অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়া (ইংরেজি Inner Mongolia ইনার মঙ্গোলিয়া) গণচীনের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। এর আয়তন ৩০২ মিলিয়ন একর, যা চীনের মোট ভূমির ১২%। হোহহোট হচ্ছে অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলীয় স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের রাজধানী। ২০০৪ সনের শুমারী অনুযায়ী অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ায় ২ কোটি ৫০ লক্ষ লোক বাস করে।
অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলীয় স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের সাথে রাশিয়া এবং মঙ্গোলিয়ার সীমান্ত রয়েছে। ১৯৪৭ সালে স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলটি কানসু এবং নিংশিয়াং প্রদেশের উত্তর অংশের পাশাপাশি অতীতের সুয়ুয়ান, চাহর, রেহ, লিয়াবেই এবং জিংআন প্রদেশগুলির নিয়ে গঠন করা ছিল। অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ার প্রধান শহরগুলোর মধ্যে রাজধানী শহর হোহহোট সেইসাথে হুলানবুইয়ার, ওরডোস, টংলিয়াও, উলানকাব, উহাই বাওতাউ এবং বাইয়ান নুর শহর। এই প্রদেশের এলাকাটি তৃতীয় বৃহত্তম চীনা উপবিভাগ, যার আয়তন ১২,০০,০০০ বর্গ কিমি (৪,৬৩,০০০ বর্গ মাইল) এবং চীনের মোট ভূমি এলাকার ১২%। ২০১০ সালের আদমশুমারিতে অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলীয়ার জনসংখ্যা ছিল ২,৪৭,০৬,৩২১ জন যা চীনের মোট জনসংখ্যা ১.৮৪%। অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়া দেশটির ২৩ তম জনবহুল প্রদেশ-স্তরের বিভাগ।[৬]
অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ার ইতিহাস থেকে জানা যায় ১২০৬ খ্রিষ্টাব্দে চেংগিজ খান মোঙ্গল জাতিসমূহকে একত্রিত করেন এবং তার সৈন্যরা ১২৭৯ খ্রিষ্টাব্দে চীন দখল ।
অর্থনীতি
অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ার নদী অববাহিকায় গমের চাষ হয়। অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, নিওবিয়াম, জিরকোনিয়াম এবং বেরিলিয়াম মওজুদ আছে। চীনের উত্তরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়লা শিল্প রয়েছে এখানে। ২০০৭ সনে অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ার স্থূল জাতীয় উত্পাদন বা জিডিপি ছিল ৬০০ বিলিয়ন ইউয়ান; সেইসাথে চমকে দেয়ার মতো বার্ষিক ১৯% প্রবৃদ্ধি কিন্ত্ত জিডিপি হলো বার্ষিক ২৫০০০ ইউয়ান। রাজধানী শহর হোহহোটের আবাসিক মার্কেট দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এখানে নতুন নতুন অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ও প্রচুর সুউচ্চ দাপ্তরিক ভবন তৈরী হচ্ছে।
সংস্কৃতি
অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ায় বিভিন্ন উপভাষায় অধিবাসীদের কথা বলতে দেখা যায় যেমন চাহার, ইজিন-এলেক্সা এবং বারঘু-বুরিয়াত। অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ায় চীনা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সমূহের নিজস্ব ভাষা ও কথ্যরীতি রয়েছে। ধ্রুপদী মঙ্গোল লিপি এখনও অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ায় প্রচলিত রয়েছে। সিরিলীয় বর্ণমালাও বহির্দেশীয় মঙ্গোলিয়ায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জাতিগত মঙ্গোলরা এখন কমপক্ষে একটি চীনা কথ্য ভাষায় পারদর্শী।
পর্যটন
১৫৮০ সালে হোহ্হটে নির্মিত ডাজাও টেম্পল এবং ১৬৯৭ সালে নির্মিত জিয়াওঝাউ টেম্পল অথবা ওরডোসে চেঙ্গিস খানের সমাধিসৌধ এখানকার পর্যটনের মূল আকর্ষণ। এছাড়াও অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়ার প্রকৃতি পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
↑"Doing Business in China - Survey"। Ministry Of Commerce - People's Republic Of China। ৫ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৩।