রাজকীয় সৌদি স্থলবাহিনী বা কেএসএ ( আরবি: القُوَّاتُ البَرِّيَّةُ المَلَكِيَّة السُّـعُودِيَ) অথবাসৌদি আরবীয় সেনাবাহিনী ( আরবি: الجَيْشُ العَرَبيّ السُّـعُودِيَّ: আল-জয়শ আল-আরবি আল-সৌদি) হলো সৌদি আরবের সশস্ত্র বাহিনীর বৃহত্তম শাখা। ২০১১ সাল পর্যন্ত সৌদি জেনারেল স্টাফের প্রধান ছিলেন ফিল্ড মার্শালসালেহ আল-মুহায়া।[৩]
ইতিহাস
আধুনিক আরএসএলএফ এর শেকড় রয়েছে প্রথম সৌদি রাজ্যে, যা ১৭৪৫ সালের প্রথম দিকে গঠিত হয়েছিল এবং এটি সৌদি সেনাবাহিনীর জন্ম সাল হিসাবে ধরা হয়। ১৯০২ সালের ১৩ জানুয়ারি রাজকীয় সৌদি স্থল সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি সৌদি আরবের সামরিক বাহিনীর প্রাচীনতম শাখা হিসাবে বিবেচিত হয়।[১]
অন্যান্য ঘটনাসমূহ যার জন্য সালে সৌদি সেনাবাহিনীকে শক্তিশালি করতে পরিচালিত করেছিল সেগুলোর মধ্যে ছিল ১৯৪৮ সালের আরব-ইস্রায়েল সংঘাত, ১৯৭৯ সালে ইরানের বিপ্লবেশাহমোহাম্মদ রেজা পাহলভীর পতন এবং পরবর্তীকালে শিয়াদের ক্রিয়াকলাপের আশঙ্কা এবং শেষ বছরগুলিতে ১৯৯০ সালে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ। ২০০০ সালে সৌদি আরব সরকার সৌদি সেনাবাহিনী সহ সৌদি সামরিক বাহিনীকে সম্প্রসারণ করতে কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।
বিদেশী ঠিকাদারের সহায়তার উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা এবং বাস্তব প্রশিক্ষণ পরিচালনায় অনিচ্ছুক হওয়ার কারণে সৌদি আরবের সশস্ত্র বাহিনী মারাত্মক সমস্যায় ভুগছে।[৪] অনেক আধুনিক সরঞ্জাম সঠিকভাবে বোঝতে পারে না বা ব্যবহৃত হয় না।
২০১৫ সালে তার বাবা বাদশাহ হলে (এর আগে তিনি মন্ত্রী ছিলেন) মোহাম্মদ বিন সালমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিযুক্ত হন।[৫]
১৯৬৭ সালে আরএসএলএফ জর্ডানে ২০,০০০ এরও বেশি সেনা মোতায়েন করে।
১৯৬৯ সালের আল-ওয়াদিয়াহ যুদ্ধ। দক্ষিণ ইয়েমেনী বাহিনী সৌদি শহর আল-ওয়াদিয়া আক্রমণ করে, তবে পরে সৌদি সেনাবাহিনীর কাছে পরাজিত হয়।
১৯৭৩ সালে ইয়ম কিপুর যুদ্ধের সময় সৌদি আরব সংঘাত শুরুর চার দিন পর সিরিয়ায় প্যানহার্ড এএমএল-৯০ এর একটি হালকা সাঁজোয়া ব্যাটালিয়ন এবং ৩,০০০ সেনা প্রেরণ করে।[৬] সৌদি অভিযানকারী বাহিনী আইডিএফের সাথে ১৬-১৯ অক্টোবরের মধ্যে বেশকিছু তুলনামূলক ছোটখাটো সংঘর্ষে অংশ নেয়, এর বেশিরভাগই জর্ডানের ৪০ তম আর্মার্ড ব্রিগেডের সাথে যোগ দিয়ে অংশ গ্রহণ করে।[৭]
১৯৭৯ সালের গ্র্যান্ড মসজিদ দখল। সৌদি সেনাবাহিনী এবং এসএএনজি পাকিস্তানি ও ফরাসী কমান্ডোদের সাথে মিলে মসজিদটিকে চরমপন্থী বিদ্রোহীদের কাছ থেকে দখল মুক্ত করে।
সৌদি সেনাবাহিনীর সমরাস্ত্র শক্তি ৪ টি আর্মার্ড, ৫ টি যান্ত্রিক, ২ টি হালকা পদাতিক (১ টি রাজকীয় রক্ষীবাহিনী, ১ টি স্পেশাল ফোর্স) ব্রিগেড নিয়ে গঠিত। সৌদি সেনাবাহিনী তাবুক এলাকার বাদশাহ ফয়সাল মিলিটারি সিটিতে দ্বাদশ আর্মার্ড ব্রিগেড এবং ষষ্ঠ যান্ত্রিক ব্রিগেড মোতায়েন করেছে। এটি খামিস মুশায়াত এলাকার বাদশাহ আবদুল আজিজ মিলিটারি সিটিতে চতুর্থ আর্মার্ড ব্রিগেড এবং একাদশ যান্ত্রিক ব্রিগেড মোতায়েন করেছে। এটি হাফর আল বাতিনের নিকটে বাদশাহ খালিদ মিলিটারি সিটিতে ২০ তম যান্ত্রিক ব্রিগেড এবং অষ্টম যান্ত্রিক ব্রিগেড মোতায়েন করেছে। দশম যান্ত্রিক ব্রিগেড শররাহায় মোতায়েন করা হয়েছে, এটি ইয়ামেন সীমান্তের নিকটে এবং যামাক থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।[৩]
১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে বেশ কয়েকটি ইউনিট সংযোজন এবং গতিশীলতা বর্ধিত হওয়া সত্ত্বেও, ১৯৬০ এর দশকের শেষভাগে একটি বড় সম্প্রসারণ চালু হওয়ার পরে সেনাবাহিনীর কর্মীদের পরিপূরক কেবলমাত্র মাঝারিভাবে প্রসারিত হয়েছিল। আনুমানিক ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ইউনিটের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর সক্ষমতা ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী হয়েছে। এই ঘাটতি একটি শিথিল নিয়মের কারণে আরও বেড়েছে, এতে যথেষ্ট পরিমান অনুপস্থিতির অনুমতি দেওয়া হয় এবং অভিজ্ঞ প্রযুক্তিবিদ এবং নন-কমিশন্ড অফিসার (এনসিও) ধরে রাখার ব্যাপারে একটি গুরুতর সমস্যার কারণে। পৃথক জাতীয় রক্ষিবাহিনীর বিস্তৃত অস্তিত্বও সেনাবাহিনীর শক্তিকে সীমাবদ্ধ করেছে।[৩]
সাজোয়া
চতুর্থ (বাদশাহ খালেদ) আর্মার্ড ব্রিগেড
ষষ্ঠ (বাদশাহ ফাহদ) আর্মার্ড ব্রিগেড
সপ্তম (প্রিন্স সুলতান) আর্মার্ড ব্রিগেড
অষ্টম (বাদশাহ ফাহদ) আর্মার্ড ব্রিগেড
দশম (বাদশাহ ফয়সাল) আর্মার্ড ব্রিগেড
দ্বাদশ (খালিদ ইবনে আল-ওয়ালিদ) আর্মার্ড ব্রিগেড
একটি সাধারণ সৌদি সাঁজোয়া ব্রিগেডের একটি সাঁজোয়া প্রাথমিক নিরীক্ষণ কোম্পানি আছে, প্রতিটিতে ৩৫ টি ট্যাঙ্ক সহ তিনটি ট্যাঙ্ক ব্যাটালিয়ন, এআইএফভি/এপিসি সহ একটি যান্ত্রিক পদাতিক ব্যাটালিয়ন এবং ১৮ টি স্বয়ংক্রিয় কামান সহ একটি আর্টিলারি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। এটিতে একটি সেনা বিমান কোম্পানি, একটি প্রকৌশল কোম্পানি, লজিস্টিক ব্যাটালিয়ন, একটি মাঠ কর্মশালা এবং একটি মেডিকেল কোম্পানি আছে।[৮]
যান্ত্রিক
একাদশ যান্ত্রিক ব্রিগেড
দ্বাদশ যান্ত্রিক ব্রিগেড
ত্রয়োদশ যান্ত্রিক ব্রিগেড
চতুর্দশ যান্ত্রিক ব্রিগেড
বিংশতিতম যান্ত্রিক ব্রিগেড
একটি সাধারণ সৌদি যান্ত্রিক ব্রিগেডে একটি সাঁজোয়া প্রাথমিক নিরীক্ষণ কোম্পানি, ৪০ টি ট্যাঙ্ক সহ একটি ট্যাঙ্ক ব্যাটালিয়ন, এআইএফভি/এপিসি সহ তিনটি যান্ত্রিক পদাতিক ব্যাটালিয়ন এবং ১৮ টি স্বয়ংক্রিয় কামান সহ একটি আর্টিলারি ব্যাটালিয়ন রয়েছে।[৮]
প্রতিটি পদাতিক ব্রিগেডে মোটর চালিত তিনটি ব্যাটালিয়ন, একটি আর্টিলারি ব্যাটালিয়ন এবং একটি সহায়ক ব্যাটালিয়ন থাকে। সেনা ব্রিগেডদের সৌদি আরব জাতীয় রক্ষী বাহিনীর ব্রিগেডগুলির সাথে মিলিয়ে ফেলা যাবে না।
বিমানবাহিনী ইউনিট এবং বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী
প্রথম এয়ারবর্ন ব্রিগেড
চতুর্থ এয়ারবর্ন ব্যাটালিয়ন
পঞ্চম এয়ারবর্ন ব্যাটালিয়ন
৬৪ তম স্পেশাল ফোর্স ব্রিগেড
৮৫ তম স্পেশাল ফোর্স ব্যাটালিয়ন
এয়ারবর্ন ব্রিগেড সাধারণত তাবুকের কাছে মোতায়েন করা হয়। এয়ারবর্ন ব্রিগেডে দুটি প্যারাসুট ব্যাটালিয়ন এবং তিনটি স্পেশাল ফোর্স সোম্পানি আছে। সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদের হুমকির মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য তাদের বিশেষ বাহিনীকে সম্প্রসারিত করছে এবং তাদের সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের মান উন্নত করছে। সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় সহায়তার জন্য স্পেশাল ফোর্সেসকে স্বতন্ত্র যুদ্ধ ইউনিটে পরিণত করা হয়েছে এবং সরাসরি প্রিন্স সুলতানকে রিপোর্ট করতে হয়।
সৌদি আরব ৩৭৩টি এম১এ২ ট্যাংক কিনেছিল,[২৮] আরও ৬৯ টি এম১এ২এস ট্যাঙ্কের অর্ডার করে, সৌদি আরব ৮ জানুয়ারী ২০১৩ এ অর্ডার করে এবং ৩১ জুলাই ২০১৪ এর মধ্যে তা সরবরাহ করা হয়।[২৯] পরে সৌদি আরব সকল এম১এ২ কে এর পরবর্তী রূপ এম১এ২এস কনফিগারেশনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট থেকে ১৫৩ টি এম১এ২এস ক্রয় করার জন্য আদেশ করে,[২৮] ২০টি ইয়েমেনে হারিয়েছে[৩০]
সৌদি আরব অজ্ঞাতসংখ্যক এম-এটিভি কেনার জন্য জন্য আলোচনা করে সৌদি আরব আনুমানিক ১৮৫৯ টি পেয়েছিল। ইয়েমেনে বেশ কয়েক ডজন ধ্বংস হয়েছে। অনেকগুলি হাদিপন্থী বাহিনীকে অনুদান দেওয়া হয় এবং পরবর্তীকালে তা যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যায়।
↑Edgar O'Ballance। No victor, no vanquished: The Yom Kippur War (1979 সংস্করণ)। Barrie & Jenkins Publishing। পৃষ্ঠা 28–370। আইএসবিএন978-0-214-20670-2।
↑Asher, Dani (২০১৪)। Inside Israel's Northern Command: The Yom Kippur War on the Syrian Border। Lexington: University Press of Kentucky। পৃষ্ঠা 415–418। আইএসবিএন978-0813167374।
↑Daniel Watters। "The 5.56×45mm: 2006"। ২০১১-০৮-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২৩।
↑Kokalis, Peter (ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫)। "STEYR AUG; This Bullpup's No Dog"। Soldier of Fortune magazine। ২০০৯-০৩-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-১৭।
↑Amnesty International। "Der Kunde ist K?nig" (German ভাষায়)। ২০১৩-০৩-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৪-০৫।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)