|
শ্রেণি'র সারাংশ |
নাম: |
টাইপ ০৫৬ আলফা (সি১৩বি) |
নির্মাতা: |
উচ্যাং শিপইয়ার্ড |
ব্যবহারকারী: |
বাংলাদেশ নৌবাহিনী |
নির্মিত: |
২০১২-২০১৮ |
পরিষেবাতে: |
২০১৬-বর্তমান |
অনুমোদন লাভ: |
২০১৬-বর্তমান |
পরিকল্পিত: |
৮টি |
সম্পন্ন: |
৪টি |
সাধারণ বৈশিষ্ট্য |
প্রকার: |
স্টেলথ গাইডেড মিসাইল কর্ভেট |
ওজন: |
১,৪০০ টন |
দৈর্ঘ্য: |
৯০.২ মিটার (২৯৬ ফুট) |
প্রস্থ: |
১১.১৪ মিটার (৩৬.৫ ফুট) |
ড্রাফট: |
৩.৩৭ মিটার (১১.১ ফুট) |
গভীরতা: |
৪.৪ মিটার (১৪ ফুট) |
প্রচালনশক্তি: |
- ২ × ৬,৯৫০ অশ্বশক্তি (৫,১৮০ কিলোওয়াট) এসইএমটি পিয়েলস্টিক ১৬পিএ৬ভি-২৮০এসটিসি ডিজেল ইঞ্জিন (গণচীন);
- ৪ × ৮০০ অশ্বশক্তি (৬০০ কিলোওয়াট) ক্যাটারপিলার সি১৮এসিইআরটি ডিজেল জেনারেটর (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ২ × শ্যাফট
|
গতিবেগ: |
২৫ নট (৪৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা; ২৯ মাইল প্রতি ঘণ্টা) |
সীমা: |
৩,৫০০ নটিক্যাল মাইল (৪,০০০ মাইল; ৬,৫০০ কিলোমিটার) |
সহনশীলতা: |
১৫ দিন |
নৌকা ও অবতরণ নৈপুণ্য বহন করে: |
১টি |
লোকবল: |
৭৮ জন |
সেন্সর এবং কার্যপদ্ধতি: |
- ১ × টাইপ ৩৬০ এয়ার/সারফেস সার্চ র্যাডার, ই/এফ ব্যান্ড (বানৌজা স্বাধীনতা ও বানৌজা প্রত্যয়);
- ১ × এসআর২৪১০সি এস-ব্যান্ড এইএসএ ৩ডি মাল্টি-ফাংশনাল র্যাডার (বানৌজা সংগ্রাম ও বানৌজা প্রত্যাশা);
- ১ × হাল মাউনন্টেড মাল্টি-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১ × হাল মাউনন্টেড সিঙ্গেল-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১ × ডিজিপিএস রিসিভার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১ × সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার (যুক্তরাজ্য);
- ১ × মাল্টিরোল ডিসপ্লে সহ কেলভিন হিউগস র্শাপআই ই/এফ-ব্যান্ড (এস-ব্যান্ড) নেভিগেশনাল র্যাডার;
- ১ × কেলভিন হিউজেস শার্পআই আই-ব্যান্ড (এক্স-ব্যান্ড) র্যাডার;
- ১ × টাইপ-৩৪৮ ফায়ার কন্ট্রোল র্যাডার (মেইন গানের জন্য)
- ১ × চৌম্বকীয় কম্পাস (জাপান);
- ১ × জিপিএস রিসিভার (ফুরুনো);
- ১ × ইকো সাউন্ডার (কোডেন);
- ১ × রাডার অ্যাঙ্গেল ইন্ডিকেটর;
- ১ × ভিএইচএফ সেট (আইকম);
- ২০ × ভিএইচএফ ওয়াকিটকি সেট (আইকম/মটোরোলা)
|
রণসজ্জা: |
- ১ × এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি কামান;
- ২ × এইচ/পিজে-১৭ ৩০ মিমি কামান;
- ২ × ২ সি-৮০২এ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
- ১ × ৮ এফএল-৩০০০এন আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র;
- ২ × ৬-টিউব টাইপ ৮৭ ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী রকেট লঞ্চার;
- ৪ × এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান
- ৬ × কিউডব্লিউ-২ ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণ যোগ্য বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র
|
বিমান বহন: |
১টি |
বিমানচালানর সুবিধাসমূহ: |
হেলিকপ্টার ডেক |
টীকা: |
১ × ২.৫ টন ডেক ক্রেন (ইতালি) |
স্বাধীনতা-শ্রেণী হলো গণচীনে নির্মিত টাইপ ০৫৬ আলফা স্টেলথ গাইডেড মিসাইল কর্ভেট জাহাজের শ্রেণী যা বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত হয়। এই জাহাজগুলো চায়না শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় উচ্যাং শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়। টাইপ ০৫৬ কর্ভেট সিরিজের উপর ভিত্তি করে নির্মিত প্রতিটি জাহাজ সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান, সুনীল অর্থনীতির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনাসহ মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজগুলি দুর্যোগ কালীন সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯][১০][১১]
ইতিহাস
সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় ও বৈদেশিক উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এছাড়াও যুদ্ধকালীন সময়ে সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, যুদ্ধকালীন অপারেশন পরিচালনা করা, শান্তিকালীন সময়ে সার্বক্ষণিক উপস্থিতির মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে সতর্ক করা, বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপত্তা এবং পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ, সমুদ্রে টহল প্রদান, মৎস্য সম্পদ রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, জলদস্যুতা প্রতিরোধ / দমন এবং তেল ও গ্যাস সম্পদের নিরাপত্তা প্রদান, আইন শৃংখলা রক্ষা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান ইত্যাদি পরিচালনা করতে এসব যুদ্ধজাহাজের প্রয়োজন ছিলো। এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক জোটের সঙ্গে অপারেশন পরিচালনা, বহুজাতিক প্রশিক্ষণ, মহড়া ও ওয়ারগেম ইত্যাদি পরিচালনার কাজেও এসব জাহাজের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ০৮ জানুয়ারী, ২০১৩ সালে উচ্যাং শিপইয়ার্ডে বানৌজা স্বাধীনতা ও বানৌজা প্রত্যয় জাহাজ দুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ সালে জাহাজ দুটিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। অবশেষে ১৯ মার্চ, ২০১৬ সালে বানৌজা স্বাধীনতা ও বানৌজা প্রত্যয় জাহাজ দুটি নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।
পরবর্তী ধাপে ২১ জুলাই, ২০১৫ সালে বানৌজা সংগ্রাম ও বানৌজা প্রত্যাশা জাহাজ দুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২৮ মার্চ, ২০১৯ সালে জাহাজ দুটিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। ১৮ জুন, ২০২০ সালে বানৌজা সংগ্রাম এবং ৫ নভেম্বর, ২০২০ সালে বানৌজা প্রত্যাশা নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।
বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো
জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার (৩০০ ফুট), প্রস্থ ১১.১৪ মিটার (৩৬.৫ ফুট) এবং ওজন ১,৪০০ টন। জাহাজটিতে দুইটি জার্মানির তৈরি এসইএমটি পিয়েলসটিক ১২পিএ৬ ডিজেল ইঞ্জিন রয়েছে যার সাহায্যে সে সর্ব্বোচ্চ ২৫ নট (৪৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা; ২৯ মাইল প্রতি ঘণ্টা) গতিবেগে চলতে সক্ষম। জাহাজটিতে সামনে ও পিছনে দুইটি আলাদা শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে এবং একটি অকার্যকর হয়ে পড়লেও অন্যটির সাহায্যে জাহাজটি কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। চিরাচরিত গোলাকার সম্মুখভাগের পরিবর্তে জাহাজটিকে ভি-আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে যাতে উত্তাল সমূদ্রেও দ্রুতগতিতে চলতে পারে। কিন্তু জাহাজটিতে কোন সোনার না থাকায় এটি খুব সীমিত মাত্রায় ডুবোজাহাজ-বিধ্বংসী কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। বানৌজা সংগ্রামে একটি হেলিকপ্টার ডেক রয়েছে যেখানে একটি মধ্যম আকৃতির হেলিকপ্টার ওঠানামা করতে পারে তবে এতে কোনো হ্যাঙ্গার নেই।
ইলেক্ট্রনিক্স
জাহাজটি সমুদ্রপৃষ্ঠ ও আকাশে অনুসন্ধানের জন্য চীনের তৈরি এসআর২৪১০সি এস-ব্যান্ড ৩ডি এইএসএ র্যাডার ব্যবহার করে। পাশাপাশি হেলিকপ্টার উড্ডয়ন ও অবতরন নিয়ন্ত্রণ এবং গোলাবর্ষণ নিয়ন্ত্রণের জন্যও এই র্যাডার ব্যবহার করা যায়। এই রাডারটি ২৫০ কিলোমিটার (১৬০ মাইল) দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত করতে পারে এবং একসঙ্গে ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুকে অনুসরণ করতে পারে।
অস্ত্রসজ্জা
জাহাজটিতে একটি এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি কামান রয়েছে যা জাহাজের সম্মুখভাগে বসানো হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠে থাকা হুমকি মোকাবেলা করার জন্য রয়েছে চারটিসি-৮০২এ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। জাহাজটির নিজস্ব প্রতিরক্ষার জন্য রয়েছে দুইটি এইচ/পিজে-১৭ ৩০ মিমি দূর-নিয়ন্ত্রিত কামান। আকাশ প্রতিরক্ষার জন্য রয়েছে ৮টি এফএল-৩০০০এন বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। জাহাজটিতে দুইটি ৬-টিউব বিশিষ্ট টাইপ ৮৭ ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী রকেট লঞ্চারও রয়েছে।
রণসজ্জা
স্বাধীনতা-শ্রেণীর প্রতিটি জাহাজ আধুনিক বিশ্বে ব্যবহৃত সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ। শত্রু জাহাজ মোকাবেলা, চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:
- ১টি এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি কামান;
- ২টি এইচ/পিজে-১৭ ৩০ মিমি কামান;
- ৪টি সি-৮০২এ জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
- ১টি ৮ সেল বিশিষ্ট এফএল-৩০০০এন আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র;
- ১টি ৬-টিউব টাইপ ৮৭ ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী রকেট লঞ্চার;
- ৪টি এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
- ৬টি কিউডব্লিউ-২ বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র।
জাহাজসমূহ
- বাংলাদেশ নৌবাহিনী
তথ্যসূত্র