পাগলামি সেরে যায়। আরেকটি প্রথা এই থানে আজও রয়ে গিয়েছে। পূজা শুরুর আগে ভক্তেরা পূজার নিয়ম মেনে ফলমূল বা অন্য কোনও একটি জিনিস ডাকাতি করে এনে সেটি পূজার্ঘ্য হিসেবে প্রদান করার পর পূজা শুরু হয়। তাঁরা বিশ্বাস করেন, এটা না করলে দেবী পূজা গ্রহণ করেন না। “কালীর বালা” ও স্থানীয় দিঘির স্থানমাহাত্ম্যের ধারণার ফলে কালীপূজার সময় এই মন্দিরে প্রচুর মানসিক রোগীর সমাগম হয় এবং শত শত মানতের পাঁঠা বলি দেওয়া হয়।[২৮]
পুরাকীর্তি
আরামবাগ থানা এলাকার পুরাকীর্তি
আরামবাগ শহরে একটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোনও পুরনো স্থাপত্যের নিদর্শন খুব একটা নেই। উক্ত মসজিদটি তিনটি গম্বুজ ও তিনটি কক্ষ বিশিষ্ট। মধ্যের কক্ষটিতে খিলাননির্মিত প্রবেশপথ এবং পাশ্ববর্তী দুই কক্ষের প্রবেশদ্বার ইটের জাফরি দ্বারা অবরুদ্ধ। প্রবেশপথের উপরে প্রতিষ্ঠালিপি থাকলেও অস্পষ্টতার জন্য তা পড়া যায় না।[২৯] এছাড়া বর্তমানে আরামবাগ পুরসভার অধীনস্থ পারুলে ১৮৫৯ সালে ডিহি বায়ড়ার রাজপরিবারের বংশধর রণজিৎ রায় একটি বিশালাক্ষী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে সাড়ে উনিশ ফুট, দক্ষিণমুখী ও তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ-বিশিষ্ট এই মন্দিরটির সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর দেবদেবী, পশুপাখি ও ফুলপাতার অলংকরণ লক্ষিত হয়। স্থানীয় অনুসারে, মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা রণজিৎ রায় ছিলেন দেবী বিশালাক্ষীর কৃপাধন্য। কথিত আছে, দেবী বিশালাক্ষী রণজিৎ রায়ের কাছে প্রতিশ্রুত হয়েছিলেন যে তিনি তাঁর কন্যা রূপে জন্মগ্রহণ করবেন; কিন্তু যদি কোনওদিন তাঁকে চলে যেতে বলা হয় তাহলে তিনি তৎক্ষণাৎ চলেও যাবেন। একদিন বারুণী উৎসব উপলক্ষ্যে কন্যারূপী দেবী রণজিৎ রায়ের কাছে স্নান করতে যাওয়ার অনুমতি চান। অন্যমনস্কভাবে রণজিৎ রায় সেই অনুমতি দিয়ে ফেললে দেবী সেই দিঘির জলেই চিরকালের মতো অন্তর্হিত হন। পারুলের দ্বিতীয় মন্দিরটি ১৭৬৮ সালে স্থানীয় চক্রবর্তী বংশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রঘুনন্দন মন্দির। দৈর্ঘ্যে ২৩ ফুট ও প্রস্থে ২১ ফুট এই মন্দিরটি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিকার কর্তৃক সুসংরক্ষিত। পূর্বমুখী ও তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ-বিশিষ্ট এই মন্দিরেরও সম্মুখভাগে মৃৎফলকে দেবদেবীর মূর্তি, রামায়ণের কাহিনি, রাজদরবারের চিত্র, পশুপাখি ও গাছপালার অলংকরণ দেখা যায়। পারুলের বিশালাক্ষী ও রঘুনন্দন উভয় মন্দিরই আটচালা মন্দির।[৩০] আরামবাগ সন্নিহিত বাসুদেবপুরে শিব ও রঘুনন্দনের দু’টি মন্দির এবং একটি পরিত্যক্ত মন্দির রয়েছে। শিবমন্দিরটি ১৭২৬ সালে ও রঘুনন্দন মন্দিরটি ১৭৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দু’টি মন্দিরই প্রথাগত আটচালা মন্দির এবং বেষ্টণীযুক্ত কৌণিক স্তম্ভ ও বক্র কার্নিসবিশিষ্ট। দুই মন্দিরেরই সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর নানা কারুকার্য দেখা যায়। পরিত্যক্ত মন্দিরটি পঞ্চরত্ন। এই মন্দিরের সম্মুখভাগেও মৃৎফলকের উপর অলংকরণ বিদ্যমান।[৩১]
আরামবাগ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মাধবপুর, গৌরহাটি ১, আরান্ডি ২, মায়াপুর, মাধবপুর, বাসুদেবপুর, বাতানল, সালেপুর ১ ও মলয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পুরনো মন্দির রয়েছে:
আরামবাগ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মাধবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত এলোমায় দু’টি প্রায়-ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির রয়েছে। দু’টি মন্দিরই প্রথাগত আটচালা, খিলানযুক্ত তিনটি প্রবেশপথ-বিশিষ্ট এবং মৃৎফলকের উপর অলংকরণযুক্ত। ১৭৩৩ সালে নির্মিত প্রথম মন্দিরটি বিশালাক্ষী মন্দির নামে পরিচিত। এটি প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় রায়বংশের সদস্যেরা। অপরপক্ষে ১৭৭৩ সালে নির্মিত দ্বিতীয় মন্দিরটি একটি বিষ্ণুমন্দির। উভয় মন্দিরই বর্তমানে পরিত্যক্ত।[৩২] মাধবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকারই কানপুর গ্রামে কণকেশ্বর শিবমন্দির একটি বিখ্যাত মন্দির। এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে আয়োজিত শিবের গাজন ও কালু রায়ের মেলা উপলক্ষ্যে প্রচুর জনসমাগম ঘটে। কণকেশ্বর শিবমন্দিরটি ঊনবিংশ শতাব্দীতে নির্মিত হলেও মন্দিরটির স্থাপত্যগত কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি একটি একরত্ন (একটি চূড়াবিশিষ্ট) মন্দির। চূড়াটি রেখশৈলীর এবং সেটির উপরিভাগ গম্বুজসদৃশ। গর্ভগৃহের চারিদিকে প্রশস্ত বারান্দা এবং বারান্দার চারিদিকে খিলানের সারি বর্তমান। বারান্দার ছাদও আটচালা বা চারচালা মন্দিরের ছাদের মতো কিছুটা অবতলিত ও বক্র কার্নিশযুক্ত।[৩৩] মাধবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হামিরবাটী গ্রামে ১৭০৪ সালে স্থানীয় রায় পরিবার প্রতিষ্ঠিত দামোদর মন্দিরটি উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি। প্রথাগত আটচালা, পূর্বমুখী, তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ বিশিষ্ট এই মন্দিরের সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর দেবদেবীর মূর্তি, রামায়ণের কাহিনি ও লতাপাতার অলংকরণ লক্ষিত হয়।[৩৪]
গৌরহাটি ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গৌরহাটি একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম। আরামবাগ শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রামে গঙ্গাধর শিব, রামগোপাল, দামোদর, ধর্ম, বিষ্ণু প্রমুখ দেবতার মন্দির ও একটি দোলমঞ্চ রয়েছে। স্থানীয় দালাল পরিবার গঙ্গাধর শিবমন্দির, বিষ্ণুমন্দির ও দোলমঞ্চটির প্রতিষ্ঠাতা। ১৭৫২ সালে নির্মিত ছোটো আটচালা গঙ্গাধর শিবমন্দিরটি পশ্চিমমুখী, একটিমাত্র দ্বারবিশিষ্ট এবং দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে নয় ফুট করে। পঞ্চরত্ন বিষ্ণুমন্দিরটি ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত। মৃৎফলকের উপর অলংকরণ বর্জিত এই মন্দির বর্তমানে ভগ্নদশাপ্রাপ্ত। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে প্রতিষ্ঠিত দোলমঞ্চটিও পঞ্চরত্ন। এটির শিখরগুলি খাঁজকাটা এবং মঞ্চগাত্রে মৃৎফলকের উপর কারুকার্য লক্ষিত হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগেই স্থানীয় মণ্ডল বংশ রামগোপাল মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটিও পঞ্চরত্ন মন্দির এবং সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর সামান্য অলংকরণ দেখা যায়। ১৮০৮ সালে স্থানীয় গুহ পরিবার পঞ্চরত্ন দামোদর মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে স্থানীয় দাসবংশ ধর্মমন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মন্দিরটি আটচালা। এই মন্দিরের সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর যে অলংকরণগুলি দেখা যায়, তা বর্তমানে বহুলাংশে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে।[৩৫]
আরান্ডি ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত খেদাইল গ্রামে ১৭৬৭ সালে স্থানীয় নন্দীবংশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দামোদর মন্দিরটি পুরাকীর্তির দিক থেকে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মন্দিরটি প্রথাগত আটচালা শৈলীর। মন্দিরটিতে তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ ও মন্দিরগাত্রে মৃৎফলকের উপর নানা অলংকরণ দেখা যায়। অলংকরণের বিষয়বস্তু কৃষ্ণ প্রভৃতি দেবতার কাহিনি, রামায়ণের কাহিনি, রাজদরবারের দৃশ্য, পশুপাখি, ফুলপাতা ইত্যাদি। মন্দিরটি পশ্চিমমুখী এবং দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৮ ফুট ও প্রস্থে ১৫ ফুটের সামান্য বেশি।[৩৬]
মায়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ডিহি বায়ড়া একটি ইতিহাসপ্রসিদ্ধ গ্রাম। এটি আরামবাগ শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানকার রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নরেন্দ্রনারায়ণ বুন্দেলখণ্ড থেকে এখানে এসেছিলেন। ডিহি বায়ড়ায় স্থানীয় পালবংশ ১৮৫৮ সালে স্বরূপনারায়ণ ধর্মঠাকুরের একটি ছোটো আটচালা মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৬ ফুট ও প্রস্থে সাড়ে চোদ্দো ফুটের এই মন্দিরটি পূর্বমুখী এবং তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশদ্বার-বিশিষ্ট। মন্দিরের সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি, রামায়ণের কাহিনি ও রাজদরবারের দৃশ্যাবলির অলংকরণ দেখা যায়।[৩৭] মায়াপুর পঞ্চায়েত এলাকার হাটবসন্তপুরে তিনটি মন্দির এখানকার উল্লেখযোগ্য স্থাপনা। মন্দির তিনটি হল জয়চণ্ডী মন্দির, একটি জোড়া শিবমন্দির ও একটি পৃথক শিবমন্দির। ১৭৩৪ সালে নির্মিত দক্ষিণ-পশ্চিমমুখী আটচালা জয়চণ্ডী মন্দিরটির সম্মুখভাগে মৃৎফলকে কৃষ্ণ প্রমুখ দেবতার মূর্তি, রামায়ণের কাহিনি, রাজদরবারের দৃশ্য ও লতাপাতার অলংকরণ উৎকীর্ণ। শিবমন্দিরগুলির সব ক’টিই স্থানীয় চীনা বংশ প্রতিষ্ঠিত। ১৭৯১ সালে নির্মিত পশ্চিমমুখী জোড়া শিবমন্দিরটির গায়ে মৃৎফলকের উপর সামান্য লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়। অপর শিবমন্দিরটি পঞ্চরত্ন ও দক্ষিণমুখী। এই মন্দিরের গায়েও মৃৎফলকের উপর অল্প কিছু দেবমূর্তি, পাখি ও লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়। দু’টি মন্দিরই বর্তমানে অবহেলিত ও জরাজীর্ণ। এছাড়া এই গ্রামে ১৮৮৭ সালে নন্দীবংশ প্রতিষ্ঠিত একটি দুর্গাদালানও রয়েছে। এটি দক্ষিণমুখী, সমতল ছাদবিশিষ্ট ও বহির্ভাগে অলংকরণ বর্জিত।[৩৮]
মাধবপুর পঞ্চায়েত এলাকার মাধবপুর গ্রামের জমিদার রায়বংশ পারুলের রণজিৎ রায়ের বংশধর বলে কথিত। ১৭৭৯ সালে এই পরিবার মাধবপুরে একটি রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরটি আটচালা, পূর্বমুখী এবং সম্মুখভাগে লতাপাতার অলংকার শোভিত।[৩৯]
বাতানল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অন্তর্গত ভালিয়া গ্রামে ১৭৭২ সালে স্থানীয় সরকার বংশ কর্তৃক রঘুনাথ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। এই আটচালা মন্দিরটি দক্ষিণমুখী, দৈর্ঘ্যে ২৪ ফুট ও প্রস্থে ২৩ ফুট এবং তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ-বিশিষ্ট। মন্দিরটির সম্মুখভাগে বৃক্ষসহ নানা দেবদেবীর মূর্তি, রাজদরবারের চিত্র এবং পশু ও ফুলপাতার অলংকরণ দেখা যায়।[৪০]
সালেপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সালেপুর গ্রামে ধর্মঠাকুরের দু’টি মন্দির রয়েছে। প্রাচীনতর মন্দিরটি ১৭৭৮ সালে ভুক্ত পরিবার কর্তৃক নির্মিত। পশ্চিমমুখী, সমতল ছাদবিশিষ্ট ও স্তম্ভযুক্ত এই মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ১৬ ফুট ও প্রস্থে ১৪ ফুট। মন্দিরগাত্রে মৃৎফলকের উপর রামায়ণের কাহিনি, কৃষ্ণ প্রমুখ দেবদেবীর মূর্তি, রাজসভার দৃশ্য ও লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়। দ্বিতীয় মন্দিরটি স্থানীয় পণ্ডিতবংশ কর্তৃক ঊনবিংশ শতাব্দীতে নির্মিত। প্রথাগত আটচালা এই মন্দিরটি দক্ষিণমুখী। এই মন্দিরের বহিঃগাত্রে অবশ্য মৃৎফলকের উপর কোনও অলংকরণ দেখা যায় না।[৪১] এই গ্রাম পঞ্চায়েতের রামনগর গ্রামটি আরামবাগ শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই গ্রামে লক্ষ্মীজনার্দনের একটি বিখ্যাত মন্দির রয়েছে। ১৭৪১ সালে স্থানীয় হালদার বংশ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথাগত আটচালা ও তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশদ্বার বিশিষ্ট এই মন্দিরটির সম্মুখভাগে মৃৎফলকে কৃষ্ণ প্রমুখ দেবতার মূর্তি, রামায়ণের কাহিনি, রাজদরবারের দৃশ্য ও লতাপাতার অলংকরণ উৎকীর্ণ রয়েছে।[৪২]
মলয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মলয়পুর গ্রামে ঊনবিংশ শতাব্দীতে নির্মিত একটি একদ্বার বিশিষ্ট ছোটো আটচালা মন্দির আছে। তবে প্রথাগত আটচালা মন্দিরের সঙ্গে এই মন্দিরটির কিছু পার্থক্য দেখা যায়। এখানে মন্দিরের উপর রথ বা রত্নমন্দির শৈলীর শিখর স্থাপিত হয়েছে।[৪৩]
আরামবাগ থানা এলাকার শ্রীরামপুর গ্রামে স্থানীয় ঘোষবংশ প্রতিষ্ঠিত বিষ্ণুমন্দিরটি একটি উল্লেখযোগ্য স্থাপনা। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে নির্মিত প্রথাগত আটিচালা শৈলীর এই মন্দিরটি দক্ষিণমুখী ও তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ বিশিষ্ট। মন্দিরের সম্মুখভাগে মৃৎফলকে কৃষ্ণ প্রমুখ দেবতার মূর্তি, রামায়ণের কাহিনি, রাজদরবারের দৃশ্য ও লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়।[৪৪]
গোঘাট থানা এলাকার পুরাকীর্তি
গোঘাট ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের বালি পঞ্চায়েত এলাকার উদয়রাজপুর গ্রামে বিষ্ণুপুরী শৈলীর একটি একরত্ন মন্দির রয়েছে। ১৭৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরটির অবতলিত ছাদের কেন্দ্রে গঠিত শিখরটি রেখ শৈলীর আড়াআড়ি খাঁজকাটা। মন্দিরটির দৈর্ঘ্য ১৭ ফুটের কিছু বেশি ও প্রস্থ সাড়ে ১৫ ফুট এবং বহির্ভাগ চুনবালি দিয়ে ঢাকা। এছাড়া এই গ্রামে দাঁ পরিবার প্রতিষ্ঠিত দামোদর মন্দিরটির গায়ে মৃৎফলকের উপর কারুকার্য দেখা যায়। সমতল ছাদবিশিষ্ট দালান শৈলীর এই মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ২০ ফুটের কিছু বেশি ও প্রস্থে ১৮ ফুটের কিছু বেশি।[৪৫] বালি পঞ্চায়েত এলাকারই কোলাগাছিয়া গ্রামে কয়েকটি পুরনো মন্দির রয়েছে। এগুলির মধ্যে রঘুনাথ মন্দিরটি সবচেয়ে পুরনো। স্থানীয় দাসবংশ কর্তৃক ১৭৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরটি একটি পঞ্চরত্ন মন্দির। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে নির্মিত ভুবনেশ্বর শিবমন্দিরটি আটচালা। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে স্থানীয় দালাল বংশ প্রতিষ্ঠিত নবরত্ন দামোদর মন্দিরটি বর্তমানে পরিত্যক্ত। ১৮১৯ সালে স্থানীয় দে বংশ একটি শ্রীধর মন্দির এবং ১৮৭৫ সালে স্থানীয় রাণা বংশ একটি রঘুনাথ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। দু’টি মন্দিরই আটচালা এবং উভয় মন্দিরেরই সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর দেবদেবীর মূর্তি ও লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়।[৪৬] রঘুবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রাচীন গ্রাম বাজুয়াতে ষোড়শ শতাব্দীতে একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। মজলিস খানওয়ার নির্মিত এই মসজিদটির গায়ে ও সামনের তোরণে দু’টি শিলালিপি উৎকীর্ণ হয়। তোরণটি ভেঙে পড়ার পর সেখানকার শিলালিপিটি কলকাতারভারতীয় সংগ্রহালয়ে স্থানান্তরিত করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। মসজিদগাত্রে উৎকীর্ণ শিলালিপি থেকে জানা যায়, এই মসজিদটি ৯৩৮ হিজরায় সৈয়দ আসরফ অল হুসেনের পৌত্র ও হুসেন শাহের পুত্র নুসরৎ শাহের আমলে নির্মিত। বর্তমানে মসজিদটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিকার কর্তৃক সংরক্ষিত।[৪৭] বালি-দেওয়ানগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকার মালঞ্চ গ্রামে স্থানীয় চক্রবর্তী পরিবার ১৭৩৭ সালে একটি আটচালা শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দিরের মৃৎফলকের উপর সামান্য কিছু লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়।[৪৮] বালি-দেওয়ানগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকারই লক্ষ্মীপুর গ্রামে দু’টি পরিত্যক্ত মন্দির রয়েছে। একটি মন্দির পঞ্চরত্ন ও অপরটি আটচালা। ১৮৪০ সালে নির্মিত পঞ্চরত্ন মন্দিরটি পূর্বমুখী। মন্দিরটির শিখরগুলি রেখ শৈলীর হলেও খাঁজকাটা নয়। বাঁকানো কার্নিস ও তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ বিশিষ্ট এই মন্দিরের গায়ে মৃৎফলকের উপর কৃষ্ণ প্রমুখ দেবতার মূর্তি ও লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে নির্মিত আটচালা মন্দিরটির গায়ে মৃৎফলকের উপর কোনও অলংকরণ নেই।[৪৯] গোঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মেমানপুর গ্রামে সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত বলে কথিত মাকড়া পাথরে নির্মিত একটি শ্যামসুন্দর মন্দির রয়েছে। ২৬ বর্গফুটের এই পঞ্চরত্ন মন্দিরটি সাদামাটা ও অলংকরণশূন্য। মন্দিরটির শিখর খাঁজকাটা রেখ শৈলীর এবং তিনটি প্রবেশদ্বারই খিলানযুক্ত। মন্দিরটির বৈশিষ্ট্য হল এই মন্দিরের ছাদ ও প্রবেশদ্বারের মধ্যবর্তী অংশ যতটা না উঁচু তার থেকে অনেক বেশি চওড়া।[৫০]
গোঘাট ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের বেঙ্গাই পঞ্চায়েত এলাকার ইদলবাটি গ্রামে ১৭২৭ সালে নির্মিত একটি পরিত্যক্ত আটচালা মন্দির রয়েছে। স্থানীয় কোঙার বংশ প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরটি দক্ষিণমুখী এবং এটির সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর বিভিন্ন দেবদেবী, রামায়ণের কাহিনি, পশুপাখি ও লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়।[৫১] গোঘাট ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকেরই বদনগঞ্জ ফুলুই ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামে ১৮৬৫ সালে একটি দামোদর মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অধুনা পরিত্যক্ত এই মন্দিরটি প্রথাগত আটচালা শৈলীর, পরিমাপে সাড়ে ১৬ বর্গফুট, দক্ষিণমুখী ও তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ বিশিষ্ট। মন্দিরের সম্মুখভাগে ও খিলানগুলির উপরিভাগে মৃৎফলকের উপর সামান্য কিছু কারুকার্য দেখা যায়।[৫২] এই ব্লকের বদনগঞ্জ ফুলুই ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কয়াপাট গ্রামে ১৮০৭ সালে স্থানীয় মণ্ডলবংশ কর্তৃক শ্রীধর মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। এই নবরত্ন মন্দিরটি পরিমাপে সাড়ে ১৫ বর্গফুট এবং খাঁজকাটা শিখর ও তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ বিশিষ্ট। মন্দিরের সম্মুখভাগে মৃৎফলকের উপর দেবদেবীর মূর্তি, রাজসভার দৃশ্য, পশুপাখি ও লতাপাতার অলংকরণ উৎকীর্ণ রয়েছে। কয়াপাটে আরও একটি পঞ্চরত্ন মন্দির বিদ্যমান। এই মন্দিরটিতেও খাঁজকাটা শিখর, তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশদ্বার ও সম্মুখভাগের মৃৎফলকে কারুকার্য লক্ষিত হয়।[৫৩] গোঘাট ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত কামারপুকুর গ্রামটির প্রধান আকর্ষণ রামকৃষ্ণ পরমহংসের জন্মস্থান হিসেবে। বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু তীর্থস্থান হিসেবে বিবেচিত এই গ্রামে অনেক মন্দির রয়েছে। কিন্তু পুরাকীর্তির দিক থেকে স্থানীয় লাহা বংশ প্রতিষ্ঠিত দামোদর বা বিষ্ণু মন্দির এবং যুগি শিবমন্দিরটিই বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দু’টি মন্দিরই অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীতে নির্মিত। দামোদর মন্দিরটি দক্ষিণমুখী, দৈর্ঘ্যে ২০ ফুট ও প্রস্থে সাড়ে ১৬ ফুট এবং সামান্য মৃৎফলক অলংকরণ বিশিষ্ট। যুগি শিবমন্দিরটি বর্তমানে রামকৃষ্ণ পরমহংসের জন্মভিটের উপর প্রতিষ্ঠিত কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠের অন্তর্গত। প্রথাগত আটচালা শৈলীর এই মন্দিরটি পূর্বমুখী এবং মৃৎফলকের উপর দেবদেবীর মূর্তি, রামায়ণের কাহিনি, পশু ও লতাপাতার অলংকরণ সমৃদ্ধ।[৫৪] কামারপুকুর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে শ্যামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত পাণ্ডুগ্রামের শ্রীধর মন্দিরটি এই ব্লকের একটি উল্লেখযোগ্য স্থাপনা। দালান শৈলীর এই মন্দিরটি সমতল ছাদযুক্ত হলেও কার্নিসগুলি বক্র।[৩০] বদনগঞ্জ ফুলুই ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অন্তর্গত এবং একদা তসর ও রেশমশিল্পের জন্য বিখ্যাত বদনগঞ্জ গ্রামে দু’টি পুরনো মন্দির দেখা যায়। এখানকার শ্রীধর-লালজিউ মন্দিরটি ১৮০৬ সালে স্থানীয় দে পরিবার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। দালান শৈলীর এই দ্বিতল মন্দিরটি সমতল ছাদযুক্ত এবং মন্দিরগাত্রে মৃৎফলকের উপর দেবদেবীর মূর্তি ও রাজসভার দৃশ্যাবলির উৎকীর্ণ রয়েছে। ১৮১০ সালে স্থানীয় বরাট পরিবার এই গ্রামের দামোদর মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ বিশিষ্ট এই নবরত্ন মন্দিরটির গায়ে মৃৎফলকের উপর দেবদেবীর মূর্তি, রাজসভার দৃশ্য ও পশুপাখি ইত্যাদির অলংকরণ বেশ আকর্ষণীয়।[৫৫] বদনগঞ্জ ফুলুই ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেতড়া গ্রামে মাকড়া পাথরে নির্মিত একটি আটচালা মন্দির এবং তার সামনে একটি চারচালা মণ্ডপ রয়েছে। অধুনা পরিত্যক্ত এই মন্দির ও মণ্ডপ দু’টির পরিমাপ যথাক্রমে ১২ বর্গফুট ও ৯ বর্গফুট।[৫৬] শ্যামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত মামুদপুর গ্রামটি কামারপুকুর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৮০৬ সালে স্থানীয় রায়বংশ এই গ্রামে একটি পঞ্চরত্ন বিষ্ণুমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরটি দক্ষিণমুখী, রেখ শৈলীর খাঁজখাটা শিখর এবং তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ বিশিষ্ট। মন্দিরগাত্রে উৎকীর্ণ মৃৎফলকে দেবদেবীর মূর্তি, রামায়ণের কাহিনি, রাজসভার দৃশ্য, পশুপাখি ও ফুল-লতাপাতার কারুকার্য দেখা যায়।[৩৯] শ্যামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শ্যামবাজার গ্রামটি এক সময় তসর ও তাঁতের কাপড় এবং আবলুস কাঠের খেলনার জন্য বিখ্যাত ছিল। এখানে বর্গাকার ভিত্তির উপর নির্মিত একটি চারচালা মন্দির এবং স্থানীয় দত্ত ও দাস বংশ প্রতিষ্ঠিত দু’টি রাধাদামোদর মন্দির রয়েছে। শেষোক্ত মন্দির দু’টির প্রতিষ্ঠাকাল যথাক্রমে ১৭৯০ সাল ও ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ। দু’টি মন্দিরই পঞ্চরত্ন এবং দুই মন্দিরেরই সম্মুখভাগে পোড়ামাটির ফলকের উপর দেবদেবী, রাজসভা, পশুপাখি ও লতাপাতার খোদাইচিত্র দেখা যায়।[৫৭] বদনগঞ্জ ফুলুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সেলানপুর গ্রামে একটি পরিত্যক্ত চারচালা মন্দির রয়েছে। মন্দিরটির গায়ে মৃৎফলকের উপর সামান্য কারুকার্য দেখা যায়। এই গ্রামের দামোদর মন্দিরটি বহুলাংশে মাকড়া পাথরে নির্মিত। ১৫ বর্গফুটের এই মন্দিরটির ছাদ সমতল ও বাঁকানো কার্নিসযুক্ত। এছাড়া এই গ্রামে ঊনবিংশ শতাব্দীতে নির্মিত একটি আটচালা মন্দিরও রয়েছে। মন্দিরটির কার্নিস বাঁকানো নয়। তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথের স্তম্ভে ও উপরে পোড়ামাটির অলংকরণ দেখা যায়।[৫৭] হাজিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হাজিপুর গ্রামে ১৮২৭ সালে নির্মিত একটি নবরত্ন লক্ষ্মীজনার্দন মন্দির রয়েছে। ১৫ বর্গফুট পরিমাপের এই মন্দিরে দ্বিতীয় তল ব্যতিরেকেই নয়টি শিখর সংযুক্ত হয়েছে। মন্দিরটির তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ এবং সম্মুখভাগে পোড়ামাটির ফলকে দেবদেবী, রামায়ণের কাহিনি, পশুপাখি ও লতাপাতার অলংকরণ দেখা যায়।[৫৮]
বালি-দেওয়ানগঞ্জ গ্রামের পুরাকীর্তি
নির্বাচনী কেন্দ্র
আরামবাগ মহকুমার অন্তর্গত লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্রগুলির বিবরণ নিচে দেওয়া হল:[৫৯]
লোকসভা কেন্দ্র
সংরক্ষণ
বিধানসভা কেন্দ্র
সংরক্ষণ
সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক এবং/অথবা গ্রাম পঞ্চায়েত এবং/অথবা পৌর এলাকা
রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) - ঊনবিংশ শতাব্দীর সমাজ ও ধর্মসংস্কারক। ব্রাহ্মসমাজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পৈতৃক নিবাস ও জন্মস্থান আরামবাগ মহকুমার অন্তর্গত রাধানগর গ্রাম।[৬২]
রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ঊনবিংশ শতাব্দীর হিন্দু ধর্মগুরু। আরামবাগ মহকুমার কামারপুকুরে জন্ম। এখানেই তিনি তাঁর শৈশব ও কৈশোর অতিবাহিত করেন। বর্তমানে কামারপুকুর একটি হিন্দু তীর্থস্থান হিসেবে পরিগণিত হয়।[৬৩]
↑"District Human Development Report: Hooghly"(পিডিএফ)। Demographical Profile of the District , page 39। Development and Planning Department, Government of West Bengal, 2011। ৭ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০১৭।
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১৯
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৭
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৩৯
↑"District Statistical Handbook 2014 Hooghly"। Table 2.2, 2.4(a)। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০।
↑"District Statistical Handbook 2014 Hooghly"। Table 2.1। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮।
↑"District Statistical Handbook 2014 Hooghly"। Tables 2.1, 2.2। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮।
↑"Hooghly District Police"। West Bengal Police। ৫ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৭।
↑"District Statistical Handbook 2014 Hooghly"। Table 2.2, 2.4(a)। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮।
↑"District Human Development Report: Hooghly"(পিডিএফ)। page 58। Development and Planning Department, Government of West Bengal, 2011। ৭ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৭।
↑"District Statistical Handbook 2014 Hooghly"। Tables 18.1. Data for subdivisions/ district calculated by totalling the CD Block data provided। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮।
↑"District Human Development Report: Hooghly"(পিডিএফ)। page 67। Development and Planning Department, Government of West Bengal, 2011। ৭ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৭।
↑ কখদীপ্তিময় রায়, পশ্চিমবঙ্গের কালী ও কালীক্ষেত্র, মণ্ডল বুক হাউস, কলকাতা, ১৪০৮ সংস্করণ, পৃ. ১৬৯-১৭১
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪০
↑ কখনরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৮৯-৯০
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১০২
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪৬
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪৭-৪৮
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১৪১
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৬১-৬২
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৫৩
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৭৬
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১৪৩
↑ কখনরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১১৬
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১১১
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১৩৩
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১২১
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১১২
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১৩১
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪৫
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৫১-৫২
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৯৮
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১১৭
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১২৩
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১১৮
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪২
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪৯
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪৬-৪৭
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪৮
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৯৫-৯৬
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১০৪
↑ কখনরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১২৪
↑নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সম্পাদনা: দেবলা মিত্র, হুগলী জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ১৪৪