আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী |
---|
|
|
|
কাজের মেয়াদ ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ – ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ |
রাষ্ট্রপতি | জেনারেল ইয়াহিয়া খান |
---|
প্রধানমন্ত্রী | নুরুল আমিন |
---|
উপরাষ্ট্রপতি | নুরুল আমিন |
---|
পূর্বসূরী | আবদুল মোতালেব মালিক |
---|
উত্তরসূরী | পদ বিলুপ্ত |
---|
|
কাজের মেয়াদ ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ – ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ |
ডেপুটি | ভাইস এডমিরাল মুহাম্মদ শরীফ |
---|
পূর্বসূরী | লেফট্যানেন্ট জেনারেল টিক্কা খান, |
---|
উত্তরসূরী | পদ বিলুপ্ত |
---|
|
কাজের মেয়াদ ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ – ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাথে ছিলেন ভাইস এডমিরাল মুহাম্মদ শরীফ |
পূর্বসূরী | ভাইস এডমিরাল মুহাম্মদ শরীফ |
---|
উত্তরসূরী | পদ বিলুপ্ত |
---|
|
|
জন্ম | আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী ১৯১৫ গ্রাম:বালো খেল, জেলা: মিয়ানওয়ালি, লাহোর, পাঞ্জাব প্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত |
---|
মৃত্যু | ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ (৮৯ বছর) লাহোর, পাঞ্জাব, পাকিস্তান |
---|
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯১৫–১৯৪৭) পাকিস্তান (১৯৪৭–২০০৪) |
---|
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ভারতীয় সামরিক একাডেমী |
---|
মন্ত্রীসভা | ইয়াহিয়া খানের সামরিক সরকার |
---|
পুরস্কার | হিলালে জুরত (প্রত্যাহার) মিলিটারি ক্রস |
---|
স্বাক্ষর | |
---|
|
ডাকনাম | টাইগার বাংলার শৃগাল (পাকিস্তানে)[১] |
---|
আনুগত্য | পাকিস্তান ব্রিটিশ ভারত |
---|
শাখা | পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী |
---|
কাজের মেয়াদ | ১৯৩৪-১৯৭২ |
---|
পদ | লেফট্যানেন্ট জেনারেল (পদচ্যুত) |
---|
ইউনিট | পঞ্চম এয়ারবর্ন, পাঞ্জাব রেজিমেন্ট |
---|
কমান্ড | পঞ্চম এয়ারবর্ন, পাঞ্জাব রেজিমেন্ট ১৪তম প্যারাট্রুপার ব্রিগেড ৫২তম মেকানাইজড ডিভিশন ৫০তম এয়ারবর্ন ডিভিশন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী |
---|
যুদ্ধ | বার্মা অভিযান ইম্ফলের যুদ্ধ চাভিন্দার যুদ্ধ অপারেশন সার্চলাইট বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৭১ |
---|
আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী (উর্দু: امیر عبداللہ خان نیازی; ১৯১৫ – ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৪) ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রাক্তন লেফট্যানেন্ট জেনারেল। পূর্ব পাকিস্তানে তিনি সর্বশেষ গভর্নর ও সামরিক আইন প্রশাসক এবং পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক হাই কমান্ডের সর্বশেষ কমান্ডার। নিয়াজী ও রিয়ার এডমিরাল মুহাম্মদ শরীফ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৭১ এ পূর্বাঞ্চলে সেনাদের দায়িত্বে ছিলেন। আত্মসমর্পণের জন্য তাকে পাকিস্তানে "বাংলার শৃগাল" বলা হয়।[২] তার সামরিক পদক ও সম্মান প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। ১৯৭১ সালে নিয়াজী তার ৫ ডিভিশন সেনাসহ মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত থাকার জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়।[৩]
প্রারম্ভিক জীবন
নিয়াজী ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবে একটি গিলজাই পশতু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] ১৯৩২ সালে তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে জুনিয়র নন-কমিশন্ড অফিসার হিসেবে যোগ দেন। তাকে ভারতীয় সামরিক একাডেমিতে পাঠানো হয়। এখানে তিনি সামরিক বিজ্ঞানে বিএসসি ও প্যারাট্রুপার কোর্স সম্পন্ন করেন।[৪] এরপর ১৯৩৭ সালে তিনি পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ৫ম প্যারাট্রুপারে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রশান্ত মহাসাগরীয় রণাঙ্গণে অংশ নেন।[৪][৪]
বার্মা অভিযান
১৯৪২ সালের ১১ জুন নিয়াজীকে আসাম-বার্মা যুদ্ধক্ষেত্রের কেকরিমা অঞ্চলে পাঠানো হয়।[৪] তিনি জেনারেল স্লিমের অধীন ১৪তম আর্মি অফেন্সিভ গ্রুপে ছিলেন।[৪] তিনি লেফটেন্যান্ট হিসেবে এক প্লাটুন সেনাদলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যারা বাউথি-ডাউং সুড়ঙ্গে জাপানি সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল।[৪]
নিয়াজীকে ব্রিটিশ ভারতের সেনা সদরদপ্তর ডিস্টিঙ্গুইশড সার্ভিস অর্ডার দিতে চেয়েছিল কিন্তু তার সামরিক র্যাঙ্ক এই সম্মাননা লাভের মত উঁচু ছিল না।[৪] অভিযানের সময় ১৬১তম ইনফেন্ট্রি ডিভিশনের কমান্ডিং অফিসার ব্রিগেডিয়ার ডি এফ ডব্লিউ ওয়ারেন জাপানিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নিয়াজীকে “টাইগার” উপাধি দেন।[৪] যুদ্ধের পর ব্রিটিশ সরকার তাকে মিলিটারি ক্রস পদক দেয়।[৪]
১৯৪৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভারতের ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেল ইমফাল আসেন। তিনি জেনারেল স্লিম এবং তার অধীনস্থ কমান্ডার ফ্রেডরিক স্টপফোর্ড, জিওফ্রে স্কুনস ও ফিলিপ ক্রিস্টিসনকে লর্ড মাউন্টব্যাটেনের উপস্থিতিতে নাইটহুড প্রদান করেন।[৫] এই অনুষ্ঠানে দুইজন ভারতীয় অফিসার আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী এবং মেজর (পরবর্তীতে ফিল্ড মার্শাল) শ্যাম মানেকশকে পদক দেয়া হয়।[৫]
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর নিয়াজী পাকিস্তানের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং নবগঠিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন পদক লাভ করেন।
পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ৫ম প্যারাট্রুপারের কর্নেল ও কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিয়াজী ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এসময় তিনি ব্রিগেডিয়ার হিসেবে পদোন্নতি পান। কাশ্মীর ও শিয়ালকোটের অপারেশনে তিনি ১৪তম প্যারাট্রুপার ডিভিশন, ৫০তম এয়ারবর্ন ডিভশনের নেতৃত্ব দেন। চাভিন্দার যুদ্ধে তিনি অংশ নেন। যুদ্ধের পর নিয়াজী করাচি ও লাহোরের সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হন।[৬] ১৯৬৮ সালে তিনি মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান এবং করাচির ৫২তম মেকানাইজড ডিভশনের জিওসি নিযুক্ত হন। ১৯৭০ সালে নিয়াজী ৫০তম এয়ারবর্ন ডিভিশনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৭১ সাল নাগাদ তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদ লাভ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
১৯৭১ সালের এপ্রিলে তাকে পূর্ব পাকিস্তানে পাঠানো হয়।[৫] ২৫ মার্চ লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি কর্তৃক পরিকল্পিত ও বাস্তবায়িত অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনার মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু হয়। আন্তর্জাতিকভাবে এই সামরিক অভিযান নিন্দিত হয়।[৫] এপ্রিল মাসে টিক্কা খানের স্থলে তাকে পূর্ব পাকিস্তানে কমান্ডার-ইন-চীফ হিসেবে পাঠানো হয়।[৩][৫]
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষে তার অধীনে পাকিস্তানি সেনারা ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশী মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই নিয়াজী তার রাজাকার, আলবদর ও সেনাবাহিনীকে দেশের চারদিকে ছড়িয়ে দেয় পুরো সীমান্তকে রক্ষা করার জন্য। নিয়াজীর নিয়ন্ত্রণে তখন পাক সেনাবাহিনীর প্রায় ৪২টি ব্যাটালিয়ন। নিয়মিত সেনা প্রায় ৪০ হাজার এবং আধা-সামরিক বাহিনীতে প্রায় ২৪ হাজার ২০০ লোক। এছাড়া পাক কর্তৃপক্ষের হাতে বাংলাদেশে তখন আরও প্রায় ২৪ হাজার ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স ছিল। মোট সেনা ছিল ৪২ ব্যাটালিয়ান। কিন্তু নামে ডিভিশন ছিল ৪টি। ১৪, ৩৯, ৯ ও ১৬; এছাড়া ৩৬ নম্বর ডিভিশন নামে আরেকটি ডিভিশন ছিল মেজর জেনারেল জামসেদের অধীনে। প্রধানত আধা-সৈনিকরা এ ডিভিশনের আওতায় ছিল। তাদের হাতে তখন গুলি-গোলাও প্রচুর। নিয়াজী যত সৈন্য চেয়েছিল পাক কর্তৃপক্ষ কখনও তাকে তা দেয়নি। তার চাহিদামতো ট্যাংক, বিমান, কামানও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসেনি। কিন্তু তাকে গোলাবারুদ দিতে কার্পণ্য করেনি, যা চেয়েছিল তার চেয়েও বেশি দেয়া হয়েছিল তাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন থেকে পাঠানো প্রচুর গোলাবারুদ তখন পাক কর্তৃপক্ষের হাতে। নিয়াজীর নবম ডিভিশন তখন যশোরের ঘাঁটিতে। তারা সাতক্ষীরা থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। ষোড়শ ডিভিশনের হেডকোয়ার্টার নাটোর থেকে বরগুনায় আনা হয়েছিল। তারা গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মধ্যবর্তী অংশে বাংকার করেছিল। ১৪ ও ৩৯ ডিভিশন জামালপুর থেকে দক্ষিণে কক্সবাজার পর্যন্ত এলাকার দায়িত্বে ছিল। পাক বাহিনীর হাতে ছিল ৮৪টি মার্কিন স্যাফি ট্যাংক, আড়াইশ’র মতো মাঝারি ও ভারি কামান। নিয়াজীর নির্দেশে এগুলোর সবই সীমান্তের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হয়।
পাকিস্তান প্রত্যাবর্তন
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিমলা চুক্তির পর যুদ্ধবন্দীরা পাকিস্তানে ফিরে আসে। নিয়াজীও এসময় পাকিস্তান ফেরেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো নিয়াজীকে তার সামরিক পদ থেকে অব্যাহতি দেন এবং তার খেতাবগুলো কেড়ে নেয়া হয়। এছাড়াও যুদ্ধে আত্মসমর্পণের জন্য তাকে দোষারোপ করা হয়।
বিচারপতি হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বপালনের সময় নিয়াজীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অন্যায়ের অভিযোগ আনে। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে নিয়াজী সামরিক আদালতের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তাব দেন। ১৯৯৮ সালে নিয়াজীর লেখা বই দ্য বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান প্রকাশিত হয়। এতে তিনি ইয়াহিয়া খান, রাও ফরমান আলি, টিক্কা খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টোকে পাকিস্তানের বিভক্তির জন্য দায়ী করেন।
মৃত্যু
নিয়াজী লাহোরে বসবাস করতে থাকেন। ২০০৪ সালে তিনি লাহোরে মৃত্যুবরণ করেন।
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
বহিঃসংযোগ
সামরিক দপ্তর
|
পূর্বসূরী ভাইস এডমিরাল মুহাম্মদ শরীফ
|
পাকিস্তান পূর্বাঞ্চলীয় হাই কমান্ডের কমান্ডার ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ – ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১
|
উত্তরসূরী পদ বিলুপ্ত
|
রাজনৈতিক দপ্তর
|
পূর্বসূরী আবদুল মোতালেব মালিক
|
পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর
years=১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ – ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ {{{years}}}
|
উত্তরসূরী পদ বিলুপ্ত
|
|
---|
ইতিহাস | |
---|
দ্বন্দ্ব | |
---|
|
ভারত | |
---|
পাকিস্তান | |
---|
বাংলাদেশ | |
---|
|
| |
---|
| |
---|
| |
---|
টেমপ্লেট:Pakistani Armed Forces