অ্য জেনারেল হিস্টোরি অফ দ্য রবারিস এন্ড মার্ডার্স অফ দ্য মোস্ট নটরিয়াস পাইরেটস বা অ্য জেনারেল হিস্টোরি অফ দ্য পাইরেটস, ১৭২৪ সালের একটি বই যা ব্রিটেনে প্রকাশিত হয়। সমকালীন জলদস্যুদের জীবনী নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে।[১] বইটি জলদস্যুতা সম্পর্কিত ধারণার জন্য ও বিখ্যাত জলদস্যুদের জীবন সম্পর্কে তথ্যের প্রধান উৎস হিসেবে ধরা হয়।[২] বইয়ের লেখকের নাম ক্যাপ্টেন চার্লস জনসন, তবে এই নামটিকে লেখকের ছদ্মনাম হিসেবে মনে করা হয়।
গ্রন্থকর্তৃত্ব
বইটির লেখকের সম্পর্কে এখনো কোন পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি অবশ্য ইতিহাসবিদেরা লেখকের পরিচয় আবিষ্কারের জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। অনেক গবেষক মনে করেন, জেনারেল হিস্টোরি বইটির লেখক খুব সম্ভবত ডেনিয়াল ডেফু বা প্রকাশক নাথানিয়াল মিস্ট (অথবা তার অধীনে কাজ করা কেউ)।[৩]
দ্য রিপাবলিক অফ পাইরেটস বইয়ে কলিন উডার্ড মন্তব্য করেন:
সম্প্রতি জার্মানির কিয়েল বিশ্ববিদ্যালয় এরআর্নি বিয়ালোইসকিউইসকি বইটির সম্ভবনাময় দাবিদার হিসেবে শনাক্ত করেছেন: নাথানিয়াল মিস্ট ছিলেন সাবেক নাবিক, সাংবাদিক এবং উইকলি জার্নালের প্রকাশক। বইটির প্রথম প্রকাশক হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে চার্লস রিভিংটনকে, যিনি মিস্টের অনেক বই প্রকাশ করেছেন এবং তিনি তার অফিস থেকে সল্প দূরত্বে বসবাস করতেন। সবচেয়ে গূরত্বপূর্ণ বিষয় হল জেনারেল হিস্টোরি বইটি হার মেজেসস্ট্রির স্টেশনারি অফিসে মিস্টের নামে নিবন্ধন করা হয়েছে। সাবেক সমুদ্র ব্যক্তি নাথানিয়াল যিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভ্রমণ করেছিলেন, তিনি বইটি লেখার জন্য লন্ডনের সবচেয়ে যোগ্যতা সম্পন্ন লোক ছিলেন। এছাড়াও মিস্ট ছিলেন ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় জেমস-এর বা ইংল্যান্ডের সিংহাসনে দাবিদার তার বংশধরের একজন সমর্থক যা জেনারেল হিস্টোরি বইয়ের কিছু অংশে বর্ণিত রয়েছে।[৪]
সেসময় চার্লস জনসন নামে একজন সফল নাট্যনির্মাতা ছিলেন যিনি জলদস্যুদের জীবনী নিয়ে অনেক নাটক নির্মাণ করেছেন। তিনি জলদস্যু ক্যাপ্টেন এভরিকে নিয়ে একটি নাটক নির্মাণ করেন যার শিরোনাম ছিল দ্য সাকসেলফুল পাইরেট। ১৭১৩ সালে ড্রাউরি লেনে নাটকটি প্রথম মন্থস্থ হয়েছিল। এই জলদস্যু নিয়ে অ্য জেনারেল হিস্টোরি অফ দ্য পাইরেট গ্রন্থের শুরুতে লেখকের নাম সম্ভবত নাট্যনির্মাতার নামের সাথে মিল রেখে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে ক্যাপ্টেন ব্যবহার করা হয়েছে।
বিষয়বস্তু
অ্য জেনারেল হিস্টোরি অফ দ্য পাইরেটস গ্রন্থে জলদস্যুতা নিয়ে নানা রকম বিষয়বস্তু রয়েছে যা পরবর্তীতে জলদস্যু সাহিত্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। সাধারণ বিষয়গুলোর মধ্যে হারানো পা বা চোখওয়ালা জলদস্যু, জলদস্যু গুপ্তধনের কিংবদন্তি ও জলদস্যু পতাকা জলি রজার। লেখক নির্দিষ্টভাবে বইয়ে দুজন জলদস্যুর জলি রজার পতাকার নাম উল্লেখ করেছেন তারা হলেন, ওয়েলস জলদস্যু বার্থোলুমিউ রবার্টস জুন, ১৭২১ এবং ইংরেজ জলদস্যু ফ্রান্সিস স্প্রিগস ডিসেম্বর, ১৭২৩।[৫]
জেনারেল হিস্টোরি বইটির দুটি ভলিয়ম প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথম ভলিয়মে ১৮-শতকের জলদস্যুদের নিয়ে ও দ্বিতীয় ভলিয়মে কয়েক দশক পূর্বের তাদের পূর্বসূরীদের অভিযান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম ভলিয়মে জনসন সমসাময়িক উৎসের খুব কাছাকাছি থেকে লিখতে চেষ্টা করেছেন যদিও কোন কোন জায়গায় তিনি অলংকরণ করেছেন। তিনি দ্বিতীয় ভলিয়মে সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য লেখাকে আরো বিস্তৃত করেন এবং তিনজন খুব সম্ভব কাল্পনিক চরিত্রের জীবনী যুক্ত করেন। বইটি ইতিহাসবিদদের জলদস্যু সম্পর্কিত গবেষণার প্রধান উৎস হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। কিছু কিছু কাল্পনীক তথ্য নিয়ে বিতর্ক থাকলেও জনসনের বইয়ের অধিকাংশ তথ্য সত্য বলে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এবং জলদস্যুতার মূল উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।[৬][৭]