আজমপুর ফুটবল ক্লাব উত্তরা (সাধারণত আজমপুর এফসি উত্তরা অথবা শুধুমাত্র এএফসি উত্তরা নামে পরিচিত) হচ্ছে ঢাকারউত্তরা ভিত্তিক একটি বাংলাদেশী পেশাদার ফুটবল ক্লাব। এই ক্লাবটি বর্তমানে বাংলাদেশের শীর্ষ স্তরের ফুটবল লিগ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রতিযোগিতা করে।[১] এই ক্লাবটি ২০১৫ সালের ১৯শে আগস্ট তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২৫,০০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট রফিক উদ্দীন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে এই দলটি তাদের হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। বর্তমানে এই ক্লাবের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন শফিউর রহমান মনি এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সাইদুর রহমান মানিক।
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠা
২০০৯ সালে, বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন জমি ভাড়া নিয়ে আজমপুর রেললাইনের পাশে আজমপুর ক্লাব তৈরি করা হয়। ক্লাবটি উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১৯ নম্বর রোডের শেষ প্রান্তে অবস্থিত। স্থানীয় ব্যবসায়ী শহিদুর রহমান মানিক ও মোঃ শাহাদাত হোসেনকে যথাক্রমে ক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদক করা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রথম দশকে ক্লাবটি ঘরোয়া ফুটবলের অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়নি।[২]
২০১৮–১৯ মৌসুমে, ক্লাবটি বাংলাদেশী ফুটবলের চতুর্থ স্তর ২০১৮-১৯ ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লিগে অংশগ্রহণ করেছিল। যদিও আজমপুর ঢাকা লিগে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য জন্য আবশ্যক শীর্ষ তিন স্থানে অবস্থান করতে ব্যর্থ হয়েছিল, তবে ক্লাবটিকে দেশের দ্বিতীয় স্তরের লিগ বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে সরাসরি উত্তীর্ণ করা হয়েছিল।
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ও পদোন্নতি
২০২১–২২ বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের প্রস্তুতির জন্য, ক্লাবটি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক আক্রমণভাগের খেলোয়াড় সাইফুর রহমান মনিকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ করেছিল। যদিও ক্লাবটিকে তাদের সুযোগ-সুবিধার কারণে দ্বিতীয় স্তরে সরাসরি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, পরবর্তীকালে জানা গিয়েছে যে ক্লাব হাউসের অমানবিক জীবনযাত্রার মান ছিল, যেখানে দুটি কক্ষে ১৪–১৫ জন খেলোয়াড় বসবাস করতেন। বিসিএলে আজমপুরের উদ্বোধনী ম্যাচে ক্লাবটি ওয়ারী ক্লাবের কাছে ৩–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল।[২]
২০২২ সালের ২৭শে মার্চ তারিখে, সাইফুর রহমান মনি প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন এবং ক্লাবের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ আরোপ করেন। মনি বলেছিলেন যে ক্লাবের সাথে তার শেষ দুটি খেলা, উত্তরা (১–২) এবং ফরাশগঞ্জের (৩–১) বিরুদ্ধে ম্যাচের ফলাফল পূর্বনির্ধারিত ছিল। অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসার পর, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আজমপুরের এক খেলোয়াড় প্রথম আলোয় দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কথা স্বীকার করেন, অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদেরমধ্যমাঠের খেলোয়াড় সালাহউদ্দিন রুবেলও জড়িত ছিলেন বলে গুঞ্জন ওঠে। ক্লাবের খেলোয়াড়রা সালাহউদ্দিন রুবেলের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়াই ক্লাবহাউসে প্রবেশের অভিযোগও করেন।
এই অভিযোগের পরবর্তী সময়ে মনোয়ার হোসেন ময়না, যিনি লিগ মৌসুমের নবম ম্যাচের দিন হতে নিয়োগ পেয়েছিলেন, তিনি ক্লাবটিকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে উন্নীত করার জন্য গাইড করেছিলেন।[৩] প্রায় ৫ মাস তদন্তের পর, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন জানায় যে ক্লাবটি কোনও নির্দিষ্ট ম্যাচের সাথে জড়িত ছিল না, একই সাথে তাদের ২০২২-২৩ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়।[৪]
বর্তমান খেলোয়াড়
২৭ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।